![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
আম (ইংরেজি: Mango) ভারতীয় উপমহাদেশীয় এক প্রকারের সুস্বাদু ফল । কাচা অবস্থায় এর রং সবুজ এবং পাকা অবস্থায় হলুদ রং হয়ে থাকে । বাংলাদেশ এবং ভারত এ যে প্রজাতির (species) আম চাষ হয় তার বৈজ্ঞানিক নাম Mangifera indica. পৃথিবীতে প্রায় ৩৫ প্রজাতির আম আছে । যেমন ফজলি, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, খিরসা, অরুনা, আম্রপালি, মল্লিকা, সুবর্নরেখা, মিশ্রিদানা, নিলাম্বরী, কালীভোগ, কাচামিঠা, আলফানসো, বারোমাসি, তোতাপূরী, কারাবাউ, কেঊই সাউই, গোপাল খাস, কেন্ট, সূর্যপূরী, পাহুতান, ত্রিফলা ইত্যাদী । আম গাছ কে বাংলাদেশের জাতীয় গাছের প্রতীক হিসেবে নেয়া হয়েছে । আম খেতে কোনোটা মিষ্টি, কোনোটা টক। দেখতে কোনোটা লম্বা, কোনোটা গোল । নানা বৈচিত্র্যের জন্যই আমের এত চেহারা ও স্বাদ। এ দেশে আমের বৈচিত্র্যের শেষ নেই । প্রখ্যাত চীনা পর্যটক হিউয়েন সাং ৬৩২ থেকে ৬৪৫ সালের মধ্যে এ অঞ্চলে ভ্রমণে এসে বাংলাদেশের আমকে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিত করে তোলেন । মোগল সম্রাট আকবর (১৫৫৬-১৬০৫) ভারতের শাহবাগের দাঁড়ভাঙ্গায় এক লাখ আমের চারা রোপণ করে এ উপমহাদেশে প্রথম একটি উন্নত জাতের আমবাগান সৃষ্টি করে আমকে আরো উচ্চতর আসনে বসান । আকবরের বাগানের আমের জাত ছিল ল্যাংড়া । ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ আম উৎপাদনে চতুর্থ স্থানে ছিল । বাংলাদেশে যেসব ফল উৎপন্ন হয় তার মধ্যে আমের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি ।
মানসম্পন্ন আম ফলাতে তাই দরকার আধুনিক উত্পাদন কৌশল । আম চাষিদের জানা দরকার কীভাবে জমি নির্বাচন, রোপণ দূরত্ব, গর্ত তৈরি ও সার প্রয়োগ, রোপণ প্রণালী, রোপণের সময়, জাত নির্বাচন, চারা নির্বাচন, চারা রোপণ ও চারার পরিচর্যা করতে হয় । মাটি ও আবহাওয়ার কারণে দেশের সব জেলাতে সব জাতের আম হয় না । আমের জন্য মাটির অম্লতা দরকার ৫.৫-৭.০ । অনেক সময় দেখা যায় পাহাড়ি ও বরিশাল বিভাগের অনেক জেলাতে ফজলী, ল্যাংড়া, খিরসাপাত ও আশ্বিনা জাতগুলো ভাল হয় । সুতরাং কাঙ্ক্ষিত জাতটি নির্বাচিত জায়গায় হবে কিনা তা বিবেচনায় রাখতে হবে । আমগাছে শতভাগ মুকুল আসা ভাল না । এতে ফলন ব্যাহত হয় । তাই শতভাগ মুকুলায়িত আমগাছের চারদিক থেকে ৫০% মুকুল ফোটার আগেই ভেঙে দিতে হবে । এতে ভাঙা অংশে নতুন কুশি গজাবে এবং পরবর্তী বছরে ওই সব ডগায় ফুল আসবে, আম আসবে । বাংলাদেশের মাটি, জলবায়ু, আবহাওয়া সবই আমচাষের উপযোগী । দেশের প্রায় সব জেলায়ই আম ফলে । এমনকি উপকূলীয় লবণাক্ত ভূমিতেও এখন মিষ্টি আমের চাষ হচ্ছে । পার্বত্য জেলার জুমচাষ এলাকায়ও উন্নত জাতের আম ফলছে । ১৯৯৪ সালে প্রকাশিত ড. এ কে এম আমজাদ হোসেনের 'আম উৎপাদনের কলাকৌশল' গ্রন্থ থেকে জানা যায়, দেশে এক লাখ ২০ হাজার একর জমিতে আমের চাষ হয় । ইংরেজদের আগে পর্তুগিজ আলম থেকে এদেশে শত শত বছর ধরে পশ্চিমারা আমাদের আমলের আমের প্রশংসা করে বিস্তর লেখালেখি করে গেছেন । আমের রাজা বলে খ্যাত ল্যাংড়া আম বাজারে উঠবে আরো প্রায় দিন পনেরো পরে । সব শেষে বাজারে আসবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও শিবগঞ্জ এলাকার আম ।
বাংলাদেশে যে সব ফল উৎপন্ন হয় তার মধ্যে আমের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি । আমের নানাবিধ ব্যবহার, স্বাদ-গন্ধ ও পুষ্টিমাণের জন্য এটি একটি আদর্শ ফল হিসেবে পরিচিত । তাই আমকে ফলের রাজা বলা হয় । বর্তমানে আরব আমিরাত, আবুধাবী, দুবাই, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, বাহরাইন, ওমান, ইটালী, জার্মানী ও যুক্তরাজ্যের বাজারে বাংলাদেশ থেকে ফজলি, হিমসাগর এবং ল্যাংড়া জাতের আম রপ্তানী হলেও আরও অনেক দেশে এর রপ্তানীর প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে । জ্যৈষ্ঠ মাস হচ্ছে বাংলাদেশের মধুমাস । আর এই মধুমাসের মধুফল হল আম । এই আমকে ঘিরে হয়েছে বাঙালির অনেক ঐতিহ্য এবং নানা ধরনের খাবার । ইদানীং কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী এই ঐতিহ্যকে নষ্ট করে ফেলছে । বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ যেমন-কার্বামাইড ইথাইল, ইথিলিন এবং বিভিন্ন প্রকার হরমোন দিয়ে অপরিপকস্ফ ফলকে পাকিয়ে বাজারজাত করছে, যা মানুষের দেহের জন্য অনেক ক্ষতিকর । এতে ক্যান্সার, লিভার সিরোসিস, ক্ষুদা মন্দা, বন্ধ্যত্ব ইত্যাদি মারাত্মক রোগ হতে পারে। এছাড়াও জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে দিন দিন জমি কমে যাওয়ায় ফল গাছের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে । বাংলাদেশে যেসব ফল উৎপন্ন হয় তার মধ্যে আমের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি । আমের নানাবিধ ব্যবহার, স্বাদ-গন্ধ ও পুষ্টিমাণের জন্য এটি একটি আদর্শ ফল হিসেবে পরিচিত । তাই আমকে ফলের রাজা বলা হয় ।
আম গাছ গুলো বহু বছর বাঁচে, এর কিছু প্রজাতিকে ৩০০ বছর বয়সেও ফলবতী হতে দেখা যায় । এর প্রধান শিকড় মাটির নিচে প্রায় ৬মি: (২০ ফিট) গভীর পর্যন্ত যেয়ে থাকে । আমের মুকুল বের হয় ডালের ডগা থেকে, ফুল থেকে শুরু করে আম পাকা পর্যন্ত প্রায় ৩-৬ মাস সময় লাগে । বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় সমস্ত উষ্ণ প্রধান জলবায়ুর অঞ্চল গুলিতে আমের চাষাবাদ হয় । এর মধ্য অর্ধেকের কাছাকাছি আম উৎপাদন হয় শুধুমাত্র ভারতেই । বাংলাদেশে যে ৭০টি ফল বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয় তার মধ্যে আম অন্যতম । মোট ফল চাষের ৪০ ভাগ জমিতে আম চাষ হলেও দিনদিন এর পরিধি আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে বিভিন্ন অঞ্চলে ফলনের তারতম্য দেখা যায় । যেমন চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহীতে আমের ফলন অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে বেশি । উত্পাদনের বিভিন্ন পর্যায়ে একটু যত্নবান হলে ফলন কয়েকগুণ বাড়ানো যায় । আর তাই যত্ন নিতে হবে আম সংগ্রহের পর থেকেই । রোগাক্রান্ত ও মরা ডালপালা একটু ভাল অংশসহ কেটে ফেলতে হবে মৌসুমের পর । আমের মধ্যে ফজলি জাতটি বড় আকারের । ফজলির আরেকটি জাত হলো ‘সুরমা’ । আম খাওয়া কোন বিলাসিতা না হলেও এর স্থান অনেক উচ্চে। আম-চিড়া তো কৃষকের সকালের নাস্তার মতো জামাই-বরণ বা অতিথি আপ্যায়নেও সমাদৃত । টুকরিতে করে দেশের বিভিন্ন স্থানে আম পাঠানো ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে । তাই কুরিয়ার সার্ভিসগুলোতে ভিড় বাড়ছে । অপরদিকে রাজশাহীতে বিক্রীত আমে আপাতত কেমিকেলের উপস্থিতি মেলেনি । সম্প্রতি সবগুলো বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে এটা নিশ্চিত হয়েছে ।
পাকা আম ক্যারোটিনে ভরপুর। এছাড়া প্রচুর পরিমানে খনিজ পদার্থ থাকে । আমের ভোমরা পোকার আক্রমনে ফলনে মারাত্নক ক্ষতি হয়ে থাকে । ভোমরা পোকার কীড়া আমের গায়ে ছিদ্র করে ভিতরে ঢুকে শাঁস খায় । সাধারণত কচি আমে ছিদ্র করে এরা ভিতরে ঢুকে এবং ফল বড় হওয়ার সাথে সাথে ছিদ্রটি বন্ধ করে দেয় এ জন্য এ জন্য বাইরে থেকে আমটি ভাল মনে হলেও ভিতরে কীড়া পাওয়া যায় । আম, অড়বরই ও কাঁচ মরিচ ধুয়ে বাতাসে শুকিয়ে নিন । আমগুলো ছোট চৌকো টুকরা করুন, একটি পাত্রে সরিষার তেল গরম করে তাতে একে একে আম, হলুদ গুঁড়া ও লবণ দিয়ে নাড়ুন । সিরকা দিন, আম সেদ্ধ হয়ে এলে তাতে অড়বরই ও কাঁচা মরিচ দিন । একটু নাড়াচাড়া করে মরিচ গুঁড়া দিন । সব উপকরণ সেদ্ধ হয়ে এলে তাতে পাঁচফোড়নগুলো মেশান । চিনি দিয়ে নাড়ুন । ঘন হয়ে তেলের ওপর ভেসে উঠলে নামিয়ে নিন কাঁচা আম অড়বরইয়ের আচার । শিশুদের জন্য প্রতিদিন অন্তত একটি ফল খাওয়া অপরিহার্য । সকালে নাস্তার পর একটি ফল খান । বিকেলে তেলভাজা খাবারের পরিবর্তে খেতে পারেন এক বাটি ফল । ফ্রুট সালাদ খেতে পারেন । কাজে বের হওয়ার আগে একটা ফল খান৷ হালকা ব্যায়াম বা হাঁটার পর ৩০ মিনিট আগে বা পরে ফল খান । টিভি দেখতে দেখতে চিপস খেতে অভ্যস্ত হলে টিভির সামনে এক বাটি ফল রাখুন ৷ তাজা ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন৷ফল খাওয়ার কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই । যে কোনো সময় ফল খেতে পারেন । বাচ্চার টিফিনে বা আপনার অফিসের লাঞ্চে কয়েক পদের ফল রাখতে পারেন । ‘ঝড় এলো এলো ঝড়/ আম পড় আম পড়’ ।
