নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

দ্য ম্যাংগো

০৫ ই জুন, ২০২১ রাত ১২:২৮



আম ভারতীয় উপমহাদেশীয় সুস্বাদু ফল।
কাচা অবস্থায় এর রং সবুজ এবং পাকা অবস্থায় হলুদ রং হয়ে থাকে। বাংলাদেশ এবং ভারত এ যে প্রজাতির (species) আম চাষ হয় তার বৈজ্ঞানিক নাম Mangifera indica. পৃথিবীতে প্রায় ৩৫ প্রজাতির আম আছে। যেমন- ফজলি, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, খিরসা, অরুনা, আম্রপালি, মল্লিকা, সুবর্নরেখা, মিশ্রিদানা, নিলাম্বরী, কালীভোগ, কাচামিঠা, আলফানসো, বারোমাসি, তোতাপূরী, কারাবাউ, কেঊই সাউই, গোপাল খাস, কেন্ট, সূর্যপূরী, পাহুতান, ত্রিফলা ইত্যাদি।

আম গাছ কে বাংলাদেশের জাতীয় গাছের প্রতীক হিসেবে নেয়া হয়েছে।
আম খেতে কোনোটা মিষ্টি, কোনোটা টক। দেখতে কোনোটা লম্বা, কোনোটা গোল। নানা বৈচিত্র্যের জন্যই আমের এত চেহারা ও স্বাদ। আমাদের দেশে আমের বৈচিত্র্যের শেষ নেই।
প্রখ্যাত চীনা পর্যটক হিউয়েন সাং ৬৩২ থেকে ৬৪৫ সালে ভ্রমণে এসে বাংলাদেশের আমকে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিত করে তোলেন। মোগল সম্রাট আকবর (১৫৫৬-১৬০৫) ভারতের শাহবাগের দাঁড়ভাঙ্গায় এক লাখ আমের চারা রোপণ করে এ উপমহাদেশে প্রথম একটি উন্নত জাতের আমবাগান সৃষ্টি করে আমকে আরো উচ্চতর আসনে বসান। আকবরের বাগানের আমের জাত ছিল ল্যাংড়া। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ আম উৎপাদনে চতুর্থ স্থানে ছিল। বাংলাদেশে যেসব ফল উৎপন্ন হয় তার মধ্যে আমের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি।

মানসম্পন্ন আম ফলাতে দরকার আধুনিক উত্পাদন কৌশল।
আম চাষিদের জানা দরকার কীভাবে জমি নির্বাচন, রোপণ দূরত্ব, গর্ত তৈরি ও সার প্রয়োগ, রোপণ প্রণালী, রোপণের সময়, জাত নির্বাচন, চারা নির্বাচন, চারা রোপণ ও চারার পরিচর্যা করতে হয়। মাটি ও আবহাওয়ার কারণে দেশের সব জেলাতে সব জাতের আম হয় না। আমের জন্য মাটির অম্লতা দরকার ৫.৫-৭.০।
অনেক সময় দেখা যায় পাহাড়ি ও বরিশাল বিভাগের অনেক জেলাতে ফজলী, ল্যাংড়া, খিরসাপাত ও আশ্বিনা জাতগুলো ভাল হয়। সুতরাং কাঙ্ক্ষিত জাতটি নির্বাচিত জায়গায় হবে কিনা তা বিবেচনায় রাখতে হবে। আমগাছে শতভাগ মুকুল আসা ভাল না। এতে ফলন ব্যাহত হয়। তাই শতভাগ মুকুলায়িত আমগাছের চারদিক থেকে ৫০% মুকুল ফোটার আগেই ভেঙে দিতে হবে। এতে ভাঙা অংশে নতুন কুশি গজাবে এবং পরবর্তী বছরে ওই সব ডগায় ফুল আসবে, আম আসবে।

