নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বর্গ-পৃথ্বী অন্তঃস্থলে, বহুকিছু ফিরে-চলে, যাহা বিস্ময়কর

প্রোফেসর শঙ্কু

বুড়ো ভগবান নুয়ে নুয়ে চলে ভুল বকে আর গাল দেয়

প্রোফেসর শঙ্কু › বিস্তারিত পোস্টঃ

মনস্তাত্ত্বিক গল্প: প্রেমিকের দিনলিপি

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৯

১৭ই মে



আমার মাথা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আজ বিকালে হঠাৎ একটা গান শুনে এত আনন্দ হতে লাগল, মনে হল এখন দাঁড়িয়ে কিছু না করলে, হাত নাড়িয়ে গান না গাইলে, না নাচলে হার্ট অ্যাটাক হয়ে মারা যাবো। বুকে তীব্র ব্যথা হতে লাগলো। তাড়াতাড়ি বিছানা থেকে নেমে উদ্দাম নাচা-কুদা শুরু করে দিলাম। না চোখে কিছু দেখছি, না কানে কিছু শুনছি। স্রেফ আনন্দ, বুকে তীব্র আনন্দের ব্যথা। দুর্বার দু-চার মিনিট বাদে বুকের ব্যথাটা চলে গেল, সেই সাথে সমুদ্রের পাগলা ঢেউয়ের মত, লাফানো ঘোড়ার মত আনন্দটাও ক্ষীণ হতে হতে নেই হয়ে গেল। আমি ধাতস্থ হয়ে বসে পড়লাম। তখনও হাঁপাচ্ছি। কি হল এটা?



সারাটা রাত চিন্তা করলাম। মাথা ঘুরতে লাগল। কিচ্ছু ভালো লাগছে না, কিচ্ছু না। বিছানা থেকে উঠছি, পায়চারি করছি, জানালার পরদা সরিয়ে বারবার বাইরে তাকাচ্ছি। নিজেকে পাগল পাগল মনে হচ্ছে। সোফায় বসে টিভি দেখলাম ঘণ্টাখানেক, তারপর লক্ষ্য করলাম এতক্ষণ টিভির কালো পর্দা দেখছিলাম। রাগে হাতের রিমোট ছুঁড়ে ফেললাম। দেয়ালে লেগে ব্যাটারি ছিটকে বেরোল। লাইটের আলো লেগে ঝিক করে উঠল। কি চকচকে! আশ্চর্য! এত চকচকে-ও হয় কোন কিছু! দুহাতে মাথার চুল চেপে ধরলাম। হয়, হয়। এরচেয়েও চকচকে হয়। বিশ্রী, জঘন্য, কিন্তু চকচকে। আর ধারালো, কচকচে ধারালো।



২০শে মে



ঘুম ভাঙতে নিজেকে কাঠের আলমারিটার ভেতরে আবিস্কার করলাম। অন্ধকার, চারকোণা খোপ। তাঁর মাঝে হাত পা গুটিয়ে পড়ে আছি। হৃদপিণ্ডটা দপদপিয়ে লাফাতে লাগলো। কাল রাতে মদ মুখেও তুলিনি। রুচি হয়নি। সারারাত এপাশ ওপাশ করতে করতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছি নিজেও জানি না। তাহলে কিভাবে এলাম এখানে?

হাত বাড়ালাম কবাটের দিকে। যাই হোক, আগে এ জায়গা থেকে বের হতে হবে। বাইরে থেকে ছিটকিনি আটকানো না তো! কিন্তু কে আটকাবে? বাড়িতে কেউ নেই, আমার ঘরের দরজাও আটকানো। যদি না, যদি না - কিন্তু তা কিভাবে হয়? ধাক্কা দিলাম, জোরে। ক্যাঁচ করে খুলে গেল। সকালের একফালি রোদ চোখ ধাঁধিয়ে দিল। হাতটা কাঁপছে। কেন মনে হচ্ছিল কখনো আমি খুলতে পারব না?



২৫শে মে



আজ দুপুরে আর একাকীত্ব সহ্য করতে পারলাম না। মার্কেটে গেলাম। এত মানুষ! হাত ভরে কেনাকাটা করলাম। সেলসম্যান জিনিসপাতি দেখে একটু ভুরু কুঁচকালো। প্রশ্ন করল, 'সার, নীল রংটা বোধহয় আপনার ফেভারিট, না?' আমি অবাক হলাম, 'কেন?'

'না, শার্ট, জিনস, পুলওভার, জ্যাকেট- সবই নীল তো, তাই বলছি।'

আমি কাপড়গুলোর দিকে তাকিয়ে একটা ধাক্কা খেলাম। প্রত্যেকটা কাপড় আলাদা আলাদা রং দেখে কিনেছি। শুধু জিনস নেভি ব্লু, আর সব অন্য রঙের। কিন্তু এখন দেখছি সবগুলো নীল, গাঢ় নীল। কি ব্যাপার?

