নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অদৃশ্য চয়ন

অদৃশ্য এক ভুবনে আপনাকে স্বাগতম

বাংলার পথিক

যা মাথায় আসে তাই লেখি

বাংলার পথিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

লিমন ট্রাজেডি অব বাংলাদেশ ( সংক্ষিপ্ত আকারে ) পুরো ঘটনা জানুন ।

০৩ রা জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪২

লিমন ট্রাজেডি নিয়ে বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে নিজের মন থেকেই একটা খারাপ লাগা অনুভব করলাম এই ছেলেটি আর এর পরিবারের জন্য । ২ বছর ধরে কত ঝড় না পার করে এসেছে এরা । ২৩ মার্চের প্রকৃত ঘটনাটি কোনদিনও কি জানতে পাড়বো আমরা !!!!!! কারণ দুই পক্ষই তাদের নিজের অবস্থায় অটল !!!



২৩ মার্চ,২০১১ – সন্ত্রাসী মোরশেদ জমাদ্দার তার দলবল নিয়ে রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে পুরোনো জমাদ্দারহাট শহীদ জমাদ্দারের বাড়িতে বৈঠক করছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব সেখানে অভিযান চালায়। র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা র‌্যাবের ওপর গুলিবর্ষণ করে, র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। গুলিবিনিময়ের একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থলে লিমনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। তার পাশেই পাওয়া যায় আমেরিকার তৈরি একটি পিস্তল ও একটি গুলির খোসা।

লিমনের বক্তব্য ছিল আমি মাঠে গরু আনতে গেছিলাম । র‍্যাবের সদস্যরা তাঁকে দেখে ধরে পায়ে গুলি করে । র‍্যাবও পাল্টা বলেছিল বন্দুকযুদ্ধ করে সরকারি কাজেও বাধা দিয়েছে লিমন। কিন্তু ব্যাপারটা স্পষ্ট ছিল না ।



৬ এপ্রিল, ২০১১ – প্রথম আলোতে চরম নিষ্ঠুরতা শিরোনামে তুলে ধরা হয় লিমনের বক্তব্য আমি লেখাপড়ার খরচ চালানোর জন্য ইটভাটায় কাজ করছি। মানুষের কাছ থেকে জামাকাপড় চেয়ে নিয়ে কলেজে যাই। র‌্যাব কোনো কথা না শুনেই আমার পায়ে গুলি করে বলল, “তুই সন্ত্রাসী”।



১ এপ্রিল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা ছিল কিন্তু সে তখন ছিল ঢাকার একটা পঙ্গু হাসপাতালে । তাঁর বা পা টি কেটে ফেলা হয়েছিল ।



৭ এপ্রিল, ২০১১ – মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান দেখতে যান লিমনকে । তাঁকে দেখে র‍্যাবের নির্যাতনের কথা বলতে গিয়ে পঙ্গু হাসপাতালের বিছানায় কান্নায় ভেঙে পড়ে লিমন। তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো উপযুক্ত কথা খুঁজে পাচ্ছিলেন না জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান। কেঁদে ফেলেন তিনিও। একটু পরে নিজেকে সামলে নিয়ে বলেন, মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আপনি এখনই, এই মুহূর্তে এ ঘটনা তদন্তে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করুন। খুঁজে বের করুন, কে সেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, যে এভাবে অস্ত্র প্রয়োগ করে একটি ছোট ছেলেকে পঙ্গু করে…। তিনি নিজেও অনেক আবেগে ছিলেন ।



ঠিক ঐ দিন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু বলেছেন,লিমনের ঘটনায় প্রয়োজন হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তদন্ত কমিটি করা হবে। তবে র‍্যাবের নিজস্ব বিভাগীয় তদন্ত দল রয়েছে, তারাও তদন্ত করতে পারে।



