![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একটা হিন্দী মুভি নিয়ে বলবো কিছু। এখন আপনার প্রথম মন্তব্য কি সেটা বা সেগুলো আমার জানা আছে। কিন্তু তাতে আমার কিছু যায় বা আসে না। যেই ভালো কিছু করবে তা যদি আমার ভালো লাগে প্রশংসা আমি করবই। আর যেটাই নিন্দনীয় আমি সেখানে চুপ থাকি। মন্তব্য করা আপনার ব্যাপার এইটা নিয়ে।এইটা আমার স্বভাব। যাক আসল কথাই আসি।
কাউকে যদি জিজ্ঞাস করা হয় সালমান খানের টিউবলাইট দেখছ?
আরে সালমান অলয়েজ জোস।
শাহরুখের নতুন মুভিটা দেখছ?
শাহরুখ তো আমার ফেবারিট হিরো। শাহরুখের নতুম মুভি আসবে আর আমি দেখব না?
এইটা কি জানেন?
ইংরেজী যেটা আপনারা বলেন ট্রেন্ড (Trend)।
তাল মিলিয়ে চলার মত একটা বিষয়। ঝোঁক।
মিডিয়াও খুব ব্যস্ত থাকে ট্রেন্ড কে সচল রাখতে।
যেমন, তিন দিন কোটির ক্লাবে সালমানের ডট ডট মুভি।
কি নতুনত্ব থাকছে শাহরুখের ডন-২ তে।
ব্লা ব্লা ব্লা টাইপ নিউজ।
মুভির নাম "হিন্দি মিডিয়াম"
অভিনয়ে ইরফান খান আর সাবা ক্ষামার।
দেখছেন মুভিটা?
নাম শুনলে তো দেখবো!!
উত্তর এমন হতেই পারে। যাই হোক আমার এই বক্তব্যকে যদি আপনি তুলনামূলক হিসেবে নেন তবে সেটা আপনার ভূল। আমার না।
ছবিটার কাহিনীটা একটু সংক্ষেপে বর্ণনা করি।
ইরফান একজন অশিক্ষিত সফল কাপড়ের ব্যবসায়ী আর স্ত্রী সাবা শিক্ষিতা ইংলিশ লেডি।
ইরফান আর সাবার একমাত্র মেয়েকে প্রথম স্কুলে ভর্তি করাবে।সাবার ইচ্ছে মেয়েকে শহরের নামি দামি প্রথম শ্রেণীর স্কুল ভর্তি করানো।আর ইরফান স্ত্রীর ইচ্ছেই জো হুকুম। শুরু হল গুগলিং। খুঁজে বের করলো শহরের টপ ফাইভ স্কুলগুলো। একদিন ইরফানকে নিয়ে স্কুলগুলো ঘুরে দেখালো আর ইরফান একটু অবাক তো বটেই।যেহেতু অশিক্ষিত এইটা বুঝে নেয়ায় উচিত গরীব ঘরের ছেলে। সরকারী প্রাইমারী স্কুলের গন্ডি পেরিয়েছে তাই বেশি ওর জন্য।
অবাক হল এইগুলো কি স্কুল নাকি ফাইভ স্টার হোটেল নাকি অ্যামিউজমেন্ট পার্ক। যাই হোক স্ত্রী যেমন চাই। এইদিকে সাবা চাই এলিট সমাজে জীবন যাপন আর ইরফান সৌখিন কিন্তু এলিট হতে চাই না। শুরু হল একমাত্র মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করানোর যুদ্ধ। ভোররাতে ফরম নেয়ার লম্বা লাইনে সামিল হল শহরের টপ স্কুলে।
ফরম নিয়ে এইবার স্কুলের পিছে দৌড়ানোর পালা।ইরফান ইংরেজী বলতে পারে না আর স্কুলে ভর্তির প্রতিটা স্টেপ আউটে অভিভাবক হিসেবে অপমানিত হচ্ছে। স্ত্রী তো কোনভাবেই হাল ছাড়বে না।তার এলিট শ্রেণীর সাথে তাল মিলিয়ে চলতেই হবে। ফরম পূরণ করা ভূল হয়েছে স্কুল থেকে সাজেস্ট করল কনসালটেন্ট ফরম পূরণের জন্য। বাচ্চা ভর্তি হবে অভিভাবকের ইন্টার্ভিউ দেয়া লাগবেই।
সেখানেও ইরফান ফেল। আবারও কনসালটেন্ট। তাও ফেল। মন্ত্রীর সুপারিশ, দালাল,ব্যাগভর্তি টাকা আরো কত কিছু নিয়ে চলছে চেষ্টা ভর্তির।
সবকিছুই জলে গেল।
একটু স্কুলের কথা বলি সংক্ষেপে।
বাচ্চার দৈনিক ক্লাস স্কিজিউলের কথা শুনে মা প্রশ্ন করেছিল আমার বাচ্চা খাবে কখন আর ঘুমাবে কখন?
