নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হালুম !

গন্তব্য দিগ্বলয়ে। ... এই বদ্ধ শহর থেকে অনেক দূরে।

রক্তাক্ত পিপীলিকা

অনিয়মিত ।

রক্তাক্ত পিপীলিকা › বিস্তারিত পোস্টঃ

মৌমাছি - তুমি সন্ত্রাসী

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:২৩

মৌমাছি মধু সংগ্রহ করে মৌচাকে ফিরে আসে। পরদিন আবার মধুর জন্য বের হয়। বোরিং, একটু ভিন্নতা দরকার। এডভেঞ্চার দরকার। একটা ইট ছুড়ে মারলাম মৌচাকে। ঝাক ঝাক মৌমাছি উড়ে আসল, হুল ফুটাল। ব্যাস, মৌমাছি-দের সন্ত্রাসী প্রাণী বলে চিহ্নিত করলাম। মৌমাছির একমাত্র কাজ মধু সংগ্রহ করা। মৌমাছি তাঁদের কাজে একনিষ্ট। সুতরাং মৌমাছি মৌলবাদী। মিডিয়া আমাদের, আইন আমাদের। প্রচার কর, যত পার। আমজনতা শুনল, বুঝল এবং মেনে নিল মৌমাছি সন্ত্রাসী। মৌমাছি মৌলবাদী। এখন থেকে মৌমাছিকে বয়কট কবর। মৌমাছির মা-বাপ নিয়ে গালিগালাজ করব। মৌমাছির নীতি, বিশ্বাস নিয়ে ঠাট্টা করব।

মৌমাছি আর যাই হোক, একটা নির্বোধ প্রাণী। সে কেন বুঝে না, তাকে রাগানোই তাঁদের উদ্দেশ্য। মৌমাছি রাগবে, হুল ফুটাবে। তাঁরা তা প্রচার করবে। তাঁদের নামের সাথে সন্ত্রাসী, মৌলবাদ, জঙ্গিবাদের তকমা লাগিয়ে দিবে। আজ হউক, কাল হউক কিংবা এক হাজার বছর পরে হউক তাঁরা সেকুলারিজম প্রতিষ্টা করবে। আর তাঁর পেছনে আজকের এই সন্ত্রাসীদের পরোক্ষ ভূমিকা থাকবে।

কোন বিশ্বাসকে পৃথিবীর বুক থেকে সরিয়ে দিতে হলে প্রয়োজন ঐ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করা। তাতে খুব একটা কাজ হবে না। সম্পূর্ণ সফলতার জন্য প্রয়োজন ঐ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে বাস্তব উদাহরণ দাঁড় করানো। এই চেষ্টা অনেক আগে থেকেই চলছে। টুইন টাওয়ার হামলা হল। দোষ চাপল তাঁদের ওপর যারা কিনা স্বয়ং আক্রান্ত রাষ্ট্রের সৃষ্টি। ১৯৮০ থেকে ১৯৯৪ সালের এই সময়ের মধ্যে আফগানিস্তানে একটি সশস্ত্র বাহিনী তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ৫৩ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছিল। আফগানিস্তানের বাচ্চাদের শেখানো হল ‘টি’তে ‘টুফাঙ (বন্দুক- জাবেদ বন্দুক হাতে মুজাহিদিনে যুক্ত হয়) এবং ‘জে’তে জিহাদ। এমনকি গণনা শেখানোর সময় ৫ বন্দুক + ৫ বন্দুক = ১০ বন্দুক। সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কোন কোন অস্ত্র ব্যবহার করলে সফলতা আসবে এমন তথ্যও অনায়াসে দেয়া হয়েছিল সেসময় পাঠ্যপুস্তকগুলোতে। ফক্স টেলিভিশনের এক সাক্ষাতকারে এই তথ্য দিয়েছেন স্বয়ং সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন।

জেট বিমানের আঘাতের ফলে সৃষ্ট অত্যন্ত তাপে স্টীল স্ট্রাকচার ফেইল করে। একটা ফ্লোর আরেকটার উপরে ভেঙ্গে পড়ে আর এভাবেই নাকি টুইন টাওয়ার ধ্বংস হয়। কিন্তু জেট ফুয়েলে সৃষ্ট আগুনে তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২০০০ ডিগ্রী ফারেনহাইট হতে পারে, আর স্টীল স্ট্রাকচার ভেঙ্গে পড়তে হলে দরকার কমপক্ষে ৩০০০ ডিগ্রী তাপমাত্রা। আবার বিল্ডিং-৭ ভেঙ্গে পড়ল কেন, যাতে গোয়েন্দা সংস্থার অনেকগুলো অফিস এবং ওয়াল স্ট্রীটের বিভিন্ন কেলেঙ্কারির তদন্ত রিপোর্ট রক্ষিত ছিল। এটাতে ত কোন বিমান আঘাত করেনি। ৯/১১ তে যে তিনটি বিল্ডিং ভেঙ্গে পড়েছিল, সেগুলোর দায়িত্বে ছিল জেব বুশ - জর্জ বুশের ছোট ভাই। হামলার মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই ঐ তিনটি বিল্ডিং-এর নিরাপত্তার জন্য প্রায় সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলারের ইন্সুরেন্স করা হয়েছিল, যার মধ্যে সন্ত্রাসী হামলার একটা বিশেষ ধারাও যুক্ত করা হয়। বিল্ডিং ধ্বংসের পরে সন্ত্রাসী হামলা এই দাবী দেখিয়ে আদালতের রায়ে জেব বুশ আট বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ নিয়েছিলেন। এসব প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই একটা নির্দিষ্ট গোষ্টীর ওপর দোষ চাপানো হল। হত্যযজ্ঞ চালানো হল। নারী, শিশু পর্যন্ত বাদ যায় নি নিরখাদকদের থাবা থেকে।

তারা বলে নো গড, আমরা বলি নো গড বাট গড। এই বাট গড -এর পার্থক্য। আর তাতেই এত হানাহানি, হিংসা, বিদ্বেষ। তাঁরা শান্তি চায় না, হিংসা চায়, রক্ত চায়। কিন্তু আমাদের নির্বোধ হলে হবে না। অস্ত্র দিয়ে তাঁদের কথার জবাব যারা দেয়, তাদের বিরুধীতা করতে হবে। কথার জবাবে কথা। তাঁরা নিজেদের যুক্তিবাদী বলে, মুক্তমনা বলে। কিন্তু একজন মানুষের প্রতি নন্যুতম যে সম্মানটুকু দেখানো দরকার, তা তাঁরা দেখায় না। নবী-রাসুল অন্য ধর্মের মনীষীদেরদের নিয়ে যত বাজে ভাষা ব্যবহার করা যায়, তাঁরা তা করে। তারা বারট্রান্ড রাসেল মানে কিন্তু আইনস্টাইনের 'বিজ্ঞানহীন ধর্ম অন্ধ আর ধর্ম ছাড়া বিজ্ঞান খুড়া' উক্তিটি ভূলে যায়।

জানি জাকির নায়েক শতকে একটাই জন্মায়। যে যুক্তি দিয়ে তাঁদের কুযুক্তিকে প্রতিহত করবে। তবে আমাদের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। অস্ত্র দিয়ে নয়, যুক্তি দিয়ে তাঁদের কুযুক্তি খন্ডন করব। বিশ্ব আইএসকে ঘৃণা করে কিন্তু ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলে। কারণ একটাই- মানুষ নিজে যতই পাশবিক হউক, অন্যের ওপর ঘটে যাওয়া পাশবিকতা সহ্য করে না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.