৯ এপ্রিল, ২০১১ - প্রথম আলোয় ‘চরম নিষ্ঠুরতা’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটিকে অসত্য, কল্পনাপ্রসূত ও বিভ্রান্তিমূলক উল্লেখ করে র‌্যাব সদর দপ্তর বক্তব্য দিয়েছে। র‌্যাবের ব্যাখ্যায় বলা হয়, ‘র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করেছে’ বলে যে তথ্যটি প্রকাশিত হয়েছে, তা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও কাল্পনিক।



এ বিষয়ে র‌্যাবের বক্তব্যের পাশাপাশি প্রথম আলোর বক্তব্যও তুলে ধরা হলো।



র‌্যাবের বক্তব্য: গত ২৩ মার্চ দিনের বেলায় র‌্যাবের দুটি বিশেষ অভিযান দল ১৮টি মামলার আসামি এবং ৯০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী মোরশেদ জমাদ্দারকে গ্রেপ্তারের জন্য তাঁর গোপন আস্তানায় অভিযান চালায়। মোরশেদের বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে চারদিকে ধানখেতঘেরা একটি কলাবাগানে ওই আস্তানা। ওই কলাবাগানে যাওয়ার কোনো নির্দিষ্ট পথ নেই। খালের পাড় ধরে হেঁটে বাঁশের বেড়া টপকিয়ে সেখানে যেতে হয়। ওই দিনের অভিযানে দলের অগ্রগামী সাদা পোশাকধারী র‌্যাবের দুজন সদস্য মোরশেদের আস্তানায় ঢুকলে লিমনসহ কয়েকজন সন্ত্রাসী এগিয়ে এসে র‌্যাব সদস্যদের গতি রোধ করে তাঁদের ভেতরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় র‌্যাব সদস্যদের সন্দেহ হলে তাঁরা নিজেদের পরিচয় দেন। এর মধ্যেই পেছনে ইউনিফর্ম পরিহিত অভিযান দলের অপর সদস্যরা এগিয়ে আসেন। এ সময় ওই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য র‌্যাব সদস্যদের ওপর গুলি চালায়। তখনই র‌্যাব সদস্যরাও কিছু দূরে অবস্থান নিয়ে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের জন্য এবং আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালান। পরে গুলিবিনিময় থেমে গেলে আহত অবস্থায় লিমনকে আটক এবং ঘটনাস্থল থেকে গুলিভর্তি আগ্নেয়াস্ত্র, রামদাসহ দেশীয় ধারালো অস্ত্র প্রকাশ্য দিবালোকে উদ্ধার করা হয়। তবে লিমন কার গুলিতে আহত হয়, তা তাৎক্ষণিকভাবে নিরূপণ করা যায়নি।



প্রথম আলোর বক্তব্য: প্রকাশিত প্রতিবেদনে প্রথম আলোর নিজস্ব কোনো বক্তব্য বা তথ্য ছিল না। ভুক্তভোগী লিমন, তার পরিবার, এলাকাবাসী যাঁরা ঘটনাটি দেখেছেন, যাঁরা লিমন হোসেনকে লেখাপড়া ও কাজের সূত্রে জানেন, তাঁদের অভিযোগ এবং র‌্যাবের অভিযানকারী দলের প্রধান, র‌্যাব ৮-এর কমান্ডার, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার বক্তব্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছিল। ফলে প্রতিবেদনে অভিযোগ ও অভিযোগের জবাব দুই-ই ছিল এবং এর মাধ্যমে ঘটনাটির একটা চিত্র পাওয়া যায়। ফলে প্রকাশিত সংবাদকে অসত্য, কল্পনাপ্রসূত ও বিভ্রান্তিমূলক বলার সুযোগ নেই।



১০ এপ্রিল, ২০১১ – হেনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে তাঁর ছেলে লিমনকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় বরিশাল র‌্যাব-৮-এর উপসহকারী পরিচালক লুৎফর রহমানসহ র‌্যাবের ছয় সদস্যের বিরুদ্ধে নালিশি অভিযোগ দায়ের করেন



১১ এপ্রিল, ২০১১ – র‌্যাবের মহাপরিচালক মোখলেছুর রহমান বলেছেন, ‘র‌্যাব মোরশেদ জমাদ্দারকে ধরতে গিয়েছিল। ওই সময় এই ছেলেটি (লিমন) গুলিবিদ্ধ হয়। সে ওই ঘটনার শিকার হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে।



