![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বুড়ো ভগবান নুয়ে নুয়ে চলে ভুল বকে আর গাল দেয়
১.
রোকেয়া বুজি মারা গেলেন এক শুক্রবারের মরা-রোদ-জড়ানো বিকেলে।
সুজন নামাজ পড়ে দুপুরের খাবার খেয়ে মাঠে চলে গিয়েছিল, আব্বার নজর এড়িয়ে। আব্বা এমনিতেও খেপে আছেন ওর ওপরে, বাইরে যেতে দেখলেই দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলবেন- "এই ধামড়ারে ক্যান পালি আমি? সামনে টেস্ট পরীক্ষা, গাধাটার লেখা নাই পড়া নাই, সারাদিন মাঠেঘাটে দাউদাউ করে ঘুরে বেড়াবো আর ভাত গিলবো! সব বাদ দিয়া হাটে কামলা দিলেও কামে লাগত, তাতে তো কথা নাই নবাব সাবের!"
তাই হুমহাম গিলে চুপিসারে মাঠে গিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল ও। পোলাপান বেশি আসে নি, সুজনকে দিয়ে আটজন। তাও জমেছিল, জুতা জড়ো করে গোলপোস্ট বানিয়ে খেলা শুরু করেছিল ওরা। চার নম্বর ডিয়ার ফুটবলে মনের সুখে লাত্থানো যায়, তার মধ্যে আবার ফুল পাম্প দিয়ে এনেছে; ছোঁয়া লাগলেই দৌড় দেয় বল। দুটো গোল দিয়েছিল সুজন (মতান্তরে তিনটা, কিন্তু বিপক্ষ টীম বলেছে জুতার ওপর দিয়ে বল গেলে গোল হয় না, তাই বাতিল); কিন্তু খেয়েছে পাঁচটা, শোধাতে গিয়ে দৌড়াদৌড়ি একটু বেশিই হয়ে গেছে। তখন বোঝা যায় নি, আসলে আমলেই নেয় নি ও, এখন পায়ে চিনচিনে ব্যথা করছে মৃদু।
এদিকে আজান দিয়েছে মাগরিবের, ঘোষণা করছে যে খেলার সময় শেষ; ক্ষুদে পাখি ছোট পাখি, নীড়ে ফেরো, নীড়ে ফেরো। দেরি না করে সুজন খোঁড়াতে খোঁড়াতে বাসায় ফিরে আসে।
ওকে খবরটা দিলেন আম্মা। উনি কেবল বুজির বাড়ি থেকে শেষবারের মতো দেখে এসেছেন, খুঁটিনাটি বললেন চার ছেলে আর তাঁদের বউগুলো কি ভীষণ কান্নাকাটি করছে বুজির জন্যে। দেখলে বুক পুড়ে যায়। বাসার সবার মুখ কিছুটা বিষণ্ণ খবরটা পেয়ে। সুজনের নিজেরও মন খারাপ হলো। রোকেয়া বুজি খুব ভাল মানুষ ছিলেন। ছোটদের দেখলেই কোলে নিতেন, আদর করতেন, সুজনের মতো ধামড়া পোলাপানেরও মাথা হাতিয়ে দিতেন। চার ছেলে আছে বুজির, তাদের সাথে থাকতেন। কি মিশুক ছিলেন! শুধু রাতটা বোধহয় বাড়িতে ঘুমোতেন, আর বাকি সকাল থেকে সন্ধ্যা এর বাড়ি থেকে ওর বাড়ি ঠুকঠুক ঠুকঠুক, ঘুরে ঘুরে খোঁজখবর নিতেন। এত বয়স হয়ে গেছে, তবু। মাঝে মাঝে কূটনামি করতেন, একটু আধটু, কিন্তু সেটা কে না করে! আসল কথা, এই মানুষটা গ্রামের অর্ধেকের বিয়ের ঘটকালি করেছেন, আর কেটেছেন বাকি অর্ধেকের নাড়ি। নির্বিচারে স্নেহের ছায়া-প্রদায়ী বিশাল একজন মহীরুহ। তাই তাঁর মৃত্যুতে পুরো রূপপুর গ্রাম যেন ঝিম ধরে থাকে অনেকটা সময়।
কিছুক্ষণ পরে মসজিদে মুহুর্মুহু মাইকিং শুরু হল- প্রিয় গ্রামবাসী, শোকসংবাদ। শোওক সংবাদ। অত্র এলাকাবাসি, সৈয়দা রোকেয়া বেগম, আজ বাদ আসর, ইন্তেকাল ফরমাইয়াছেন। ইন্নানিল্লাহি, ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তাহার জানাজা, আজ বাদ এশা, মসজিদ প্রাঙ্গণে সম্পন্ন হইবে। সকলকে যোগ দিতে আহ্বান জানান যাইতেছে। প্রিয় গ্রামবাসী, শোক...
এশার ওয়াক্ত আসে। গ্রামের পুরুষেরা সবাই মাথায় টুপি এঁটে ঠিকঠাক নামাযে উপস্থিত, আল্লার ভয়ে নাকি জানাজায় উপস্থিতি দিতে- তা অবশ্য বলা কঠিন। সুজনও নিজেকে আবিষ্কার করে সেখানে। প্রায় নিঃশব্দে, দ্রুত ঘটতে থাকে পরের ঘটনাগুলি। জানাজার নামাযে হাজিরা দিয়ে চার পুত্রের কাঁধে চড়ে বুজি গোরস্থানে গেলেন, তাকে সাবধানে শুইয়ে দেওয়া হল কবরে, ছ'ফিট মাটির নিচে চাপা দিয়ে গণ-মোনাজাত ধরা হল। ইমাম সাব আশ্বস্ত করলেন যে শুক্রবারে মরেছেন বলে অবশ্যি অবশ্যি বুজি ভেস্তে যাবেন, এবং বুজির মতো যারা সৎপথে চলেছেন সারাজীবন, তাদের মৃত্যু দেখে ভয় পাবার কিছু নেই।
সুজন একবার আশেপাশের মানুষের মুখে তাকাল। তারা অবশ্য ইমাম সাবের কথায় নিজেদের ভাগ্য নিয়ে আশ্বস্ত হয়েছে বলে মনে হল না, বরঞ্চ প্রত্যেকের চোখে বিষাদ, অস্বস্তি আর একটুখানি ভীতির প্রলেপ খুব গাঢ় করে মাখা।
সেদিন রাত্রে ভাল ঘুম হল না সুজনের।
২.
ইদ্রিস কাকার বাড়ি গোরস্থানের পাশে। একা মানুষ, কাকি মারা গেছেন দশ বছর আগে। নিজেই রেঁধেবেড়ে খান, নামায পড়েন আর আল্লাহ আল্লাহ করেন। কারো সাতেপাঁচে নেই। মসজিদ কমিটি তাকে গোরস্থানের তদারকি করার দায়িত্ব দিয়েছে। রাতে এমনিতেও কাকার ঘুম আসে না, লাঠি হাতে বের হয়ে মাঝে মধ্যে গোরস্থান টহল দেন। আসলে এই পদে কাজ তেমন নেই। লাশ চুরি করার মতো গর্হিত কাজ হয় না রূপপুরে। বর্ষায় দুএকটা কবর ডেবে যায়, মাটি দিতে হয় আবার। মাঝেমধ্যে শিয়াল কুকুর এসে কবর খোঁড়ে, তিনি ওগুলোকে ভাগিয়ে দেন লাঠি দেখিয়ে।
সুতরাং বুজি মারা যাবার এক সপ্তা পর, টহল দিয়ে গিয়ে যখন তিনি দেখলেন দুটো শিয়াল বুজির কবর খুঁড়ছে, খুব একটা উদ্বিগ্ন হলেন না কাকা। লাঠি বাগিয়ে এগুলেন। জবরদস্ত দু ঘা খেয়ে শিয়ালদ্বয় ভেগে গেল, তিনি লাইট মেরে উবু হয়ে দেখতে লাগলেন কত গভীরভাবে খুঁড়েছে গর্ত। তখনি কবরের ভেতর থেকে কেউ বলল, 'হুশ হুশ, যা ভাগ শিয়ালের গুষ্টি। রাতবিরাতে জ্বালাইস না।'
ইদ্রিস কাকা একবার ভাবলেন, বোধহয় ভুল শুনেছেন কানে। তিনি আরেকটু এগিয়ে লাঠির মাথা নামিয়ে দিলেন গর্তে। এবার কণ্ঠটা বিরক্তি মাখা গলায় বলল, 'ওরেরে, লাঠি দিয়া গুতায় ক্যারা? কপালে আয়া লাগছে।'
কাকা তাড়াতাড়ি পিছিয়ে গেলেন। কণ্ঠটা নড়াচড়া টের পেল, 'উপরে ক্যারা? ইদ্রিস? মিয়াভাই তুমি?'
