নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি জাতিস্মর। সপ্তমবার মানব জন্ম। অষ্টমবার মানব জন্ম নিয়ে আবার পৃথিবীর বুকে ফিরবো। সীতারাম নন্দী(১ম), কৃষ্ণকান্ত নন্দী(২য়),কাশিমবাজার রাজা কৃষ্ণনাথ রায়(৩য়),বিজয়কৃষ্ণদুলাল পাল(৪র্থ),হরিদাস মুখার্জী(৫ম),রমেশ সাহা(৬ষ্ঠ),প্রদীপ হালদার(৭ম)।

প্রদীপ হালদার

আমি জাতিস্মর। সপ্তমবার মানব জন্ম, অষ্টমবার মানব জন্ম নিয়ে আবার পৃথিবীর বুকে ফিরবো। সীতারাম নন্দী(১ম), কৃষ্ণকান্ত নন্দী(২য়),কাশিমবাজার রাজা কৃষ্ণনাথ রায়(৩য়),বিজয়কৃষ্ণদুলাল পাল(৪র্থ),হরিদাস মুখার্জী(৫ম),রমেশ সাহা(৬ষ্ঠ),প্রদীপ হালদার(৭ম)।

প্রদীপ হালদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাণী ভবানী

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:১৬

রাণী ভবানী

আমি বুঝতে পারি নি, আমি আমার স্মৃতির এত গভীরে চলে যাবো। আজ দুদিন হলো,স্মৃতিতে থাকা সেই ঘটনার কথা আমাকে আবার মনে করিয়ে দিলো। ওয়ারেন হেস্টিংসের সময়ের ঘটনা। কলকাতায় আমি ওয়ারেন হেস্টিংসের অফিসে ছিলাম। সন্ধ্যাবেলায় আমি অফিসের বাইরে ছিলাম। আমার সহকর্মীরা আমাকে জানালো,"ওয়ারেন হেস্টিংস আমাকে নাকি জমিদারির দায়িত্ব দেবে।" আমি বললাম,"কোথাকার জমিদার?" একজন বললো, "কোথাকার জমিদারের দায়িত্ব তোমাকে দেবে,সেটা নিয়ে ওয়ারেন হেস্টিংস আলোচনা করছে।" একজন আমার কাছে এসে বললো,"কৃষ্ণকান্ত, তোমাকে রংপুরের জমিদারের দায়িত্ব দেবে।" আমি বললাল, "রংপুর কেন,ওখানকার জমিদার কে?" সহকর্মীটি আমাকে বললো, "রংপুরের বর্তমান জমিদার একজন বিধবা ব্রাহ্মণ মহিলা।" আমি বললাম,"তার জমিদার আমাকে দেবে কেন?" উত্তরে আমাকে জানালো-"ঐ বিধবা মহিলা পঞ্চাশ হাজার টাকা রাজকোষে জমা দেয়। অথচ ওখানে আয় অনেক বেশী হয়।" আমি বললাম,"বিধবার সম্পত্তি আমি নিতে পারবো না। বরং ঐ বিধবা মহিলাকে বলে দেবো যাতে সে বেশী টাকা রাজকোষে জমা দেয়।" সহকর্মীরা বললো,"তোমার কথা কি ওয়ারেন হেস্টিংস শুনবে?" আমি জানতাম,"ওয়ারেন হেস্টিংস যেটা করবে বলেছে,সেটা সে করবেই।" তবুও আমি একবা্র ওয়ারেন হেস্টিংসের সামনে গেলাম। বললাম,"স্যার,আমাকে রংপুরের জমিদার দেবেন না, আমি বিধবার সম্পত্তি নিতে পারবো না।" আমার কথা শুনে হেস্টিংস বললো, "কান্ত,আমি যখন তোমাকে দেবো বলেছি তখন তোমাকে নিতেই হবে,আমি তোমার কোন কথাই শুনবো না।" হেস্টিংসকে আমি আর না বলতে পারলাম না। ঘরে এসে আমি সারারাত ঘুমাতে পারি নি। আমাকে অন্য জমিদারের ব্যবস্থা করতে পারতো। পরের দিন আমি ওয়ারেন হেস্টিংসকে বললাম," স্যার রংপুরের বাহারবন্দের জমিদারের দায়িত্ব আমাকে দেবেন না, আমি নিতে পারবো না, আমার সারারাত ঘুম হয় নি।" হেস্টিংস বললেন- " কান্ত,আমি যখন ঠিক করেছি,তখন তোমাকেই বাহারবন্দের সম্পত্তি নিতে হবে,তোমার কোন অজুহাত আমি শুনবো না।" আমি বললাম,"স্যার,বাহারবন্দের সম্পত্তি আমাকে না দিয়ে অন্য কাউকে দিন,আমি বিধবার সম্পত্তি নিতে পারবো না। ওয়ারেন হেস্টিংস বললেন, "কান্ত, সম্পত্তি তোমাকেই নিতে হবে, আমি তোমার কোন কথাই শুনবো না।" আমি নিরুপায় হয়ে ওয়ারেন হেস্টিংসকে বললাম," স্যার,সম্পত্তি যখন দেবেন,তখন আমি নিজের নামে নিতে পারবো না, অন্য নামে সম্পত্তি দিন।" বললাম," যে কোন নামে।" হেস্টিংস বললেন, "কান্ত,যে কোন নামে নিতে পারো,কিন্তু সেই নামে কোন লোক তোমার বাড়িতে থাকতে হবে।" "তাহলে আমার ভাইয়ের নামে দিন" হেস্টিংস জানালেন,"তোমার ভাইয়ের নামে দিতে পারবো না। অন্য নাম বলো" বললাম,"আমার পুত্র লোকনাথের নামে দিন।" "তাই হবে।" আমি বললাম,"স্যার আমার ছেলের বয়স মাত্র এগারো বছর।" ওয়ারেন হেস্টিংস বললেন," কান্ত,বাহারবন্দ তোমাকে নিতেই হবে, তা তুমি যে নামেই নাও,তাতে আমার কোন আপত্তি নেই।" আমার পুত্র লোকনাথের নামেই