১২ এপ্রিল, ২০১১ -স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু জানান, ঝালকাঠির লিমনের ঘটনা তদন্তে পাঁচটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। তিনি বলেছেন, অন্যায়কারী যে-ই হোক তাকে ক্ষমা করা হবে না। এ জন্য লিমনের ঘটনাকে বিভিন্নভাবে তদন্ত করা হবে। তবে সরকার কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করবে কি না সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।



১৭ এপ্রিল, ২০১১ - আদালতের নির্দেশের সাত দিন পরও কলেজছাত্র লিমন হোসেন হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ঝালকাঠির রাজাপুর থানা পুলিশ মামলা রেকর্ড করেনি।



২১ এপ্রিল, ২০১১ – র‍্যাবের গুলিতে কলেজছাত্র লিমনের আহত হওয়ার ঘটনায় সংসদীয় তদন্ত কমিটি গঠনে বাধা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন। তাই শেষ পর্যন্ত কমিটি হয়নি। জাতীয় পার্টির সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু ওই ঘটনার ব্যাপারে উপকমিটি গঠনের প্রস্তাব দিলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন এর প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, এ ঘটনা নিয়ে এ পর্যন্ত ছয়টি তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তাই নতুন করে কোনো সংসদীয় কমিটি গঠনের প্রস্তাব অযৌক্তিক ।



২৩ এপ্রিল, ২০১১ – ঝালকাঠিতে র‌্যাবের গুলিতে আহত কলেজছাত্র লিমনকে সন্ত্রাসী বানানোর চেষ্টা চলছে বলে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় ।



২৭ এপ্রিল, ২০১১ - অস্ত্র আইনে দায়ের করা র‌্যাবের মামলায় কলেজছাত্র লিমন হোসেনের নামে অতি গোপনে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয় ।



২৮ এপ্রিল, ২০১১ - পা হারানো সেই লিমন র‍্যাবের পর এবার পুলিশের ‘নিষ্ঠুরতার’ শিকার হলো। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে র‍্যাবের করা মামলায় পুলিশ অভিযোগপত্র দিয়েছে। অভিযোগপত্রে র্যাবের গুলিতে পঙ্গু হওয়া এইচএসসি পরীক্ষার্থী লিমনকে ‘সন্ত্রাসী মোর্শেদের সহযোগী’ ও অপ্রাপ্তবয়স্ক উল্লেখ করে কিশোর অপরাধ আইনে বিচারের জন্য আবেদন করেছে পুলিশ



২৯ এপ্রিল, ২০১১ – র‌্যাবের নিষ্ঠুরতার শিকার লিমনের বিরুদ্ধে ‘সাজানো’ মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। লিমনের পক্ষে আইনি লড়াইয়ের ঘোষণা মানবাধিকার কমিশনের ।



১লা মে,২০১১ – লিমন হত্যাচেষ্টা মামলায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। মামলার আসামি র‌্যাবের ছয় সদস্য স্বাভাবিক দায়িত্ব পালন করছেন। র‌্যাবের পক্ষ থেকেও আসামিদের ব্যাপারে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি



১৯ মে,২০১১ - প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন ডেকে বলেন, লিমন সন্ত্রাসী বাহিনীর সঙ্গে জড়িত। এমনকি তার বাবাও সন্ত্রাসী মোরশেদ জমাদ্দারের বাহিনীর সঙ্গে জড়িত।পরে প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসনবিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিরক্ষা উপদেষ্টার বক্তব্য সরকারেরই বক্তব্য।



