নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সালাউদ্দিন রাব্বী

রাবব১৯৭১

সালাউদ্দিন রাব্বী

রাবব১৯৭১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বন পুড়লে লাভ হয় কারখানার মালিকদের, ক্ষতি হয় পুরো পৃথিবীর।

১৬ ই নভেম্বর, ২০২৫ ভোর ৬:৪১

বন পুড়লে লাভ হয় কারখানার মালিকদের, ক্ষতি হয় পুরো পৃথিবীর।
-----------------------------------------------------------------------
আমাজন হোক বা সুন্দরবন বন উজাড়ের মূল্য শেষ পর্যন্ত মানুষ ও পৃথিবীকেই দিতে হয়
বিশ্বের উন্নয়ন যখন ক্রমশ শিল্প ও অবকাঠামননির্ভর হয়ে উঠছে, তখন সেই উন্নয়নের সবচেয়ে বড় শিকার হচ্ছে পৃথিবীর ফুসফুস বন। আমাজন, কঙ্গো, বোর্নিও, কিংবা বাংলাদেশের সুন্দরবন সবাই একই হুমকির মুখোমুখি: বন্যা, খরা, তাপপ্রবাহ, প্রজাতির বিলুপ্তি এবং ভয়াবহ জলবায়ু পরিবর্তন। কিন্তু প্রশ্ন হলো এই ধ্বংস থেকে লাভবান হচ্ছে কারা?
উত্তরটি স্পষ্ট: বড় বড় শিল্পগোষ্ঠীর মালিক, নির্মাণ ব্যবসায়ীরা, কৃষি সম্প্রসারণ ও খনিজ আহরণে যুক্ত করপোরেট নেটওয়ার্ক। আর এর মূল মূল্য দিচ্ছে সাধারণ মানুষ, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এবং পৃথিবীর সমগ্র প্রতিবেশব্যবস্থা।

বৈশ্বিক বন উজাড়: কিছু কঠিন বাস্তবতা
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (FAO) তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবী প্রতি বছর প্রায় ১ কোটি হেক্টরের বেশি বন হারাচ্ছে যা প্রায় দক্ষিণ কোরিয়ার সমান আয়তন।
আমাজন রেইনফরেস্ট, যাকে বলা হয় পৃথিবীর “অক্সিজেন ফ্যাক্টরি”, ইতোমধ্যে ২০% এর বেশি উজাড় হয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ায় ম্যানগ্রোভ বন উজাড়ের হার বিশ্বের মধ্যে অন্যতম বেশি; শুধু কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র, শিপইয়ার্ড ও শিল্পায়নের চাপেই সুন্দরবন বারবার ঝুঁকিতে পড়ছে।
বিশ্বের মোট কার্বন নিঃসরণের প্রায় ১১% আসে বন উজাড় ও ভূমির অবক্ষয় থেকে যা বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে আরও দ্রুততর করছে।

কারখানা মালিকদের লাভ মানবজাতির লোকসান।
বন উজাড় করে গড়ে ওঠা কারখানাগুলো প্রথমদিকে স্থানীয় অর্থনীতিতে কিছু সুফল বয়ে আনে কোম্পানির মুনাফা, জমির মূল্য বৃদ্ধি, শ্রমিক নিয়োগ ইত্যাদি। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতির পাল্লা এতই বড় যে তা কোনো স্বল্পমেয়াদি লাভের সঙ্গে তুলনাই চলে না।
ক্ষতির দিকগুলো--
বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি
স্থানীয় তাপমাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়া
বর্ষার ধরন পরিবর্তন, বন্যা ও খরার প্রকোপ বাড়া
জীববৈচিত্র্যের ভয়াবহ ক্ষতি।
উপকূলীয় অঞ্চলে লোনা পানি বিস্তার
মানুষের জীবিকা মৎস্য, কৃষি, বনজ পণ্য ঝুঁকির মুখে
অথচ যে শিল্পগোষ্ঠীগুলো এসব ক্ষতির সূচনা করে, তারা সংকট গভীর হলে কোনো দায় নেয় না; দায় নিতে হয় সাধারণ মানুষকেই।
সুন্দরবন ও আমাজন: দুই মহাদেশ, এক সংকট।
আমাজন ৯টি দেশের ওপর বিস্তৃত মহাবন, পৃথিবীর ২০% মিষ্টি পানি ও ১০% জীববৈচিত্র্যের ঘর। খনিজ উত্তোলন, গরুর খামার সম্প্রসারণ এবং কৃষি করপোরেশনের কারণে এটি দ্রুত বিলীন হচ্ছে।
সুন্দরবন বাংলাদেশ ও ভারতের উপকূল রক্ষাকারী প্রাকৃতিক বর্ম। শিল্পায়ন, কয়লাভিত্তিক প্রকল্প, জাহাজ চলাচল এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই ম্যানগ্রোভ বিশ্ব ঐতিহ্য হুমকির মুখে।
দুই অঞ্চলের সমস্যা আলাদা মনে হলেও মূল চালিকা শক্তি একই ।অর্থলোভী শিল্পায়ন ও নিয়ন্ত্রণহীন বন উজাড়।
পৃথিবীর ভবিষ্যৎ রক্ষায় করপোরেট দায়িত্ব জরুরি
বিশ্বব্যাপী শত শত পরিবেশবিদ, গবেষক ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এখন বলছে। বন উজাড় বন্ধ ছাড়া জলবায়ু সংকট মোকাবিলা অসম্ভব।
১. শিল্পকারখানাকে কঠোর পরিবেশনীতি মেনে চলতে হবে।
২. সরকারকে করপোরেট লবির চাপে নতি স্বীকার করা যাবে না।
৩. স্থানীয় সম্প্রদায়ের জমি, নদী ও বন রক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
৪. নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও টেকসই উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
শেষ কথা
বন ধ্বংস মানে শুধু কিছু গাছ কাটা নয় এটি মানুষের ভবিষ্যৎ কেটে ফেলা। কারখানার মালিকরা হয়তো স্বল্পমেয়াদে লাভবান হন, কিন্তু পৃথিবী হারায় তার ভারসাম্য, নিরাপত্তা ও টিকে থাকার ক্ষমতা।
আজ আমরা যে সিদ্ধান্ত নেব, তা নির্ধারণ করবে আগামী প্রজন্ম কোন পৃথিবীতে জন্ম নেবে। সবুজ পৃথিবী, নাকি দগ্ধ এক ধ্বংসস্তূপে?
লেখক--
-- সালাউদ্দিন রাব্বী
সংখ্যালঘু বাচাও আন্দোলন, বাংলাদেশ
১২৭ মতিঝিল বানিজ্যিক এলাকা,৪র্থ তলা,
ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
ইমেইল- ‍sbabd2001@gmail,com

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: প্রকৃতি ধ্বংস হলে ক্ষতি হয় মানুষের। প্রকৃতি না থাকলে মানুষ থাকবে না।

২| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৯

আমি নই বলেছেন: রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির ব্যাপারে আপনার মতামত কি?

ঐ সময়ে মোটামুটি সকল পরিবেশবাদী সংগঠন গুলোই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি অন্য কোথাও সরিয়ে নিতে বলেছিল, কারন দির্ঘমেয়াদে সুন্দরবনের জীববৈচিত্রে ব্যাপক ক্ষতির সম্বাবনা আছে, কিন্তু আপনারা জোর করে ওখানেই করেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.