'সার, এনি প্রবলেম?'

মাথা নেড়ে দাম মিটিয়ে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে এলাম। মাথাটা চরকির মত ঘুরছে। নীল- জিনাতের প্রিয় রং!



২৭শে মে



জিনাতের বিড়ালটা ফিরে এসেছে। কালো কুচকুচে বিড়াল, হলুদ চোখ। আমি কখনোই পছন্দ করিনি এমন লোমশ প্রাণীকে। সারা ঘর লোম ছড়াবে, পায়ে পায়ে ঘুরবে, আবার শোয়ার সময় বিছানায় উঠে বসে থাকবে। বিচ্ছিরি!

লাথ মেরে ঘরের বাইরে ফেলে দিয়েছি জন্তুটাকে। এখন দরজার সামনে ম্যাও ম্যাও করছে। নিশ্চিত ভেতরে ঢোকার ফন্দি খুঁজছে। লাভ নেই, জানলা সব বন্ধ করে দিয়েছি। কর যত চেঁচামেচি পারিস।



২৮শে মে



খোদা! চুপ করে না কেন শয়তানটা! সারারাত ঘুমাতে দেয় নি আমাকে। সারাক্ষণ ম্যাও ম্যাও ম্যাও- কত আর সহ্য করা যায়? রাতে লাঠি নিয়ে বেরিয়েছিলাম, হারামজাদার টিকিটির খোঁজ পেলাম না। বিছানায় শুতেই আবার ভাঙ্গা রেকর্ড বাজাতে শুরু করল। এভাবে চার পাঁচবার উঠিয়েছে আমাকে, বের হয়ে একবারও খুঁজে পাইনি। খোদার কসম, ধরতে পারলে শালাকে আমি জবাই করব। নেপালি চাকুটা টেবিলের ওপরেই রেখেছি। মারাত্মক ধার চাকুতে, মানুষের গলাই ফাঁক হয়ে যায়, আর ওটা তো হাড় জিরজিরে একটা বেড়াল মাত্র। এখন অপেক্ষা শুধু সঠিক সময়ের।



৩০শে মে



অবশেষে কুত্তাটাকে ধরেছি। পুরো একটা দিন দরজা খুলে তার পাশে লাঠি নিয়ে ঘাপটি মেরে বসে ছিলাম। সন্ধ্যার দিকে দেখি এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে বাঞ্চতটা ঘরের ভেতর ঢুকছে। দরজা পেরোতেই মাজার ওপর দিলাম এক বাড়ি। বিকট গলায় 'ম্যাওও' করে দৌড়ে পালাবার চেষ্টা করল। এবার লাঠি উঁচু করে বাড়ি মারলাম মাথায়। হয়ে গেল। সটান হাত পা ছড়িয়ে কাত হয়ে কার্পেটের ওপর পড়ল। কান দিয়ে রক্ত ক্ষীণধারায় পড়তে লাগল। দেখ দেখি! আমার অত দামি নীল পার্সিয়ান কারপেট, তাঁর ওপর কিনা রক্ত ফেলা? মাথা গরম হয়ে গেল। ভেবেছিলাম চাকু চালিয়ে কাজ সেরে দেব, কিন্তু এখন শালাকে এত সহজে মরতে দেয়া যায় না। খুঁজে-পেতে রান্নাঘরে একটা ছ'সাত হাত দড়ি পেলাম। নাইলন। সহজে ছিঁড়বে না। বেড়ালটা উঁচু করে দেখলাম বেশি ওজন না, ফ্যানের একটা পাখার গোড়ার দিকে বাঁধলে ওজন নিতে পারবে।



দড়ির একপ্রান্ত ওটার গলায় বাঁধলাম। কিন্তু ঝোলাব কোথায়? ড্রয়িংরুম, রান্নাঘর বাদ। গেস্টরুমে করা যাবে না, আবার কেউ এসে পড়লে ঝামেলা হবে। জিনাতের রুমে করা যায়, ছোটখাটো ঘর, পরিস্কার করতে টাইম লাগবে না। সেটাই ভাল হবে। 'তাই না পুশি?' বেড়ালটাকে জিজ্ঞেস করলাম। বেড়ালটা ঘোলাটে হলুদ চোখে তাকাল। তারপর বলল, 'ম্যাও'।



আচ্ছা, এত স্পর্ধা! এখনও তেজ কমে নি? দাঁড়া ব্যাটা, ঝোলাচ্ছি তোকে। একহাতে বেড়াল, আরেকহাতে দড়ি ধরে জিনাতের ঘরে ঢুকলাম, বিছানার ওপরে একটা চেয়ার রেখে বিছানাতেই দাঁড়ালাম। চেয়ারটা পুশির জন্যে। উফ! কদিন বদ্ধ থেকে ঘরে বিশ্রী গন্ধ ছুটেছে। এয়ার ফ্রেসনার কিনতে হবে। ফ্যানের পাখায় দড়ির অন্য প্রান্ত বাঁধতে সময় লাগলো না। পুশিকে চেয়ারে বসিয়ে বিছানা থেকে নামলাম। ঘর থেকে বেরিয়ে যাবার আগে ফ্যানের সুইচটা অন করে দরজা আটকে দিলাম।