২৩ মে,২০১১ - ঢাকায় সদর দপ্তরে র‍্যাবের এক সংবাদ সম্মেলনে লিমন ও তার বাবার পাশাপাশি তার মা ও কলেজপড়ুয়া বোনকেও সন্ত্রাসী বলা হয়।ওই সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার এম সোহায়েল বলেছেন, লিমনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা নিয়ে গঠিত র‍্যাবের দুটিসহ চারটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন তাঁদের হাতে এসেছে। সেসব তদন্তে লিমনের পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করার কোনো প্রমাণ মেলেনি। সন্ত্রাসী মোরশেদ জমাদ্দার বাহিনীর সঙ্গে র্যাবের গোলাগুলির সময় মোরশেদের সহযোগী লিমনও গুলিবিদ্ধ হয়।



১ এপ্রিল,২০১২ - র‌্যাবের গুলিতে পা হারানো ঝালকাঠির লিমন অবশেষে এইচএসসি পরিক্ষায় অংশ নেয় ।



৭ জুন,২০১১ – স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ “ঝালকাঠির কলেজছাত্র লিমন হোসেনের পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে র‍্যাব গুলি করেনি। সন্ত্রাসীদের সঙ্গে র‍্যাবের গোলাগুলিতে লিমন আহত হয়েছে “



সুলতানা কামালের প্রতিক্রিয়া-‘কার বা কোন অস্ত্রের গুলিতে লিমন আহত হলো, যদি সেটা বের করতে না পারে, তাহলে কমিটি কী তদন্ত করল? আর সেখানে যে বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে, সেটারই বা কী আলামত তারা পেল, তা আমরা জানতে চাই। কোথাও কোনো বন্দুকযুদ্ধ হলে, তার আশপাশের এলাকার সব মানুষ জানতে পারে, সেখানে বহু আলামত থাকে। এখন তো তথ্য অধিকার আইন হয়েছে। সবার জানার অধিকার রয়েছে, তদন্ত কমিটি কিসের ভিত্তিতে বলল, সেখানে বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে। সেটা প্রকাশ করা হোক।’



তারপর ১ বছর লিমন ট্র্যাজেডি নিয়ে তেমন কোন কথা হয়নি । মনে হয় চুপসে গেছে ঘটনাটি



১ জুলাই,২০১২ - র‌্যাবের কাজে বাধাদান এবং র‌্যাব সদস্যদের গুলি ও খুনের অভিযোগ এনে লিমনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয় ।



৯ জুলাই,২০১২ – র‌্যাবের করা সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার মামলায় কলেজছাত্র লিমনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ।



১১ জুলাই,২০১২ - জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘লিমনের ব্যাপারে আমরা শেষ দেখে ছাড়ব। নিম্ন আদালতে যাব, দরকার হলে উচ্চ আদালতেও যাব, দরকার হলে আমি নিজে অনশনে বসব। বৈধভাবে যা কিছু করা সম্ভব, তা-ই করে দেশের মানুষের বিবেক জাগ্রত করে তুলব। অবিলম্বে লিমনের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিন ।



১২ জুলাই,২০১২ - র‌্যাবের গুলিতে পঙ্গু হওয়া ঝালকাঠির কিশোর লিমন হোসেনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানায় হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ।



১৫ আগষ্ট, ২০১২ - র‌্যাবের কথিত বন্দুকযুদ্ধে পঙ্গু ঝালকাঠীর কলেজছাত্র লিমন হোসেন হত্যাচেষ্টার মামলায় র‌্যাবের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পায়নি পুলিশ।তদন্তে র‌্যাবের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।



১৭ আগষ্ট, ২০১২ - প্রথম আলোর “লিমন কি বিচার পাবে না? ” নামে একটি রিপোর্ট প্রকাশ । প্রশ্ন ছিল তাদের, তরুণ লিমন হোসেন তাহলে কী করে পঙ্গু হলো? এর জন্য দায়ী কে? হেনোয়ারা বেগমের করা অভিযোগ থেকে র‌্যাবের ছয় সদস্যকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করেছে রাজাপুর থানার পুলিশ; তাহলে লিমনকে কারা গুলি করেছিল—এই প্রশ্নের উত্তর কীভাবে পাওয়া যাবে?