কাকা ভারিগলায় জিজ্ঞেস করলেন, ''হ। কথা কয় ক্যাডা?''
-'আমি রোকেয়া।'
"বুজি?"
-'হ রে পাগল। আমি, সৈয়দা রোকেয়া বেগম, তোমাগো বুজি।'
"তুমি না মইরা গেছ?"
-'নাহ। মরি নাই। ভুলে কবর দিয়া দিছে।'
"ও।"
-'শিয়াল আইছিল দ্যাখছো মিয়াভাই?'
"হ। ভাগায়া দিছি।"
-'ভাল করছো। এহন মাটি সরায়া আমারে উঠাও।'
কাকা দ্বিধায় পড়ে গেলেন। তাঁর দেখামতে, আজ পর্যন্ত কোন কবরের বাসিন্দা এত নির্বিকার কণ্ঠে উপরে উঠে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করে নি। উঠানো কি ঠিক হবে? কাজটা জায়েয না নাজায়েয কে জানে! নাকি তিনি আবার কোন ঝামেলায় পড়ে যাবেন? এই বুড়ো বয়সে ঝুঁকি নেওয়াটা কি ঠিক হচ্ছে?
-'মিয়াভাই?'
"অ্যাঁ?"
-'উঠাও আমারে।'
''তোমারে তো কবর দিছে ম্যালাদিন, এতদিন রা করো নাই ক্যান?''
-'আমি হুঁশ পাই নাই মিয়াভাই। কব্বরের নিচে কি দিনক্ষণ বোঝন যায়, কও? অনেকদিন গেছে নাকি? কিছুই বুঝি নাই। তোমার সাড়া পাইয়া এখন ডাক দিলাম।'
"বুজি, মরা মানুষরে কবর দেওয়ার পরে তো উঠানোর নিয়ম নাই। পুলিশের অনুমতি লাগে মনে হয়।"
-'আমি তো মরি নাই। কথা কইতাছি না তোমার সাথে?'
"হ...কিন্তু আমি কি করমু কও? তুমি নয় শুইয়া থাকো, সকালে আমি মসজিদে সবটির সাথে যুক্তি কইরা আমুনি?"
-'আইচ্ছা। তাড়াতাড়ি আইসো। আমার পাশের কবরে এক ব্যাটা আছে, শালায় কানের কাছে খালি দিনরাত ওয়াজ করে, জ্বালায়া মারলো। একটু যদি শান্তি পাই!'
"ওয়াজ করলে তো ভাল, তেলাওয়াত শুনলে সওয়াব হয় বুজি!"
-'কুরআন তেলাওয়াত করলে তো ভালই আছিল, এ তো তা করে না, খালি উপদেশ দেয়- অন্যায়ের প্রতিবাদ করো, পৃথিবী শস্যক্ষেত্র মাত্র হেন তেন। আমি কই, কব্বরে শুইয়া কি প্রতিবাদ করমু রে ব্যাটা! তাও চুপ করে না। তুমি তাড়াতাড়ি আইসো মিয়াভাই।'
এই বলে মাটির নিচের বুজি চুপ হয়ে যান। ঘুমান হয়তো। কিংবা ওয়াজ শোনেন। মাটির ওপরের ইদ্রিস কাকা লাঠির ওপরে ভর দিয়ে আস্তে আস্তে বাড়ির দিতে হাঁটতে শুরু করলেন, তাঁর মুখব্যাপী গভীর চিন্তার ছাপ।
সকালে মসজিদে দারুণ তর্কবিতর্ক শুরু হয়। সব মুসল্লি দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেল। একদল, গ্রামের একমাত্র মার্বেলের মেঝেটাতে ঘুষি মেরে চেঁচাতে লাগল যে অবশ্যি ওটা বুজি নন, শয়তান বা বদ জীন এসে কবরে জায়গা করে নিয়েছে, মানুষকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে। বাকিরা কেন বুঝতে পারছে না এই সাধারণ জিনিসটা? যুগে যুগে কত অদ্ভুত খেল দেখিয়ে মোমিনদের ঈমান নষ্ট করার চেষ্টা করেছে শয়তান, এটা তাঁর নতুন আরেকটা কূট-কৌশল। আরেকটা ফন্দি মাত্র। অন্যদল, তাঁরা গণনায় বেশি কিন্তু গলায় খাটো; প্রতিবাদ করে বলল, হয়তো সত্যি বুজি বেঁচে আছেন, শয়তানের চালাকি তো নাও হতে পারে, বাকিরা নিশ্চিত হচ্ছে কি করে; সেক্ষেত্রে অতিসত্বর তাঁকে উঠানো উচিত।
শেষটায় ইমাম সাব দীর্ঘসময় সিহাহ-সিত্তাহ ঘেঁটে চূড়ান্ত মতামত দিলেন- গোরস্থান হচ্ছে পবিত্র জায়গা; সেখানে বদ জীন বা শয়তান কারুর ইখতিয়ার নেই। সুতরাং কবরের ভেতরে কণ্ঠটা খুব সম্ভব বুজি স্বয়ং। কিন্তু তাঁকে আদৌ উঠানো হবে কি না, বা কি করা হবে- সিদ্ধান্তটা গ্রামের মানুষের নয়, তাঁর সন্তানদের হাতে। তারাই ঠিক করুক কি করবে।
এতক্ষণ বুজির চার ছেলে চুপচাপ সব শুনছিল। বিষয়টা প্রথমে শোনার পর থেকেই তারা অস্বস্তি বোধ করছে, এবারে সিদ্ধান্তটা সরাসরি তাদের ঘাড়ে এসে পড়ায় অপ্রস্তুত মুখে বড় ছেলে বলে, ''আসলে, মার তো বয়স হইছিল, মইরা গেছিল, এখন উঠাইলে জিনিসটা কেমন হয় কন? আল্লার দুনিয়ার নিয়ম বইলা তো একটা কথা আছে, সেইটা ভাঙি কেমনে? আর আমরা চারজন তো সম্পত্তি ভাগ কইরা আলাদা হওয়ার চিন্তা করতাছি। এখন এমনে হইলে, মা তাইলে কার কাছে থাকব?''
ইমাম সাব বলেন, ''তাইলে উঠাবা না?''