মলা মাছের আম ঝোল, প্রণালি: তেল গরম করে রসুন ফোড়ন দিতে হবে । পেঁয়াজ দিয়ে নরম করে ভেজে গুঁড়া মসলা ও টমেটো একটু পানি দিয়ে কষাতে হবে । মাছ ও লবণ দিয়ে পাঁচ মিনিট রান্না করে পরিমাণমতো ঝোল দিতে হবে । ঝোল মাখা মাখা হলে আম ও কাঁচামরিচ ফালি করে ছড়িয়ে দিয়ে আরও দুই মিনিট দমে রেখে ওপরে ধনেপাতা ও জিরা গুঁড়া দিয়ে নামাতে হবে । অনেক ক্ষেত্রে পাকা আমের তুলনায় কাঁচা আমের গুণ আরও বেশি । কাঁচা আম স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে, ক্যারোটিন ও ভিটামিন সমৃদ্ধ কাঁচা আম চোখ ভালো রাখে, কাঁচা আমে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকায় রক্তসল্পতা সমস্যা সমাধানে বেশ উপকারী, নিঃশ্বাসের সমস্যা, জ্বরের সমস্যা উপশম করে, দাঁতের রোগ প্রতিরোধ করে । বাজার বিষাক্ত আমে ছেয়ে গেছে এমন কথা ঢালাওভাবে বলা না গেলেও নিশ্চিন্তে আম খাওয়ার দিন ফুরিয়ে গেছে । সম্প্রতি রাজধানী ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ভেজাল বিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালত আমের আড়তে হানা দিয়ে শতশত মণ কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো আম জব্দ ও ধ্বংস করলে বিষয়টি উদ্বেগের পাশাপাশি জনমনে স্বস্তিও এনে দেয় । অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা কচি আম কৃত্রিমভাবে পাকিয়ে বাজারজাত করছে, রসনা বিলাসীদের ঠকিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে । ঝড়ের দিনে মামার দেশে/আম কুড়াতে সুখ...' কবি জসীমউদ্দীনের ব্যক্ত করা এ সুখ বাঙালির অনুভূতিতে আস্বাদনে, স্মৃতিতে আদিকাল থেকে জড়িয়ে আছে ।
০৩ রা জুন, ২০১২ রাত ৯:৪০
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ ।
২| ০৩ রা জুন, ২০১২ রাত ৯:৫১
নীল-দর্পণ বলেছেন: ভাই ছবিটা আমার ব্লগ থেকে নেয়ার আগে আমার একটু অনুমতি নেয়ার ও দরকার মনে করলেন না ! অথবা ছবির কৃতজ্ঞতা স্বরুপ ও ত বলতে পারতেন.............
যাগগে অনেক কিছু জানাগেলো পোষ্ট থেকে
৩| ০৩ রা জুন, ২০১২ রাত ৯:৫৬
এমসি বলেছেন: ভাই আমার বাড়ী চাঁপাই নবাবগঞ্জ । তাতে কী, আপনার পোষ্ট খুব কাজে দেবে আমার । আর হ্যাঁ, আমের দাওয়াত রইল ।
৪| ০৩ রা জুন, ২০১২ রাত ১০:১৪
মোঃ সিরাজুল হক বলেছেন: সুণ্দর পোস্ট +++++
এখানে শেয়ার করলাম
৫| ০৩ রা জুন, ২০১২ রাত ১১:০০
রিফাত হোসেন বলেছেন: ভাল আমের আড়ত ঢাকায় কই
?
জানালে খুশী হই।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা জুন, ২০১২ রাত ৯:৩২
মো: আবু জাফর বলেছেন: ভাই আপনার পোস্ট টি শেয়ার করলাম এখানে