এখন সর্বশেষ রাস্তা গরীব বাচ্চাদের কৌটা।
শুরু হল সাবার নতুন আশার। মেয়েকে যে কোন উপায়ে শহরের টপ স্কুলে ভর্তি করাতে হবেই। নাহলে যে এলিট ক্লাসে নিজের মান সম্মান থাকবে না।এইবার গরীব কৌটায় মেয়ের স্কুল ভর্তির জন্য আবেদন করেই দিল। বিপত্তি করলো এইবার মিডিয়া স্কুলের সাথে। স্কুলে গরীব বাচ্চাদের কৌটায় একটু হেরফের হচ্ছে । স্কুল থেকে ডিসিশন নিল সকল গরীব বাচ্চার কৌটায় যাদের ফরম জমা হয়েছে সেগুলো সরেজমিনে পরিবারের অবস্থা দেখেই ভর্তি করানো হবে।
কি হবে এখন ইরফানের? থাকে লাক্সারিয়াস ফ্লাটে। স্ত্রী ইচ্ছেতে। এই খবর শুনে তো মাথা নষ্ট।
জানাজানি হয়ে গেলে আবার এলিট শ্রেণীতে সম্মান থাকবে না।তাই এলিট শ্রেণীতে বললো ইউরোপ যাচ্ছি আর গরীব সাজার জন্য এক বস্তিতে চলে গেল। শুরু হল গরীব সাজার জীবন।
এলিট শ্রেণী বস্তিতে থাকতে গেলে যা হওয়াটা স্বাভাবিক তাই হচ্ছে। বস্তিতেই পরিচয় হল সোম প্রকাশের সাথে যার ছেলের জন্য সেও শহরের ওই টপ স্কুলে ফরম পূরণ করেছে।
গরীব জীবন যাপন করতে গিয়ে সোমের সাথে বন্ধুত্ব। স্কুল থেকে ইনভেস্টিগেশন আসলো। কিন্তু এলিট শ্রেণীর একমাত্র মেয়ে তখন পিৎজা হাটের পিৎজা খাচ্ছিল আর ঘরে নামি কোম্পানির দামি মিনারেল ওয়াটার। দেখেই তো একটু থতমত স্কুল কতৃপক্ষ থেকে আসা ভদ্রলোক। সোমপ্রকাশ সেখানে পুরো ব্যাপারটা সামলিয়ে নিল বন্ধুর জন্য।মানে সব ব্যবসায় ধরা খেয়ে নতুন গরীব।কিন্তু আসলে এই সোমপ্রকাশ নিজেই জানত না কে এই গরীব।
ইরফান সোমের সাথে বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে কাজ নিল। এলিট শ্রেণীর গরীব সাজা। দ্বিতীয় ইনভেস্টিগেশনে মেয়ের স্কুলভর্তি পাকা। টাকা লাগবে। ইরফান আর সাবা তো খুশিতে আত্মহারা তাই টাকার ব্যাপার আমলে নিল না। কিন্তু সোমের মাথায় ব্যাপারটা ছিল। গরীব এত টাকা কই পাবে?আাবারো ব্যাপারটা ইনভেস্টিগেটরের সামনে সোম নিজে সামলিয়ে নিল।রাতের আধাঁরে ইরফান গেল বুথ থেকে টাকা তুলতে আর সোম বুথে ইরফানকে দেখে ভাবল টাকা চুরি করতে এসেছে মেয়ের ভর্তির জন্য।ইরফানও নিজেকে প্রকাশ করতে ইচ্ছুক না তাই আর টাকা তুললো না।
