নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সালাউদ্দিন রাব্বী

রাবব১৯৭১

সালাউদ্দিন রাব্বী

রাবব১৯৭১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্মান্ধ মৌলবাদ ও বাঙালির সাংস্কৃতিক অস্তিত্বের সংকট।

২৬ শে জুন, ২০২৫ সকাল ৯:১৭

ধর্মান্ধ মৌলবাদ ও বাঙালির সাংস্কৃতিক অস্তিত্বের সংকট।
১৯৭২ সালের সংবিধান ছিল একটি ধর্মনিরপেক্ষ, অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল রাষ্ট্রের স্বপ্নপূরণের ঘোষণা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর যে সংবিধান জাতিকে উপহার দেন, তাতে ধর্মের ভিত্তিতে কোন রাজনীতির স্থান ছিল না। ছিল না কোন ধর্মীয় উগ্রতার প্রশ্রয়। ধর্মকে ব্যক্তি জীবনের বিশ্বাস হিসেবে সংরক্ষণের মাধ্যমে রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার যে দৃষ্টিভঙ্গি ছিল, তা-ই ছিল একটি আধুনিক ও মানবিক বাংলাদেশের ভিত।কিন্তু সেই মহান দৃষ্টিভঙ্গির ওপর প্রথম আঘাত আসে ১৯৭৫-এর নির্মম হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে। বঙ্গবন্ধু নিহত হবার পর রাষ্ট্রক্ষমতায় যারা একে একে আসেন, তাদের প্রত্যেকেই কোন না কোনভাবে মৌলবাদীদের রাজনীতিতে পুনঃপ্রবেশের দরজা খুলে দেন।
মৌলবাদের রাজনৈতিক পুনর্জাগরণ:
জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয়ভাবে “বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম” সংবিধানে সংযোজন করেন এবং সংবিধানে ধর্ম নিরপেক্ষতা তুলে দিয়ে ইসলামের নাম ব্যবহার করে ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকে বৈধতা দেন। এক সময় নিষিদ্ধ জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিকে পুনর্বাসন দেন এবং মৌলবাদী নেতাদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে নিয়োগ দেন।
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ঘোষণা করেন। তাঁর আমলে কওমি মাদ্রাসা, ওয়াজ মাহফিল, টেলিভিশনে ইসলামি অনুষ্ঠান ও মৌলবাদী চিন্তাধারার এক প্রকার রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা প্রতিষ্ঠিত হয়।
খালেদা জিয়া বিএনপি-জামায়াত জোটের মাধ্যমে মৌলবাদের পুনরায় উত্তরণ ঘটান। শিবিরের সশস্ত্র কর্মকাণ্ড, মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তির দাপট, হিজবুত তাহরীর বা জেএমবির মতো জঙ্গি সংগঠনের উত্থান ঘটে তাঁর শাসনামলে।
শেখ হাসিনা সরকার মৌলবাদকে প্রকাশ্যে প্রশ্রয় না দিলেও রাজনৈতিক প্রয়োজন ও ভোটব্যাংকের হিসাব-নিকাশে অনেক সময় আপস করেছে। হেফাজতে ইসলাম বা কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থাকে সরকারি স্বীকৃতি দিয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘ধর্মীয় অনুভূতির’ নামে শিল্প, সংস্কৃতি ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে একরকম সীমাবদ্ধ করা হয়েছে।
ড. ইউনূস: আন্তর্জাতিক বেনিফিশিয়ারি?
মৌলবাদের উত্থানের সুবিধাভোগী হিসেবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যে নামটি ঘুরে ফিরে আসে তা হলো ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আন্তর্জাতিক দাতাগোষ্ঠী ও কর্পোরেট প্রভুদের প্রতিনিধি হিসেবে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে পাশ কাটিয়ে অর্থনৈতিক মডেল প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি, একটি অদৃশ্য মৌলবাদপুষ্ট গোষ্ঠীকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন বলেও অনেক বিশ্লেষক মনে করেন।
বাংলার সংস্কৃতি আজ হুমকির মুখে
মৌলবাদীরা শুধু রাষ্ট্রক্ষমতায় নয়, তারা এখন প্রতিটি মানুষের জীবনে ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছে। বইমেলা, নাট্যোৎসব, নারী নেতৃত্ব, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক বা গান সবই আজ মৌলবাদীদের চোখে 'ধর্মদ্রোহী' তকমা পেয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্লাসফেমির অভিযোগে সাধারণ মানুষ গ্রেফতার হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে মুক্তবুদ্ধির চর্চা রুদ্ধ হচ্ছে। ভয়ঙ্কর এক আত্মবিরোধী সমাজে আমরা বাস করছি।যেখানে সেখানে সংখ্যালঘুদের উপর নগ্ন হামলা হচ্ছে।
পরিত্রাণের পথ কী?
১. সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও রাষ্ট্রধর্ম বাতিল – মৌলিক রাষ্ট্রীয় নীতিতে আবারও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে ফিরে যাওয়া।
২. ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা – ধর্ম হোক ব্যক্তিগত বিশ্বাস, রাষ্ট্র হোক যুক্তি ও মানবতার জায়গা।
৩. সাংস্কৃতিক জাগরণ ও গণপ্রতিরোধ – প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত সাংস্কৃতিক আন্দোলন ছড়িয়ে দিয়ে মৌলবাদকে সামাজিকভাবে মোকাবিলা করা।
৪. শিক্ষায় সংস্কার -পাঠ্যবইয়ে মুক্তিযুদ্ধ, বিজ্ঞান ও মানবিকতা বিষয়ক জ্ঞান বাড়িয়ে কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস ও ধর্মীয় কট্টরতার বিরুদ্ধে শিক্ষিত সমাজ গড়ে তোলা।
৫. মৌলবাদী অর্থায়নের উৎস বন্ধ করা বিদেশি অনুদান বা চাঁদা ভিত্তিক মাদ্রাসা ও সংগঠনের অর্থনৈতিক কাঠামো পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ।
বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক, মানবিক ও প্রগতিশীল রাষ্ট্র হয়ে উঠবে এ স্বপ্নই ছিল বঙ্গবন্ধুর। কিন্তু আজ তা সবচেয়ে বড় প্রশ্নের মুখে। সময় এসেছে এক নতুন বাঙালি জাগরণের, যেখানে ধর্ম থাকবে, তবে ধর্মান্ধতা থাকবে না। বিশ্বাস থাকবে, তবে বিদ্বেষ নয়