১৮ আগষ্ট, ২০১২ - র‌্যাবের গুলিতে পা হারানো ঝালকাঠির কলেজছাত্র লিমন হোসেন ও তার মায়ের ওপর ঈদের দিন ‘র‌্যাবের সোর্স’ ও তার লোকজনের হামলায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি সরকারপ্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উদ্যোগে লিমন ও তার পরিবারের নিরাপত্তা দান, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং লিমন ও তার পরিবারের সদস্যদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানায় ।



২৩ আগষ্ট,২০১২ - র‌্যাবের গুলিতে পা হারানো ঝালকাঠির কলেজছাত্র লিমন হোসেনের মা হেনোয়ারা বেগম, বাবা তোফাজ্জেল হোসেন, বড় ভাই হেমায়েত হোসেনসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা করে র‌্যাবের সোর্স ইব্রাহীম হাওলাদার।মামলার আরজিতে ইব্রাহীম হাওলাদার অভিযোগ করেন, ২০ আগস্ট ঈদের দিন বিকেলে রাজাপুরের সাতুরিয়া ফোরকানিয়া মাদ্রাসার সামনে লিমনের পরিবার তাঁর ওপর হামলা চালায়। এ খবর পেয়ে ফোরকান হাওলাদার বাড়ি থেকে ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা হন। পথে লিমনের মা-বাবা ও ভাই এবং অন্য আসামিরা তাঁকে মারধর করলে তাঁর মৃত্যু হয়।তবে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রগুলো জানায়, ঈদের দিন বিকেলে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে ঈদ উদযাপন শেষে পিরোজপুরের কাউখালীতে ফিরছিল লিমন। এ সময় তাকে এগিয়ে দিচ্ছিলেন তার মাসহ আরও কয়েকজন নিকটাত্মীয়। পথে রাজাপুরের ইঁদুরবাড়ি সেতুর কাছে লিমন ও তার মা হেনোয়ারা বেগমের ওপর হামলা করেন ইব্রাহীম হাওলাদার। লিমনের বিরুদ্ধে র‌্যাবের করা অস্ত্র মামলার অন্যতম সাক্ষী এই ইব্রাহীম। পরে লিমনের মাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।



২৪ আগষ্ট,২০১২ - “কী অপেক্ষা করছে লিমন ও তার পরিবারের সদস্যদের জন্য” বাংলা নিউজ ২৪ এর এই প্রতিবেদনে বলা হয় এখন শুধু একটি ময়না তদন্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষা। লিমনের জন্য এ অপেক্ষার প্রহর বড় যন্ত্রণার। কারণ, ঈদের দিন সোমবার (২০ আগস্ট) রাজাপুরের সাতুরিয়ায় র‌্যাবের সোর্স ইব্রাহিমের শ্যালক ফোরকান হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বলে জানিয়েছিলেন এলাকাবাসী। এদিকে, রাজাপুর থানার ওসি তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ফোরকানের লাশের ময়না তদন্ত প্রতিবেদন দুই/একদিনের মধ্যে পাওয়া যাবে। যদি ময়না তদন্তের প্রতিবেদনে হত্যার আলামত পাওয়া যায়, তাহলে গ্রেফতার করা হবে লিমনের মা-বাবা ও ভাইসহ স্বজনদের ।



২৭ আগষ্ট,২০১২ - র‌্যারেব গুলিতে পা হারানো ঝালকাঠির লিমন, তার মা ও ভাইয়ের ওপর ঈদের দিন র‌্যারেব সোর্স হিসেবে পরিচিত ইব্রাহিম হাওলাদারের হামলার অভিযোগ সঠিক বলে প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ।



র‌্যাবের গুলিতে লিমন হোসেনের পা হারানো এবং তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান এই কথা জানান ।



৩০ আগষ্ট,২০১২ - লিমনকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার মামলা থেকে র‌্যাবের ছয় সদস্যকে অব্যাহতি দিয়ে পুলিশি তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি আবেদন করেন লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম।



ঝালকাঠির রাজাপুর থানার দুই উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শফিকুল ইসলাম ও মো. আ. হালিম। র‌্যাবের নিষ্ঠুরতার শিকার পঙ্গু লিমনের ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে দায়ের করা দুটি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন তাঁরা। লিমন ট্র্যাজেডি নিয়ে পরস্পরবিরোধী প্রতিবেদন তারা জমা দেন ।



