নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

রবীন্দ্রনাথের কোনো বিকল্প নাই- ৮৮

০৪ ঠা জুন, ২০১৩ রাত ১২:২২

রবীন্দ্রনাথের একটি আশ্চর্য ক্ষমতা ছিল- সংলাপের আসরে বসে অনুরুদ্ধ হলে রবীন্দ্রনাথ মুখে মুখে নূতন গল্প ও উপন্যাসের প্লট তৈরি করে দিতে পারতেন।বিস্মিত হতে হয় এই দেখে যে কত প্রথম সারির সাহিত্যিক কবির থেকে প্লট সংগ্রহ করেছেন তাঁদের গল্পের জন্য। এই সব প্লট থেকে জন্ম নিয়েছে বাংলা সাহিত্যের কালজয়ী সব কীর্তি।প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের ‘দেবী’ গল্পটি বহুপঠিত এবং সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্রের কল্যাণে বহু-আলোচিত। নব-কথা গল্পসংকলন-ভুক্ত এই গল্পটির প্লটও রবীন্দ্রনাথের রচনা। নব-কথা-র দ্বিতীয় সংস্করণে প্রভাতকুমার নিজেই সেকথা উল্লেখ করেন।বিখ্যাত সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথের থেকে একটি প্লট পেয়েছিলেন। তিনি হলেন বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় ওরফে বনফুল। নির্মোক-এর অমর নামক চরিত্রটি বনফুল সৃষ্টি করেছিলেন পত্রযোগে প্রাপ্ত রবীন্দ্রনাথের এই প্লটটি অনুসরণে।



অক্ষয়চন্দ্র চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী শরৎকুমারী চৌধুরাণী ঠাকুরবাড়ির বিশেষ ঘনিষ্ঠ ছিলেন। শরৎকুমারীর সাহিত্যরচনার অনুরাগী ছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথও। এই শরৎকুমারীকে রবীন্দ্রনাথ একটি প্লট দিয়ে গল্প রচনা করতে অনুরোধ করেছিলেন। পাঁচ-সাত দিনের মধ্যেই শরৎকুমারী সেই প্লট অবলম্বনে লিখে ফেলেন তাঁর ‘যৌতুক’ গল্পটি। সম্ভবত রবীন্দ্রনাথ সেকথা জানতেন না। একই প্লট তিনি চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়কেও দেন। চারুচন্দ্র সেই প্লট অবলম্বনে লেখেন ‘চাঁদির জুতো’ গল্পটি, যেটি স্থান পায় তাঁর বরণডালা গল্পসংকলনে।হেমেন্দ্রকুমার রায়ের লেখা থেকে জানা যায়, “বন্ধুবর চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ঐভাবে রবীন্দ্রনাথের মুখে মুখে সৃষ্ট কয়েকটি আখ্যানবস্তুর সদ্ব্যবহার করতে পেরেছিলেন।” চারুচন্দ্রের চারটি উপন্যাসের প্লট রবীন্দ্রনাথের থেকে পাওয়া – স্রোতের ফুল, দুই তার, হেরফের ও ধোঁকার টাটি।



রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের চমৎকার বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল অনেক দিন। শেষের দিকে তা একেবারে বিষিয়ে যায়। আপাতদৃষ্টিতে রবীন্দ্রনাথকে ঈর্ষার করার কোনও কারণই নেই দ্বিজেন্দ্রলালের। তাঁর জীবদ্দশায় রবীন্দ্রনাথ নোবেল পুরস্কার পাননি। তাঁর সুনাম বাংলার বাইরে ছড়ায়নি। দু’জনেই কবি। দু’জনেই গান সৃষ্টি করেন। রবীন্দ্রনাথও নাটক লেখেন, কিন্তু নাট্যকার হিসাবে দ্বিজেন্দ্রলাল অনেক বেশি জনপ্রিয়। দু’জনেই অভিজাত পরিবারের সন্তান।সারা জীবনে রবীন্দ্রনাথ কখনও নিন্দুকদের সঙ্গে পাল্লা দিতে যাননি। কোনও আক্রমণেরই তিনি প্রতিআক্রমণ-অস্ত্র শানাননি। তা বলে কি তিনি আঘাত পেতেন না? সামান্যতম আক্রমণেই তিনি আহত হতেন। তিনি লিখেছেন, কটাক্ষ যতই ক্ষুদ্র হইক, তাহারও বিদ্ধ করিবার ক্ষমতা আছে, কিন্তু সেই সব আঘাতের কথা তিনি অতি সন্তর্পণে গোপন রেখেছেন। দ্বিজেন্দ্রলাল যখন থেকে রবীদ্র-বিদ্বেষী হয়ে ওঠেন, তখনও একাধিকবার রবীন্দ্রনাথ তাঁর প্রশংসা করেছেন।



