নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাধারণ একজন মানুষ। বলার মতো বিশেষ কিছু নেই। মনের ভাবনাগুলো তুলে ধরতে চাই। ভালো লাগে কবিতা, লিখা-লিখি আর ছবি তোলা, এইতো! https://prokashoni.net

ইফতেখার ভূইয়া

গণতন্ত্র মুক্তি পাক, পরিবারতন্ত্র নিপাত যাক

ইফতেখার ভূইয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইন্টেল প্রসেসর এর হাইপার থ্রেডিং প্রযুক্তি

১৫ ই জুন, ২০২১ ভোর ৪:৫৮


ইন্টেল তার প্রসেসরে মান উন্নয়নে প্রতিনিয়তই বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন প্রযুক্তি যোগ করে চলেছে। সময়ের সাথে সাথে সেই প্রযুক্তিগুলো বিভিন্ন জেনারেশনের প্রসেসরে আর্বিভাব হলেও তা বেশীরভাগ মানুষের জানা-শোনা গন্ডীর মধ্যে নেই খুব স্বাভাবিক ভাবেই কারণ সবাই এই বিষয়গুলোতে সূক্ষ্ম দৃষ্টি রাখেন না। তেমনি একটি প্রযুক্তির নাম "হাইপার-থ্রেডিং" যা বিগত দুই দশকের মতো সময় ধরে ইন্টেলের বিভিন্ন প্রসেসরে বিদ্যমান।

হাইপার থ্রেডিং প্রযুক্তি পরিপূর্ণভাবে বোঝার জন্য কিছু বিষয়ে সম্যক ধারনা থাকা প্রয়োজন যেমন, সিপিইউ সকেট, ফিজিক্যাল ও লজিক্যাল সিপিইউ বা প্রসেসর ইত্যাদি। তার আগে নিচের ছবিটি দেখুন।

কপিরাইটঃ লিঙ্কড্ইন

সিপিইউ সকেটঃ কম্পিউটারের মাদারবোর্ডে অবস্থিত যে ম্যাকানিক্যাল যন্ত্রাংশে প্রসেসর বসানো হয় তাকেই মূলত সিপিইউ সকেট (ক্ষেত্র বিশেষে স্লট) বলা হয়। প্রসেসরের ব্র্যান্ড এবং এর জেনারেশন ভেদে সকেট বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য উইকিপিডিয়ার এই পাতাটি অধ্যয়ন করতে পারেন।

ফিজিক্যাল প্রসেসরঃ স্বাভাবিকভাবে খুচরো বাজার থেকে একটি প্রসেসর কেনা হলেও আধুনিক প্রসেসরগুলোর ভেতরে একাধিক কোর থাকে (বর্তমানে ২-১৬ টি কোর পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে)। মূলত কোরের সংখ্যা ভেদে প্রসেসরের পারফরম্যান্সে তারতম্য হয়ে থাকে যদিও আরো অনেকগুলো বিষয় রয়েছে (ক্লক স্পীড, সিস্টেম বাস, ক্যাশ মেমরী, ব্যান্ডউইডথ ইত্যাদি)। তবে ভারী কাজকর্মের জন্য কোর সংখ্যা যতটা বেশী হয় ততই ভালো বা দ্রুত কাজ সম্পন্ন করা যায়। এই কোরগুলোকেই মূলত ফিজিক্যাল প্রসেসর বলা হয় যা বাস্তবিক অর্থেই মূল প্রসেসর ভেতরে বিদ্যমান। উপরের চিত্রে সর্বমোট ৪ টি কোর দেখা যাচ্ছে তাই এটাকে কোয়াড কোর প্রসেসর বলা যায় বা বলা হয়ে থাকে।

লজিক্যাল প্রসেসরঃ লজিক্যাল প্রসেসর মূলত সফটওয়্যার (মাইক্রোকোড) চালিত ফিচার যা ফিজিক্যাল কোরের ভেতর একাধিক থ্রেড তৈরী করে একই সাথে অনেকগুলো কাজ সম্পাদন করতে সহায়তা করে। স্বাভাবিকভাবে প্রতিটি কোরে কেবল একটি লজিক্যাল প্রসেসর বিদ্যমান থাকে। কিন্তু হাইপার-থ্রেডিং প্রযুক্তি সমৃদ্ধ প্রসেসর এই একটি কোরের ফিচার/ক্ষমতা ব্যবহার করে তা দুটো ইন্সট্যান্সে ভাগ করে প্রতিটিকে একটি এক প্রসেসর হিসেবে স্থাপিত করে (চিত্রে তা HThread হিসেবে দেখানো হয়েছে)। মনে রাখতে হবে যে, এই দুটো থ্রেড বা লজিক্যাল প্রসেসর মূলত একটি কোরের শক্তিকেই শেয়ার করছে। অপারেটিং সিস্টেম (লিনাক্স, ম্যাক বা উইন্ডোজ ইত্যাদি) এই থ্রেডগুলোকেই লজিক্যাল প্রসেসর হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকে এবং প্রতিটি কোরকে আলাদা কাজ করার নির্দেশ পাঠায় তাই যত বেশী লজিক্যাল কোর থাকবে কম্পিউটার তত বেশী কাজ এক সাথে সম্পাদন করতে পারবে।