বড় জন আবার কিছুক্ষণ ইতস্ততঃ করে, ''না, উঠামু, মানে সম্পত্তির ঝামেলা মিটায়া তারপরে যদি...মানে মা তো কবরে রইছেই, কোনখানে আর যাইতাছে না তো। চিন্তাভাবনা কইরা, ঝামেলা মিটায়া তারপর উঠাই। হাদিসে আছে- তাড়াহুড়া কইরা সিদ্ধান্ত নিতে নাই। তোরা কি কস?'' প্রশ্নের উত্তরে বাকি ভাইয়েরাও মিশ্রসুরে সম্মতি দেয় তাঁর কথায়।
কিন্তু মসজিদের আরেক কোণা থেকে ইদ্রিস কাকা বাগড়া দেন, ''তাইলে এইসব কথা তোমার মায়েরে যায়া কও গিয়া। বুজি নইলে আমারে প্রতি রাইতেই কবর থিকা উঠানের জন্যে কইব, আমি বুড়া বয়সে এতসব সহ্য করতে পারুম না বাবারা।''
সুতরাং নিরুপায় চার পুত্র নিজেদের মধ্যে কিছুক্ষণ কথা বলে কবরের দিকে হাঁটা দেয়, তাঁদেরকে পেছন পেছন অনুসরণ করে উৎসাহী গ্রামবাসী।
বুজি ছেলেদের প্রথম ডাকেই উৎসাহী কণ্ঠে সাড়া দেন, পুনরায় পাশের কবরের বাসিন্দাকে নিয়ে অভিযোগ জানান এমন গলায়, যেন ছোট্ট অভিমানী মেয়ে বাপের কাছে বিচার দিচ্ছে, তারপর তাঁকে উঠানোর কথা বলেন।
'বাজান, আমারে বাইত্তে নিয়া যা। বুকের উপর মাটির ওজন এত্ত বেশি, দম আটকায়া আসে। কাফনের কাপড় শরীরে চুলকায়, আর কি আন্ধার! আমার আর ভাল লাগে না।'
ছোট ছেলে বলে, ''মা, জমির ঝামেলাটা আমরা মিটায়া নেই, তারপরেই আপনেরে নিয়া যামু। আর জানেন না তো, দেশের অবস্থা এখন কি খারাপ, চোর-চোট্টা-ডাকাতি-খুন-খারাপি বাইড়া গেছে, কবরের চেয়ে নিরাপদ জায়গা আর নাই। আপনে কবরেই থাকেন, আমরা উপযুক্ত সময়ে আপনারে উঠামু। আর ভয় পায়েন না, প্রতি শুক্রবারে কবর জিয়ারত করতে তো আসতাছিই।''
বুজি অনেকক্ষণ চুপ করে থাকেন, তারপর বাকি ছেলেদের উদ্দেশ্য করে নাম ধরে ধরে জিজ্ঞেস করেন, 'তোরাও কি তাই চাস? আমারে উঠাবি না?'
বাকি তিনজন সমস্বরে একই কথা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলে। জমির ঝামেলা চলছে। দেশে নিরাপত্তা নেই। উপযুক্ত সময়ে তারা মা-কে বাড়িতে নিয়ে যাবে।
কবরের নিচ থেকে এবার ফুঁপিয়ে কান্নার শব্দ ভেসে আসে। ছেলেরা শশব্যস্ত হয়ে সান্ত্বনা দেয়, বারবার ডাকে, কিন্তু কোন সাড়া মেলে না। শুধু ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্নার শব্দ। একজন আশাভঙ্গ জীবিত কিংবা মৃত বৃদ্ধা মাটির নিচে একাকি শুয়ে কাঁদছেন। প্রায় ঘণ্টাখানেক ছেলেরা দাঁড়িয়ে থাকে, তাঁদের হাঁটুতে ব্যথা শুরু হয়, অস্বস্তি বাড়ে; তারপর মা আর কথা বলবেন না বুঝতে পেরে তারা শুকনো মুখে বাড়ি ফিরতে শুরু করে। গ্রামবাসীর গুঞ্জন থামে, ভিড় ছত্রখান হয়ে যায়। ততক্ষণে কান্নার শব্দও থেমে গেছে, আর দশটা কবরের সাথে বুজির কবরের কোন পার্থক্য নেই তখন। ঘণ্টাদুয়েক পরে গোরস্থান আগের মতই স্বাভাবিক জনশূন্য নীরবতায় ডুবে যায়। শুধু সুজন তখনো একা দাঁড়িয়ে।
সুজন কি ভাবছিল, বা কাজটা কেন করল নিজেও তা বলতে পারবে না, কিন্তু ও কবরের কাছে গিয়ে একবার ডাকে, ''বুজি?''
কোন সাড়া নেই।
''বুজি আমি সুজন। মাহতাব উকিলের পোলা।''
এবার বুজি কথা বলেন, তাঁর গলা তখনো ভাঙ্গা, 'সুজন? নানা তুমি কি করো গোরস্থানে? কত সাপ খোপ থাকে এইখানে, যাও। বাইত্তে যাওগা।'
সুজন কথা থামায় না, ''আপনে ভয় পায়েন না বুজি। আমি প্রত্যেকদিন আমু, আপনার সাথে কথা কমুনি। আপনে কাইন্দেন না।''
বুজি যে প্রচন্ড খুশি হয়েছেন তা তাঁর কণ্ঠ শুনেই বোঝা যায়, অনেক কষ্টে কান্না সংবরণ করে তিনি বলেন, 'ও আমার সোনা রে! আইসো নানা, তুমি কথা কইয়ো এই বুড়ির সাথে, আমার সোনা চান মানিক। এহন যাও। আমার পুলাপানডিরে কইয়ো কবরের চাইরপাশে তুষ দিতে। তাইলে আর শিয়াল আইব না। যাও নানা। এইসব জায়গায় বেশিক্ষণ একা থাকতে নাই।'
তারপর সময়ের স্বাভাবিক ছন্দে কেটে যায় বেশ কয়েকটি মাস। বুজি ছেলেদের সাথে এখনো কথা বলেন না, মৌনব্রত ভাঙেন নি; কিন্তু গ্রামের অন্যান্য মানুষ গোরস্থানে এলে টুকটাক আলাপ করেন। মাঝে মধ্যে দুই একজন অপরিচিত মানুষ কবর জিয়ারতে দাঁড়ালে হঠাৎ কিশোরীর চাপল্য নিয়ে তাদেরকে চমকে দিয়ে খিলখিলিয়ে হাসেন। ছেলেরা প্রতি শুক্রবার আসে, মায়ের কবর জিয়ারত করে, এবং আশ্বাস দেয় যে সুযোগ পেলেই তারা মাকে নিয়ে যাবে বাড়িতে। শুধু সঠিক সময়ের অপেক্ষা। এবং এভাবে বাকি গ্রামবাসীর কাছে পুরো ব্যাপারটা ধীরে ধীরে নাটকীয়তা হারিয়ে ফেলতে শুরু করে। সব গ্রামেই তো দুই একটা অস্বাভাবিক জিনিস থাকে, তাই না? পাশের গ্রাম দেলদুনিতে এক পাগল আছে- এমনিতে সরল স্বাভাবিক, কিন্তু পুরোটা শীতের সময় জুড়ে পুকুরে গলা অব্দি ডুবিয়ে বসে থাকে আর বাউল গান গায়। উত্তরপাড়া গ্রামে আছে বিপ্লব কবি- যে জীবনে একটা মাত্র কবিতা লিখেছে, কিন্তু আজ অবধি তা শেষ করতে পারে নি। একটা লাইন লিখতে পারলে সে সেই খুশিতে পুরো গ্রামে মিষ্টি বিতরণ করে, তারপর বাড়ি গিয়ে পুরো কবিতা আবার পড়ে, দ্যাখে এখন আর পছন্দ হচ্ছে না, আবার কেটে দেয় সেই লাইন। দক্ষিণে করাতিয়া গ্রামে আছে একটা দুই মাথাওলা বাছুর। তেমনি রূপপুর গ্রামে আছেন বুজি- যিনি কবরের ভেতরে থেকে কথা বলেন। এ আর এমন কি?
