নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

sohel sodeshi

রযাবিডি

আমি সোহেল খন্দকার, মুক্ত চিন্তার অধিকারী। নিজে স্বাধীনতা পছন্দ করি, অন্যের জন্যও স্বাধীনতা আদায়ে সচেষ্ট।

রযাবিডি › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশ-রাশিয়া সম্পর্ক।

২১ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১০:১০

সোভিয়েত ইউনিয়নের উত্তর সূরী বর্তমান রাশিয়া। বিশ্বের এক মহাপরাক্রমশালী সোভিয়েত ইউনিয়নের পূর্বের অবস্থান তৈরি করতে দৃঢ় রাশিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। অনেকটাই সফলতার পথে এই এক নায়ক। বাংলাদেশের সাথে সোভিয়েত ইউনিয়ন তথা বর্তমান রাশিয়ার সম্পর্ক ঐতিহাসিক ভাবেই বিদ্দমান।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয়ের পর ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি সোভিয়েত ইউনিয়ন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে, এবং ২৫ জানুয়ারি রাষ্ট্রদ্বয়ের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। তবে সম্পর্কের বীজ আরো পূর্ব হতেই বপন করা হয়। যা স্বাধীনতা লাভের পর আরো বিকশীত হয়।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে সোভিয়েত ইউনিয়ন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যার নিন্দা জানায় এবং গণহত্যা বন্ধ করার জন্য পাকিস্তান সরকারকে আহ্বান জানায়। যুদ্ধ চলাকালে সোভিয়েত ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধাদের বিস্তৃত সামরিক ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করে। স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষদিকে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর নিকট প্রায় পরাজিত পাকিস্তানকে সহায়তা করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গোপসাগরে মার্কিন সপ্তম নৌবহরকে প্রেরণ করে। এর প্রত্যুত্তরে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর প্রতি সম্ভাব্য মার্কিন হুমকি প্রতিহত করার জন্য সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর এবং ১৩ ডিসেম্বর ভ্লাডিভোস্তক থেকে সোভিয়েত প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহরের দুই স্কোয়াড্রন ক্রুজার ও ডেস্ট্রয়ার এবং পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত একটি পারমাণবিক ডুবোজাহাজ প্রেরণ করে। সোভিয়েত নৌবহরটির নেতৃত্বে ছিলেন অ্যাডমিরাল ভ্লাদিমির ক্রুগ্লিয়াকভ। সোভিয়েত নৌবহরের তৎপরতার ফলে মার্কিন নৌবহর পাকিস্তানকে আর সহায়তা করতে পারেনি। এছাড়া সোভিয়েত নৌবাহিনী গোপনে ভারতীয় নৌবাহিনীকে সহায়তা করে এবং পাকিস্তান নৌবাহিনীর বিরুদ্ধে গুপ্ত অভিযান পরিচালনা করে।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরবর্তী বছরগুলোতে সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের বিশেষ সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। যুদ্ধের পর সোভিয়েত নৌবাহিনী যুদ্ধবিধ্বস্ত চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে মাইন অপসারণ এবং বন্দরটির কার্যক্ষমতা পুনরুদ্ধারের কাজে ব্যাপক সহযোগীতা করেন। সোভিয়েত প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহরের ২২টি জাহাজ এ উদ্দেশ্য ১৯৭২ সালের মে মাসে দূর প্রাচ‍্যের ভ্লাদিভোস্তক বন্দর থেকে চট্টগ্রামে আসে। মাইন অপসারণের কাজটি সম্পন্ন করতে তাদের প্রায় এক বছর সময় লাগে, এবং ইউরি রেদকিন নামক একজন সোভিয়েত মেরিন এসময় মাইন বিস্ফোরণে প্রাণ হারান। বাংলাদেশ নেভাল একাডেমি প্রাঙ্গণে তার কবর অবস্থিত।

সোভিয়েত সহযোগিতার ফলে চট্টগ্রাম শীঘ্রই একটি প্রধান বন্দর হিসেবে পূর্বের অবস্থান ফিরে পায় এবং ১৯৭৩ সালে এর ধারণক্ষমতা যুদ্ধপূর্ব ধারণক্ষমতাকে ছাড়িয়ে যায়। এছাড়া, সোভিয়েত ইউনিয়ন নবপ্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে বিস্তৃত সহায়তা প্রদান করে। বিশেষত সোভিয়েত সরকার বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে ১০টি এক-আসনবিশিষ্ট মিগ-২১এমএফ এবং ২টি দুই-আসনবিশিষ্ট মিগ-২১ইউএম যুদ্ধবিমান উপহার প্রদান করে। ১৯৭২ সালের মার্চে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান মস্কো সফর করেন।