বস্তির বন্ধু ইরফানকে বুঝিয়ে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ করে বন্ধু রাস্তায় একটি গাড়ির সামনে ঝাঁপ।গাড়ি থামিয়ে সাহেব বেরিয়ে আসতেই সাহেবকে ব্ল্যাকমেইল করে বেশ কিছু টাকা হাতিয়ে নিয়ে ইরফানের হাতে তুলে দিল।আর বলল গরীবের টাকার ব্যবস্থা এইভাবেই হয়।ইরফানের মেয়ে ভর্তি হল শহরের নামি স্কুলে। কিন্তু এই সো কলড গরীবের মেয়ের জন্য বাদ পরলো বস্তির বন্ধুর ছেলে।ভর্তি হতে হল সরকারী স্কুলে, যেখানে বসার টেবিল চেয়ারও নেই। ইরফানের খুব অপরাধবোধ হচ্ছিল। অপরাধবোধ থেকে সে সরকারী স্কুলের চেহারা বদলিয়ে দিল নিজের টাকাই সবার অজান্তে। সত্য কি আর চাপা থাকে। সোমপ্রকাশ সব জানতে পারল। গরীব ভেবে যার জন্য এতকিছু করলো তার জন্য আজ নিজের ছেলে সরকারী স্কুলে। ইরফানের অপরাধবোধ আরো বেড়ে গেল। সরকারী স্কুল সরেজমিনে দেখার সময় একটি প্রতিভাবান গানের টীম ছিল সরকারী স্কুলের। আর সামনে আসছে নিজের মেয়ের নামী স্কুলের ওরিয়েন্টশন প্রোগ্রাম। অভিভাবকরা আমন্ত্রিত। সেই সরকারী স্কুলের গানের টীমকে নামী স্কুলের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে নামী স্কুলের পোশাক পরিয়ে প্রেজেন্টেশনের ব্যবস্থা করলো ইরফান। ইরফানের উদ্দেশ্য অপরাধবোধ থেকে মুক্তি। প্রোগ্রামের শুরুতেই গানের টীমের প্রেজেন্টেশন। সবাই অবাক হয়ে করতালি দিচ্ছে।ইরফান উঠে আসলো স্টেজে। পরিচয় করিয়ে দিল গানের টীমের সাথে।সবাই চুপসে গেল একটু । পঁচা সরকারী স্কুল!!!
ইরফান তার মেয়ের ভর্তিযুদ্ধটা তুলে ধরলো সবার সামনে। তার কনসেপ্ট ছিল একজন ফ্রেঞ্চ বা একজন জার্মানি ভুলভাল ইংরেজি বললে সেটা কিছু নই, কিন্তু একজন ইন্ডিয়ান ভুল ইংরেজি বললেই তার জীবনটাই বৃথা।
সর্বশেষে ইরফান তার মেয়েকে এই স্কুলে পড়াবে না।তার মেয়ে সরকারী স্কুলেই পড়বে।
( এই ট্রেন্ড শুধু ইন্ডিয়াতে নয়। আমাদের দেশেও এই পোকা গ্রাস করেছে। একটা কথা আছে।
English is an language,
it's not a major of intelligence)
বি:দ্র:- কষ্ট করে অগোছালো লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
২| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৭:৫৪
হালুম মামা৯৯ বলেছেন: তাহলে এইবার ইরফান খানের "MADAARI"দেখে ফেলতে পারেন।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৫৪
আল-শাহ্রিয়ার বলেছেন: মুভিটি এবারের ঈদে বাসায় গিয়ে দেখেছিলাম। সুধুমাত্র পাকিস্তানী সুন্দরী অভিনেত্রীর জন্যই মুভিটি দেখতে বসেছিলাম। তবে মুভি শেষে ইরফান খানের অভিনয় আর কাহিনীর জন্য মুগ্ধ না হয়ে পানি নাই। ২৮ কোটি টাকা খরচ করে একশ কোটি ইনকাম করেছে মুভিটি। কিন্তু নিঃসন্দেহে আরও বেশি সারা পাওয়া উচিৎ ছিল মুভিটির। অনেক দিন পর আমার দেখা মৌলিক হিন্দি সিনেমা যা কল্পনা নয় বাস্তব থেকেই রচিত হয়েছে।