বুজির সঙ্গ নিয়মিত দেয় একমাত্র সুজন। ও নিজের কথা রেখেছে। প্রতিদিন বিকেলে খেলতে যাবার এক ঘণ্টা আগে ও গোরস্থানে আসে। বুজির কবরের কাছে একটা ছোট্ট ছালামতোন রেখে দিয়েছে, সেটায় বসে বুজির সাথে গল্প করে। প্রথম প্রথম বুজি গ্রামের সবার খবর নিতেন বুভুক্ষুর মতো।
শরীফদের লিচুগাছে কেন পোকা ধরেছে,
আলমদের সদ্য প্রসূত বকনা বাছুরের বাঁচার সম্ভাবনা কেমন,
লিজার ছোট মেয়েটার এই অসময়ে হাম উঠল কেন,
এসব ব্যাপারে তাঁর চিন্তার অন্ত ছিল না। সুজনের সাথে তুমুল আগ্রহ নিয়ে তিনি আলোচনা করতেন, ঘন্টাখানেক পর ও যখন বলতো, বুজি তাইলে খেলতে যাই? তখন বুজি যদিও বলতেন, নানা যাও, কিন্তু তাঁর কণ্ঠে আরো কথা বলার ইচ্ছে ফুটে উঠত পরিষ্কার। তখন সুজন বাধ্য হয়ে আরও কিছুক্ষণ বসে কথা বলে যেত। কিন্তু, ইদানীং ও লক্ষ্য করছে, বুজি এসব নিয়ে কেমন যেন আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। ও গতকাল আলমের বড় বোনের বিয়ের খবর বলছিল বুজিকে, একটু পরে সুজন বুঝতে পারল ও একাই বকবক করছে, বুজি তাল মিলিয়ে শুধু হুঁ হুঁ করে যাচ্ছেন। আর একটু পর উনি নিজেই ওকে থামিয়ে দিলেন। বললেন ওর খেলার দেরি হয়ে যাচ্ছে, তাড়াতাড়ি বরং মাঠে চলে যাক সুজন।
পরের দিন বুজি ওকে সরাসরি বললেন, 'নানা, গেরামের কথা বাদ দেও। দেশের খবর কও শুনি। খুন খারাপি কি কমছে? আমি বেরাইতে পারমু?'
সুজন বলল, ''আপনার বের হওয়ার খুব ইচ্ছা করে, তাই না বুজি?''
বুজি বললেন, 'হ, কিন্তু আগের মতন ইচ্ছা করে না। কবরেই তো ভাল আছি। আন্ধারে চোখ সয়া গেছে, মাটির চাপে চাপে আমার বিষ ব্যাদনা অনেক কইমা গেছে, বাতের ব্যথা নাই।'
-''আর আপনার পাশের কবরের লোকটা? সে এখনো ওয়াজ শুনায়?''
'শুনায়, কিন্তু আগের মতো জোরে জোরে কয় না। বিড়বিড় করে। ব্যাটায় আমার পাশের কবরে নাকি তাও এখন কইতে পারুম না। মনে হয় আস্তে আস্তে দূরে সইরা যাইতাছে। কি জিনিস আল্লা মালুম! আমার আগের মতো কষ্ট নাই নানা। কিন্তু নাতি নাতকুরগুলারে দেখতে ইচ্ছা করে, তাই উঠবার চাই। অরা কয় দেশের অবস্থা নাকি ভাল না, আমারে উঠাবো না তাই। তুমি আমারে দেশের খবর শুনায়ো।'
সুজন তারপর থেকে প্রতিদিন ওর সাথে খবরের কাগজ নিয়ে আসা শুরু করল। আব্বা প্রথমে ভুরূ কুঁচকেছিলেন, কিন্তু ওর ব্যাখ্যা শুনে পরে আর কিছু বলেন নি। আম্মা শুনে খুশিই হয়েছেন। ও বসে বসে পড়ে, বুজি মনোযোগ দিয়ে শোনেন। রাজনীতি, খেলা, বিনোদন এগুলো বুজির পছন্দ না, কারণ 'আমি বুড়ি মানুষ, এইগুলা কি বুঝি!' তিনি এক অদ্ভুত মোহ নিয়ে শোনেন খুন-হত্যা-ধর্ষণ-মারামারি-দুর্ঘটনার খবর। মাঝেমধ্যে মন্তব্য করেন।
বাস দুর্ঘটনা, নিহত ২৫, ড্রাইভার পলাতক
('ড্রাইভারডারে মাইর দেওনের কাম। দেইখা চালাইতে পারে না?')
গৃহবধূর আত্মহত্যা, স্বামী গ্রেপ্তার
('ইসস, মাইয়াটা না জানি কি কষ্ট পাইছিল!')
দুই লেখককে কুপিয়ে হত্যা, তদন্ত চলছে
('অরা মানুষ না কি?!')
কিন্তু এই উৎসাহও বেশিদিন টিকল না। বুজি যেন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছেন বাইরের জগত থেকে, সুজনকে এখন দুতিনবার কথার পুনরাবৃত্তি করতে হয়, তারপর বুজি উত্তর দেন। আগে নাতি-নাতনীদের সম্পর্কে প্রতিদিন জিজ্ঞেস করতেন, এখন তাও করেন না। সুজন চিন্তিত হয়ে পড়ল। বুজির অনাগ্রহ দেখে ও খবরের কাগজ আনা বন্ধ করে দিল। অন্য কোন বিষয়ে বুজির আগ্রহ জাগাবার চেষ্টা করলো কয়েকদিন। কিন্তু প্রায় এক-পক্ষীয় কথোপকথন আর কতদিন চালানো যায়! এখন দুজনের মাঝে কথাবার্তা হয় এভাবে- সুজন দশটা শব্দ বলে, বুজি একটা শব্দ বিড়বিড়িয়ে উচ্চারণ করেন, তাও পরিষ্কার বোঝা যায় না।
পরেরদিন শুক্রবার। সেদিনও সুজন কবরের কাছে দাঁড়াল, বরাবরের মতোই বুজিকে ডাকল, 'বুজি আমি আইছি', কিন্তু সাড়া দিল না কেউ। ও কথাটা পুনরাবৃত্তি করল বারবার, কবরের চারপাশে পায়চারি করল, কিন্তু কোন কণ্ঠ আনন্দিত গলায় বলল না, 'নানা আইছো?' শুধু পাখি ডাকছে, বাতাসে গাছের ডাল নড়ছে, আর বুকের ভেতরে একটা চাপা আতঙ্ক চেপে ধরছে সুজনকে। কি হয়েছে বুজির? বুজি কথা বলছেন না কেন? ও আজকে ছালা টেনে বসতে পারে না। ঘন্টাখানেক সেখানে দাঁড়িয়ে বুজিকে ডেকে যায় বারবার, কিন্তু কেউ কথা বলে না।
শেষে সুজনের কেন যেন ভীষণ কান্না পেয়ে গেল। ও দৌড়ে গ্রামে গিয়ে কথাটা ছড়িয়ে দেয়, তারপর বুজির চার ছেলেকে জানায় ঘটনাটা। অল্প সময়ের মাঝেই মোটামুটি পুরো গ্রাম চলে আসে কবরস্থানে। কয়েকজন এসে ডাকে, বুজি! বুজি!! কিন্তু সুজনের কথা সত্যি প্রমাণিত হয়, বুজি অন্য দিনের মতো আজকে আর সাড়া দেন না। প্রকৃতির নিয়ম ভেঙে কবরের নিচ থেকে বুজির কথা বলতে পারাটা খুব স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছিল একসময়, এখন তাকে প্রকৃতির নিয়ম মানতে দেখে সবার কাছে অস্বাভাবিক লাগতে থাকে। গুনগুন করে আলাপ চলতে থাকে সবার মাঝখানে, কিন্তু সরাসরি কেউ কোন শব্দ উচ্চারণ করল না।
