নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাবীব আমিন

নিচে তাকিয়ে থাকার মজা হল কাওকে দেখতে হয় না, আবার কাওকে দেখা দিতে হয় না। লুকিয়ে থাকতে চাই বলে উপরে তাকাই না। একদিন তাকাবো, আর সব কিছু দেখে নেব। চেনা মানুষ দেখতে দেখতে আজ ক্লান্ত আমি, বড় বেশি ক্লান্ত। facebook.com/rabib5

রাবীব আমিন

রাবীব আমিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাপুরুষ

১৯ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৫

গ্রীষ্মের হলুদ গরমে রাস্তায় ভিজছি। ঘামে চুল ভিজে গিয়েছে। কপালে ঘামের বিন্দু জমে জমে চোখ নাক চিবুক বেয়ে শার্টের ভিতর ঢুকে যাচ্ছে।



জৈষ্ঠ মাসের শেষ। চারিদিকে ঠাঠা রোদ। এই রোদে মানুষ মরে না। তেলাপোকার পরে দ্বিতীয় সহনশীল প্রানী হল মানুষ। মানুষ কখনোই মরতে চায় না। ভাল থাকার লোভ তাকে বাঁচিয়ে রাখে।



'অর্ক ভাইয়া? অর্ক ভাইয়া? একটু দাড়াবেন প্লিজ?'



কিঙ্কর কন্ঠের ডাক উপেক্ষা করে হলুদ রোদে হেটে যেতে পারে মহাপুরুষেরা। আমি মহাপুরুষ না সাধারণ পুরুষ। আমি দাড়িয়ে পড়লাম। কিঙ্কর কন্ঠের মালকিন একজন ছাতাওয়ালী। ছাতায় বড় বড় ফুল আঁকা আছে। কালারফুল ছাতা।



'এই রোদের মধ্যে আপনি কোথায় যাচ্ছেন?'



-'হাটছি।'



'আপনি কেন হাটছেন? এই রোদে কি কেউ হাটে? ঘেমে তো একেবারে একাকার হয়ে যাচ্ছেন। আপনি আমার ছাতার নিচে চলে আসুন।'



আমি ছাতাওয়ালীকে চিনতে পারছি না। কারন ছাতাওয়ালীর পরনে শাড়ি। কুমারী মেয়েরা শখ করে শাড়ি পরে। বিয়ে অথবা গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে শাড়ি পরে। এই মেয়ে কি কারনে পড়েছে কে জানে। এই মেয়েকে হয়ত শাড়ি ছাড়া আমি ভাল করেই চিনি। কিন্তু শাড়ি পরা একে চিনে ফেলা মনে হয় সম্ভব হবে না। আমি অচেনা ছাতাওয়ালীর ছাতার নিচে টুক করে ঢুকে পড়লাম।



অচেনা ছাতাওয়ালীকে তাড়াতাড়ি চিনে ফেলতে হবে। চিনে ফেলার সহজ উপায় হচ্ছে ভাইয়া বলে ডাকা মেয়েদের লিস্ট করে ফেলা। আমি মনে মনে লিস্ট করে তমা কে চিনে ফেললাম।



তমা আমাদের কলেজের জুনিয়র মেয়ে ছিল। একবার খুব কুয়াশার সকালে আমার হাতে একটা চিরকুট গুঁজে দিয়েছিল। চিরকুটে লেখা ছিল,



"আপনি একটা তেলাপোকা। আপনাকে আমি খুব ভয় পাই। আপনি কি আমার ভয় কাটিয়ে দিবেন?"



সদ্য গোঁফ ওঠা আমি কেন তেলাপোকা হলাম। আর কিভাবে ভয় কাটাব সেই রহস্য খুজে হয়রান হয়েছিলাম। একদিন হঠাৎ করে রহস্য সমাধান করে ফেললাম। কিন্তু ততদিন আমি ছিলাম রহস্যবতীর থেকে অনেকটাই দুরে।



'আপনাকে একটা কথা বলব?'



-'হুম। বল।'



'আপনার মনে আছে আপনাকে আমি একদিন একটা চিরকুট দিয়েছিলাম?'



-'হুম।'



'আপনি কি সেটার মানে বুঝতে পেরেছেন?'



-'না।'



'আপনি যদি কখনো মানে টা বুঝতে পারেন তাহলে কি আমাকে জানাবেন?'



-'না।'



'না' শব্দটা শুনে তমার হাতটা কেঁপে উঠল। হাতের কম্পন ছাতায় ছড়িয়ে পড়েছে। আমি ছাতার কম্পন দেখায় মন দিলাম। সহজে 'না' বলার ক্ষমতা থাকে মহা পুরুষদের। আমি মহা পুরুষ নই। আমি সাধারণ পুরুষও নই। আমি কাপুরুষ।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:০০

বাংলার পাই বলেছেন: অসাধারণ একটা লেখা।

আপনি কেন হাটছেন? এই রোদে কি কেউ হাটে? ঘেমে তো একেবারে একাকার হয়ে যাচ্ছেন। আপনি আমার ছাতার নিচে চলে আসুন।'
------দুঃখ রইলো এই মনে, আমাকে কেউ কোন দিন এমন করে বলল না।

আর আপনি যে বুঝতে পারেননি তার জন্যও আমার দুঃখ হচ্ছে।

শুভেচ্ছা নিবেন।

২| ১৯ শে মে, ২০১৪ রাত ১১:৪৬

পার্থ তালুকদার বলেছেন: এই কয়েকটা লাইন মাত্র। তবে তমার ভালবাসা প্রিয়তমার মতোই। ভাল লাগল ।

৩| ১৯ শে মে, ২০১৪ রাত ১১:৪৮

সুমন কর বলেছেন: মোটামুটি লাগল ! কিছু টাইপো আছে।

৪| ২০ শে মে, ২০১৪ রাত ১:২১

রাজা মশাই বলেছেন: "আপনি একটা তেলাপোকা। আপনাকে আমি খুব ভয় পাই। আপনি কি আমার ভয় কাটিয়ে দিবেন? দারুন

৫| ২০ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১২:০২

রাবীব আমিন বলেছেন: ধন্যবাদ সবাইকে :-)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.