নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন রেমিয়ান বলছি

এটা গুরুত্বপূর্ন নয় যে আপনার জাত কি, আপনার বর্ন কি, আপনার ধর্ম কি কিংবা আপনার দেশ কি। আপনি যেমনই হোন না কেন, আপনি আমার সাথে ভাল হলে আমিও আপনার সাথে ভাল।

প্রজন্ম রেমিয়ান

খুব একটা ভাল মানুষ নই, অমানুষদের বিরুদ্ধে ভাল মানুষি ব্যবহার করার মানসিকতা কখনোই ছিল না। নিজের জীবনের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব মনে করি ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের ছাত্রত্ব পাওয়া।\\n\\nএকদিন সাড়ে তিন হাত ঘরে যেতে হবে তবে সেজন্য প্রয়োজনীয় কাঠখড় এখনো সংগ্রহ করা হয় নাই, সাধারন ক্ষমার আশায় বসে আছি।\n\nহার্ভার্ডে পড়াশোনার সুযোগ পাওয়া সৌভাগ্যবানদের একজন হতে পারায় সৃষ্টিকর্তার নিকট বরাবরের মতই কৃতজ্ঞ, বুয়েনস এইরেসের একটি অখ্যাত প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার বিজ্ঞানের ওপর অধ্যাপনা করছি।\n\nঅগনন মাইল দূরে বসে থেকেও লাল-সবুজের টানে আজও সমান উন্মাদনা কাজ করে, বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারানোর সময় যেমনটি কাজ করেছিল।\n\nএরকমই খুবই সাধারন তবে ভীষন রগ চটা মানুষ আমি। বন্ধুভাগ্য কখনোই ভাল না, তবে পরিবর্তন হয়ত আপনাদের হাতেই।

প্রজন্ম রেমিয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মিশ্র অনুভূতি

২২ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১:৫৮

২০০৮-০৯ এর সময়টায় বাংলা ব্লগ প্রথম আমার নজরে আসে। ওসময় ব্লগগুলো এতটা জনপ্রিয় হয়ে না উঠলেও বেশ ইনফরমেটিভ লেখা পেতাম। বিনোদন, হালকা, ভারী, রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, পারিবারিক, ভোজন রসনা- সবই থাকত। সবচেয়ে ভাল লেগেছিল যে বিষয়টা সেটা হচ্ছে সংখ্যায় কম হলেও মেয়েরাও ব্লগিঙে এসেছে। আর একটি বিষয় খুব উপভোগ করতাম। তাহল আদর্শিক কারনে যারা ব্লগিং করতে এসেছে তাদের সবাইকেই এখানে পাওয়া যেত। ডানপন্থী-বামপন্থী, পুঁজিবাদী-সাম্যবাদী, অবিশ্বাসী-বিশ্বাসী, জামায়াত-কমিউনিস্ট, লীগ-দল সবই এখানে ছিল। কামারুজ্জামানের ছেলে, (এইমুহুর্তে নামটা ঠিক মনে পড়ছে না। ওয়ামি অথবা ওয়াফি হবে সম্ভবত) ডানপন্থী কবি মতিউর রহমান মল্লিক, ঐসময়ে শিবিরের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার ব্লগও দেখেছি। অমি পিয়াল, নিঝুম মজুমদার, কৌশিক- এদের ব্লগও পড়েছি। এই জিনিসটা খুব ভাল লাগত। এপক্ষ-অপক্ষ দুইপক্ষের লেখা পড়ে সচেতন মানুষরা যেকোন বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে পারত।

আমি বিশ্বাস করি, প্রতিটি খোলা মনের মানুষ (মুক্তমনা শব্দটি ব্যবহার করলাম না, কিছু ব্যক্তি এই শব্দটির অপব্যবহারের মাধ্যমে একে গালির সমপর্যায়ে নিয়ে গেছেন) দুই পক্ষের যুক্তি শুনে সত্যকে বেঁছে নেয়ার সামর্থ্য রাখে। কাজেই সব পক্ষকে কথা বলার সুযোগ দেয়া উচিত। কে সীমালংঘন করল সেটাও সে লক্ষ্য করুক। সীমালংঘনকারীর প্রতি তার বিরুপ ধারনা জন্মাক। ২০১০ সাল পর্যন্ত মোটামুটি এরকম একটা সহাবস্থান দেখেছি। প্রথমে হালকা খোঁচা, ব্যঙ্গ শুরু হল। এরপর গালিগালাজ। এরপর শুরু হল আক্রমন- নিষিদ্ধ কর, ফাঁসি চাই, ব্যান মারো। কেউই কাউকে ছাড় দেয় নাই। ব্লগ দিয়ে ইন্টারনেট চালানো ছেলেগুলোও ফাঁসি চেয়েছে, ইরোটিক লেখালেখির মাধ্যমে চেতনা ছড়িয়ে দেয়া লোকটিও ফাঁসি চেয়েছে। এখান থেকেই ভিন্নমত দলন শুরু হল। বিএনপিপন্থী এবং ইসলামপন্থী (বিশেষত জামায়াতি) ব্লগারদের বের করে দেয়া হল। দুইপক্ষের যুক্তি শুনে সত্যটা বেঁছে নেয়ার সুযোগ আর রইল না।

