![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সামিউল আলম রাজন হত্যার ভিডিও বের হওয়ার পর এখন একে একে বের হয়ে আসতেছে শিশু নির্যাতনের অন্যসব ঘটনাগুলো। চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখাচ্ছে আমরা কতটা পৈচাশিক!
তবু সিলেটবাসীর প্রতিবাদী অবস্থান নেয়ায় চার দিনের মাথায় খুনিদের একজন গ্রেফতার হয়েছে। বাকি চারজনের দুই জন আটক। সংশ্লিষ্ট বাকিদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া অব্যহত আছে। ঢাকাতে তিনমাস আগে নিজাম উদ্দিন নামে এক শিশুকে চুরির অভিযোগে হত্যা করা হয়। আঘাত সহ্য করতে করতে যখন শিশুর শেষ নিশ্বাস নেওয়ার মত অবস্থা তখন পানি খেতে চাইলে হাত পা বাধা অবস্থায় শিশুটিকে পুকুরে ফেলা দেয় বর্বরা। বিকৃত উল্লাস আর অট্ট হাসি দিচ্ছিল উপস্থিত জনতা। কারো মায়া জাগে নি নিজামের প্রতি। নিজাম মারা যায়। পুরো ঘটনা ভিডিও করা হয়। নিজামের বাবা-মা মামলা করেছেন। তিনমাসেও দোষীরা আটক হয় নাই। তবে সিআইডির দাবি ভিডিও দেখে দোষীদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁদের গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলছে।
সূত্রঃ সময় টিভি।
দেশে শিশু নির্যাতন বাড়ছে বলা কতটুকু যৌক্তিক হবে জানি না, তবে রাজন হত্যার পর এই শিশু নির্যাতন গুলো আলোচিত হচ্ছে, বলা চলে। নোয়াখালীতে অন্য এক শিশুকে বেধে পেটানো হয়েছে। অন্য এক খবরে দেখলাম দুই বাচ্চা মেয়েকে পেটাচ্ছেন বয়স্ক এক লোক।
বিচার চাই! এক শব্দে, এক কথায় শেষ করে দায় সারা যায়। অনেকে প্রতিবাদ করবেন, লিখবেন, আন্দোলন করবেন। শিশু নির্যাতন প্রতিরোধের ব্যাপারে সচেতন করবেন। তাঁদের সবার জন্যই রইল শ্রদ্ধা।
তবে আমি বিচার চাই এক, দুই শব্দ লিখার আগে খুব খুব করে প্রার্থনা করি আমার দ্বারা যেন এমন ঘটনা না ঘটে। আমার উপস্থিতিতে এমন ঘটনা ঘটলে যেন তাঁর বাধা দেওয়ার শক্তি দেন আল্লাহ্। এখন এই প্রার্থনাটুকু যেন খুব দরকার। কেননা আমাদের চারপাশে এসব ঘটনা এত বেশি বেশি ঘটছে অথচ শুধু ঘটনা ঘটার পরই আমরা জানছি, খানিকটা প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
প্রতিবাদী জনতাদের নিয়ে কেউ হাসবেন, সামাজিক যোগাযোগ সাইটে লিখলে ‘ইস্যু পাইছে’ বলে মসকরা করবেন। ভাবখানা এমন যেন সামাজিক যোগাযোগের সাইটে বসে কত গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাদ দিয়ে শিশু নির্যাতন প্রতিরোধের ব্যাপারে লিখা পড়া মসকরা কারীদের জন্য বেশ বিরক্তিকর! তাঁরচেয়ে বরং ‘মজনু তুমি কই’ ‘লাইলী তুমি আসো’ লিখা এবং পড়াটা তাঁদের জন্য অনেক দরকারী। থাক, যে যার মত নিয়ে।
আপাতত শুধু এইটাই প্রার্থনা অন্তত এই পৈচাশিকতা যেন কোনদিন কোনভাবেই আমার দ্বারা না ঘটে। কোনভাবেই যেন আমার উপস্থিতিতে না ঘটে। এবং খুব করেই চাই, সবাই এখন এই প্রার্থনাটুকু করুক, সিলেটে ছেলে মারছে, সিলেটের দোষ! ঢাকায় মারছে, ঢাকার দোষ! চট্টগ্রামে মরছে, ওদের দোষ! এসব কাদা ছোড়াছোড়ি বাদ দিয়ে সবাই ব্যক্তিগত ভাবে প্রার্থনা করি নিজে এমন ঘটনার জন্য যেন প্রত্যক্ষ ভাবে দায়ী না হই।
এবং অব্যশই বিচার চাই। দৃষ্টন্তমূলক বিচার হলে, খুনিরা শাস্তি পেলে অনাকাঙ্ক্ষিত এমন ঘটনা অনেকাংশে হ্রাস পাবে নিঃসন্দেহে। আইনরক্ষাকারী বাহিনীদের আরো দায়িত্বশীল হতেই হবে। মাস যায়, বছর যায় খুনি ধরা পড়ে না। আবার ধরা পড়লে বিচার হয় না। টাকার জোরে খুনি ছাড়া পায়। ‘পুলিশে টাকা খাইয়া চোর চাইড়া দিবে’ এই ধারণা থেকে জনতার আইন নিজের হাতে তুলে নিতে যেয়ে পৈচাশিক আচরণ করেন। আইনী বাহিনীদের তাই দায়িত্বশীল হতে হবে আরো অনেক গুণে। দু-চারটা কৃতিত্ব দেখিয়ে এত এত দায়িত্ব অবহেলা তাঁরা এড়াতে পারেন না।
সাথে সাথে আমাদের প্রতিবাদের পাশাপাশি প্রার্থনা এবং সংকল্পবদ্ধ হতেই হবে, আমাদের উপস্থিতিতে যেন এমন পৈচাশিকতা না ঘটে। নাহ, অন্য কাউকে উপদেশ বা অনুরোধ না, নিজেই প্রার্থনা এবং সংকল্পব্ধ হই – এমন পৈচাশিকতার দায়ভার, কোন রাজন হত্যার দায়ভার, কোন নিজাম হত্যার দায়ভার যেন প্রত্যক্ষ ভাবে আমার উপর কোন সময়, কোনভাবেই না বর্তায়। হত্যার ঘটনা ঘটার পর প্রতিবাদ করার পূর্বেই যাতে হত্যারকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো যায়।
©somewhere in net ltd.