ধ্যাত! ঘরটা যে ছোট, খেয়ালেই ছিল না। ঘরের দেয়ালে ধুপধাপ বাড়ি খাবার আওয়াজ আসছে, আর তাঁর সাথে বিকট ফ্যাসফ্যাসানি আওয়াজ আর হাঁপানি রোগীদের নিঃশ্বাস নেবার মত শব্দ। এমন শব্দ বেশিক্ষণ হলে বাড়িওলা নিশ্চিত ছুটে আসবে। তাড়াতাড়ি দরজা খুলে ফ্যান অফ করে দিলাম। ফ্যানের গতি কমে আসতেই গলার দড়ি খুলে গিয়ে বেড়ালটা জানলা দিয়ে নর্দমায় পড়ল। আমি দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ভুল। গলার গেরোটা চেক করা উচিত ছিল, করিনি, জানলাটাও আটকে দেই নি। তাও ভাল, নর্দমায় পড়েছে। অন্যখানে পড়লে আরেক আপদ হত।



এতক্ষণে ঘরের দিকে তাকালাম। আল্লা! রক্ত আর রক্ত! এতকিছু মুছব কি করে? বেড়ালটা উড়ে প্রথমে দেয়ালে গাঁথা একটা পেরেকে বাড়ি খেয়েছে, খুলির কিছু অংশ ছিটকে লেগে আছে সেখানে, এখনও দেয়াল বেয়ে মেঝেতে রক্ত পড়ছে। তারপর যেখানেই বাড়ি খেয়েছে, সেখানেই চিহ্নস্বরূপ রক্তের ছিটে লেগে আছে। ঘরের চার দেয়ালে রক্ত, মেঝেতে রক্ত, বিছানায় রক্ত। গন্ধটাও কেমন যেন কাঁচা, আঁশটে আঁশটে। মানুষের রক্তের মত কলকলে গন্ধওলা নয়। তা যে রক্তই হোক, মুছতে গেলে কষ্ট কম হয় না। এজন্যেই গরম মাথায় কিছু করতে হয় না। প্ল্যানটা তো নিখুঁত ছিল। বেড়াল ধরব, পলিথিনে ঢুকিয়ে গলা কাটব, তারপর পলিথিন ব্যাগের মুখ বেঁধে মাটিতে পুতে ফেলব। কোন ঝঞ্ঝাট নেই। মধ্যে থেকে পৃথিবীর বিরক্তিকর প্রাণী একটা কমত, সেই সাথে মাটির উর্বরাশক্তি বাড়ত। তা না হয়ে কি করলাম, এখন সারাদিন উবু হয়ে মোছামুছি কর, আর রাতে শুয়ে মাজা ধরে উঃ আঃ কর। যত্তসব!



দোসরা জুন



আমি এখন অনেকটা ভাল বোধ করছি। নিজেকে ব্যালান্সড মনে হচ্ছে। আগের অস্থিরতা কেটে যাচ্ছে। ঘরটাও ফিনাইল দিয়ে ধুয়েমুছে তকতকে করে ফেলেছি।

কিন্তু একটা ছোট্ট সমস্যা। গন্ধ।

রক্ত, লোম কিচ্ছু নেই, তবু আঁশটে গন্ধটা যাচ্ছে না। দুবার ধুয়ে দেখলাম বিশ্রী গন্ধটা তাড়ানো আমার কম্ম নয়। ভালমত ঘরটা আরেকবার পরীক্ষা করে জাহেদকে ডাকলাম। বাড়িওলার ছেলে। বললাম, 'জাহেদ, সুইপার-টুইপার বা কাজের লোক একটা কিছু ডেকে দাও তো। ঘরে বোধহয় ইঁদুর মরেছে। গন্ধে টিকতে পারছি না।'

জাহেদ বলল, 'তাই নাকি? চলেন তো দেখি।'

ওকে একতলায় ঘরে নিয়ে গেলাম। বললাম, 'গন্ধ পাচ্ছ না? আঁশটে টাইপের গন্ধ।'

জাহেদ কিছুক্ষণ ঘরের কোণে গিয়ে নাক টেনে নিঃশ্বাস নিল। তারপর ঠা ঠা করে হাসি।

'রাশেদভাই, আপনে যে কি তামাশা করেন! যারে কয় একেবারে প্রাকটিকাল জোকার।' আমার বিভ্রান্ত দৃষ্টি দেখে যোগ করল, 'ভাবিও নিশ্চিত আপনের কাজে তাল দিছে? নইলে ঘর এত ঝকঝকে হয় কেমনে। ফিনাইলের গন্ধ তো দশ হাত দূর থিকাও পাওয়া যায়। আপনেরা যে কি!'