হাইপার থ্রেডিংঃ আমাদের আলোচ্য বিষয় হাইপার থ্রেডিং মূলত ইন্টেল উদ্ভাবিত সেই প্রযুক্তি যা মূলত ফিজিক্যাল প্রসেসর কোরকে একাধিক থ্রেডিং এর মাধ্যমে স্বতন্ত্র প্রসেসিং ইউনিট তৈরী করে। ২০০২ সালে ইন্টেল প্রথমবার তাদের পেন্টিয়াম ৪ প্রসেসরের মাধ্যমে এই প্রযুক্তির সূচনা করে। সেই থেকে প্রায় প্রতিটি প্রসেসরেই তাদের এই প্রযুক্তি যুক্ত করে আসছে।

ব্যক্তিগত অভিমতঃ হাইপার থ্রেডিং নিঃসন্দেহে একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি যা মানুষের দৈনন্দিন কম্পিউটার নির্ভর জীবনকে অনেকক্ষেত্রেই সহায়তা করছে তবুও ব্যক্তিগতভাবে আমি এই প্রযুক্তির ততটা ফ্যান নই। তার অন্যতম কারন হলো ২০১৮ সালে ইন্টেল এই প্রযুক্তির মারাত্মক নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকার বিষয়টি জ্ঞাত হওয়ার পরেও বিষয়টি জনসম্মুখে নিয়ে আসে নি। কেবলমাত্র ২০১৯ সালে বিভিন্ন নিরাপত্তা গবেষক দল এই বিষয়টি সবার সম্মুখে নিয়ে আসলে তারপর ইন্টেল বিষয়টি স্বীকার করে। এই নিরাপত্তার ঝুঁকিকে মাইক্রোআর্কিটেকচারাল ডাটা স্যাম্পলিং (এমডিএস) হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়েছে যার বিশদ এত স্বল্প পরিসরে আলোচনা করা সম্ভব নয়। তবে সবারই বিষয়টি নিয়ে পড়াশোনা করা বা জানা উচিত বলে আমি মনে করি। স্বাভাবিক কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা এ ধরনের ঝুঁকির আওতায় খুব একটা না পরলেও এটা যে একটা মারাত্মক নিরাপত্তা জনিত উদ্বেগের বিষয় তা অস্বীকার করার উপায় নেই। এ থেকে বাঁচতে কম্পিউটারের বায়োস থেকে হাইপার থ্রেডিং প্রযুক্তি বন্ধ করে দেয়া ছাড়া আর কোন সমাধান নেই।

দ্বিতীয়ত, ইন্টেল এই সফটওয়্যার চালিত ফিচারকে ব্যবহার করে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার কাস্টমারদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে যা আমার কাছে আনএথিক্যাল বিজনেস প্র্যাকটিস বলে মনে হয়েছে। কারণ, একই জেনারেশনের দুটো ভিন্ন প্রসেসর (সম সংখ্যক কোরযুক্ত) তৈরীতে একই সিলিকন ব্যবহার করা হলেও শুধুমাত্র হাইপার থ্রেডিং (মাইক্রোকোড/সফটওয়্যার) ফিচাটির কথা বলে দুটো ভিন্ন প্রসেসর দাম নির্ধারণ করে ক্রেতার কাছ থেকে টাকা এক প্রকার হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। এর অন্য মানে দাাঁড়ালো, সমসংখ্যক কোর সমৃদ্ধ দুটো প্রসেসরের যেটিতে হাইপর থ্রেডিং আছে সেটির এই ফিচার বন্ধ করে দিলে, যেটিতে এই প্রযুক্তি নেই সেটার সাথে পারফরম্যান্সে কোন পার্থক্য থাকার কারণ নেই, কিন্তু দামের পার্থক্য থেকেই যাচ্ছে।

দ্রষ্টব্যঃ এই লিখার বিভিন্ন স্থানে প্রয়োজনীয় রেফারেন্স লিঙ্কের মাধ্যমে যুক্ত করে দেয়া হয়েছে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জুন, ২০২১ সকাল ৮:৪৫

কবিতা ক্থ্য বলেছেন: অত্যন্ত তথ্য সম্বলিত পোষ্ট।
অনেক ধন্যবাদ।

১৫ ই জুন, ২০২১ সকাল ৯:৩১

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: সময় করে পড়ার এবং মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

২| ০৬ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১:০১

জাহিদুল ইসলাম ২৭ বলেছেন: দরকারি একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।এগুলো জানা প্রয়োজন ছিল।

০৬ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৯:৪৩

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.