লেখক -- সালাউদ্দিন রাব্বী
সভাপতি-- সংখ্যালঘু বাঁচাও আন্দোলন।
ইমেলই- [email protected]

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জুন, ২০২৫ সকাল ৯:২৯

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ধর্মান্ধ মৌলবাদ শেখ হাসিনার কারণে বেড়েছে।

২| ২৬ শে জুন, ২০২৫ সকাল ৯:৪৮

কলাবাগান১ বলেছেন: এত কথা বলেন কেন...শুধু ফল লুটপাট করেছে..পুরা বিল্ডিং কে তো হাপিশ করে দেয় নাই... এই জাতি সবই চুরি করে...প্রধানমন্ত্রীর অন্তর্বাস থেকে বাগানের লাল শাক..এমন চোর এর জাতি থেকে দেশ কি আশা করে........

৩| ২৬ শে জুন, ২০২৫ সকাল ১০:১৪

কামাল১৮ বলেছেন: বাংলাদেশই অস্তিত্ব সংঙ্কটে।

৪| ২৬ শে জুন, ২০২৫ সকাল ১০:৪০

রাসেল বলেছেন: কলাবাগান১ বলেছেন: এত কথা বলেন কেন...শুধু ফল লুটপাট করেছে..পুরা বিল্ডিং কে তো হাপিশ করে দেয় নাই... এই জাতি সবই চুরি করে..

জাতির যারা মাথা, এই কলঙ্ক তারাই প্রাপ্য। কম্বল চুরির পর কি শাস্তি দেয়া হয়েছিল? লোকদেখানো হাহাকার করার কিছু নাই।

৫| ২৬ শে জুন, ২০২৫ সকাল ১১:৩৬

নীল আকাশ বলেছেন: ১৯৭২ সালের সংবিধান ছিল একটি ধর্মনিরপেক্ষ, অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল রাষ্ট্রের স্বপ্নপূরণের ঘোষণা। এতা ভারতীয় প্রেস্ক্রিপশন বাংদেশীদের গিলিয়ে খাওয়াতে গিয়ে নিজেই সবংশে নিপাত হয়েছে। বাকি দুইটা চোরের মতো দেশ থেকে পালিয়েছে। ৯৫% মুসলিমের দেশে ধর্মনিরপেক্ষ কোন পাগল দাবী করে?

৬| ২৬ শে জুন, ২০২৫ সকাল ১১:৪৩

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: ভারতীয় দালালী বাংলাদেশীরা গ্রহন করবেনা।

৭| ২৬ শে জুন, ২০২৫ সকাল ১১:৪৮

কাঁউটাল বলেছেন: কলাছাগল১ আইছে। নির্লজ্জ হাউয়ামী দালাল একটা।

৩০ শে জুন, ২০২৫ ভোর ৬:৪৫

রাবব১৯৭১ বলেছেন: পাকিস্তানি কুকুরের চেহারা দৃশ্যমান।

৮| ২৬ শে জুন, ২০২৫ সকাল ১১:৪৯

অগ্নিবাবা বলেছেন: ৯৫% মুসলিমের দেশে সরিয়া ল চাই, কাফের মুশ্রিক বা মডারেট মুসলমানদের কোনো রকম ছাড় দেওয়া হবে না। কোরান হাদিস দিয়ে দেশ চালাতে হবে। @নীল আকাশ ভাই সাথে আছি। আপনি চাইলে ইসলাম কবুল করে বাংলাদেশে সরিয়া ল চালু হওয়া পর্যন্ত আপনাদের সাথে জিহাদ করব। আল্লাহর আইন চালু হওয়ার পর অবশ্য আমি আর বাংলাদেশে থাকতে পারব না, আপনারা সামলাবেন। রাজী থাকেন তো বলেন যোগাযোগ করব।

৯| ২৭ শে জুন, ২০২৫ দুপুর ১:৩২

রাজীব নুর বলেছেন: যারা মব নাম দিয়ে অন্যায় করছে তাদের শাস্তি হওয়া দরকার আছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.