আমি স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। নাকে গন্ধ লাগছে বলে আমি পকেটে ন্যাফথালিন নিয়ে ঘুরছি, তাও নাক কুঁচকে আছে। আর গর্দভটা বলে কিনা ফিনাইলের গন্ধ চারদিকে, আবার দাঁত বের করে কেমন হাসছে দ্যাখ। দেব নাকি ঝুলিয়ে এই শালাকেও?

থাকগে।

তাড়াতাড়ি একথা ওকথা বলে দূর করলাম অপদার্থটাকে। যাবার আগে জিনাতের কথা আবার জিগ্যেস করছিল। বললাম বাপের বাড়ি গেছে।

এখন ঘরে কিভাবে থাকি? না পেরে ড্রয়িংরুমের সোফাতে আশ্রয় নিলাম। রাতটা এখানেই বোধহয় কাটাতে হবে।





৪ঠা জুন



আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে আঁতকে উঠতে হল। সোফার কোণার কাছে লাল রক্ত! ঘুম পালাল চোখ থেকে। রক্ত আসে কোত্থেকে? আর গন্ধ। প্রচণ্ড বাজে একটা গন্ধ ভেসে আসছে নাকে ।

ধড়মড়িয়ে উঠে বসলাম। চোখ ডলে তাকালাম আবার। ঠিক, কোন ভুল নেই। ঘন লালচে রক্ত। সোফার কোণে থেবড়ে লেগে আছে।

কি মনে হতে আঙ্গুলে নিয়ে চাটলাম।

দুত্তোরি!

কাল রাতে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খেয়েছি, সস দিয়ে। কোনভাবে সেই সস লেগে গেছে সোফায়।

চারপাশে তাকিয়ে নাক টানলাম। হু, তবে গন্ধের বিষয়ে কোন ভুল নেই। বিশ্রী, লোম লোম গন্ধ। জিনাতের বজ্জাত বেড়ালটার গায়ের মত।

এবার উঠে পড়ে সারা বাসায় একটা চক্কর দিলাম। কিছু খুঁজে পেলাম না। কিন্তু গন্ধটা সারা বাড়িতেই ছড়িয়ে আছে। রান্নাঘরে, ড্রয়িং রুমে, আমার বেডরুমে।

ওহো, জিনাতের রুমটা দেখা হয়নি। আটকানোই পড়ে আছে।

দরজা খুললাম।

আশ্চর্য, পরিস্কার ফিনাইলের গন্ধ পাচ্ছি। উদ্ভট গন্ধটা উধাও।

মর্কটটা তাহলে ঠিক কথাই বলেছিল। ঘরে তো গন্ধটা নেই দেখছি। রাতে জিনাতের ঘরে থাকা যায়।

যাকগে, আজ অফিসে যাব। বিশ দিনের ছুটি তো শেষ হয়ে এল। এবার ব্যাক টু ওঅর্ক।



------



অফিস করে বেশ কাহিল লাগছিল। রিফ্রেসমেন্ট দরকার। কাপড়চোপড় ছেড়ে এসে ফ্রিজ খুললাম। চারটে ব্ল্যাক ডগের বোতল আছে এখনও। দুটো নিলাম। কতগুলো বার্গার আর চিকেন লেগ এনেছিলাম। এসব নিয়েই রাত কাটাই, রান্নার হাঙ্গামায় যেতে আর ইচ্ছে করছে না।

সব হাতভরে নিয়ে ঘরে ঢুকলাম।

ঘরে ঢুকতেই একটা মাইল্ড হার্ট অ্যাটাক হল বোধহয়।

বেড়ালটা, বিছানার ওপর আয়েশে শুয়ে আছে!

হলুদ দু'চোখে বিদ্বেষ নিয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে!

আমি প্রচণ্ড ঠাণ্ডা মাথার মানুষ। সহজে ঘাবড়াই না। সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে ফেললাম। নিজেকে অটো সাজেশন দিতে লাগলাম, 'আমি ভুল দেখছি, ভুল। ক্লান্ত মাথায় ঠিকমতো কাজ করছে না। তাই আবোল তাবোল দেখছি। আসলে বেড়ালটা নর্দমায় পড়ে আছে। ওটার ফাটা খুলি দিয়ে মগজ গলে গলে পড়ছে। হলুদ শাদা মগজ। থিরথির করে কাঁপতে কাঁপতে পড়ছে। আমি কেন, পৃথিবীর কাউকেই ভয় দেখানোর ক্ষমতা ওটার নেই...