বাংলাদেশের মাটি, জলবায়ু, আবহাওয়া সবই আমচাষের উপযোগী।
উপকূলীয় লবণাক্ত ভূমিতেও এখন মিষ্টি আমের চাষ হচ্ছে। পার্বত্য জেলার জুমচাষ এলাকায়ও উন্নত জাতের আম ফলছে। ১৯৯৪ সালে প্রকাশিত ড. একেএম আমজাদ হোসেনের 'আম উৎপাদনের কলাকৌশল' গ্রন্থ থেকে জানা যায়, দেশে এক লাখ ২০ হাজার একর জমিতে আমের চাষ হয়। ইংরেজদের আগে পর্তুগিজ আলম থেকে এদেশে শত শত বছর ধরে পশ্চিমারা আমাদের আমের প্রশংসা করে বিস্তর লেখালেখি করে গেছেন।

বাংলাদেশে যে সব ফল উৎপন্ন হয় তার মধ্যে আমের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি।
আমের নানাবিধ ব্যবহার, স্বাদ-গন্ধ ও পুষ্টিমাণের জন্য এটি একটি আদর্শ ফল হিসেবে পরিচিত। তাই আমকে ফলের রাজা বলা হয়। বর্তমানে আরব আমিরাত, আবুধাবী, দুবাই, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, বাহরাইন, ওমান, ইটালী, জার্মানী ও যুক্তরাজ্যের বাজারে বাংলাদেশ থেকে ফজলি, হিমসাগর এবং ল্যাংড়া জাতের আম রপ্তানী হলেও আরও অনেক দেশে এর রপ্তানীর প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।

জ্যৈষ্ঠ মাস হচ্ছে বাংলাদেশের মধুমাস।
আর এই মধুমাসের মধুফল হল আম। এই আমকে ঘিরে হয়েছে বাঙালির অনেক ঐতিহ্য এবং নানা ধরনের খাবার। ইদানীং কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী এই ঐতিহ্যকে নষ্ট করে ফেলছে। বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ যেমন-কার্বামাইড ইথাইল, ইথিলিন এবং বিভিন্ন প্রকার হরমোন দিয়ে অপরিপকস্ফ ফলকে পাকিয়ে বাজারজাত করছে, যা মানুষের দেহের জন্য অনেক ক্ষতিকর। এতে ক্যান্সার, লিভার সিরোসিস, ক্ষুদা মন্দা, বন্ধ্যত্ব ইত্যাদি মারাত্মক রোগ হতে পারে। এছাড়াও জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে দিন দিন জমি কমে যাওয়ায় ফল গাছের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে।

আম গাছ গুলো বহু বছর বাঁচে।
এর কিছু প্রজাতিকে ৩০০ বছর বয়সেও ফলবতী হতে দেখা যায়। এর প্রধান শিকড় মাটির নিচে প্রায় ৬মি: (২০ ফিট) গভীর পর্যন্ত যেয়ে থাকে। আমের মুকুল বের হয় ডালের ডগা থেকে, ফুল থেকে শুরু করে আম পাকা পর্যন্ত প্রায় ৩-৬ মাস সময় লাগে। বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় সমস্ত উষ্ণ প্রধান জলবায়ুর অঞ্চল গুলিতে আমের চাষাবাদ হয়। এর মধ্য অর্ধেকের কাছাকাছি আম উৎপাদন হয় শুধুমাত্র ভারতেই।

বাংলাদেশে যে ৭০টি ফল বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয় তার মধ্যে আম অন্যতম।
মোট ফল চাষের ৪০ ভাগ জমিতে আম চাষ হলেও দিনদিন এর পরিধি আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে বিভিন্ন অঞ্চলে ফলনের তারতম্য দেখা যায়। যেমন চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহীতে আমের ফলন অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে বেশি। উত্পাদনের বিভিন্ন পর্যায়ে একটু যত্নবান হলে ফলন কয়েক গুণ বাড়ানো যায়। আর তাই যত্ন নিতে হবে আম সংগ্রহের পর থেকেই। রোগাক্রান্ত ও মরা ডালপালা একটু ভাল অংশসহ কেটে ফেলতে হবে মৌসুমের পর।

