![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বর্তমানে দেশের সবক’টি বেসরকারি হাসপাতালে চলছে চিকিৎসার নামে বাণিজ্য। আলট্রাসনোগ্রাম টেস্ট ফি সরকারি হাসপাতালে ২২০ টাকা। একই টেস্ট বেসরকারি পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ১ হাজার ২০০ টাকা। ব্লাড কালচার টেস্ট ফি সরকারি হাসপাতালে ২০০ আর ল্যাবএইডে ১ হাজার ১০০ এবং পপুলারে ১ হাজার ৩০ টাকা। কেবল আলট্রাসনোগ্রাম বা ব্লাড কালচারের ক্ষেত্রেই নয়, রোগ নির্ণয়ের সব ধরনের পরীক্ষায় ইচ্ছেমতো ফি আদায় করছে বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো। সরকারি হাসপাতালের সঙ্গে বেসরকারি হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিকের রোগ নির্ণয় ফি’তে আকাশ-পাতাল ফারাক। বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানই সরকারের নির্দেশনা মানছে না। এসব বেপরোয়া প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রহস্যজনক কারণে সরকার কোনো ব্যবস্থাও নিচ্ছে না। এতে প্রতিদিনই হাজার হাজার রোগী বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক ধরনের ব্যবসায়িক থাবার শিকার হচ্ছে।
মূলত, বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো রোগ নির্ণয়ের নামে অসহায় মানুষের কাছ থেকে ‘গলা কাটা ফি’ আদায় করছে। সরকারি হাসপাতালের কতিপয় ডাক্তারকে মাসোহারা বা কমিশন দিয়ে তাদের মাধ্যমেই রোগী ভাগিয়ে নিচ্ছে এসব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। বিশেষ স্বার্থে রোগীদের বলা হচ্ছে সরকারি হাসপাতালের চেয়ে বাইরের হাসপাতাল বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর রোগ নির্ণয়ের ফলাফল ভালো।
বিশেষজ্ঞরা জানায়, সেবাদানের ব্রত নিয়ে এসব প্রতিষ্ঠান চালু করা হলেও মূলত তারা অতি মাত্রায় মুনাফার বাণিজ্যে নেমেছে। সরকার চাইলেই এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়ে সাধারণ মানুষের সেবা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে পারে।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, সিরাম আয়রন টেস্টের সরকারি ফি ২৫০ টাকা হলেও একই বিষয়ে পপুলারে নেয়া হচ্ছে ১ হাজার ও ল্যাবএইডে ৯১০ টাকা। সিটিস্ক্যান (হোল অ্যাবডোমেন্ট) ফি সরকারি হাসপাতালে ৪ হাজার আর এমআরআই ৩ হাজার টাকা। অথচ মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসেস নিচ্ছে যথাক্রমে ১২ হাজার ও ১৪ হাজার টাকা। যেকোনো ধরনের ডিজিটাল এক্সরে ফি (ফিল্মের সাইজ অনুসারে) সরকারি হাসপাতালে গড়ে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা হলেও এসব বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা নেয়া হচ্ছে। কেবল পপুলার বা ল্যাবএইড নয়; স্কয়ার, এ্যাপোলো, ইবনে সিনা, শমরিতা, সেন্ট্রাল, মডার্ন ও খিদমাহ হাসপাতালসহ তুলনামূলক স্বল্পপরিচিত প্রায় সব প্রতিষ্ঠানে ইচ্ছেমতো রোগ নির্ণয় ফি আদায় করা হচ্ছে। এ অবস্থা দেশের সর্বত্রই বিরাজ করছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের জন্য রোগ নির্ণয়ের ফি নির্ধারণ করা নেই। ১৯৮২ সালে সরকার একবার সরকারি-বেসরকারি সব চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠানে রোগ নির্ণয়ের একই ফি নির্ধারণ করে নীতিমালা করে। কিন্তু দুই বছরের মাথায় তা বিলুপ্ত করা হয়। এর পর থেকেই বেসরকারি হাসপাতাল বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ইচ্ছেমতো টেস্ট ফি আদায় করে যাচ্ছে। ডায়াগনস্টিক ব্যবস্থায় বা প্যাথলজিক্যাল টেস্টের ক্ষেত্রে দেশব্যাপী এক ধরনের