অন্যদিকে কবরের কাছে দাঁড়িয়ে বুজির চার ছেলে চোখাচোখি করে নিজেদের মাঝে। মায়ের অভিমান থেকে ভয়ে বা সংকোচে মুখ ফিরিয়ে থাকতে থাকতে তাঁদের হৃদয় মৃতপ্রায় হয়ে গেছে; তবু বুকের ভেতরে যে অপরাধবোধটা তারা লুকিয়ে রেখেছিল এতদিন সাবধানে, সেটা হঠাৎ এই ঘটনায় শতগুণে বেড়ে গিয়ে মাথা চাড়া দেয়, একে আর এড়িয়ে যেতে পারে না পুত্রগণ। জায়েয নাজায়েয, পুলিশের ভয়, জমির অজুহাত এসব কিছু অদৃশ্য হয়ে যায় কর্তব্যের সামনে। সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হয় না তাঁদের। বড় ছেলে কাঁপা গলায় বলে, ''তোরা কোদাল নিয়া আয়। মা-রে আজকে বাইত্তে নিয়া যামু।''
মনে মনে এই কথাটারই যেন অপেক্ষা করছিল সবাই, মুহূর্তের মধ্যে বিদ্যুৎবেগে সব ব্যবস্থা হয়ে যায়। জোড়া কোদাল আসে, বড় আর মেঝ ছেলে খুঁড়তে শুরু করে। বাকিরাও কাজে লাগবার জন্যে তটস্থ হয়ে পড়ে। জানাযার খাট নিয়ে আসা হবে কিনা আলোচনা হয়। তাঁদের ইচ্ছা বুজিকে কষ্ট দেবে না, এতে শুইয়েই বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। লিজাদের খালার একটা হুইল চেয়ার ছিল, তারা ভাবে সেটা বুজিকে দিয়ে আসবে। বয়স্ক মানুষ, তাঁর মধ্যে কবরে ছিলেন এত দিন, হাঁটতে চলতে নিশ্চয়ই কষ্ট হবে। দরকার হবে একটা হুইল চেয়ারের। বাকিরাও, ভাবে। যেন এতদিন বুজিকে ভুলে ছিল স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে, সেই পাপ আজকের ক্ষণিকের ভালবাসার স্রোতে কাটিয়ে নেবে। তাঁরা ভাবে আর তাকিয়ে থাকে বুজির দুই ছেলের দিকে।
বড় ছেলে খোঁড়ে।
মেঝ ছেলে খোঁড়ে।
তারা কাত করে রাখা বাঁশ, তালাই এগুলোর কোন অস্তিত্ব পায় না।
তারা খোঁড়ে।
তারা কপাল থেকে ঘাম মুছে একটা শাদা কাফনের কাপড় খোঁজে।
উঠে আসে মাটি, গুঁড়ো গুঁড়ো চাপ চাপ মাটি।
সেখানে মোচড় খায়, কিলবিল করে ক্ষুদে পোকা, শূককীট।
তারা খোঁড়ে, মাটি সরায়, বাইরে মাটির স্তুপ উঁচু হয় আরো।
তারা দ্যাখে আর খোঁড়ে
খোঁড়ে আর দ্যাখে।
মেঝ ছেলের কোপে খট করে আওয়াজ হয় হঠাৎ।
সে দেখে, একটি খুলিতে গেঁথে গেছে কোদালের মাথা।
কেউ খোঁড়ে না আর।
সবাই দ্যাখে।
দেখে তাদের বিশ্বাস হয় না। অজানা আতঙ্কে তাদের হৃদয় জমে যায় বুকের ভেতর। মুহূর্তের জন্যে সবার মনে হয় একটা সুপ্রাচীন দুঃস্বপ্ন টেনে নিচ্ছে তাদেরকে অতল কোন অভিশপ্ত গহ্বরে। সামনের দৃশ্যটা, মাটির বুকে বসে থাকা এই ক্ষয়ে-যাওয়া-খুলির অস্তিত্বটা তারা আর বিশ্বাস করতে পারে না।
কিন্তু তারা জানে, বিশ্বাস পাল্টায়, বিশ্বাস ভঙ্গুর; কিন্তু সত্য, পরম সত্য, অপরিবর্তিত থাকে। এবং সত্য-ই হটিয়ে দিতে পারে আতঙ্ককে, দুঃস্বপ্নকে। তাই সেদিন রূপপুর গ্রামের সবাই চুপচাপ, সম্মিলিতভাবে একটি সত্য সৃষ্টি করলো- বুজি মরে গেছেন। তিনি মরে গেছেন বহু মাস আগে এক শুক্রবারের মরা-রোদ-জড়ানো বিকেলে।
তারা পুরো ব্যাপারটিকে করোটি থেকে মুছে ফেলে সেখানে এই সত্যটি স্থাপন করে, তারপর দ্রুতপায়ে পালিয়ে যায় যার যার বাড়িতে। সেজ আর ছোট ছেলে তাঁদের বিহ্বল দুই ভাইকে কবর থেকে টেনে উঠিয়ে খুব তাড়াতাড়ি ভরাট করে ফেলে গহ্বরটি, তারপর কাঁপা পায়ে পিছু ফিরে হাঁটা দেয়। দুটো কোদাল পড়ে থাকে গোরস্থানের এক পাশে, নিঃসঙ্গ প্রহরীর মতন। তারা চারজন এরপরে প্রতি শুক্রবার সেখানে আসবে, এসে জিয়ারত করবে মায়ের কবর, তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করবে। মাতৃভক্ত সকল সন্তানেরা যেমনটা করে থাকে।
সুজন স্বয়ং ঠিক বুঝতে পারে না ওর কি করা উচিত। ও বাসায় এসে আম্মার কাছে অনেকক্ষণ বসে রয়, আম্মা যখন রান্না করছেন, তখনো তাঁর শাড়ির এক কোণা ধরে অথর্বের মতো বিড়বিড় করতে থাকে। রাতে ও কিছু মুখে তুলতে পারল না, প্লেটভর্তি ভাত হাতে ছেনে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ল। ঠিক আট ঘণ্টা পরে ঘুম থেকে উঠে আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে ছেলেটা, আগের মতই বাপের ঝাড়ি খাবে, মাঠে খেলবে, বড় হবে; এবং পরবর্তী জীবনে বুজিকে নিয়ে কখনো অস্বাভাবিক কিছু যে ঘটেছিল, সেটা কারুর মনে থাকবে না।
সেদিন রাত্রে সুজনসহ গ্রামের সবাই একই স্বপ্ন দেখল - তারা একা একা ছ'ফিট মাটির নিচে শাদা কাফন জড়িয়ে চোখ বুজে শুয়ে আছে, মাটির নরম আলিঙ্গনে ভীষণ আরাম লাগছে, শরীরের প্রতিটি কোষে শান্তি আর শান্তি। শুধু একটাই খটকা, পাশে কোথাও একটা কণ্ঠ বলিষ্ঠ গলায় আবৃত্তি করে যাচ্ছে বারবার- হে মোমিনগণ, অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করো, এবং সুবিচার দেখলে করো উৎসাহিত, কারণ নিশ্চয়ই পৃথিবী তোমাদের শস্যক্ষেত্র এবং কর্মফল তোমাদের শস্য। হে মোমিনগণ...
একঘেয়ে কণ্ঠটা প্রথমে সজোরে পুনরাবৃত্তি করতে থাকে কথাগুলো, তারপর ধীরে ধীরে আওয়াজ কমে আসতে শুরু করে, যেন গলার শক্তি কমে যাচ্ছে ক্রমশ। তারপর মৃদু কণ্ঠের গুণগুণ আওয়াজ শোনা যায় কেবল। চারপাশের মাটি পুরনো বিছানাসঙ্গীর মতো আরও কাছে সরে আসে, অন্ধকারে আনন্দময় আলস্য বাড়ে ক্যান্সারের মতো; তারপর একটা সময় নিখুঁত নিস্তব্ধতা নেমে আসে কবরের ভেতরে।
এবং আশ্চর্যের ব্যাপার, সেদিন রাত্রে খুব ভাল ঘুম হলো রূপপুর গ্রামের সবার।
১৯ শে মে, ২০১৬ রাত ১০:২০
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ধন্যবাদ শায়মা। আসলে বিস্মরণের চেয়ে তীক্ষ্ণ অস্ত্র আর নেই।
২| ১৯ শে মে, ২০১৬ রাত ১০:১৭
পুলহ বলেছেন: সারাদিন মাঠে ঘাটে দাউদাউ করে ঘুরে বেড়ানো- প্রচলিত শব্দের অপ্রচলিত প্রয়োগ...
