![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার জন্ম একটি যৌথ পরিবারে এবং সেটি ছিল বিশাল। বিশালতা টা টের পাওয়া যাবে সদস্য সংখ্যা জানলে ......আমাদের পরিবারে আমরা সবাই মিলে ছিলাম ত্রিশ জন। আর এ কারনে আমাদের এলাকায় খুব পরিচিতি ছিল। সবাই আমাদের বাসা চিনত “তালগাছ ওয়ালা বাসা” (বিশাল ২ টা তালগাছ ও ছিল আমাদের গেটের কাছে) বলে। সবচেয়ে মজার বিষয় ছিল আমাদের কোন দাওয়াত দেয়ার আগে মানুষ বেশ চিন্তা করে দিত......কারন আমরাই একটি আলাদা বরযাত্রীর সমান ছিলাম।
আমাদের বাসায় সবসময়ই উৎসব লেগে থাকত। বস্তুত প্রতি শুক্রবারই উৎসব থাকত কারন সেইদিন বাসায় সবাই থাকত আর পোলাও রান্না করা হতো। তাই সব চাইতে আনন্দে থাকতাম আমরা তের জন। ওহ! মুল বিষয়টাই বলা হইনি...... আমরা ছিলাম তের ভাই বোন। আর আমরা ছিলাম সবাই পিঠাপিঠি তাই বন্ধুত্ব ও ছিল বেশি। আমরা যে কত মজা করে শৈশব টা পার করেছি............ বাসায় নতুন একটা বই কিনা হলে তো রীতিমত কাড়াকাড়ি লেগে যেত তবে জিতত সবসময় বড়রাই। তবে সিনেমা দেখতাম একসাথে ভিসিয়ারে, লাইট অফ করে (হলের পরিবেশ তৈরির জন্য)। “আজ রবিবার” আমাদের খুব প্রিয় একটা নাটক ছিল, এদিন আমরা আগেই পাশের বাসা থেকে তার টেনে এনে রেডি করে রাখতাম যেন হঠাৎ করে লোডশেডিং হলে নাটক না মিস হয়ে যায়। আর দেখতাম বাংলায় ডাবিং করা ইংলিশ সিরিয়াল গুলো।
আমাদের বাসায় ছিল প্রচুর গাছ আর তাই আমরা ছিলাম গেছো। সময় অসময়ে আমাদের পাওয়া যেত পেয়ারা অথবা আম গাছে। কত যে ঝড়ে আম কুরিয়ে খেয়েছি, দাদুর কাছে বকা খেয়েছি কাঁঠালের মোচা খেয়ে ফেলার জন্য। আর বরই এর সময় তো একেবারে বরই পারার উৎসব লেগে যেত। বরই গাছের নিচেই একটা হাউজ ছিল, সেটাতে টিন বিছিয়ে তার উপর একটা চাদর ধরে দেয়া হতো গাছে ধাক্কা। আমরা এতজন ছিলাম বলে বরই গাছটাও মনে হয় বুঝে অনেক ফল দিতো।
আমাদের কোনোদিন খেলার সাথীর অভাব হয়নি বরং ক্রিকেট খেলার সময় আমরা ছোট দুজন বাদ পরতাম । আমাদের ছিল বিশাল ড্রইংরুম আর সেখানে আমাদের প্রিয় খেলা ছিল রাজদরবার। সবচেয়ে বড় দুজন রাজারানি আর বাকিরা মন্ত্রী,সেনাপতি......আর ছোট হওয়াতে এখানেও আমি নিতান্তই একজন প্রজা
।পুতুলের বিয়ে দিলে পাড়ার অন্য মেয়েরা আসত বিয়ে খেতে( এখানে অবশ্য ভাইগুলো অংশগ্রহণ করতনা)। আমার মনে আছে একবার আমি বড় আপুর কাছ থেকে পুতুলের জন্য একটা সুটকেস পেয়ে কি যে খুশি হয়ে ছিলাম।এখন বুঝতে পারি সেটা ছিল জেমস ক্লিপ এর বক্স
। এতো বড় হয়ে আমি এখনও যা খুব মিস করি সেটা হল বৈশাখী মেলা...... আমরা ১৩ জন বৈশাখের কোন একদিন বিকালে আমাদের ছাদে মেলা বসাতাম, কেউ পুতুলের জামা কাপড় নিয়ে বসত, কেউ দিত খাবার দোকান, তবে আমার নিজের বড় ভাই দিত রঙিন কাগজ দিয়ে বানানো মুখোশ এর দোকান। মা চাচীরাও আসত আমাদের মেলায়, খাবার কিনে খেতে।এই মেলার প্রচলন টা যে কে করেছিল তা কখনও জানা হয়নি।
আমাদের খুব প্রিয় একটা সময় ছিল লোডশেডিং এর সময় টা, কারন সন্ধ্যায় লোডশেডিং হলেই আমরা সবাই ছাদে চলে যেতাম আন্তাকসারি খেলার জন্য।সেই সময়ের গান গুলো আমার এখনও মনে আছে অথচ আমি এখনকার গানগুলো মনেই রাখতে পারিনা। আরও একটা মজার কথা শেয়ার করতে চাই, আমরা সব বোনগুলো ভোরে একসাথে হেঁটে স্কুলে যেতাম, আমার সবচেয়ে বড় যে বোনটা ক্লাস টেনে পরত, আমাদের সবার পানির ফ্লাক্স ও দুই হাতে করে ঝুলিয়ে ঝুলিয়ে বয়ে নিয়ে যেত (ও এটা ওর দায়িত্ব মনে করে করত) । এখনকার ক্লাস টেন এর মেয়েদের দেখলে আমার আপুটার কথা মনে করে হাসিও পায় আবার দুঃখ ও হয়। কিযে নির্মল আনন্দের সে দিনগুলো। তবে আমাদের এই আনন্দে প্রথম ভাটা পরল যেদিন আমাদের মাঝে একজনের বিয়ে হয়ে গেল, সেইদিন যে আমরা সবাই কত কেঁদেছিলাম.........
