নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজের চেহারার দিকে তাকিয়ে কিছুই দেখি না। তবে, মানুষ হয়ে মানুষকে ভুল বোঝা আমার স্বভাবে নেই, আপনার পেশা যাই হোক না কেন।

প্রসেনজিৎ হালদার

প্রসেনজিৎ হালদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

শৈশব...

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৫৬

ভাবি লিখব, আটকে যাই। জীবনে লাভের আশা করাও যে ক্ষতি তা ভুলে যাই। পেছনের ইতিহাস মনে করে সামনে চলার শক্তি যোগাই। কেউ কবিতা লেখেন, কেউ প্রবন্ধ। কেউ উপন্যাস, কেউ গল্প। আমার কাছে অনেক কিছু থাকতেও তা সীমিত। কিভাবে ভরাট করবো এই সীমানা, তা অজানা। ভাবি, লিখতে হবে, পড়তে হবে। তাই করি, লিখি-পড়ি। অথচ, থেকে যাই ‘অর্ধশিক্ষিত’।

একটা সময় সবাই মনে করে, ওহ্ বিশাল কিছু হয়ে গেলাম বোধকরি। অথচ, সময়ক্ষেপণের সঙ্গে সঙ্গে তা মিলিয়ে যায় ধুলায়। নিতান্ত অবহেলা বা আলস্যদোষেই সমাপ্ত হয় মূল্যবান দিনগুলো। আর ফেরা যায় না। ঝুড়িতে গল্প পঁচতে থাকে। মজার বিষয়, সেগুলো আবার সতেজ হয়। কখনো অবসরে, কখনো একাকীত্ত্বে। এখান থেকেই তবে শুরু হোক।

বাড়ির উত্তরের মাঠে পাকা গমগুলো তোলার সময় হয়েছে। সবাই ব্যাস্ত, পেঁয়াজের ক্ষেতও চকচক করছে ফুলে তাই কাটছে কৃষক। আমিও ঘুড়ি হাতে বেড়িয়েছি বিকেলের আগেই। ওড়ানো সঙ্গী নেই আমার। প্রজাপতি আকৃতির (‘ব্যানা’) ঘুড়িটা একা ওড়ানো যায় না, তখনো জানি না। তবে, একাই উড়াই। কখনো ছিড়ে যায়, কখনো উড়ে। এভাবেই চলে।

মনে হতো, দক্ষিণ দিক থেকে বয়ে যাওয়া বাতাসে ঘুড়িটা ওড়ানোর জন্যই হয়তো বিধাতা এই বাতাস দিয়েছেন। চৈত্র-বৈশাখ মাস, খটখটা খেত। অনেক কষ্ট করে নিজের হাতে বানানো ঘুড়িটা উড়িয়েই শান্তির শ্বাস নেই। বলি, আহ্। সেকি আনন্দ, অথচ বেশিরভাগ দিনই সঙ্গে কেউ নেই। একা একাই আনন্দ।

বিকট (চিননননন) শব্দে উড়ছে ঘুড়ি। হাতে সময় প্রায় ৩ ঘন্টা। হাটু পানির পরিস্কার ডোবায় টাটকিনি, পুটি, ট্যাংড়া, কই, টাকির সমাহার। সেখানেই আবার বাগ (বড় গাছসহ ঝোপঝাড়)। বাগের মধ্যে ঝুলছে হলুদ গাব, পাকা আম। নিজেদের, প্রতিবেশীর, সবার বাড়ির পিছনেই বাশঝাড়সহ বাগ। কোন দ্বিধা ছাড়াই দুই মিনিটে উঠে পড়লাম গাব গাছে। সবথেকে মিষ্টি যে গাছের গাব, সেই গাছে। ওই গাছটিই ছিল সবগাছের মধ্যে বড়। গাবগুলো মিষ্টিও চরম। প্রায় গোটা পঞ্চাশেক টলটলে হলুদ গাব ইংলিশ প্যান্টের পকেট আর গেঞ্জির মধ্যে পুরে খুব কষ্টে গাছ নামলাম।