কবরের চেয়ে শান্তির জায়গা আর নেই- গভীর উপলব্ধির কথা বলেছেন।
ইদ্রিস মিয়া তো অসম্ভব সাহসী একজন মানুষ...
আমি ভুল না করে থাকলে লেখক সম্ভবতঃ সমসাময়িক সময়ের উপযোগী একটা মেসেজ দিতে চেয়েছেন এই গল্পে, যেটা গল্পের শেষে এসে অনেকটাই পরিষ্কার হয়ে যায়- লেখকের অসাধারণ আঙ্গিক-তৈরীর গুণেই।
শায়মা আপুর সাথে একমত- আপনার গল্পে থামা যায় না।
নিচ থেকে বুজির কথা বলতে পারাটা খুব স্বাভাবিক হয়ে গেছিল একসময়-< গিয়েছিল একসময়--- গল্পরূপ স্বর্ণালংকারে ছোট্ট একটা খাদ চোখে পড়লো!
শুভকামনা গুণী গল্পকার ! পুরো গল্পটাই- প্লট, ভাষা, উপস্থাপনা- সব মিলে পাঠক মনে শক্তিশালী অনুরণন তৈরি করার মতই।
ভালো থাকবেন।
১৯ শে মে, ২০১৬ রাত ১০:২৬
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ধন্যবাদ পুলহ। আসলে আমি মানুষের ব্যষ্টিগত আচরণ নিয়ে খুব কৌতূহল বোধ করি। এটা নিয়েই গল্পটা লেখা শুরু, শেষে কি হয়েছে সেটা পাঠকই ভাল বলতে পারবেন!
ঠিক করে নিচ্ছি ভুলটা।
পড়ার জন্যে ধন্যবাদ জানবেন আরেকবার।
৩| ১৯ শে মে, ২০১৬ রাত ১১:২৩
সুমন কর বলেছেন: গতকাল আপনাকে ব্লগে দেখেই অপেক্ষায় ছিলাম, গল্প পড়বো বলে।
বরাবরের মতো বর্ণনা দারুণ লেগেছে। ইদানিং সময়ে ব্লগে পড়া চমৎকার গল্প কিংবা পোস্ট।
ইদানিং সামুতে ভালো লেখা নেই। মানে কম। আর নতুন যারা পোস্ট দিচ্ছে, তারা শুধু পোস্ট দিয়েই শেষ। তার মধ্যে সামুর নোটিশবোর্ড থেকে আসা স্টিকি পোস্টটি নিশ্চয় খেয়াল করেছেন ! চিন্তার বিষয়। আপনাকে পেয়ে কিছু কথা বলে ফেললাম।
অনেক অনেক ভালো থাকেন, প্রিয় গল্পকার।
+।
১৯ শে মে, ২০১৬ রাত ১১:৩৩
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: হ্যাঁ, দেখেছি, শঙ্কায় ভুগছি। আমার ব্লগজীবনের শুরু এখানে, শেষটাও এখানেই টানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সরকারী সংস্থার কাজ ঠিকভাবে না করার অভ্যেস এভাবে ব্লগকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে তা ভাবিনি। তবু, আছি সামু যতদিন আছে। পজিটিভলি ব্লগিং করে যাব আর এই ব্যাপারটা আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় থমকে না গিয়ে যেন ঠিক হয়ে যায়- সেই আশা রাখব।
আপনাকে দেখেও ভাল লাগল সুমন। ভাল থাকুন। আনন্দে থাকুন।
৪| ২০ শে মে, ২০১৬ রাত ১:০৫
জেন রসি বলেছেন: শুরুতে ভেবেছিলাম হরর গল্প। তারপর মনে হচ্ছিল চিরায়ত কোন থিমের স্বাদ পাব। তেমনটাই পেয়েছি, তবে ভিন্ন আঙ্গিকে। চমৎকার উপস্থাপনায় কিছু অ্যাবসার্ড ঘটনা দিয়ে যেভাবে গল্পটা পরিবেশন করলেন, তাতে মুগ্ধ হলাম। প্রিয়তে নিলাম। আপনার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।
২০ শে মে, ২০১৬ রাত ১:১৯
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আপনাকে দেখে ভাল লাগল রসি। প্রিয়তে নেবার জন্যে ধন্যবাদ জানাই।
শুভরাত্রি
৫| ২০ শে মে, ২০১৬ রাত ১:৩৭
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: পুরোটা একটানে পড়ে গেলাম।। থামে চাইেও উপায় ছলো না বলে।। বুজির কথা আমাদের বিবেক।। সূজন তার প্রচারক।।
২০ শে মে, ২০১৬ রাত ১:৪১
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: এবং বিবেক একসময় মাটির সাথে মিশে যায়, প্রচারক ভুলে যায় কি প্রচার করছিল...
শুভরাত্রি।
৬| ২০ শে মে, ২০১৬ সকাল ৯:৪৯
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনন্য। অসাধারন!
বুজি যেন আমজনতারই প্রতিরুপ!
দারুন খোঁচা দিয়েছেন আধমরাদের! কিন্তু তারাতো ছেলেদের মতো! উন্নয়ন, সম্পত্তি, ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে ব্যাস্ত! তাদের কি সময় হবে মায়ের জন্য? যখন হবে তখন আর কিছূ থাকবে না!!!!!!!!!!!!!!!!!১
ভাললাগা একরাশ।
২০ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৫:১৬
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভৃগু, সময় নিয়ে পড়ার জন্যে।
শুভেচ্ছা রইল।
৭| ২০ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৯
মুসাফির নামা বলেছেন: সারাদিন বেশ কয়েকবার চেষ্টা করে ডুকতে পারিনি।
তবে আগেই পড়েছি।অসাধারণ লিখছেন।+
২১ শে মে, ২০১৬ রাত ১২:৩২
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: হ্যাঁ, আমারো সমস্যা হচ্ছিল। কেবল ঢুকতে পারলাম। অনেক ধন্যবাদ মুসাফির।
৮| ২০ শে মে, ২০১৬ রাত ১০:৪৪
মনিরা সুলতানা বলেছেন: সত্যি একসময় সবকিছুই সবার সহা হয়ে যায় ...
সব সাময়িক সব চমৎকার ভাবে বলে গেলেন ।
ফিরে আসার জন্য ধন্যবাদ ।
২১ শে মে, ২০১৬ রাত ১২:৩৪
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ফাঁকে ফাঁকে ছিলাম আসলে, অফলাইনে লেখাও পড়েছি, কিন্তু লগ ইন করে কমেন্টের সুযোগ ছিল না। তাই অনুপস্থিতি। আপনাকে পেয়ে ভাল লাগল মনিরা।
৯| ২১ শে মে, ২০১৬ দুপুর ২:২০
মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: দারুণ!! আবার মুগ্ধ হলাম। ইদানিং সামুতে খুব কম আসা হয়, তবে গুটিকয় ব্লগে এই বিশ্বাস নিয়েই যাই যে, নিরাশ হতে হবে না। প্রিয় প্রোফেসর, রোকেয়া বুজি হয়তো এই গল্পে একটা রুপক, কিন্তু বাস্তব জীবনে এমন অনেক রোকেয়াবুজি আছে যাদের কাছে আমাদের অপরিসীম ঋণ। শুভ বুদ্ধির উদয় ঘটুক। চৈতন্য আসুক সবার মাঝে।
আমি বেশ ভালো আছি তিলুবাবু। আশা করি আপনিও ভালো আছেন
শুভকামনা রইল
২১ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৯
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: সেই কামনাই জনমানুষের বুকের ভেতরে, কিন্তু তাঁর প্রকাশ ঘটে যে খুব দেরিতে, এই হোল আমাদের সমস্যা।
আমি আছি ফাটাফাটি, প্রিয় ব্লগার। আপনাদের দেখে অনেক ভাল লাগে। আগের সময়টা মনে পড়ে।
ভাল থাকুন সর্বদা
১০| ২১ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৮
অদৃশ্য বলেছেন:
প্রোফেসর... আপনার ঘরে একটু ঢুঁ দিয়ে গেলাম... লিখাটি সময়করে পাঠের ইচ্ছাটা প্রবলভাবেই থাকলো...
