![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
--- : শর্ত প্রযোজ্য : ---
"আপনি কোথায় যাবেন ?"
খুব হচকিয়ে গিয়েই পাল্টা প্রশ্ন করেছিলাম মেয়েটিকে ! - - আমাকে বলছেন ?
সোবহানবাগের সিগন্যাল পার হবার ঠিক রাস্তার মোড়টায় একটা সাদা নিশান গাড়ী হঠাতই আমার পাশে এসে দাড়ায়, গাড়ীর গ্লাসটি নামিয়ে মেয়েটি আমাকে প্রশ্নটি করে।
"হ্যা, আপনাকেই তো বলছি, কোথায় যাবেন আপনি ?"
কোনরকম নিজেকে সামলে তোতলাতে তোতলাতে উত্তর দিলাম - এই তো সামনে
"সামনে মানে কোথায় ?"
অস্ফুট স্বরে আবারো উত্তর দিলাম - এই তো সামনেই
"কিছু মনে না করলে আমি আপনাকে নামিয়ে দিতে পারি" কথাগুলো থেমে থেমে খুব শান্ত গলায় মেয়েটি আমাকে বলল, এমনভাবে বললো যেন মনে হল না জেনেও অনেক চেনা
এরকম একটা কথা এভাবে শুনবো যা পুরোপুরিই অপ্রত্যাশিত ছিলা আমার জন্য; চেনা না জানা না এমন একজন গাড়ি থামিয়ে আমাকে বলছে সে আমাকে নামিয়ে দিবে ? তাও আবার একজন মেয়ে ?
সাদা গ্যাবাটিন, বাদামী জুতা আর লালচে একটা শার্ট, এই কম্বিনেশনেই বেশী পছন্দ করি, শার্টটা যদিও একটু ক্যাজুয়াল টাইপের তবু এভাবেই অফিসে আসতে ভাল লাগে। পান্থপথ থেকে শুক্রাবাদ তারপর সোজা শ্যামলী, প্রতিদিনকার অফিস ফেরার রাস্তা আমার। হাঁটতে হাঁটতে সাদা রং-এর হেডফোন'টা কানে লাগিয়ে কোন না কোন গানে মগ্ন হয়ে হাঁটতে হাঁটতে পথ চলি। রাস্তায় এপাশ ওপাশে কতশত গাড়ী আর মানুষের আনাগোনা। চোখ খোলা রেখে সবকটা গাড়ী আর মানুষকে দেখতে দেখতেই চলতে থাকি।
মেয়েটিকে খুব কৌতুহলী দেখাচ্ছিলো, গাড়ীতে সে শুধু একাই নয়; একজন ড্রাইভারও ছিল। কিছুক্ষণ মেয়েটির দিকে তাকিয়ে রইলাম; অল্পক্ষণেই মেয়েটির মধ্যে একটা পার্থক্য বুঝতে পারলাম, গাড়ীতে চড়া মেয়েদের মত সে নয়, কোথাও তার চেহারায় একটা মায়া আছে, হয়তো সেটা চোখে নয়তো কথা বলার স্বরে। সত্যি বলতে অভিভূত হবারই মত যা অগ্রাহ্য করা সহজ নয়।
- অসুবিধে নেই আমি যেতে পারবো । নিজের কথাগুলো একটানা বলে গেলাম, সেটা হয়তো ভয় থেকে নয়তো অস্থিরতায়
"আমি জানি, কিন্তু চাইলে আপনাকে এগিয়ে দিতে পারি, এখানে কিছু মনে করবার নেই" - মেয়েটা খুব গুছিয়ে কথাগুলো বললো আর বলার ধরনটাও অনেক চেনা মনে হতে লাগলো।
"কি ব্যপার, দাড়িয়ে আছেন কেন ? উঠে পড়ুন !" কথাটি বলবার সাথে সাথেই গাড়ীর দরজাটা খুলে দিল মেয়েটি।
তাকিয়ে দেখি ব্যস্ত রাস্তায় পেছনের গাড়িগুলো অনবরত হর্ণ বাজিয়ে চলেছে, হেডফোনটা কান থেকে নামিয়ে গলার উপর ঝুলিয়ে গাড়ীতে উঠে পড়লাম।
"নিন, কপাল'টা মুছে ফেলুন" ড্রাইভারের হ্যান্ড গিয়ারের পাশে রাখা টিস্যু বক্স থেকে একটা টিস্যু বের করে মেয়েটি আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে কথাগুলো বলছিল ..
"আমি আপনাকে প্রতিদিনই দেখি, আপনি আমাকে চিনবেন না, আমিও চিনিনা, কিন্তু প্রতিদিন দেখতে দেখতে একপ্রকার চেনা হয়ে উঠেছেন"
কথাগুলো কেমন রোমান্টিক শোনাচ্ছিল, কিন্তু ভালও লাগছিল।
আমার চোখের উপর তাকিয়ে মেয়েটাকে বলতে শুনলাম "কি ব্যপার কিছু বলছেন না যে, আপনি কি ভয় পাচ্ছেন ?"