৩১ আগষ্ট,২০১২ - র‌্যাবের গুলিতে পঙ্গু কলেজছাত্র লিমনের মা-বাবা, ভাইসহ ১০ জনের নামে দায়ের করা হত্যা মামলার আদেশ সংশোধন করেন আদালত। রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদেশ সংশোধন করা হয়। লিমন ও তার পরিবারের ওপর হামলার পর র‌্যাবের সোর্সখ্যাত ইব্রাহীম হাওলাদার নালিশি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন। আদেশ সংশোধনের ফলে আপাতত এ হত্যা মামলা থানায় লিপিবদ্ধ হয়নি তখন ।



২ সেপ্টেম্বর, ২০১২ - লিমন হোসেন আবার লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করেন। তার পরিবারের বিরুদ্ধে ইব্রাহিম হাওলাদারের দায়ের করা হত্যা মামলাটি থানায় রেকর্ড না করতে ঝালকাঠির আদালত নির্দেশ দিয়েছেন। এতে লিমনের পরিবারের সদস্যরা গ্রেফতার আতঙ্ক থেকে মুক্ত হন। স্বস্তি ফিরে পায় কলেজ ছাত্র লিমন ।



১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১২ - লিমনের বিরুদ্ধে র‌্যাবে দায়ের করে অস্ত্র মামলা ।



১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১২ - র‌্যাবের কথিত বন্দুকযুদ্ধে পা হারানো লিমনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অস্ত্র মামলার চার্জ গঠনের শুনানি ২৮ জানুয়ারি,২০১৩ তে ধার্য করা হয় ।



১৮ অক্টোবর ২০১২ - ঝালকাঠি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সরকারি কাজে বাধা দেয়া মামলায় লিমনকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেয় আদালত। এ মামলার পরবর্তী তারিখ ১২ ডিসেম্বর ধার্য করা হয়।



৩০ অক্টোবর ২০১২ - লিমনকে আপসের প্রস্তাব দেন ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক অশোক কুমার বিশ্বাস। প্রস্তাবটি হলো, লিমন হত্যাচেষ্টা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে তার মা হেনোয়ারা বেগমকে নারাজি আবেদন প্রত্যাহার করতে হবে। বিনিময়ে লিমনের বিরুদ্ধে র‌্যাবের করা দুটি মামলা প্রত্যাহারের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করবেন জেলা প্রশাসক।



১ নভেম্বর ২০১২ - লিমনকে দেয়া ঝালকাঠির জেলা প্রশাসকের আপোষের প্রস্তাবকে প্রহসন ও দূরভিসন্ধিমূলক বলে আখ্যায়িত করে এর প্রতিবাদ জানায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।এক বিবৃতিতে টিআইবি এ ধরনের অবস্থান থেকে সরে এসে নির্যাতিত লিমনের ন্যায় বিচার নিশ্চিত ও তার মায়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারেরও দাবি জানায়। একই সঙ্গে র‍্যাবের কারণে পঙ্গু লিমনের অধিকার হরণের চেষ্টাকারী সংশ্লিষ্ট সকলকে বিচারের আওতায় আনা ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায় সংস্থাটি ।



২ নভেম্বর ২০১২ - র‌্যাবের কথিত বন্দুকযুদ্ধে পঙ্গু লিমন হোসেনের মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না তার পরিবার। র‌্যাবের বিরুদ্ধে করা মামলা তুলে নিতে জেলা প্রশাসকের দেয়া প্রস্তাবের ব্যাপারে জানতে চাইলে লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম বলেন, আইন ও সালিশ কেন্দ্রসহ মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সাহায্যে লিমনকে নিয়ে তিনি এতদূর আসতে পেরেছেন। এ ব্যাপারে তিনি তাদের ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না ।