আমি জানি এই কথা গুলো আজকের এই একান্নবর্তী পরিবারের যুগে অনেকেরই শুধুই গল্প মনে হতে পারে, কিন্তু আমার একটি কথাও গল্প না, পুরোটাই আমার শৈশব। আজ আমরা এক এক ভাই বোন এক এক জায়গাতে। আমি জানি আমার মতো আমার সব ভাই বোনই সেই দিনগুলো মিস করি,তাই এখনও সবাই একসাথে হলে ভুলে যাই যে আমরা অনেক বড় হয়ে গেছি।
২| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সকাল ১০:৩৪
প্রিয়তী বলেছেন: ধন্যবাদ...কিন্তু কি ভাল লাগলো ? লেখা না পরিবার টা?
৩| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১১:৩৮
জমিদার বাবু বলেছেন: আসলেই কি সদস্য সংখ্যা ৩০ জন ছিল?? । তালগাছ ওয়ালা বাসায় ৩০ জন লোক
।খাইছে.....।আর এত পোলাও খেতা বলেই শরীরটা মাশাল্লা ভালই, তাই না?
আর তুমি কি গাছে উঠতে পার? জানতাম না তো। আর হ্যা, রাজদরবারে রাজা কে হত?
আসলেই সুন্দর পরিবার।
৪| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১২:৩৪
প্রিয়তী বলেছেন: আসলেই ত্রিশ জন ছিলাম।
হুম....আমরা খানাপিনা ওয়ালা পরিবারের মেয়ে. , তারপর ও আমি খুব মোটা না
আর আমি শুধু পেয়ারা গাছে উঠতে পারতাম.........অন্য গুলোতে না।
রাজদরবারের রাজা বড় আপুরা হত।
৫| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ ভোর ৬:২৯
জাহাজী পোলা বলেছেন: খুবই সাধারন ও বোকাসোকা কল্পনাপ্রবণ মানুষ............ আর ভালোবাসি সমুদ্র......
তাইলে তো ভালাই
আমার জাহাজে বেড়াতে আস্পেন
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সকাল ৯:০১
প্রিয়তী বলেছেন: অবশ্যই আসপ...........
তবে ত্রিশ জন নিয়ে আসপনা.......
৬| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ ভোর ৬:৩৭
জাহাজী পোলা বলেছেন: এখনো কি ৩০ জন নিয়ে আমার জাহাজে বেড়াতে আস্পেন??
(দাওয়াত দিয়া ভুল হয়া গেছে মুনে হয় )
ভাল কথা- আপনি মনে হয় মন্তব্বের জবাব কিভাবে দিতে হয় টা বুঝতেসেন না।
আমার এই মন্তব্বের নিচে দেখুন লেখা আছে
জবাব দিন|মুছে ফেলুন | ব্লক করুন
আপনি জবাব দিন এ ক্লিক করে জবাব দিতে পারবেন।
আপনার লেখা পরচি।
মনটা খারাপ হয়া গেল
আমাদের পরিবারের সবাই আলাদা আলদা থাকে, জীবন সবাইকে দূরে ঠেলে দিচে।
যাই হোক আপ্নে পিচ্চি অবস্থায় সব সময় প্রজা হইতেন শুইন্না ভালা লাগসে
ভাল থাকুন, হ্যাপি ব্লগিং
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সকাল ৯:০৬
প্রিয়তী বলেছেন: আমি তো আপনি যেভাবে বলেছেন সেভাবেই মন্তব্য করতাম.।।তবুও কেন যে........... :#> :#>
হমম আমরা ছোট গুলা সবসময়ই দুধভাত ছিলাম....
আর সবশেষে আমার ব্লগে আসপার জন্য ধইন্না....
৭| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১:১১
জাহাজী পোলা বলেছেন:
আপনাদের মেলা থেকে জিনিস কিনবার চাই।
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সকাল ১০:২৩
প্রিয়তী বলেছেন: মেলা তো অহন আর অয়না...........
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সকাল ৯:৪০
জমিদার বাবু বলেছেন: খুবই ভাল লাগল। অনেক ভাল লিখেছ।