ঠিক এক মিনিট পরে চোখ খুললাম। যা ভেবেছি তাই। বেড়ালের গুষ্টিও নেই। বিছানার ওপর কালো একটা ওড়না পড়ে আছে, ছোট ছোট গোল কাঁচ লাগান। হঠাৎ দেখে ঠাহর করতে পারিনি। ওড়নাকে ভেবেছি বেড়াল, কাঁচ কে ভেবেছি চোখ। হ্যালুসিনেশন আর কাকে বলে!

কিন্তু, ওড়না এখানে রাখল কে?



৫ই জুন



ভয়ঙ্কর বাজে লাগছে। রাতে চার পেগ খাবার পরে জ্ঞান ছিল না। এখন দেখছি দুই বোতল মেরে দিয়েছি। একটু আগে বিছানাতেই হড়হড়িয়ে বমি হল। মাথাব্যথা তো আছেই।

হ্যাঙওভার। আজ আর অফিসে যাওয়া হচ্ছে না।

প্রচণ্ড জোরে প্রস্রাবের বেগ পেয়েছে, কিন্তু শরীরে একটুও শক্তি পাচ্ছি না। কি আর করি, ছেড়ে দিলাম। গরম প্রস্রবণ উষ্ণ করে তুলল শরীরের নিচের অংশটা।

আরেকটু পরেই না হয় উঠি।

-------

দেয়ালে তাকিয়ে দেখলাম, বারটা পাঁচ বাজে। এত বাজল কি করে? দ্যুত! অফিসটা মিস হয়ে গেল। আড়মোড়া ভাঙতে গেলাম-

কি বিশ্রী, বিছানার ডানপাশে কেউ বমি করে রেখেছে! আরে, পেছনটাও ভেজা লাগছে। হাত লাগিয়ে শুঁকে দেখি- উঃহু! এসব কি! কোন বাঞ্চত মুতে রেখেছে এখানে? লাফিয়ে উঠে পড়লাম বিছানা থেকে। উফ, তাড়াতাড়ি গোসল করতে হবে। এসব, এসব কি?? ঘেন্নায় আমার বমি এসে যাচ্ছে।

গোসল করে এসে ঘরটা এবার ভালমত দেখলাম। বিছানায় পাশে টেবিলটায় একটা বোতল উল্টে পড়ে আছে। খালি। আরেকটাও খালি। আমার স্পষ্ট মনে আছে আমি কাল রাতে চার পেগ খেয়েছি। দুই বোতল খালি কেন? তারপর বমি আর প্রস্রাব। কোত্থেকে এলো? চার পেগ আমার লিমিটের মধ্যে পড়ে। এসব মাতলামি আমি করিনি, কোন চান্সই নেই।

তাহলে কি দাঁড়াচ্ছে? ঘর বন্ধ, মেইন গেট আটকানো, তারি মধ্যে কেউ একজন এসে আমার মদ সাবড়ে দিয়েছে, মাতলামি করে আমার বগলের কাছে বমি করেছে, আমার উরুর ওপর প্রস্রাব করেছে, তারপর ঠিক হয়ে আবার চলেও গেছে? বাহ! দারুণ! তাছাড়া আর কিই বা ব্যাখা দেব?

আর, বেড়ালরা মদ খায় না।



৮ই জুন



গত দুদিন আমি ঘরের বাইরে বেরোইনি। অফিসে কল করে সিক লিভ নিয়ে নিয়েছি।



মাথা প্রচণ্ড ব্যথা করছে। সারা শরীর থেকে জীবনীশক্তি মনে হচ্ছে টেনে নিচ্ছে কেউ। তবু সোফায় শুয়ে থেকে সারাদিন মানুষের হৈ-চৈ শুনি। সমস্যা হয় রাতে।



তখন চারিদিক নিস্তব্ধ, সুনসান হয়ে যায়। উত্তর দিক থেকে বাতাস ছাড়ে। শনশন শনশন। জানালায় ওরা বারবার আছড়ে পড়ে, বারান্দার পরদা ফতফত করে ওড়ে। তখনি মনে হয় আমার মধ্যেকার ভয়গুলো জেগে ওঠে। শূন্য থেকে দুমড়ে মুচড়ে উঠে ওরা রূপধারণ করে। ভয় করে এই বোধহয় ক্যাঁচ করে জানালাটা খুলে যাবে, আমি একটা কিছু, না- কাউকে দেখব। মনে হয় মেঝেতে ফাটল ধরেছে, বারবার কেঁপে কেঁপে উঠছে। না পারি বাইরে যেতে, না পারি ভেতরে থাকতে। ঘরের মাঝে কেউ ঢোকে, বেরোয়, আমি তাকালেই পর্দার আড়ালে লুকিয়ে পড়ে। আমি স্রেফ পর্দাটাকে কাঁপতে দেখি।



