নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সালাউদ্দিন রাব্বী

রাবব১৯৭১

সালাউদ্দিন রাব্বী

রাবব১৯৭১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ: বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার জন্য এক অগ্নিপরীক্ষা

০৩ রা মে, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২


ভারত ও পাকিস্তান উপমহাদেশের দুই পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র। স্বাধীনতার পর থেকেই এদের মধ্যে সম্পর্ক উত্তেজনাপূর্ণ। কাশ্মীর ইস্যু, সীমান্ত সংঘাত, জঙ্গিবাদ ইত্যাদি নানা কারণে দুই দেশের মধ্যে তিনটি বড় যুদ্ধ এবং অসংখ্য সীমান্ত সংঘর্ষ ঘটেছে। যদি এই দুই রাষ্ট্রের মধ্যে আবার পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরু হয়, তবে তার প্রভাব শুধু সীমিত থাকবে না; গোটা দক্ষিণ এশিয়া এক ভয়াবহ অস্থিরতার মুখোমুখি হবে। বিশেষত বাংলাদেশ, যা ভৌগোলিকভাবে এই দুই রাষ্ট্রের মাঝে একটি সংবেদনশীল অবস্থানে রয়েছে, বহুমুখী বিপদের মুখে পড়তে পারে।

১. কূটনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক সংকট
যুদ্ধ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশকে কূটনৈতিকভাবে ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে। একদিকে ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী ভারত, অপরদিকে মুসলিম বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য পাকিস্তান। এ ধরনের পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের নিরপেক্ষ অবস্থান রক্ষা কঠিন হয়ে পড়বে। ভারত যদি বাংলাদেশ থেকে সামরিক বা কৌশলগত সহায়তা চায়, তাহলে পাকিস্তান ও এর মিত্র রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক সংকটে পড়তে পারে। আবার পাকিস্তানপন্থী কোনো রাজনৈতিক গোষ্ঠী যুদ্ধকে ভিন্নভাবে ব্যবহার করে দেশে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।

২. অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও বাণিজ্য বিঘ্ন
দক্ষিণ এশিয়ায় যুদ্ধ মানেই অর্থনৈতিক স্থবিরতা। যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়ে গেলে বাংলাদেশে জ্বালানি সংকট দেখা দেবে। এ ছাড়া ভারতের সঙ্গে যেসব স্থলবন্দর ও পরিবহন ব্যবস্থা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তা সাময়িক বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে মারাত্মক প্রভাব পড়বে। বিদেশি বিনিয়োগ হ্রাস, শেয়ারবাজারে ধস এবং বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি – এসব হবে অনিবার্য।

৩. মানবিক সংকট ও শরণার্থী প্রবাহ
যুদ্ধ হলে সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে ব্যাপক মানুষ পালিয়ে আশ্রয়ের খোঁজে অন্য দেশে ঢুকে পড়তে পারে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ যেভাবে শরণার্থীর ঢল দেখেছিল, এবার হয়তো বাংলাদেশ নিজেই সেই চাপে পড়তে পারে। ভারতের আসাম, মেঘালয়, পশ্চিমবঙ্গ ইত্যাদি রাজ্য থেকে মানুষ বাংলাদেশে ঢুকে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে খাদ্য, বাসস্থান, স্বাস্থ্যসেবা ও আইনশৃঙ্খলায় বাড়তি চাপ সৃষ্টি হবে।

৪. সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ও নিরাপত্তা হুমকি
যুদ্ধ পরিস্থিতি ধর্মীয় আবেগকে উসকে দিতে পারে। দুই দেশের মধ্যকার দ্বন্দ্ব মুসলিম-হিন্দু প্রশ্নে পরিণত হলে বাংলাদেশেও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। এর সুযোগ নিয়ে মৌলবাদী গোষ্ঠী, জঙ্গি সংগঠন বা রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বাহিনীকে তখন বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে – একদিকে অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা, অন্যদিকে সীমান্ত নিরাপত্তা।

৫. পরমাণু যুদ্ধ ও পরিবেশগত বিপর্যয়
ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই পারমাণবিক শক্তিধর। যদি যুদ্ধ পরমাণু পর্যায়ে গড়ায়, তাহলে তা মানব ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ বিপর্যয়ে পরিণত হতে পারে। ‘নিউক্লিয়ার উইন্টার’ বা পারমাণবিক শীত, বিষাক্ত গ্যাস, বাতাস ও পানির দূষণ এসবের প্রভাবে বাংলাদেশে খাদ্য উৎপাদন হ্রাস, মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিবেশগত ধ্বংস নেমে আসতে পারে।

৬. সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব
যুদ্ধের প্রভাব শুধু কূটনীতি বা অর্থনীতিতে সীমাবদ্ধ থাকবে না, এর প্রভাব মানুষের মনোজগতে ও সমাজে পড়ে। গণমাধ্যমে যুদ্ধসংক্রান্ত বিভ্রান্তিকর খবর ছড়িয়ে পড়লে গুজব, ভীতি ও সামাজিক অবিশ্বাস বাড়বে। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে হতাশা, জাতিগত ঘৃণা বা উগ্র জাতীয়তাবাদ বাড়তে পারে, যা সামাজিক সম্প্রীতির জন্য হুমকি।

উপসংহার
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ কেবল দুই রাষ্ট্রের নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার জন্য এক অগ্নিপরীক্ষা। বাংলাদেশ তার ভৌগোলিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংবেদনশীলতা নিয়ে এ যুদ্ধে সরাসরি না জড়ালেও, এর মারাত্মক ফল ভোগ করতে হবে। সুতরাং, এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশকে এখনই কৌশলগত প্রস্তুতি নিতে হবে বহুপাক্ষিক কূটনীতি জোরদার করা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুনর্বিন্যাস, খাদ্য ও জ্বালানি মজুদ বৃদ্ধি এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি এই সকল পদক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা মে, ২০২৫ বিকাল ৪:৫০

যামিনী সুধা বলেছেন:



বকবক করতে ভালোবাসেন?

২| ০৩ রা মে, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

যামিনী সুধা বলেছেন:



আপনি শান্ত হোন, পারমানবিক যুদ্ধ হবে না। স্বাস্হ্যকর খাবার খান, ঠিক মতো কাজ করেন।

৩| ০৩ রা মে, ২০২৫ বিকাল ৪:৫৩

যামিনী সুধা বলেছেন:



যুদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে মি আপনাকে জানাবো, ১ টা হেলমেট কিনে নিবেন।

৪| ০৩ রা মে, ২০২৫ বিকাল ৪:৫৮

ঊণকৌটী বলেছেন: পাগলের প্রলাপ শুনলাম, বাস্তবের আশেপাশেই নাই |

৫| ০৩ রা মে, ২০২৫ বিকাল ৫:০৬

ঊণকৌটী বলেছেন: মুসলিম বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য পাকিস্তান। এ ধরনের পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের নিরপেক্ষ অবস্থান রক্ষা কঠিন হয়ে পড়বে। একটা গোপন কথা বলি পৃথিবীর প্রথম সারির মুসলিম দেশ গুলি মোদীজী কে তাদের দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্মান দিয়ে বলেছে ভাই, তো পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী মুসলিম দেশের সমর্থন মোদীর পক্ষে, মোদী ওদের পার্টনার, তো কি বলবেন ভাই?

৬| ০৩ রা মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৪

আমি নই বলেছেন: যুদ্ধ হোক, আমাদের কিছুই হবেনা। আমি চাই যুদ্ধ হোক আর বকবকি কমুক। আর যদি সম্ভব হয় কাশ্মির স্বাধীন হোক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.