শুভকামনা...
২১ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩২
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ঢুঁ দেবার জন্যে ধন্যবাদ অদৃশ্য!
১১| ২২ শে মে, ২০১৬ রাত ৩:০৪
বৃতি বলেছেন: আনন্দময় পাঠ আপনার লিখা সবসময়ই আকর্ষণীয়, প্রোফেসর শঙ্কু !
২২ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৬
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ বৃতি! ভাল আছেন আশা করি
১২| ২২ শে মে, ২০১৬ সকাল ১০:৫৭
হাসান মাহবুব বলেছেন: বড় নির্মম এক গল্প। আমরা মরে যাই, তারপরেও যেন ঠিক মরি না। বেঁচে থাকি, তারপরেও যেন ঠিক বাঁচি না। দুই জীবনের দ্বন্দ্বে আমরা সবসময়ই দ্বিধাতুর। গায়েবী শব্দের ভোকাল তীব্রভাবে খামচে ধরে আমাদের বুক। ঝুরি ঝুরি মাটিই যেন এই দুই জীবনের মাঝের সেতু। কত সহজ ওপাড়ে চলে যাওয়া, হয়তো বা ফিরে আসাটাও। কিন্তু আমরা তা চাইলে তো!
ডার্ক হিউমার এবং হররের মাতাল সিম্ফনি।
পিলাস!
২২ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫১
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: দ্বিধামাখা দোলাচলে ভোগা আমাদের নিত্য রুটিন, আমরা সোজা কথা বলতে ভয় পাই, নিজের স্বার্থ টানি- কিন্তু চাই কেউ তা না বুঝুক-আর পুরো ব্যাপারটাই একটা প্রহসনে পরিণত হতে সময় লাগে না খুব একটা।
ধন্যবাদ হাসান। আমারো চশমা আছে
১৩| ২২ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৩
আলোরিকা বলেছেন: খুবই অন্যরকম তবে প্রাসঙ্গিক এবং আকর্ষণীয় একটি গল্প । ভাল থাকুন প্রিয় গল্পকার ----- আপনার লেখনী সবসময়ই বেশ উপভোগ্য আর চিন্তার খোরাক যোগায় !
২২ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৮
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: শুনে ভাল লাগল আলোরিকা। শুভেচ্ছা।
১৪| ২২ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১:৫১
বিজন রয় বলেছেন: অনেক ভাল লেগেছে।
+++
২২ শে মে, ২০১৬ রাত ৮:০১
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ধন্যবাদ বিজন।
১৫| ২২ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৫
কল্লোল পথিক বলেছেন: দারুন হয়েছে।
গল্পে+++++++++++
২২ শে মে, ২০১৬ রাত ৮:০২
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: প্লাসের জন্যে ধন্যবাদ কল্লোল।
১৬| ২৪ শে মে, ২০১৬ রাত ১:০৪
উল্টা দূরবীন বলেছেন: অনবদ্য বর্ণনা। গল্পের থিমটাও বেশ আলাদা। অনেক ভালো লেগেছে।
২৫ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৮
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: পড়ার জন্যে কৃতজ্ঞতা জানাই।
১৭| ২৪ শে মে, ২০১৬ রাত ১১:৪১
অগ্নি সারথি বলেছেন: রুপক গল্প! পুরোটা উদ্ধার করতে পারি নাই এখনো তবে ভাবছি। আর হ্যাঁ একটানে পড়ে গিয়েছি। থামি নাই একবারের জন্যেও।
২৫ শে মে, ২০১৬ রাত ৮:০২
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ভাবাতে পারাটাই মূল চেষ্টা ছিল। ধন্যবাদ অগ্নি সারথি।
১৮| ২৫ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৩
গেম চেঞ্জার বলেছেন: মানুষের মেন্টালিটি নিয়েই বোধহয় অস্বাভাবিক ব্যাপার স্যাপারের অবতারণা করেছেন। তবে কবরের ব্যাপারটা খুবই চমকপ্রদ ও নাটকীয়!!
মানুষ হিপোক্রেসি নিজের ভেতরে পুষে রাখে। অভিনয় করে হাসির, কান্নার অথবা অন্য যেকোনও পরিস্থিতিতে নিজেকে উপস্থাপন করে যেভাবে তার ভাবমুর্তি ঠিক থাকে সেভাবে।
অপরাধবোধটাও সবার মধ্যে জাগ্রত হয় না, সঠিক সময়ে।
২৫ শে মে, ২০১৬ রাত ৮:০৭
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ''মানুষ হিপোক্রেসি নিজের ভেতরে পুষে রাখে। অভিনয় করে হাসির, কান্নার অথবা অন্য যেকোনও পরিস্থিতিতে নিজেকে উপস্থাপন করে যেভাবে তার ভাবমুর্তি ঠিক থাকে সেভাবে।''
ভাল বলেছেন!
১৯| ২৯ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৬
দীপান্বিতা বলেছেন: +++
২৯ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৬
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন:
২০| ২৯ শে মে, ২০১৬ রাত ১১:৫৫
সায়ান তানভি বলেছেন: ভালো লেখা।ব্লগে ভাল গল্প লিখে যে দু তিনজন আপনার অবস্থান সবার উপরে।
৩০ শে মে, ২০১৬ রাত ১:০০
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: হাহাহাঃ, কমপ্লিমেন্টের জন্যে ধন্যবাদ, তবে আমার চেয়ে ভাল লেখক এই মুহূর্তে অনলাইনেই আছেন অনেক জন; অফলাইনের কথা বাদই দিলাম! আমি মূলতঃ পড়ি, লেখায় তেমন কাজের না।
শুভরাত্রি সায়ান
২১| ৩০ শে মে, ২০১৬ রাত ১:২৮
সায়ান তানভি বলেছেন: আমাকে কয়েকজন ভালো গল্প লেখকের তালিকা দিতে পারেন ? ব্লগে সময় দেই কম ,তাই অনেকের লেখাই চোখে পড়ে না ।তবে আপনার লেখা উচিৎ ,যদি ভালো লেখা দু হাতে লেখা যায় না ।
৩১ শে মে, ২০১৬ রাত ১১:৪৬
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আমি ব্লগিংয়ের শুরুতে এরকম একটা লিস্ট পেয়েছিলাম সহব্লগারদের সৌজন্যে, এবং আংশিক নিজের পাঠপ্রক্রিয়ার সুবাদে। সেই লিস্টের ৩৩টা নাম তুলে দিলাম। ঘুরে দেখুন, পড়ে দেখুন। আনন্দ পাবেন। চমৎকার জগত।
# মোহাম্মদ ইসহাক খান - Click This Link
# ড়ৎশড় - Click This Link
# হাসান মাহবুব - http://www.somewhereinblog.net/blog/Paranoid
# আকাশচুরি - Click This Link
# মাক্স - Click This Link
# ইনকগনিটো - Click This Link
# নাজিম-উদ-দৌলা - http://www.somewhereinblog.net/blog/zim_du
# এনামুল রেজা - Click This Link
# সাজিদ উল হক আবির - http://www.somewhereinblog.net/blog/Aaabir
# আদনান শাহরিয়ার - Click This Link
# মুরাদ ইচ্ছামানুষ - http://www.somewhereinblog.net/blog/murad_05
# অপর্ণা মম্ময় - Click This Link
# বৃতি - http://www.somewhereinblog.net/blog/breeti
# আল- বিরুনী প্রমিথ - http://www.somewhereinblog.net/blog/Ronaldo24
# তেরো - http://www.somewhereinblog.net/blog/thirteen
# নোমান নমি - http://www.somewhereinblog.net/blog/3741
# জুলিয়ান সিদ্দিকী - Click This Link
# সুজন সুপান্থ - Click This Link
# ফ্রাস্ট্রেটেড - Click This Link
# অনাহূত - http://www.somewhereinblog.net/blog/onahotu
# toysarwar - http://www.somewhereinblog.net/blog/toysarwar
# সাগর রহমান - Click This Link
# ডি মুন - Click This Link
# মোস্তাফিজ রিপন - Click This Link
# rudlefuz - http://www.somewhereinblog.net/blog/rudlefuz
# আবদুর রাজ্জাক শিপন - http://www.somewhereinblog.net/blog/neelblog
# ভাঙ্গা পেন্সিল - http://www.somewhereinblog.net/blog/kijani
# লেখাজোকা শামীম - Click This Link
# মাহী ফ্লোরা - Click This Link
# নিথর শ্রাবণ শিহাব - Click This Link
# শামীম শরীফ সুষম - http://www.somewhereinblog.net/blog/imxylus
# আমি উঠে এসেছি সৎকারবিহীন - http://www.somewhereinblog.net/blog/praxis
# নির্ঝর নৈঃশব্দ্য - Click This Link
২২| ০১ লা জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৮
সায়ান তানভি বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ,আস্তে আস্তে পড়বো ।অশেষ কৃতজ্ঞতা ।
০২ রা জুন, ২০১৬ রাত ১০:৪৮
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আনন্দটা আমার। শুভরাত্রি!