প্যাঁচ বেশী দিলে টাইট হয়। কিন্তু প্যাঁচ অতিরিক্ত বেশী দিলে প্যাঁচ কেটে যায়। কে জানত যে শাহবাগ-হেফাযতের সময় হিটের সর্বোচ্চ শিখড়ে অবস্থান করা ব্লগগুলোর স্মরনকালের ভয়াবহতম ধ্বস নামবে দুই দিন বাদে? সামহোয়্যার ইন থেকে শুরু করে প্রতিটি ব্লগ ধ্বসে গেল। হেফাযত পরবর্তী সময়ে ব্লগের চাহিদা কমে প্রায় শূন্য হয়ে গেল। দেশে থাকা আমার এক ভাতিজা ক্যাডেট কলেজ ব্লগে লিখত। এক জায়গায় নিজেকে ব্লগার পরিচয় দেয়ায় তাকে মারধোর করা হয়েছিল। ব্লগার মানেই নাকি নাস্তিক! এই ভুল ধারনা ঢুকিয়ে দেয়ার পেছনে আমরা যারা ব্লগার এবং আমরা যাদের দাবার ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হই সেই ব্লগ কর্তৃপক্ষের অবদান নেহায়েত কম নয়। মডারেটর এবং কর্তৃপক্ষের আচরন অনেক সময়ই ভারত-বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনালের ইয়ান গোল্ড-আলীম দারের মত নিরপেক্ষ ছিল। এটা অস্বীকার করলে মিথ্যা বলা হবে।

মাস খানেক আগে দেশ থেকে খুব প্রিয় ছোট ভাই ফোন দিয়েছিল। বেশ নামী ব্লগার। ব্লগিঙের সাথে জড়িত আছে ২০১১ থেকে। শীতবস্ত্র বিতরনের জন্য টাকা চেয়েছিল। সেই সময়টায় আমি অলরেডি অন্য জায়গায় কন্ট্রিবিউট করে ফেলার কারনে ওকে সাহায্য করতে পারিনি। তবে প্রসঙ্গটির অবতারনা করলাম একারনে যে কথাপ্রসঙ্গে ও ব্লগগুলোর ভবিষ্যতের কথা বলছিল। সামহোয়্যারইন ব্লগের সুদিন ফিরিয়ে আনতে খুব শীঘ্রই পদক্ষেপ নেবে এরকম একটা আশা দেখালো সে। আমি বলেছিলাম সম্ভব তবে খুব একটা সহজ না।

ওর কথার প্রমান পেলাম কিছুদিনের মধ্যেই। সামহোয়্যার ইন ফেসবুকে অনেক টাকা-পয়সা ঢেলে কিছু ব্লগের লিঙ্ক প্রমোট করতে শুরু করল। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্নভাবে বিতর্কিত অবস্থান থেকে বেরিয়ে আসা শুরু করে। প্রথম পাতায় যথেষ্ট পরিমান ধর্মীয় লেখা দেখতে পেতে থাকলাম। বিভিন্ন ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের জীবনীও দেখলাম প্রথম পাতায় আসতে। পর্নোগ্রাফি নিয়ে ব্লগার স্বর্নমৃগের অসাধারন একটি পোস্ট এবং অভিজিত ইস্যুতে সাবধানী পা ফেলে ব্লগার মাসুদ রানা কর্তৃক লিখিত একটি পোস্টের মাধ্যমে ধর্মপ্রিয় মানুষের আস্থা অর্জনের একটা প্রয়াস সামহোয়্যারইন কর্তৃপক্ষ দেখিয়েছে। ঘৃণার বিষবাষ্প ছড়ায় এরকম লেখা কমিয়ে আনা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের প্রতি ভালবাসাটা সহনীয় মাত্রার মধ্যেই আছে, এটাকে উন্মাদনার রুপ দেয়ার আগের সেই প্রচেষ্টা আর লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। রাষ্ট্রধর্মের অবমাননাকারীদের প্রশ্রয় দেয়ার অভিযোগ ওঠে এরকম কোন ঘটনাও আর ঘটছে না। গনহারে ব্লগারদের সেইফ করা হয়েছে। সেদিন কে যেন বলল এখন নাকি ব্লগ খোলার ৩-৪ দিনের মধ্যেই সেইফ ব্লগার হওয়া যাচ্ছে। অথচ একসময় সামুর ৭ দিন আর সাহারা খাতুনের ৪৮ ঘন্টা নিয়ে কত হাসাহাসিই না হয়েছে!

এসব কিছু ভেবে আবার আশাবাদী হতে ইচ্ছে করে। তাহলে কি সেই সুন্দর দিনগুলো ফিরে আসছে? আবার কি তাহলে সহবস্থান হবে? বাঘে মহিষে এক ঘাঁটে জল খাবে? কিন্তু বাস্তবতা বড় নিষ্ঠুর। বাস্তবতা এরকম দূরাশা করতে ভয় দেখায়। তাহলে কি আবার ব্লগ উঠিয়ে এনে ছুঁড়ে ফেলা হবে এক পক্ষকে? আমরা যারা সত্যানুসন্ধানী, তারা কিন্তু চাই দু' পক্ষই থাকুক। অন্ধকার না থাকলে আলোর অস্তিত্ব টের পাওয়া যায় না। মন্দ না থাকলে ভালকে চেনা যায়। গনতান্ত্রিক বিশ্বে অপরাধীরও কিন্তু ভোটাধিকার আছে। আশা করব এবার আর আগের ভুলগুলো ব্লগ কর্তৃপক্ষগুলো (বিশেষত সামহোয়্যারইন) করবে না।

হ্যাপী (নাজনীন আক্তার হ্যাপী নয়, অক্সফোর্ড ডিকশনারীর Happy) ব্লগিং।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.