দেয়ালে ঝোলানো জিনাতের ছবিগুলো জায়গা পরিবর্তন করে। সবগুলো আমার মাথার পেছনে, সিলিঙের ওপরে বেয়ে ওঠে। অস্ফুট স্বরে কথা বলে। মনে হয় ওদের ফিসফিসানি আমার আত্মাটাকে চিরে ফেলছে। বালিশে কান ঢেকে আমি নিস্পন্দ পড়ে থাকি।



গত দু'রাতে আমি দুশো বার মরেছি।



১০ই জুন



যথেষ্ট হয়েছে। এই লুকোচুরি খেলা আর ভাল লাগছে না। জিনাত, বেরিয়ে এস।



হ্যাঁ, স্বীকার করছি বুঝতে সময় লেগেছে। কিন্তু আমাদের মাঝে তুমিই তো বেশি বুদ্ধিমান ছিলে। এই দ্যাখো, এখনও ছিলে বলছি। তুমি 'আছ'।

কেমন একটা ঘোরের মাঝে ঢুকে গিয়েছিলাম আমি। চারপাশে তোমার চিহ্ন দেখেও চোখ বুজে থেকেছি। ভান করেছি তুমি নেই। রাগ করেছ তাতে? নাকি আমাকে পাষণ্ড ভেবে প্রতিশোধ নিতে এসেছ?

কিন্তু আমি কি করতাম, বলো তো?



আমাদের বিয়ের তিন বছর পরও বাচ্চা হল না। ঘর আলো করে কেউ আলো ঢালল না তোমার আমার কোলে। নচ্ছার ডাক্তার বলল সমস্যাটা নাকি আমার। আমি তোমাকে মা করতে পারব না কখনো। সেদিন বাসায় এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে তুমি কাঁদলে, মনে আছে? কতভাবে সান্ত্বনা দিলে আমায়। প্রতিজ্ঞা করলে সারাজীবন আমাকে ভালবাসবে, কখনো ছেড়ে যাবে না। তোমায় আঁকড়ে ধরে আমি নিজেকে সামলালাম।



স্বামী হিসেবে খুব খারাপ ছিলাম না আমি, তাই না? কতবার রাতে ঘুম থেকে জাগিয়ে সিনেমা দেখতে চেয়েছ, মানা করেছি? প্রতিদিন তোমাকে সন্ধ্যায় ফুল এনে দিয়েছি, দুজনে মিলে রোম্যাণ্টিক গান ছেড়ে দিয়ে নেচেছি, তোমাকে নিরামিষ রান্না করে খাইয়েছি, এমনকি তোমাকে খুশি করতে বেড়ালটাকেও বুকেও নিয়েছি। এমন ভালবাসতে কেউ কাউকে দেখেছে কখনো?



আর সত্যি বলতে, বাচ্চা না হওয়ায় আমি খুব একটা দুঃখী হইনি। বিয়ের পর বাচ্চা হলে স্ত্রী আর স্বামীর প্রতি তেমন মনোযোগ দেয় না। হঠাৎ বউ থেকে বাচ্চার মা হয়ে যায়। আমি তোমার অখণ্ড ভালবাসা চেয়েছি। সবসময়। মনে আছে, একবার তুমি পাঁচ-ছ'টা গোলাপের টব নিয়ে এলে? কি উৎসাহ তোমার! নতুন পানির ঝাঁঝরি কিনলে, কোথাকার এক স্পেশাল মাটি নিয়ে এলে, দোআঁশ বোধহয়? আমি প্রত্যেকদিন অফিস থেকে এসে দেখতাম তুমি গাছগুলোর পরিচর্যা করছ, যে সময়টায় আমরা সাধারণত একসাথে বসে কাটাতাম। কদিন দেখে মাথা গরম হয়ে গেল। এক ফার্মাসিস্ট বন্ধুর কাছ থেকে বিষ নিয়ে এলাম। পানিতে গুলিয়ে টবে দিলাম। পরদিন সকালে তুমি উঠে দেখলে, সাধের গোলাপ গাছ গুলো সব মরে গেছে। আমাকে উঠিয়ে কি কান্না তোমার! সেদিন তোমায় বুকে নিয়ে আমি স্বস্তির হাসি হেসেছিলাম। সেদিন বলেছিলাম না, সবসময় তোমার পাশে থাকব, আমরা দুজনে একসাথে বুড়ো হব?



কিন্তু জিনাত, ভুল হয়ে গেল। তুমিই বল, বন্ধুরা যখন আমাকে তোমার আর তোমার ওই কলিগ হাসানের 'অন্তরঙ্গ' মেলামেশার কথা বলে, তখন আমি কিভাবে ঠিক থাকি? পাশের এপার্টমেন্টের ভাবি যখন আমার অনুপস্থিতিতে হাসানের ঘন ঘন আসা যাওয়া নিয়ে সূক্ষ্ম খোঁচা দেয়, আমার পেছনে ডিপার্টমেন্টের সবাই হাসাহাসি করে, তখন আমি কিভাবে সহ্য করি? তুমি তো আমার পবিত্র জিনাত, আমার এঞ্জেল। তোমাকে কিভাবে আমি কলুষিত হতে দেই?



