![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যেদিন তুমি এসেছিলে ভবে কেদেছিলে তুমি আর হেসেছিল সবেএমন জীবন করো হে গঠনমরনে হাসিবে তুমি কাদিবে ভুবন
ছোট বেলায় এক হকারের মুখে কিছু কিছু বাঙ্গালীর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে একটি গল্প শুনেছিলাম। সেদিন গল্পটার মম না বুঝলেও আজ বেশ বুঝতে পারছি। গল্পটা ছিল এমন- ‘রাস্তার পাশে এক বাড়ীর সদর দরজার সামনে অনেক মানুষের ভীর। ইতিমধ্যে একটি এ্যাম্বুলেন্স আনা হয়েছে একজন রোগীকে হাসপাতালে নেয়ার জন্য। এসময় এক বৃদ্ধ পথচারী রাস্তায় চলার সময় লোকজনের ভীর দেখে উৎসাহিত হয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে এখানে এত লোকের জটলার কারণ জানতে চাইলেন এজনের কাছে। বৃদ্ধ বললেন. “এখানে কি হয়েছে”। তখন সেই ব্যক্তি বৃদ্ধকে বললেন, “ডেলিভেরী কেস”। লেখাপড়া না জানা বৃদ্ধ ডেলিভেরী কেস কি তা না জেনেই বলল, “ এই কেস খুব খারাপ, আমার বাবাও এই কেসে মারা গেছে”।’ সুপ্রিয় পাঠক, দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমাদের দেশে কতিপয় মানুষ রয়েছেন যারা না বুঝেই আন্দাজে ঢিল ছুড়ে মারেন। গত কয়েক দিনে দেশের অনেক সনামধন্য টেলিভিশন চ্যানেলে এমন কথা সমাজে প্রতিষ্ঠিত বুদ্ধিজীবিদের মুখে শোনা যাচ্ছে।
কথা বলছি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জে অবস্থিত রংপুর চিনিকলের জমি দখলমুক্ত করাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মিডিয়ার ভূমিকা এই এলাকার জনসাধারণকে চরমভাবে ক্ষুব্ধ করেছে। প্রকৃত ঘটনা না জেনেই তথাকথিত মিডিয়া ও সুশীল সমাজের ধ্বজাধারী টকশো’র বুদ্ধিজীবিরা অযথা বিরক্তিকর বকবক করছেন। যদি কোন অনেকেই নানা কথা বলেছেন কিন্তু প্রকৃত ঘটনাটি কি কেউ জানেন? জানেন না। চিনিকলের সরকারী জমি সাঁওতালরা জোরপূর্বক দখল করেছিল। তাদের দাবী ১৯৫৬-৫৭ সালে তাদের জমি সরকার অধিগ্রহণ করে। শর্ত ছিল কোন দিন সেখানে আখ চাষ না করা হলে জমির মালিকদের জমি ফেরত দেয়া হবে। কিন্তু তাদের এ দাবী সম্পূর্ণ মিথ্যা। এরকম কোন শর্ত ছিল না এবং এখনও তার কোন প্রমাণ নেই। বিবাদমান সাহেবগঞ্জ খামার এলাকায় ৯০% বাঙ্গালী ও ১০% সাঁওতাল সম্প্রদায়ের জমি ছিল। তারা সরকারী জমি সন্ত্রাসী কায়দায় জবরদখল করে সেখানে ‘বাহিরের লোকের প্রবেশ নিষেধ’ লিখে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো সেখানে সরকারী চিনিকলের কার্যক্রমে তারা বাঁধা প্রদান করে।
বহু মানুষকে তারা মারপিট করেছে, তাদের ছোড়া তীর বিদ্ধ হয়ে ৯ পুলিশ সহ বহু মানুষ আহত হয়েছে। কিন্তু এদেশের কতিপয় মিডিয়া তথ্য সন্ত্রাসের মাধ্যমে ঘটনাটিকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা করছে। আমি নিজেও ওই ঘটনার সময় সাংবাদিক হিসেবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম। সেদিন কোন প্রাণহানী হয়নি। পর দিন একজনের মৃত্যু হয় দিনাজপুর মেডিকেলে এবং তার পর দিন একজনের লাশ ধানক্ষেতে পাওয়া যায়। তারা কেউ এই এলাকার মানুষ নন। অন্য জেলা থেকে জমি দখল করতে এসেছিল। এ অবস্থায় তথাকথিত সুশীল সমাজ ও দালাল মিডিয়া তথ্য সন্ত্রাসের মাধ্যমে এই এলাকার লাখ লাখ মানুষের অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে। মানুষ সবাই মিথ্যাবাদী নয়। তাই এখানে আসুন। প্রকৃত ঘটনা দেখুন। এখানকার সকল স্তরের মানুষের সাথে কথা বলুন। প্রকৃত ঘটনা বেড়িয়ে আসবে। অযথা সত্য চাপা না দিয়ে সত্যকে জানুন। আমরাও সাঁওতাল সম্প্রদায়ের প্রতি সহানুভূতিশীল। কিন্তু দেশের আইনকে অগ্রাহ্য করে কেউ সরকারী সম্পত্তি জবরদখল করবে এবং সরকারী কর্মচারীদের উপর হামলা করে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করবে এটা মেনে নেয়া যায় না।
©somewhere in net ltd.