তখন বুঝলাম মেয়েটি আমার চোখের দিকে নয়, কপালের দিকে তাকিয়ে ছিল কারণ তার কথাগুলো ভাল লাগলেও বাস্তবে প্রচন্ড ভয় পেয়েছিলাম, একটা অপরিচিত মেয়ের সাথে আর তার গাড়ীতে
আমি কিছু বলছিনে দেখে মেয়েটা আপনা থেকেই শুরু করল "দেখুন আপনি যে পথে বাড়ী ফেরেন, আমিও একই পথে যাই, আপনি হয়তো খেয়াল করেননি কিংবা বেশ কিছুদিন আমাকে গাড়ীর ভেতর দেখেছেনও হয়তো ওভাবে খেয়াল করেন নি; কিন্তু মজার ব্যপার কি জানেন, আমি এভাবে প্রায় প্রতিদিনই আপনাকে দেখি, প্রতিদিনই দেখি আপনি এতটা পথ হাঁটতে হাঁটতে ফিরছেন, বিষয়টা আমাকে ভাবিয়েছিল, তাই একদিন ভাবলাম যেভাবেই হোক আপনার সাথে পরিচয় হবো, তাই ..."
মেয়েটার মুখে এই কথা শোনার পর, কি ভেবে মেয়েটাকে আরো একবার দেখে নিলাম, নিজের মনে নিজেকেই বললাম - কি আশ্চর্য, এমনই তো কল্পনা করেছি কতবার, আমি হেঁটে যাচ্ছি আর পাশ দিয়ে যাচ্ছে রাজকন্যা, তারপর কি ভেবে সেই রাজকন্যা আমার দিকে ফিরে আমাকে তার সাওয়ারী হতে বলল ..... তারপর ...
ঠিক সে সময় .............
এমন জোড়ে একটা হার্ড ব্রেক, সোজা কপালটা গিয়ে ধাক্কা খেল সামনের সিটে। চারিদিকে হৈ চৈ শুরু হয়ে গেল, একেকজন এ পাশ ও পাশ থেকে যে যার মত খিস্তি করতে লাগলো "ওই ড্রাইভার, তুই কি গাঞ্জা খাইছস ?" "ওই শালা, তোরে এক্কেরে পুইত্তা ফেলমু, গাড়ী চালাইতে পারসনা তয় স্টিয়ারিং ধরছস কেন ?" "ওই ভাই, ধরেন ওরে - একটা ধোলাই দেই" ঘটনা যখন বুঝতে পারছি তখন এও বুঝলাম কপালে ডান পাশটা বেশী জোড়ে আঘাত লাগায় ফুলে উঠেছে, বাস'টা তখন ধানমন্ডী ২৭ এর রাস্তার ঠিক মাঝখানে। সামনে থাকা বাসের সাথে ধাক্কা লাগিয়েছে।
চোখ খুলে বাইরে তাকাতেই কেমন অস্পষ্ট আর ঝাপসা লাগতে লাগলো, উঠেছিলাম পান্থপথের মোড় থেকে, শুধু এতটুকুন মনে আছে বাসটি অনেকক্ষণ জ্যামে আটকে ছিল কখন যে .....
কোনমতে চোখ খুলে আধো আধো চোখে জানলার বাইরে তাকাতেই চোখ ছানাবড়া, একি ? আমি কি দেখছি ! বাসটার পাশেই একটা সাদা নিশান গাড়ি দাড়িয়ে আছে আর সেই গাড়ীতে একটা মেয়ে, তাহলে এতক্ষন যে মেয়েটি ..... আমি তার পাশে বসা ..... এসব কিছু কি ?
আমি, মেয়ে, গাড়ী, বাস .. সবকিছুর আকষ্মিকতায় ফুলে যাওয়া কপালের ব্যাথাটাও ভূলে গেলাম।
২৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:১২
প্রচেত্য বলেছেন: ভাল বলেছেন, সত্যিই অনেক দূরত্ব !
২| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১০:৩০
স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:
এমন যদি হতো........ স্বপ্নগুলো স্বপ্ন হয়েই রয়।
২৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১১:০১
প্রচেত্য বলেছেন: স্বপ্ন তো স্বপ্নই ! স্বপ্নেই সব সম্ভব !
৩| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১২:৩৪
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: দিবাস্বপ্নের মূল্য চরম হয় আর আকস্মিক ।
ভালো থাকবেন
২৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১১:২২
প্রচেত্য বলেছেন: বাক্যটা খুবই উপলব্ধি এনে দেয় !
ধন্যবাদ
৪| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ ভোর ৫:০০
অপ্রতীয়মান বলেছেন: আপনার কল্পনার শাখা প্রশাখা তো মারাত্মক পর্যায়ের!! একেবারে পাশের গাড়ির মেয়েটাকেও নিয়ে এসেছে সেখানে
গল্পটা ভালো লেগেছে
২৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১১:২৪
প্রচেত্য বলেছেন: উৎসাহ পেলাম ! ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
৫| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ২:০১
কলমের কালি শেষ বলেছেন:
০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:২০
প্রচেত্য বলেছেন: ধন্যবাদ চিত্রায়িত মন্তব্যের জন্য
৬| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৪৪
মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: ভাল লাগল।
৭| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:১৬
সুমন কর বলেছেন: মোটামুটি লাগল ! শুভকামনা রইলো।
ভূলে>ভুলে
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৬
নুর ইসলাম রফিক বলেছেন:
সপ্ন আর বাস্তবতার দুরত্ত অনেক।