তখনি এলো শেষ আঘাত। বাসায় এসে তুমি বললে তুমি প্রেগন্যান্ট। বললে আমি বাবা হতে যাচ্ছি। কি চঞ্চল, তাজা, প্রানবন্ত দেখাচ্ছিল তোমায়! প্রাণবন্ত, কিন্তু তুমি চোখে চোখ রাখছিলে না। বিবেকের তাড়না, জিনাত? কিন্তু তুমি প্রতিজ্ঞা করেছিলে! তাই আমি একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিলাম। তোমাকে মুক্ত করে দেবার সিদ্ধান্ত। রাতে তুমি যখন ঘুমে অচেতন, নেপালি ছুরিটা তোমার গলায় বসিয়ে মুহূর্তে তোমায় মুক্ত করে দিলাম।



কিন্তু মজাটা কোথায় জান? পরেরদিন ক্লিনিক থেকে কল এলো, রিপোর্টে ভুল ছিল। আমার কোন সমস্যা ছিল না!



বাচ্চাটা আমার ছিল।



সেই জন্যেই ফিরে এসেছ তো? হ্যাঁ, আড়াল থেকে বেরিয়ে এস। ছুরিটা আমিই বের করছি।



তুমি অসতী নও। তোমার কথা আমি চেপে রেখে যাবো না। তোমার আর আমার সন্তানের প্রাপ্য সম্মান দিয়ে যাব।



ফোনটা হাতে নিয়ে থানায় কল করলাম- হ্যালো, রমনা পুলিশ? আমি রাশেদ খান বলছি। আমি গত ১৭ই মে আমার গর্ভবতী স্ত্রীকে খুন করেছি.........



------------------------------------------------------------------------------



এসপি নুরুজ্জামান এসে ওসিকে ঠকাস করে স্যালুট ঠুকল। ওসি আসাদ আলি বিরক্তমুখে বললেন, 'হু, কাজের কথায় আস। গত সপ্তাহের ঐ খুনের খবর কি?'



এসপি হাত নামিয়ে বলল, 'সিরিয়াস বিষয় সার। রাশেদ নামের লোকটা নিজেই বুকে ছুরি ঢুকিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমরা দুটো কুকুর নিয়ে গিয়েছিলাম, ওগুলো ঘরে ঢুকতেই কার্পেটের এক যায়গায় ঘেউঘেউ করা শুরু করে। কার্পেট সরিয়ে ভালমত চেক করে দেখি সম্প্রতি প্লাস্টার করা হয়েছে। গর্ত করে একটা মহিলার ডেডবডি পাওয়া গেছে, ইনিই সম্ভবত লোকটার স্ত্রী।



-'আচ্ছা তাহলে কেস সাইজ করে ফেল। আসামিই তো ফিনিশড, কেস আর চলবে কি?'



'সার আরেকটা বিষয়', এসপি অস্বস্তিভরে যোগ করে, 'বডির সাথে একটা মরা বেড়াল আর কালো একটা কাঁচঅলা ওড়না পাওয়া গেছে। এদের মধ্যকার যোগসূত্র মেলান যাচ্ছে না।'



-'কেন, কি হয়েছে?'



'মানে সার, পোস্টমর্টেম অনুযায়ী মহিলা খুন হয়েছে মাসখানেক আগে। মেঝেতে প্লাস্টারও করা হয়েছে ওই সময়েই। কিন্তু বেড়ালটার ডেডবডির বয়স পনের-বিশ দিন। তাহলে ওটা ভেতরে ঢুকল কি করে?'



-'দূর যত্তসব! এটা বুঝতে পার না? ডাক্তারগুলো ভুল করেছে। শালারা কি খেয়ে বডি এক্সামিন করে মাবুদ জানে! যাও তো, তুমি ঐ জুয়েলারি কেসটা নিয়ে লাগ। এই কেস ক্লোজড।'

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:২৭

মাক্স বলেছেন: মুগ্ধ হয়ে পড়েছি।++++++++++

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৩১

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ,আমি উৎসাহিত হলাম।

২| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৫১

কাদা মাটি জল বলেছেন: Edgar Alan Poe এর ছায়াই পেলাম শুধু। বাকিটা পুরো মৌলিকত্বে ভরপুর। :) ভালো লাগলো

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:২১

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: এডগার এলান পো থেকে অনুপ্রেরনা নিয়েই গল্পটা লিখেছি।

ধন্যবাদ।

৩| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:১০

আজ আমি কোথাও যাবো না বলেছেন: Edgar Alan Poe এর ছায়া আছে। উপভোগ করলাম বলতে পারেন!
অনেক ভাল হয়েছে!!

