নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছেছড়া লেখক

রাইয়ান পাটোয়ারী

সম্পাদক, তরুণোদয়

রাইয়ান পাটোয়ারী › বিস্তারিত পোস্টঃ

চিঠি সাহিত্য

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১:৪৭



এক সময়ের জনপ্রিয় যোগাযোগের মাধ্যম চিঠি হলে ও আজকের সেই চিঠি কে মোটামোটি প্রত্নতাত্বিক বিষয়ই বলা যেতে পারে ।ই-মেইল আর মোবাইল ফোনের বৌদলতে চিঠি হারিয়েছে তার ভরা যৌবন।আজ বৃদ্ধ অস্তিসার কঙ্কাল রূপে দাড়িয়ে আছে ডাকঘরের পোষ্ট বক্স গুলো। যেগুলো তে এখন আর চিঠি আসে না ,সম্ভবত মিউজিয়ামে যাওয়ার জন্যই এগুলো এখনো
দাড়িয়ে আছে। অথচ এক সময় ডাকঘর থেকে সারারাত ভরে শুনা যেত চিঠির উপর চিল মারার খটখট আওয়াজ।আর সকাল হলেই মানুষ গিয়ে লাইন দরে দাড়িয়ে থাকতো তার প্রিয় জনের কোনো চিঠি এসেছে কিনা তা জানার জন্য। বৃদ্ধ মা অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতেন রাস্তার দিকে , এই বুঝি ডাক-পিওন এলো তার ছেলের চিঠি নিয়ে। প্রিয়তমার উদাস মনে ভালোবাসার ফোয়ারা ছুঠাতো প্রিয়তমের একখন্ড চিঠি। অপেক্ষা যে প্রিয়জনের প্রতি ভালোবাসাকে দ্বিগুন বাড়িয়ে তোলে, তা হয়তো আজকে আমরা ভুলতে বসেছি । আজ আর আমাদের প্রিয়জনের খবর পাবার জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। এজন্যই হয়ত বা আজকে প্রিয়জনের প্রতি আমাদের ভালোবাসার মধ্যে ডোপিং শুরু হয়েছে। যা হোক ভালোবাসাকে নিয়ে অনধিকার চর্চা সম্ভবত ঠিক হচ্ছে না। মূল কথায় ফিরে আসি,,, চিঠি শুধুমাত্র যোগাযোগের মাধ্যমই ছিল না, চিঠি ছিল এক ধরনের সাহিত্য। চিঠির মধ্যেই লুকিযে থাকতো মানুষের হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ,আবেগ আর ভালোবাসা।চিঠি বাংলা সাহিত্যর একটি শক্তিশালী নিদর্শন। প্রেমিক-প্রেমিকাদের চিঠি গুলোতে বাহারী ছন্দের প্রয়োগ ছিল লক্ষনীয়। যা পাঠকদের মনে এক ধরনের শিহরন সৃষ্টি করতো্।িআমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুর ইসলাম পনেরো বছর পরে তার প্রিয়তমা নার্গিসকে যে চিঠিটি লিখেছিলেন তা পৃথীবির সেরা একটি প্রেমপত্র। এটি শুধুমাত্র একটি প্রেমপত্রই না এটি নজরুলের শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকর্ম মধ্যে অন্যতম। রবিন্দ্রনাথের ও চিঠি সাহিত্য কে নিয়ে কম কৌতুহল ছিল না। তিনি একের পর এক চিঠি লিখে সাহিত্যর এই শাখা কে সমৃদ্ধশালী করে তোলেছিলেন।কবি তার জীবনের গভীরতম ভাষ্য ‘ ছিন্নপত্রবলী’তে উর্লেখ করেছেন তিনি জীবনে যে পরিমান চিঠি লিখেছেন তিনি, তা আর কোনো সাহিত্যিক লিখেননি। কবি ইন্দিরা দেবীকে অসংখ্য চিঠি লিখেছিলেন । পরবর্তীতে সেগুলো ‘ছিন্নপত্রবলী’ নামে বই আকারে প্রকাশ করা হয়। এছাড়া কবি কতৃক নির্মলকুমারী মহলানবিশকে লেখা চিঠি গুলো ঠাই পেয়েছে ‘পথে ও পথের প্রান্তে’ গ্রন্থে। চিঠির প্রতি কবির ব্যাকুলতা তীব্রতা প্রকাশ পেয়েছে ’মানসী’ কাব্যগ্রন্থের ‘পত্রের প্রত্যাশা’ কবিতায়। কবি ‘স্মরন’ কবিতায় লিখেছেন-’দেখিলাম খানকায় পুরাতন চিঠি/ স্নেহমুগ্ধ জীবনের চিহ্ন দু চারটি/ কেলনায় কটি যত্ন করে/ গোপনে সন্ঞ্চয় করি রেখেছিলাম যারে’। কবির প্রায় সাড়ে চার হাজার চিঠি থেকে আজ আমরা সাহিত্যর রস আস্বাদন করতে পারি। শুধুমাত্র রবীন্দ্রনাথ কিংবা নজরুল নয় আরো বেশ অনেক সাহিত্যিকই নিজেদের প্রয়োজনে কিংবা সাহিত্যের প্রয়োজনে চিঠি লিখেছিলেন। সেই চিঠিগুলোর ভাষা শৈলী আমাদের বরাবরই মুগ্ধ কর। এক্ষেত্রে আমরা মানিক বন্দোপাধ্যায় এর কথা স্মরন করতে পারি। মানিক বন্দোপাধ্যায় তার দাদার কাছে লেখা চিঠিটি পড়লে আমরা দেখতে পাই তার অভাব অনটনের কথা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.