বাংলাদেশে ১৯৭৫ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকে। জিয়াউর রহমান ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সামরিক সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, পাকিস্তান ও আরব রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলে, ফলে স্বাভাবিকভাবে এসব রাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক শীতল হয়ে পড়ে। এসময় বাংলাদেশ সক্রিয় সোভিয়েত-বিরোধী পররাষ্ট্রনীতি অবলম্বন করে। ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ কম্পুচিয়ায় ভিয়েতনামের আক্রমণে সোভিয়েত সমর্থনের নিন্দা জানায়, এবং ১৯৭৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন কর্তৃক আফগানিস্তানে সামরিক হস্তক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করে। আফগানিস্তানে সোভিয়েত হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে বাংলাদেশসহ আরো ৬৪টি রাষ্ট্র ১৯৮০ সালে মস্কোয় অনুষ্ঠিত গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক গেমস বয়কট করে। এছাড়া, ১৯৮৩ সালের ডিসেম্বরে এবং ১৯৮৪ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ সরকার ঢাকা থেকে ৯ জন সোভিয়েত কূটনীতিককে বহিষ্কার করে।

তবে তা সত্ত্বেও সোভিয়েত ইউনিয়ন বাংলাদেশকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহায়তা প্রদান করতে থাকে। সোভিয়েতরা বিদ্যুৎ উৎপাদন, প্রাকৃতিক গ্যাস ও জ্বালানি তেল – এই তিনটি ক্ষেত্রের উন্নয়নে বাংলাদেশকে বিশেষভাবে সহযোগিতা করে। সোভিয়েত অর্থায়নে বাংলাদেশের বৃহত্তম তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হয়। ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশে দাতা দেশগুলোর মধ্যে সোভিয়েত ইউনিয়নের অবস্থান ছিল ১৪তম। এছাড়া, এসময় সোভিয়েত ইউনিয়ন বাংলাদেশের সঙ্গে সক্রিয় সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বজায় রাখে।
বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় রপ্তানি হয়েছে ৬৬ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলারের পণ্য, বিপরীতে আমদানি করা হয়েছে ৪৬ কোটি ৬০ লাখ ডলারের পণ্য। ২০১৯-২০ অর্থবছরে রাশিয়ার ঋণ সহায়তা ১০০ কোটি ডলারের কাছাকাছি।
রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের বর্তমান প্রেক্ষপটে বাংলাদেশ রাশিয়ার মিত্র হিসাবে আবারো তাদের পাশে আছে। এই যুদ্ধে প্রথমে নিরপেক্ষ অবস্থান নিলেও বাংলাদেশ বর্তমানে রাশিয়ার পক্ষের শক্তি।
ভারসাম্যহীন বিশ্বের একক মোড়ল আমেরিকার মোড়লত্ব খন্ডন করতে রাশিয়ার ভূমিকাকে সমর্থন করা একান্ত জরুরী।
তথ্য সূত্র : উইকিপিডিয়া, দৈনিক পত্রিকা।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১০:৩৬

খাঁজা বাবা বলেছেন: বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ভাবে পশ্চিমাদের উপর নির্ভরশীল।
এহেন পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষ থাকাই শ্রেয়।

২| ২১ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১১:২১

রানার ব্লগ বলেছেন: বাংলাদেশের মৌলবাদ গোষ্ঠি আজীবন মার্কিন পন্থী থেকে হঠাত করে রাশিয়ার প্রতি দরদ উথলে ওঠা খুবি রহস্যজনক !!!

৩| ২১ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১১:৩৮

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: প্রথম পাতায় একাধীক পোস্ট না দেয়াই ভালো।

৪| ২১ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৩:০৫

আঁধার রাত বলেছেন: পাছামারা খাওয়ার জন্য পরামর্শটা খুবই ভাল। মনে করি আমার একটা দোকান আছে-মুদি দোকান। অনেকগুলো বড় দোকনের ভেতর যে বড় দোকান থেকে আমি পাইকারী মাল কিনে আনি সেই দোকানরে অর্ঘ নিদেবন করে যে কাস্টমারের কাছে আমি জিনিস বিক্রি করি তারে ঝাড়াটা মারার পরামর্শ পাছামারা খাওয়ার পরামর্শই বটে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.