রংপুরের বাহারবন্দের জমিদারের দায়িত্ব নিলাম। রংপুরের বাহারবন্দ জমিদারের দায়িত্ব পুত্রের নামে আমি নিলাম। ১৭৭৫ খ্রীস্টাব্দে ওয়ারেন হেস্টিংস রাণী ভবানীর নিকট থেকে বাহারবন্দ নিয়ে আমার পুত্র লোকনাথ নন্দীকে ইজারা দিলেন। আমি এমন সম্পত্তি নিতে চাই নি। হেস্টিংসকে বলেছিলাম,"এমন সম্পত্তি আমি চাই নে। বিধবার সম্পত্তি বিধবার কাছে থাকুক।" আমার কথা হেস্টিংস শোনেন নি। তখন আমার পুত্র লোকনাথের বয়স ছিল মাত্র এগারো বছর। হেস্টিংস আমাকে বাহারবন্দ প্রদান করলেন বটে, কিন্তু ওখানকার প্রজারা আমাকে কর প্রদান করতে স্বীকৃত হলো না। আমি হেস্টিংসকে জানালাম, "বাহারবন্দের প্রজারা আমাকে কর দিচ্ছে না।" হেস্টিংস আমার কথা শুনে রংপুরের কালেক্টর গুডল্যাডসাহেবকে আমার ব্যাপারে জানালেন। আমি ১৭৮৩ খ্রীস্টাব্দে বাহারবন্দ পরিদর্শনে গেলাম। আমি ঘোড়ায় চড়ে বাহারবন্দ পরিদর্শন করছিলাম। সকালবেলা। চাষীরা ক্ষেতে ছিল। চাষীরা আমাকে দেখতে পেয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করলো আর বললো-"আপনি বিধবার সম্পত্তি কেড়ে নিয়েছেন, রাণী ভবানীর সম্পত্তি কেড়ে নিয়েছেন, আমরা আপনাকে কোন খাজনা দেবো না,আপনি চলে যান।" অনেকের হাতে লাঠি ছিল। আমি ঘোড়ার পিঠে ছিলাম। হঠাৎ কোথা থেকে একটা লোক ঘোড়ায় চড়ে আমার কাছে এলো আর আমাকে জিজ্ঞাসা করলো, "তুমি কৃষ্ণকান্ত নন্দী না?" আমি বললাম, "হ্যাঁ,তুমি কি করে জানলে?" উত্তরে সে আমাকে বললো,"সে দেবী সিংহ। আমার কথা সে এইমাত্র, কালেক্টর গুডল্যাডসাহেবের মুখ থেকে শুনেছে,আমি বিপদে পড়েছি বলে কালেক্টর সাহেব তাকে আমার কাছে পাঠিয়েছে আমাকে উদ্ধারের জন্যে।" দেবী সিংহ প্রজাদেরকে বোঝালো। প্রজারা চুপ হলো। দেবী সিংহ সেদিন আমাকে রক্ষা করেছিল। নইলে সেই মুহূর্তে আমি প্রাণ নিয়ে ফিরে আসতে পারতাম না। কেননা সব প্রজারা লাঠি হাতে আমাকে ঘিরে ধরে রেখেছিল। আমি দেবী সিংহকে বললাম, " তুমি আমার প্রাণ রক্ষা করেছো,তোমাকে অশেষ ধন্যবাদ।" আমি দেবী সিংহকে বললাম," একবার রাণী ভবানির সাথে দেখা করবো।" নাটোরে রাণী ভবানীর প্রাসাদে গেলাম। একজন বৃদ্ধা বিধবা ব্রাহ্মণ মহিলা আমার সামনে উপস্থিত হলো। আমার জন্য দুপুরবেলার খাবারের ব্যবস্থা করলো। আমি দেখলাম,মহিলা খুবই শান্ত প্রকৃতির। তাকে ছেড়ে চলে যাবার সময় বললাম, "তোমার সম্পত্তি আমি চাই নি। ওয়ারেন হেস্টিংসকে বুঝিয়েছিলাম। আমি জানি না,কেন হেস্টিংস তোমার সম্পত্তি আমাকে দিলো?" ভবানী আমাকে বললো," কান্ত তোমার কোন দোষ নেই। হেস্টিংস কেন আমাকে পছন্দ করলো না তাতো জানি না।" আমি বললাম,"এখন তোমার কি করে চলে?" আমাকে বললো, "সামান্য যা কিছু আছে তাই দিয়ে চলে যায় আর প্রজারা আমাকে দেখে।" আমি বললাম, "ভবানী, আমি কি বাহারবন্দের খাজনা দিয়ে তোমাকে সাহায্য করবো?" ভবানী বললো," না, কৃষ্ণকান্ত, প্রজাদের খাজনা তুমি তোমার ওয়ারেন হেস্টিংসকে দিও। আমার কিছু চাই নে। আমি আর কদিন বাঁচবো বলো,শুধু প্রজাদের কথা ভাবি, তারা কি করে বাঁচবে, তবে একবার ইচ্ছা ছিল ওয়ারেন হেস্টিংসের সাথে দেখা করে বলবো, আমাকে কেন বাদ দেওয়া হলো, কি ছিল আমার অপরাধ?" আমি ভবানীকে কথা দিলাম, "আমি এই ব্যাপারে হেস্টিংসকে জিজ্ঞাসা করবো।" আমি বিকালে ভবানীর বাড়ী থেকে বের হলাম। আমি ভাবলাম, "পঞ্চাশ হাজার টাকা রাজকোষে জমা দিলে বাকি টাকা নিয়ে ভবানী কি করতো? নিজের জন্যে ভবানী তো কিছু করে নি। তাহলে সেদিন আমার সহকর্মীরা মিথ্যা কথা বলেছিল?" আজ আমি ভবানীর বাড়িতে ভবানীর সাথে কথা বলে বুঝলাম," তার ঘরে দারিদ্র্যের ছাপ রয়েছে।" পরে বাহারবন্দের প্রজারা আমাকে খাজনা দিতো। হেস্টিংসকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। কিন্তু কোন উত্তর পাই নি।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৩২