২৩| ০২ রা জুন, ২০১৬ রাত ১১:২৩
নীল-দর্পণ বলেছেন: কী চমৎকার লিখেছেন ! একটানে পড়ে ফেললাম। অনেক ভাল লাগল সত্যি-ই
০২ রা জুন, ২০১৬ রাত ১১:৩১
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: অনেক দিন পর! আশা করি ভাল আছেন
২৪| ০৪ ঠা জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:৪২
মাহবুব আলী বলেছেন: বেশ ফ্যান্টাসি ফ্যান্টাসি, কিন্তু চমৎকার কাহিনী। শুভেচ্ছা।
০৬ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:০৪
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: শুভেচ্ছা
২৫| ০৪ ঠা জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৯
বিজন রয় বলেছেন: ও এটি আগেই পড়েছিলাম।
নতুন গল্পের আশায় আছি।
০৬ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:০৬
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: হ্যাঁ।
লিখছি। শেষ হলেই দেব। ধন্যবাদ বিজন।
২৬| ০৬ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১০:৪৬
আহমেদ জী এস বলেছেন: প্রোফেসর শঙ্কু ,
এই লেখাটি তো আমি যথা সময়েই পড়েছি । আর কোনও লেখা পড়লে আমি সেখানে সাধারনত মন্তব্য করি । কিন্তু এখানে আমার মন্তব্য দেখছিনে । কি জানি , মন্তব্য করেছিলুম কিনা !
অলৌকিকের মিশেল দিয়ে সাংসারিক বাস্তবতা ফুঁটিয়ে তুলেছেন বিশ্বস্ত ভাবে যেখানে বিশ্বাস পাল্টায়, বিশ্বাস ভঙ্গুর হয়ে ওঠে ; কিন্তু সত্য, পরম সত্য, অপরিবর্তিত থাকে।
০৬ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:১২
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: হয়তো ব্যস্ত ছিলেন, সময় হয়ে ওঠেনি। এগুলো কোন ব্যাপার না
বিশ্বাস আর সত্য যমের দুই হাতে জড়িয়ে থাকা দ্বি-মুখী সর্পসম; একই নদীর দুইটি ধারা হয়তো!
শুভরাত্রি।
২৭| ০৭ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:২০
আমি তুমি আমরা বলেছেন: একটানে পড়ে গেলাম। বিবেকরূপী বুজি শেষ পর্যন্ত ঘুমিয়েই পড়ল
০৭ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৯
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: তাছাড়া কি আছে করার
২৮| ০৮ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১০:০৮
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: কী লিখলেন, বস? আমি তো নিশ্চুপ হয়ে গেলাম পড়তে পড়তে! কোথাও থামার খেয়ালই ছিলোনা । রোমাঞ্চিত হয়েছি । শেষ বার্তাটিও চমৎকার!
০৮ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:৪১
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: খুব ভাল লাগল আপনার কথাটি শুনে, সাধু সাব! শুভেচ্ছা।
২৯| ১৩ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:২৯
অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: কমেন্টগুলি পড়লাম শুধু।
কবে যে আমিও ফ্রী হবো আর লিখব বা পড়বো
১৭ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:৩০
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আসেন জীবনের ব্যস্ততা-ঝামেলা সেরে। ফাঁকে ফাঁকে লিখবেন।
৩০| ১৯ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:১৬
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: গল্পটা পড়ে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছি।
যে আকাঙ্খা নিয়ে এসেছিলাম আপনার ব্লগে, তা শতভাগ মিটে গেল
২০ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ২:০৩
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ধন্যবাদ আরণ্যক
৩১| ২১ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১১:৩৮
অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: এই গল্পটা পড়ে আমি একটা কমেন্ট করছিলাম, হারায় গেলো ক্যামনে বুঝলাম না।
লেখার ভঙ্গী টা খুব ইন্টারেস্টিং। কবরের ভেতর থেকে ইদ্রিস কাকার সাথে কথাবার্তা টা মজা লাগলো। সুজনের মত ছোট একটা ছেলের ভেতরে বুজির জন্য যে কষ্ট সেটা নিজের সন্তানদের ভেতর অনুপস্থিত এটা অবশ্যই নাড়া দেয় যখন সত্যিই তারা তার মা কে কবর থেকে তুলতে ব্যস্ত।
লেখাটা পড়ে অনেক আরাম পেয়েছি।
২১ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৭
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আহহা বলেন কি! থাকগে ব্যাপার না, পড়ছেন তো তাই এনাফ
এরকম লেখা আরও লিখতে চাই সামনে।
৩২| ২৪ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৭
এহসান সাবির বলেছেন: প্রোফেসর সাহেব অনেকদিন পর পড়ছি আপনাকে, আপনাকে নয় সবাইকে। কেমন আছেন?
এই গল্পটা একটু অন্য রকম, আপনার কাছে থেকে এই টাইপের গল্প আগে পেয়েছি বলে মনে পড়ছে না। গল্পের প্লট চমৎকার।
কিছু কিছু বিষয় খুব ভালো লেগেছে যেমন- '''ছোট ছেলে বলে, ''মা, জমির ঝামেলাটা আমরা মিটায়া নেই, তারপরেই আপনেরে নিয়া যামু। আর জানেন না তো, দেশের অবস্থা এখন কি খারাপ, চোর-চোট্টা-ডাকাতি-খুন-খারাপি বাইড়া গেছে, কবরের চেয়ে নিরাপদ জায়গা আর নাই।''' আর তাই কোন এক সময় বুজি সুজন কে বলে ''''নানা, গেরামের কথা বাদ দেও। দেশের খবর কও শুনি। খুন খারাপি কি কমছে? আমি বেরাইতে পারমু?''' হায় বুজি......!!
এক গুচ্ছ ভালো লাগা।
২৫ শে জুন, ২০১৬ রাত ৮:৪৬
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: খুব ভাল আছি এহসান। আশা করি আপনিও আছেন চমৎকার।
এই গল্পটা আমার প্রিয়। আপনারও ভাল লেগেছে জেনে আনন্দিত হলাম।
শুভরাত্রি।
৩৩| ০১ লা জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:৩৫
আলম দীপ্র বলেছেন: দারুণ ! একটানে পড়ে ফেললাম ।
২৫ শে মার্চ, ২০১৮ ভোর ৬:৫২
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ধন্যবাদ দীপ্র!
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে মে, ২০১৬ রাত ৯:২০
শায়মা বলেছেন: বুজির জন্য মন খারাপ হলো। সুজনের জন্যও। তোমার গল্পে কোথাও থামা যায় না ভাইয়া।