নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
সেদিন দীপন বলল- দোস্ত, সব অফিসে একটা করে শুয়োরের বাচ্চা থাকে। থাকবেই। এইসব শুয়োরের বাচ্চা গুলা মানুষ না অমানুষ।
আমার বন্ধু দীপন একটা বেসরকারী ব্যাংকে চাকরী করে। বিয়ে করেছে চার বছর আগে। খুব ভদ্র ছেলে। কথাও বলেও খুব সুন্দর করে। প্রতি শুক্রবার দীপনের সাথে আমার দেখা হয়- রেল লাইনের সামনে একটা চায়ের দোকানে। আমরা বিকেল থেকে রাত আট টা পর্যন্ত নানান বিষয় নিয়ে গল্প করি।
দীপন সহজ সরল ভালো ছেলে। প্রচুর পরিশ্রম করতে পারে। যে যা বলে তাই-ই করে। অফিসের সময় পার হয়ে গেলেও অন্যদের নানান কাজ করে দেয়। এদিকে তাঁর বউ সারাদিন বাসায় একা থাকে। অপেক্ষায় থাকে কখন তাঁর স্বামী ফিরবে। বিকেল পাঁচটা বাজলেই বেলকনিতে এসে দাঁড়িয়ে থাকে। কিন্তু তাঁর স্বামী বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত নয়টা দশটা বাজায়। দীপন বাসায় ফিরলে বউ জিজ্জেস করে এত দেরী কেন? দীপন মিথ্যা করে বলে- অফিসে অনেক কাজ। বউ বলে অফিস তো পাঁচ টায় ছুটি হয়। আর এখন তো রাত দশটা বাজে। দীপন তো আর বলতে পারে না- সিনিয়র কলিগ মোস্তফা তাকে নিয়ে গিয়েছিল তাঁর ব্যাক্তিগত কাজে। আর তাঁর সাথে না গেলে হয়তো তাঁর চাকরী চলে যাবে। চেয়ারম্যান স্যারের সাথে মোস্তফা সাহেবের অন্তরঙ্গতা খুব বেশি।
অফিস নিয়মিত পাঁচ টায় ছুটি হলেও দীপনকে বাসায় ফিরতে হয় রাত নয়টা দশটায়। এটা মাসে কম করে হলেও পনের থেকে বিশ দিন। যে শুয়োরের বাচ্চা ( দীপনের ভাষায়) জানে দীপনের বউ একা বাসায় থাকে। অপেক্ষায় থাকে তাঁর স্বামীর। তারপরও কেন নিজের ব্যাক্তিগত কাজে দীপনকে নিয়ে যায়? যতসব ফালতু কাজে।
আসলে আমাদের সমাজে কিছু মানুষ আছে- তারা বাইরে সবার কাছে মহৎ সাজতে চায়। সৎ সাজতে চায়। সত্যিকার অর্থে তাদের মন মানসিকতা ভয়াবহ নোংরা। আমি নিজেই এই রকম অনেক মানুষ দেখেছি। ফেসবুকে কবিতা লিখে, দারুন সব স্ট্যাটাস দেয়। ঘরে বউকে মেরে, বাইরে এসে নারী আন্দোলনের কথা বলে চিৎকার করে। ভিক্ষুককে পাঁচ টাকা ভিক্ষা দিয়ে, বন্ধুদের সাথে আড্ডায় বসে, মন খারাপের ভাব নিয়ে বলে, সেদিন এক ভিক্ষুককে দেখে খুব মন খারাপ হলো, পকেটে পাঁচ শো টাকা ছিল। দিয়ে দিলাম। বেচারির নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল- ইনহিলাম কেনার জন্য পাঁচ শো টাকা দিয়ে দিলাম।
আমি আমার বন্ধু দীপনকে বুঝাই- এই সমাজে বাঁচতে হলে শুয়োর হয়ে বাঁচাই ভালো। সুন্দর ভাবে বাঁচতে হলে শুয়োর হয়ে যা। ভালো মানুষের ভাত নেই। প্রচুর মিথ্যা বলবি প্রয়োজনে কিংবা অপ্রয়োজনে। মুহূর্তের মধ্যে চোখ পাল্টি নিবি। একটু আগে যার সাথে বসে চা খাবি, গল্প করবি একটু পরেই তাঁর বুকে ছুরি বসিয়ে দিবি। তাহলেই এই সমাজে ভালো থাকতে পারবি।
সহজ সরল সত্য কথা হলো, আমরা কেউ ভালো নেই। শুধু ভালো থাকার অভিনয় করি। আইয়ূব বাচ্চুর গানের কথাটা মনে পড়ে গেল- 'সুখের'ই অভিনয়, আসলে কেউ সুখি নয়।' আমার বন্ধু দীপনের কলিগ মোস্তফার মতো কিছু মহিলাও আছে, তাদের কথা বার্তা শুনলে যে কারো মেজাজ খারাপ হয়ে যাবে। বাচ্চাকে ক্লাশে ঢুকিয়ে তারা আলাপে বসেন। তাদের কথা বার্তা শুনলে, তাদের রুচির পরিচয় পাওয়া যায়।
আজ একটু আগে দীপন আমাকে ফোনে জানাল, সে এই দেশে আর থাকবে না। কিছুতেই না। আমি মনে মনে বললাম- দীপনের আর তাঁর বউ এর মতোন মানুষ আমাদের দেশে থাকুক, শয়তান গুলো অন্য কোথাও চলে যাক।
২| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:০৪
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: ভাল লাগল গল্পটি। আসলেই আমরা যা না তার চেয়ে বানটা করি বেশি। ভাল থাকবেন।
৩| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:২৬
হাইপারসনিক বলেছেন: ঘরে বউ পিটিয়ে রাস্তায় এসে নারী আন্দোলন.....
চাক্ষুষ প্রমান আমার সামনেই ।
দীপনের মত মানুষের জন্য আসলেই এই দেশটা নাহ্
৪| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৪৮
ঢাকাবাসী বলেছেন: দীপনরা এদেশে অচল, শয়তানরাই টিকে থাকবে
৫| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২১
মিজানুর রহমান মিরান বলেছেন: এই সমাজে যারা জনসম্মুখে নীতির কথা বলে, তারাই বেশি নীতিহীন। যে সৎ কাজ করে, সে কখনো তা বলে বেড়াই না। সব সত্য বলেছেন। ধন্যবাদ নিবেন।
৬| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:০৮
মাথা নষ্ট একজন বলেছেন: এটি চিরন্তন সত্য লেখা। যা আমাদের কারো কারো জীবনে প্রতিয়িত ঘটে চলছে। এমনকি আমার জীবনের সাথে কিছুটা জড়িত।
৭| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৬:১২
মহা সমন্বয় বলেছেন: 'সুখের'ই অভিনয়, আসলে কেউ সুখি নয়।
৮| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:১০
জনৈক অচম ভুত বলেছেন: আমি মনে মনে বললাম- দীপনের আর তাঁর বউ এর মতোন মানুষ আমাদের দেশে থাকুক, শয়তান গুলো অন্য কোথাও চলে যাক।
সমাজে শুয়োর শ্রেণীর লোকের দরকার আছে। তারা সমাজের অলংকার। দীপনদের মত মানুষদেরই কেবল ভাত নেই আমাদের সমাজে।
৯| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:১৩
শিবলী আখঞ্জী বলেছেন: এ ধরনের অনেক শুয়োরের সাথে আমি নিজেও বাস করি,শুকরে রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:০৩
প্রবঞ্চিত যুবক বলেছেন: খুব ভাল লাগল। অনেক বাস্তবধর্মী লেখা