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:২৪

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: উৎসাহ দেয়ায় ধন্যবাদ ,তিনি (পো)আমার অন্যতম প্রিয় লেখক।

৪| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:০৮

আজ আমি কোথাও যাবো না বলেছেন: আবারো এসে পড়লাম গল্পটা! খুব ভাল হয়েছে! :)

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:০৮

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আবার থাঙ্কু!

৫| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৪০

সাদা কলো বলেছেন: অসাধারণ

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৩:০৬

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আপনাকে অসাধারণ ধন্যবাদ।

৬| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৩ দুপুর ২:৩৫

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: ভালো লাগলো।


বেড়ালটাকে এভাবে মেরে ফেললেন ?? নিউটন রাগ করবে না ??

০৫ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:০২

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ধন্যবাদ।

আর, না, করবে না। দু পেগ ব্ল্যাক ডগ ও-ও পেয়েছিল কিনা!

৭| ০৭ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১:০৭

ফালতু বালক বলেছেন: অসাধারণ, পুরাই জটিল।
ভাইগো, ++++++

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৩:০৮

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ভাইগো, খুশি হইলাম।

৮| ০৭ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১:২৭

খেয়া ঘাট বলেছেন: গল্প দারুন হয়েছে,মুগ্ধ হয়ে পড়লাম।
কিন্তু এসপি ওসিকে স্যালুট করবে কেন????
এসপি এতো সিনিয়ার অফিসার হয়ে ওসিকে স্যার বলবে কেন??

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৪০

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: এই কমেন্টের উত্তর দেওয়া হয়নি দেখি! যাক, এখন জবাব দিচ্ছি, এবং জবাব দিতে দেরি হওয়ায় খুবই দুঃখিত।

ভুল ধরিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ।

অত্যন্ত অমনোযোগী লেখক হবার কারণে প্রথমদিকে এরকম ভুল হত। এটা সম্ভবতঃ ব্লগে আমার প্রথম গল্প ছিল। যাই হোক, আমার অমনোযোগিতার নিদর্শনস্বরূপ ভুলটা থাকুক। আপনার কমেন্ট টা রইল, ভবিষ্যতে বারবার সেটা রিমাইন্ডার হিসেবে কাজ করবে।

ধন্যবাদ।

৯| ১৪ ই মে, ২০১৩ সকাল ১০:৩১

এরিস বলেছেন: উফ! কদিন বদ্ধ থেকে ঘরে বিশ্রী গন্ধ ছুটেছে।
..................
.এই একটি কথাতেই সব বুঝিয়ে দিলেন। আপনার গল্পে একটা ব্যাপার খেয়াল করেছি। খুব সাধারণ একটি বাক্য দিয়ে আপনি আসন্ন ঘটনাগুলোর পূর্বাভাস জানিয়ে দেন। অসাধারণ। গতকাল আপনার ২ টি লেখা পড়ে এটা বুঝে গেছি। আজকে ২বার পড়ার আশ্রয় লাগেনি। এত বড় লেখায় পাঠকের পূর্ণ মনোযোগ ধরে রাখাটা খুব কঠিন ব্যাপার। বাক্যগুলো ছোট ছোট, সহজ। কিন্তু মনের মধ্যে এমন করে অস্থির একটা অবস্থা তৈরি করে দেয় যে, শেষ পর্যন্ত একটানে না পড়ে থাকা যায় না। চমৎকার মনস্তাত্ত্বিক গল্প। এরকম লিখতে ইচ্ছে করে খুব। কিন্তু আমি তো আর প্রোফেসর নই। তাই প্রোফেসরের লেখা পড়েই খুশি, অনেক খুশি এতো বড় মাপের একজন লেখকের সাথে ( লেখার সাথে.।!!! ) পরিচিত হয়ে। ভালোলাগা জানিয়ে গেলাম।

১৪ ই মে, ২০১৩ দুপুর ২:১৫

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আরেব্বাস, বিশাল সম্মান দিলেন আমাকে! আপ্লুত হলাম।

আপনার সাথে পরিচিত হয়ে ভাল লাগল, এরিস। ভাল থাকবেন।

১০| ১৪ ই মে, ২০১৩ সকাল ১০:৫৫

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: এডগার এলান পো এর লেখার ছায়া আছে ঠিকই, কিন্তু ভালো লেগেছে।

১৪ ই মে, ২০১৩ দুপুর ২:১৬

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ধন্যবাদ।

১১| ৩০ শে মে, ২০১৩ রাত ১২:১৭

লেজকাটা বান্দর বলেছেন: হুম দারুণ একটা লেখা।

তবু কিছুটা অপরিপক্কতার ছোঁয়া আছে।

ব্যাপার না। ভাল লিখেছেন।

৩০ শে মে, ২০১৩ রাত ১:০৫

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আপনিই প্রথম আমার সব পোস্ট একসাথে পড়লেন বোধহয়। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.