নিমগ্ন বলেছেন: দাদা গো, কেমন আছেন?

২| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৩১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: একা টানেতে যেমন তেমন
দুই টানেতে রোগী
তিন টানেতে রাজা উজির
চার টানেতে সূখী!

পাঁচ টানেতে মাটি ছেড়ে শূন্যে ওঠা যায়
ছয় টানেতে আকাশেতে ভেসে থাকা যায়..
(ভেসে যাবে,, ব ভেসে যাবে রে... )

সাত টানেতে তুমি হবে ব্রহ্মা বিষ্ণু কালি
আট টানেতে স্বর্গ নরক সবই পাবে খালি

দেখাব নাকি, খালি বলি দেখাব নাকি
নটানের কি মহিমা.. কি মহিমারে বাবা...

(একি একি এ যে সমুদ্র, চারিধারে সমুদ্র সব ভেসে গেল..)

সমুদ্র মন্থনে ওঠে অমৃতের ভান্ড
তাই নিয়ে দেবাসুরে তুলকালাম কান্ড
অমৃতেরই ছিটা পড়ে গজাল যে ঘাস
তাই নিয়ে পৃথিবীতে হলো গাজার চাষ ..
গজার চাষ রে দাদা গাজার চাষ.. দেখাব নাকি খালি বরি দেখাব নাকি)

সেই গাজা খেয়েই এদেশে কে? ;) হলেন মহা যোগী
দেখাব নাকি- খালি বলি দেখাব নাকি....

ন টানের কি মহিমারে বাবা!!!!

;)

৩| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৩২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: শুধূ পড়ে মন না ভরলে..

সাথৈ ভিডিও লিংক

https://www.youtube.com/watch?v=nc2fBZ2IZ7s

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.