আমের মধ্যে ফজলি জাতটি বড় আকারের।
ফজলির আরেকটি জাত হলো 'সুরমা'। আম খাওয়া কোন বিলাসিতা না হলেও এর স্থান অনেক উচ্চে। আম-চিড়া তো কৃষকের সকালের নাস্তার মতো জামাই-বরণ বা অতিথি আপ্যায়নেও সমাদৃত। টুকরিতে করে দেশের বিভিন্ন স্থানে আম পাঠানো ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। তাই কুরিয়ার সার্ভিস গুলোতে ভিড় বাড়ছে। অপরদিকে রাজশাহীতে বিক্রীত আমে আপাতত কেমিকেলের উপস্থিতি মেলেনি।

পাকা আম ক্যারোটিনে ভরপুর।
এছাড়া প্রচুর পরিমানে খনিজ পদার্থ থাকে। আমের ভোমরা পোকার আক্রমনে ফলনে মারাত্নক ক্ষতি হয়ে থাকে। ভোমরা পোকার কীড়া আমের গায়ে ছিদ্র করে ভিতরে ঢুকে শাঁস খায়। সাধারণত কচি আমে ছিদ্র করে এরা ভিতরে ঢুকে এবং ফল বড় হওয়ার সাথে সাথে ছিদ্রটি বন্ধ করে দেয় এ জন্য এ জন্য বাইরে থেকে আমটি ভাল মনে হলেও ভিতরে কীড়া পাওয়া যায়।

আম, অড়বরই ও কাঁচ মরিচ ধুয়ে বাতাসে শুকিয়ে নিন।
আমগুলো ছোট চৌকো টুকরা করুন, একটি পাত্রে সরিষার তেল গরম করে তাতে একে একে আম, হলুদ গুঁড়া ও লবণ দিয়ে নাড়ুন। সিরকা দিন, আম সেদ্ধ হয়ে এলে তাতে অড়বরই ও কাঁচা মরিচ দিন। একটু নাড়াচাড়া করে মরিচ গুঁড়া দিন। সব উপকরণ সেদ্ধ হয়ে এলে তাতে পাঁচফোড়ন গুলো মেশান। চিনি দিয়ে নাড়ুন। ঘন হয়ে তেলের ওপর ভেসে উঠলে নামিয়ে নিন কাঁচা আম অড়বরইয়ের আচার।

শিশুদের জন্য প্রতিদিন অন্তত একটি ফল খাওয়া অপরিহার্য।
সকালে নাস্তার পর একটি ফল খান। বিকেলে তেলভাজা খাবারের পরিবর্তে খেতে পারেন এক বাটি ফল। ফ্রুট সালাদ খেতে পারেন। কাজে বের হওয়ার আগে একটা ফল খান। হালকা ব্যায়াম বা হাঁটার পর ৩০ মিনিট আগে বা পরে ফল খান। টিভি দেখতে দেখতে চিপস খেতে অভ্যস্ত হলে টিভির সামনে এক বাটি ফল রাখুন। তাজা ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন। ফল খাওয়ার কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। যে কোনো সময় ফল খেতে পারেন। বাচ্চার টিফিনে বা আপনার অফিসের লাঞ্চে কয়েক পদের ফল রাখতে পারেন।

মলা মাছের আম ঝোল।
প্রণালি: তেল গরম করে রসুন ফোড়ন দিতে হবে। পেঁয়াজ দিয়ে নরম করে ভেজে গুঁড়া মসলা ও টমেটো একটু পানি দিয়ে কষাতে হবে। মাছ ও লবণ দিয়ে পাঁচ মিনিট রান্না করে পরিমাণ মতো ঝোল দিতে হবে। ঝোল মাখা মাখা হলে আম ও কাঁচামরিচ ফালি করে ছড়িয়ে দিয়ে আরও দুই মিনিট দমে রেখে ওপরে ধনেপাতা ও জিরা গুঁড়া দিয়ে নামাতে হবে।

অনেক ক্ষেত্রে পাকা আমের তুলনায় কাঁচা আমের গুণ আরও বেশি।
কাঁচা আম স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে, ক্যারোটিন ও ভিটামিন সমৃদ্ধ কাঁচা আম চোখ ভালো রাখে, কাঁচা আমে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকায় রক্তসল্পতা সমস্যা সমাধানে বেশ উপকারী, নিঃশ্বাসের সমস্যা, জ্বরের সমস্যা উপশম করে, দাঁতের রোগ প্রতিরোধ করে।

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জুন, ২০২১ রাত ১২:৩৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



ঢাকা শহরের রাস্তায় আম গাছ আছে?