দুর্বৃত্তায়ন চলছে। যে যেমন পারছে ইচ্ছেমতো রোগীদের কাছ থেকে ফি আদায় করছে। নিয়ন্ত্রণ নেই কোথাও। এসব নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো ভূমিকা নাই। অথচ জনস্বার্থে এ বিষয়ে যথাযথ মনিটরিং এবং কার্যকর পদক্ষেপ জরুরী। সরকার এ বিষয়ে গুরুত্ব দিলেই রোগ পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফি সব প্রতিষ্ঠানে এক রকম করতে পারে। কারণ প্রতিষ্ঠানভেদে শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্টের মানের তেমন পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় না। কেবল ফি’র ক্ষেত্রেই ব্যাপক বৈচিত্র্য দেখা যায়, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সরকারি হাসপাতালের টেস্টের মান খারাপ অজুহাতে বাইরের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নেয়া হয়। অথচ অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালের রোগ নির্ণয় ফলাফল যে কোনো নামিদামি বেসরকারি হাসপাতাল বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ে ভালো। জানা গেছে, বেসরকারি ওইসব প্রতিষ্ঠানের রোগ নির্ণয় ফি নির্ধারণসহ আরো কিছু বিষয়ে খসড়া নীতিমালা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে অন্তত চারবার মন্ত্রণালয়ে খসড়া পাঠানো হলেও অজ্ঞাত কারণে বারবার তা আটকে গেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, সরকারি স্বাস্থ্যসেবার ব্যর্থতার কারণে দেশের শতকরা ৬৮ ভাগ লোক বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা নেয়। এ সুযোগসহ সরকারের অদক্ষতা, অবহেলা, উদাসীনতার সুযোগে মালিকরা চালাচ্ছে স্বেচ্ছাচারিতা।
এভাবে চিকিৎসা ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় দরিদ্ররা চিকিৎসা নিতে পারছে না বা চিকিৎসা অসমাপ্ত রেখে ফিরে যাচ্ছে। দরিদ্র মানুষ যেখানে সাধারণ রোগের চিকিৎসা করাতে পারে না, সেখানে দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসা করা যেন মাথায় বাজ পড়ার শামিল। ভিটেমাটি, ঘর, হালের বলদ বিক্রি, ধার-দেনা করে তাদের এই কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতে হয়। আর ব্যয়বহুল চিকিৎসা করাতে গিয়ে কত পরিবারে অর্থনৈতিকসহ অন্যান্য সমস্যা নেমে আসছে এর কোনো পরিসংখ্যান নেই।
বাংলাদেশের মানুষ চিকিৎসা-ব্যয়ের ৬২ শতাংশ নিজেই বহন করে। এই ব্যয় মেটাতে গিয়ে মধ্যবিত্তরা দরিদ্র হয়ে পড়ে। আর যারা দরিদ্র, তারা নিঃস্ব হয়ে যায়। এ দেশে দারিদ্র্যের অন্যতম একটি কারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। এই সমস্যা উত্তরণে সহজ পথ নেই। বরং শতাংশের হিসাবে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ প্রতিবছর কমছে। যা আদৌ বরদাশতযোগ্য নয়।
স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়াতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, জনস্বাস্থ্যবিদ ও অর্থনীতিবিদদের একজোট হয়ে সরকারের উপর মহলে চাপ দিতে হবে।
২| ০৭ ই জুলাই, ২০১৩ ভোর ৬:৪০
আতা2010 বলেছেন: মেডিক্যাল ইকিউপমেনট গুলার দাম অনেক বেশি
০৭ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:০০
পুকুরপাড় বলেছেন: হলেও কিন্তু দাম এত রাখা ঠিক না কারন একটা মেশিন তো আর একবারেই ব্যবহার করে ফেলে দিচ্ছেনা ।
৩| ০৭ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৮
সাদা রং- বলেছেন: বেসরকারি হাসপাতালের সবগুলোতে একই অবস্থা
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই জুলাই, ২০১৩ ভোর ৫:৪৮
পয়গম্বর বলেছেন: পোস্টটি স্টিকি করার দাবী জানিয়ে গেলাম।