একধিক প্রবন্ধে দ্বিজেন্দ্রলাল রবীন্দ্রনাথের কবিতার প্রতি যে দুটি অভিযোগ এনেছেন, তা হল দুর্বোধ্যতা এবং অশ্লীলতা। দ্বিজেন্দ্রলালের মতে, রবীন্দ্রনাথের কবিতা অস্পষ্ট এবং অস্বচ্ছ। তাই তার মধ্যে চিন্তার গভীরতা নেই। আর তাঁর কবিতার নীতিহীনতা দিয়ে তিনি কলুষিত করছেন এই সমাজকে। দুই কবির মধ্যে নীতিগত বিরুদ্ধ মত থাকতেই পারে। কিন্তু দ্বিজেন্দ্রলালের সেই প্রতিবাদের ভাষাই যে কুৎসিত।সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন যে, দ্বিজেন্দ্রলাল একদিন রবীন্দ্রনাথের প্রতি একটি চিঠি লেখায় ব্যস্ত ছিলেন, একটু পরেই তাঁর মাথায় বজ্রাঘাত হয়। স্ত্রীলোকেরা তাঁর মাথায় ঘড়া ঘড়া জল ঢালতে থাকেন, তাতে সব কাগজপত্র ভিজে যায়। একটি চিঠিতে শুধু রবীন্দ্রনাথের নামটি পড়া যাচ্ছিল। তাতেই অনুমান করা যায় যে, দ্বিজেন্দ্রলাল সম্ভবত রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে সব বিবাদ মিটিয়ে আবার পুনর্মিলনের আশাই ব্যক্ত করেছিলেন।



কবি জেনেছেন সুশাসনের জন্য চাই দেশজ ভাবনা। দেশের তরুণ সমাজকে এ কারণে করেছেন উদ্বুদ্ধ। শাণিত করতে চেয়েছেন তাদের কর্মক্ষমতা। বুঝিয়েছিলেন আধুনিক বা সভ্য হওয়ার জন্য ইউরোপীয় হওয়ার প্রয়োজন নেই। বলেছেন, ”দেশের জন্য স্বাধীন শক্তিতে যতটুকু কাজ নিজে করিতে পারি তাহাতে দুই দিকে লাভ, সেটা ফল লাভের চেয়ে বেশি বৈ কম নয়।”তিনি মনুষ্যত্বের ধারণা, সংস্কৃতির বার্তা যুবসমাজের কাছে পৌঁছে দিতে স্থাপন করেছেন শান্তিনিকেতন। কারণ তিনি জানতেন যে, সামরাজ্যবাদী ইংরেজ সরকার কর্তৃক শিক্ষার আলো ছাত্রদের কাছে পৌঁছবে না। তাই তিনি দেশে বিদেশে অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করেছেন।সৃষ্টির স্রোতধারা প্রবাহিত হয় দুই খাতে। কখনও সেই খাত স্রষ্টাই খনন করেন। আবার কখনও তিনি মরা নদীর সোঁতায় সৃষ্টিস্রোতের নতুন প্লাবন আনেন। রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টিপ্রতিভার নেপথ্যেও এমন কিছু কিছু মরা নদীর সোঁতা ছিল।



১৬ আগস্ট রবীন্দ্রনাথ বিলাতে অবস্থানরত জগদীশচন্দ্র বসুকে যে চিঠি লিখলেন, তাতে জ্ঞান-বিজ্ঞানের এক প্রস্ত চর্চা করে শেষ দিকটাতে লিখলেন : 'একটা খবর তোমাদের দেওয়া হয় নাই। হঠাৎ আমার মধ্যমা কন্যা রেণুকার বিবাহ হইয়া গেছে। একটি ডাক্তার বলিল, বিবাহ করিব_আমি বলিলাম কর। যেদিন কথা তার তিন দিন পরেই বিবাহ সমাধা হইয়া গেল। এখন ছেলেটি তাহার অ্যালোপ্যাথিক ডিগ্রির ওপর হোমিওপ্যাথিক চূড়া চড়াইবার জন্য অ্যামেরিকা রওয়ানা হইতেছে। বেশি দিন সেখানে থাকিতে হইবে না। ছেলেটি ভালো, বিনয়ী ও কৃর্তী।'



“আজিকে তুমি ঘুমাও, আমি জাগিয়া রব দুয়ারে-

রাখিয়া জ্বালি আলো।

তুমি তো ভালোবেসে আজি একাকী শুধু আমারে

বসিতে হবে ভালো।

আমার রাত্রি তোমার আর হবে না কভু সাজিতে

তোমার লাগি আমি

এখন হতে হৃদয় খানি সাজায়ে কুল রাজিতে

রাখিব দিনযামী।”

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জুন, ২০১৩ রাত ১২:৪৮

খেয়া ঘাট বলেছেন: Valo laglo

২| ০৪ ঠা জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৫

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: সহমত ! রবীন্দ্রনাথের বিকল্প নেই !

৩| ০৪ ঠা জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:১৯

বৃষ্টিধারা বলেছেন: ঠিক ।

৪| ০৪ ঠা জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৩

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ইহা সত্য! ইহা সত্য!! ইহা তুমুল সত্য!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.