আপনার ছাদের আমগুলো পেকেছিলো?

০৫ ই জুন, ২০২১ রাত ১:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: আমার ধারনা পুরো ঢাকা শহরে তিন হাজার আম গাছ আছে।

০৫ ই জুন, ২০২১ রাত ১:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: আমার ছাদের আম গাছ গুলো দুই একদিনের মধ্যেই পেরে ফেলব।
তবে দুইটা আম পেকে পড়ে গেছে। খেয়ে দেখেছি। দারুন । কড়া মিষ্টি। পেকে একদম লাল হয়ে গেছে।

২| ০৫ ই জুন, ২০২১ রাত ৩:৫৮

কামাল১৮ বলেছেন: প্রায় ৫০০ থেকে এক হাজার রকমের আম আছে পৃথিবীতে।বাংলায় নয় ইংরেজীতে লিখে সার্স দিলে মোটা মোটি কিছুটাহলেও সঠিক তথ্য পাবেন।একেবারে সঠিক তথ্য পেতে হলে কোন গবেষনা ধর্মী লেখা আন্তর্জাতিক মান সম্মত কোন বিজ্ঞান জার্নালে প্রকাশিত হতে হবে।

০৫ ই জুন, ২০২১ দুপুর ২:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: সহমত।

৩| ০৫ ই জুন, ২০২১ ভোর ৪:৫৭

অনল চৌধুরী বলেছেন: ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত আমাদের বাড়িতে ৩ টা আম গাছ ছিলো। ২ টাতে ধরতো, যা এলাকার অন্যদের বাড়িতে দেয়া হতো।
সুলতানদের আমলে বেড়াতে এসে চীনা পর্যটকরা কাঠাল খেয়ে বেশী খুশী হয়েছিলেন।
আমকেও ভালো কিন্ত একটু টক বলেছিলেন।

০৫ ই জুন, ২০২১ দুপুর ২:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: ঢাকা শহরে কত গুলো আম গাছ আছে এই তথ্য কোথায় পাওয়া যেতে পারে?

৪| ০৫ ই জুন, ২০২১ রাত ৯:১৯

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: পৃথিবীর সবচেয়ে সুস্বাদু ফল হোল আম।

০৫ ই জুন, ২০২১ রাত ১০:১১

রাজীব নুর বলেছেন: সহমত।

৫| ০৬ ই জুন, ২০২১ ভোর ৪:০৬

অনল চৌধুরী বলেছেন: ৮০"র দশক হলে ই্ তথ্য বের করা কঠিন হতো। কিন্ত এখন অনেকটাই সোজা কারণ ভবন বানানোর জন্যর বেশীরভাগ গাছ কেটে ফেলা হয়েছে।
এজন্য সব ওয়ার্ডে নিজে জরীপ করতে হবে বা লোক দিয়ে করাতে হবে।
তবে বাড্ডা আফতাবনগরের মতো গ্রাম ধরণের এলাকা ছাড়া এখন খুব ক এলাকাতেই আম ধরে এমন গাছ আছে।

০৬ ই জুন, ২০২১ দুপুর ১:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: আমার ধারনা তিন হাজার হবে সব মিলিয়ে।

৬| ০৬ ই জুন, ২০২১ ভোর ৪:০৭

অনল চৌধুরী বলেছেন: সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: পৃথিবীর সবচেয়ে সুস্বাদু ফল হোল আম আমার কাছে লিচু প্রিয় কিন্ত খুব সময় বাজারে পাওয়া যায়।

০৬ ই জুন, ২০২১ দুপুর ১:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: লিচু আমি খাই না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.