নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ফেসবুকে প্রায়ই দেখা যায়, একটা ছবি পোষ্ট করে তাতে লেখা থাকে, 'আমিন' না লিখে যাবেন না। আমারও এই রকম ভাবে বলতে ইচ্ছা করে আমার লেখাটি না পড়ে যাবেন না।
আমার বন্ধু মেরাজ। অতি ভালো ছেলে। ভালো ছেলেদের তালিকা করলে- সে অবশ্যই দশ জনের মধ্যে থাকবে। আমার এই বন্ধুটি মাসে একবার আমার কাছে আসে। নানান গল্প গুজব করে চলে যায়। তার জীবনের নানান ঘটে যাওয়া ঘটনা শুনে আমার চোখ ভিজে ওঠে।
সে একটা কোম্পানীতে কাজ করে। তার পদ যদিও এসিস্টট্যান্ট ম্যানেজার কিন্তু তাকে সব রকম কাজ করতে হয়। প্রতিদিন তাকে ৯/১০ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। কখনও কখনও তার চেয়েও বেশি সময়। অফিসে গেস্ট এসেছে, তাকে যেতে হয় গেস্টের জন্য নাস্তা ব্যবস্থা করতে। দেখা গেল দুপুর বেলা বসের গ্রামের বাড়ি থেকে লোক এসেছে- তাকে যেতে হবে ফখরুদ্দিনের বিরানী আনতে। যদিও অফিসে পিয়ন আছে দুই তিনজন।
অফিসের সবাই তাকে ধমকের সুরে কথা বলেন। এমন কি পিয়নরাও। মেরাজ কে দেখলেই সবার কাজের কথা মনে পড়ে। এই আমার এই টাকা ফ্ল্যাক্সি করেন, এই পাঁচ হাজার টাকা এক্ষুনি এই নাম্বারে বিকাশ করে। ম্যানেজার বলবে, আজকেই শেষ ডেট এখুনি টেলিফোন বিলটা দিয়ে আসেন। ডিএমই বলবেন এক্ষনই ১০০ চায়না লিচু কিনে ওমুক কে দিয়ে আসেন।
বন্ধুর দুঃখে কষ্টে আমার কলিজা ছিড়ে যায় কিন্তু আমি কিছুই করতে পারি না। বন্ধুর রাতে বাসায় ফিরতে ফিরতে ৯ টা বেজে যায়। ক্লান্ত হয়ে ঘামে ভেজা শরীর নিয়ে বাসায় ফিরে। সে হেঁটে হেঁটেই প্রতিদিন বাসায় ফিরে। রিকশা দিয়ে চলা ফেরা করার বিলাসিতা তাকে মানায় না। সারা মাস তার ঘরে অভাব থাকে। মেরাজ এর মা বলেন, তুমি চাকরী করো, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বাইরে থাকে- তোমার এত অভাব কেন?
পা ব্যাথায় মেরাজ সারা রাত ঘুমাতে পারে না। রাত ভোর হতে চলে কিন্তু তার ঘুম আসে না। নানান বিষয় নিয়ে সে ভাবতেই থাকে। আজ ২২ তারিখ। হাত একদম খালি। ঘরে কোনো বাজার নেই। স্ত্রী অসুস্থ তার ওষুধ কিনতে হবে। টেস্ট করাতে। এদিকে সে শুনছে, এবার অফিসে অনেক লোক ছাটাই করা হবে। তার চাকরী চলে গেলে, তার সংসার চলবে কেমন করে। তার সঞ্চয় কিছুই নেই।
২| ০২ রা জুন, ২০১৬ রাত ১০:১৫
বৈশাখের আমরণ নিদাঘ বলেছেন: শুনে খারাপই লাগলো। যত সমস্যা এই মধ্যবিত্তদের। নিম্নবিত্তদের নানা অনটনে অভ্যাস হয়ে যায়। সারভাইবাল অথবা বেঁচে থাকাই তাদের জন্য আনন্দের। মান সম্মান, মর্যাদাবোধও ভোঁতা হতে থাকে। অভাবে স্বভাব নষ্ট কথাটা একেবারে ঠিক। তনে উনার মা উনার কস্টটা বোঝেন না, এটা দুঃখজনক। শিক্ষা, উন্নত চারিত্রিক বৈশিষ্ট কিংবা কিছু করবার সক্ষমতা আমাদের মতন দরদ্র দেশে ভালো থাকার নিশ্চয়তা দেয় না। ভাগ্যও আর ধরাধরিও লাগে, এদেশে এটাই বাস্তবতা।
৩| ০২ রা জুন, ২০১৬ রাত ১০:৪৯
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: এরকম মেরাজ কত আছেন, তাঁদের গল্প কেউ শুনতে চায় না!
৪| ০৩ রা জুন, ২০১৬ রাত ৮:৩৮
আল মামুন খান বলেছেন: পড়লাম আপনার লেখাটি।
৫| ০৪ ঠা জুন, ২০১৬ সকাল ১০:২৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: রাজীব নুর ,
সহ-ব্লগারত্রয় "সোজোন বাদিয়া" , "বৈশাখের আমরণ নিদাঘ" আর "প্রোফেসর শঙ্কু"র মন্তব্যের পরে আর কিছু বলার নেই ।
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা জুন, ২০১৬ রাত ৯:৫৫
সোজোন বাদিয়া বলেছেন: এমন কত জনের দুঃখ আপনি বর্ণনা করবেন? আপনি যখন সাংবাদিক তখন আন্দাজ করি খুবই বেদনাদায়ক অবস্থার মধ্যে আছেন। কারণ, আমাদের অভাগা দেশে আপনিই সবচেয়ে বেশি এমন মানুষ দেখবেন। আরও সমস্যা যে আপনার অনুভূতিটা এখনও ভোঁতা হয়ে যায় নি। আসলে কোনো সংবেদনশীল মানুষের জন্যই বর্তমান পৃথিবীতে, বিশেষভাবে আমাদের দেশে, সুখ বা শান্তি পাওয়া সম্ভব নয়। তবুও কামনা করি ভেঙ্গে পড়বেন না, হাল ছাড়বেন না। ভাল থাকুন।