বাশের তৈরি মোটা নাইলনের লাটাইটি বড়ই গাছের গোড়ায় বাধা। ঘুড়ি উড়ছেই। হাতেও সময়। আবহাওয়া এর থেকে ভালো হয় না। বিস্তীর্ণ আকাশের দিকে তাকালে গোটা ২’শ ঘুড়ি তো হবেই। কোনটা একটু নিচে, আবার কোনটা মনে হচ্ছে আকাশ পাড় করে গেছে। আমার ঘুড়িটা মাঝামাঝিতে। গায়ে-পায়ে খুব বড় ছিলাম না বলেই বেশি সুতা রাখতাম না।

বড়ই গাছটি ঠিক ডোবার কিনারায়। মাছগুলো টপটপ করছে। মনে হচ্ছে, আমায় ডাকছে। ততক্ষনে ২০-২৫টি গাব শেষ। মুরুব্বিরা যাতায়াত করছে, খুশি হয়ে দু’একটি নিয়েও যাচ্ছে। খেয়ে বলছে, ‘দারুন তো, কোন গাছের’। আমি কি অতো বোকা বলে দেব, ‘ওই গাছের’। অবশ্য বললেও লাভ নেই। ওই গাছে উঠে গাব পাড়ার মতো লোক ছিল শুধু আমার দাদু। মজার বিষয় হচ্ছে, ওই বাগে গাব গাছ আছে প্রায় ৩’শ। এবার বুঝুন, কতো রকম স্বাদের গাব হতে পারে। ওখানে এমনো গাব আছে, যার মধ্যে কোন মিষ্টি নেই।

সে যাই হোক, এবারতো মাছ ধরতে হবে। একদৌড়ে বাড়ি থেকে মাটির কলসি আকৃতির মাছ ধোয়ার হাড়িটা এনেই এক দন্ড দেরি না করে পানিতে হাত দেওয়া মাত্র মাছ! বাহ, প্রথমেই টাকি। যদিও খুব বড় ছিল না। তবে, অত সুস্বাদু মাছ হয় না। তা আপনারাও জানেন। হাটুর নিচে পানি, কাদার মধ্যে মাছ পিলপিল করছে। ডোবাও খুব বড় নয়। একবার ভাবি, না প্যান্টটা ভিজিয়েই ফেলি। আবার ভাবি, না থাক। এই করতে করতে, হঠাৎ হাতে নিচে একটু বড় আকৃতির একটা শোল মাছ পড়তেই কখন যে প্যান্টটা ভিজে গেছে জানি না। এবার কাদা-কাদা খেলা আর মাছ। পাশদিয়ে অনেকেই যাচ্ছে, ডেকে মাছ দেখছে। বলছে, ‘ভালোই তো। একদিন তো হয়েই যাবে’।

সময় পেড়িয়ে যাচ্ছে, মাছ ধরা চলছেই। পাতিলের প্রায় অর্ধেকের বেশি ভরে গেছে। মাছ যেহেতু পাওয়া যাচ্ছে, তাই সেখান থেকে ওঠার প্রশ্নই আসে না। এভাবে, কখন যে সন্ধ্যা আজান দিয়েছে তা ভুলেই গাছে। আবছা আলোতে তখনো শব্দ হচ্ছে ঘুড়ির। ততক্ষনে, আমাকে খুঁজতে লোক হাজির। জানে ঘুড়ি ওড়াচ্ছি, তারাও শব্দ পাচ্ছে। এসে দেখে আমি ডোবায়, পারে অনেকগুলো পাকা গাব। দু’একটা ধমকও ততক্ষনে হজম করতে হলো। কিন্তু যখন ডোবা থেকে উঠলাম, মাছ দেখে অবাক আমার কর্তৃ (নানীর ছোট বোন নানী)। বলে, ‘কি রে ভাই রাত হয়ে গেছে, চল বাড়ি যাই, আবার কাইল (আগামীকাল) ধরিশ। কোন মতে হাত ধুয়ে অন্ধকারে ঘুড়িটা নামালাম কষ্টে। বড় ঘুড়ি, মোটা সুতো। এরপর নানির সঙ্গে চলে গেলা বাড়ি। তারপর, আবার আরেক দিন...

চলবে...

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৭:৫৭

রাজীব নুর বলেছেন: চলুক---
তবে খেয়াল রাখবেন পোষ্ট পড়তে যেন বিরক্ত না লাগে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.