৯ নভেম্বর ২০১২ - র‌্যাবের গুলিতে পা হারানো ঝালকাঠির রাজাপুরের কলেজছাত্র লিমন হোসেনের মা হেনোয়ারা বেগম, বাবা তোফাজ্জেল হোসেন ও ভাই হেমায়েত হোসেন সুমনসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করে ফোরকান হাওলাদারকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে দায়ের মামলার তদন্তে ফোরকানের মৃত্যুকে ‘স্বাভাবিক‘ বলে উল্লেখ করে পুলিশ । এর ফলে, মামলায় লিমনসহ তার পরিবারের সদস্যরা নির্দোষ হিসেবে প্রমাণিত হন ।



৭ মে ২০১৩ - সরকারি কাজে বাধাদানের মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয় গত বছরের ১ জুলাই। এ অভিযোগপত্র আদালত আমলে নেন। ৩০ মে মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।



অস্ত্র মামলা থেকে লিমনের অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করা হয়। এই আবেদন ও অভিযোগ গঠনের জন্য ২৯ মে শুনানির দিন ধার্য আছে।



২৯ মে,২০১৩ - প্রথম আলোর অবলম্বনে “লিমন যেন এক সংশপ্তক, যিনি অঙ্গহারা হয়েও এক পায়েই চালাচ্ছেন জীবন ও অধিকারের সংগ্রাম। লিমনের এই সংগ্রাম এক পায়ে এভারেস্ট জয়ের থেকেও কঠিন। র‌্যাব-পুলিশের মামলা চলছে তাঁর বিরুদ্ধে, তাঁর বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে রাষ্ট্র-প্রশাসন। লিমন যেন বিপন্ন বাংলাদেশের মুমূর্ষু মানবতা। লিমন জিতলে মানবতা জিতবে, লিমন হারলে হারবে বাংলাদেশ।”



২৩ জুন,২০১৩ - জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান লিমন ও তাঁর মা-বাবাকে ডেকে র‌্যাবের সঙ্গে আপস-মীমাংসার প্রস্তাব দেন। সেটা সফল হয়নি ।

২ জুলাই,২০১৩ - অস্ত্র মামলায় অভিযোগ এনে র‍্যাবের গুলিতে পঙ্গু লিমনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা বিচারের জন্য ঝালকাঠির মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৮ আগস্ট মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে। সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে এ মামলাটিও র‌্যাব করেছে।



লিমনের আইনজীবী মানিক আচার্য এই বিষয়ে বলেন,এই প্রস্তাব সফল না হবার কারণে এই আরো মামলার পরিমাণ বেড়ে গেছে ।



এই হচ্ছে লিমন । যে হয়তো বেঁচে থাকত আমাদের মত করে । কিন্তু সে আজ কাতরাচ্ছে এক পা হারিয়ে । তবু সে সগ্রামী । সে বাঁচতে চায় সমাজের বাকি সব ছেলে-মেয়েদের মত করে । ঘটনার দুই বছর পরও সেই সন্ত্রাসীকে বা তাদের বাহিনীর কাউকে র‌্যাব গ্রেপ্তার দেখাতে পারেনি। অথচ গুলিতে পা চলে গেল সে সময়ের ১৬ বছর বয়সী কিশোর লিমনের । পা তো গেছে এবার মরার উপর খারার ঘা বৈ কী । শুধু শুধু মামলার তারিখ পরিবর্তন করে আর হয়রান করার মানে হয়না । ২ বছর পেড়িয়ে গেছে আর এগুতে দিয়া যায়না । জাতি এই ট্রাজেডি এর ফলাফল দেখতে চায় । মামলা সুষ্ঠভাবে চালানোর স্বার্থে আমরা কিছু বলতে পারিনা তবে মানবতার স্বার্থে বলতে পারি সময়ের এক ফোড় আর অসময়ের ১০ ফোড় । সুতরাং সময় থাকতেই যত দ্রুত সম্ভব এই মামলার রায় ঘোষণা সচ্ছ ভাবে করা হোক । আর তারিখ পেছানো দেখতে চাই না । মামলা সুষ্ঠভাবে চলার দোহাই দিয়ে আর পিছানো দেখতে চাইনা ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.