নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার প্রিয় ৫টি বই

০৫ ই জুন, ২০২১ রাত ১০:২২


১। অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট
(All Quiet on the Western Front) লুইস মাইলস্টোন পরিচালিত যুদ্ধবিরোধী চলচ্চিত্র যা ১৯৩০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পায়। এই সিনেমাকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আদর্শ রূপায়ন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যুদ্ধের মূলধারাকে নিষ্ঠার সাথে অনুসরণ করার জন্যই এই সিনেমা ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে আছে। সর্বকালের সেরা ১০০ মার্কিন চলচ্চিত্রের তালিকায় এই একে ৫৪ নম্বরে স্থান দিয়েছিলো। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে লেখক ১৯২৯ সালে রচনা করেন বিখ্যাত উপন্যাস অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট।

যুদ্ধে প্রায় দেড় কোটি মানুষ নিহত এবং দুই কোটি মানুষ আহত হয়েছিল।
এই যুদ্ধের সূচনা হয়েছিল ২৮ জুলাই ১৯১৪-তে। ১৯১৮'তে বছরের এগারতম মাসের এগারতম দিনের এগারতম ঘণ্টায় এই যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষিত হয়েছিল। এই উপন্যাসটি ইংরেজি ভাষাসহ বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। জার্মান এই লেখক প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির হয়ে ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। যুদ্ধক্ষেত্রে তিনি আহত হন। সেই অভিজ্ঞতায় তাকে প্রেরণা জোগায় 'অল কোয়ায়েট অন দি ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট'- এর মতো যুদ্ধবিরোধী উপন্যাস লিখতে। লেখক এরিখ মারিয়া রেমার্ক ১৮৯৮ সালের ২২ জুন জার্মানির ওসনাব্রুক নগরে জন্মগ্রহণ করেন। রেমার্কের শেষ রচনা 'দ্য নাইট ইন লিসবন'। তিনি ১৯৭০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ইহলোক ত্যাগ করেন।


২। 'দৃষ্টিপাত'
প্রকাশিত হওয়া মাত্রই বাঙালী শিক্ষিত সমাজে যে আলোড়নের সৃষ্টি হয়েছিল তাহা যেমন বিস্ময়কর তেমনি অভূতপূর্ব। 'দৃষ্টিপাত'- এ রাজনৈতিক আলোচনার সঙ্গে সঙ্গে রয়েছে ইতিহাস, স্থাপত্য, সঙ্গীত, মনুষ্যচরিত্র নিয়ে নানান আলোচনা। নিরসভাবে নয়, গল্প ও ঘটনার সহজ প্রবাহের সঙ্গেই সেগুলি এসেছে; করেছে বইটিকে তথ্য-সম্বৃদ্ধ।

'দৃষ্টিপাত'-এর নানান খণ্ড কাহিনীর মধ্যে যেটি মধ্যে যেটি মনে সবচেয়ে দাগ কাটে সেটি হল- একটি মারাঠি যুবক চারুদত্তের সঙ্গে এক বিবাহিতা বাঙালিনী সুনন্দার প্রেমকাহিনী। সুনন্দাকে দেখে মুগ্ধ হয়ে চারু বাঙলা শিখলেন, পড়লেন রবীন্দ্রনাথ। সুনন্দাও অকুণ্ঠ চিত্তে আধারকারকে দিলেন তাঁর হৃদয়।

দৃষ্টিপাতের শেষ লাইনগুলি এখনও অনেক পাঠকের মুখস্ত আছে: প্রেম জীবনকে দেয় ঐশ্বর্য, মৃত্যুকে দেয় মহিমা। কিন্তু প্রবঞ্চিতকে দেয় কি? তাকে দেয় দাহ। যে আগুন আলো দেয় না অথচ দহন করে, সেই দীপ্তিহীন অগ্নির নির্দয় দহনে পলে পলে দগ্ধ হলেন কাণ্ডজ্ঞানহীন হতভাগ্য চারুদত্ত আধারকার।

যাযাবর ছদ্মনামের পেছনে আসল ব্যক্তিটি বিনয় মুখোপাধ্যায়।
চাকরি জীবনে ছিলেন ইণ্ডিয়ান ইনফরমেশন সার্ভিসের একজন পদস্থ কর্মচারী; প্রেস কাউন্সিলের কার্যাধক্ষ (সেক্রেটারি) হিসেবে অবসর নেন। দুয়েকটি প্রবন্ধ ও খেলাধূলার উপর লেখা বইগুলি ছাড়া এই ছদ্মনামের আড়ালেই তিনি বরাবর ছিলেন। 'দৃষ্টিপাত' বই হিসেবে প্রকাশিত হয় বাংলার ১৩৫৩ সালে। তার আগে ধারাবাহিক ভাবে মাসিক বসুমতীতে (বর্তমানে বিলুপ্ত) এটি প্রকাশিত হয়েছিল। সেই সময়ে বইটি একটা আলোড়নের সৃষ্টি করে। ১৯৫০ সালে সমকালীন বাংলা সাহিত্যের সর্বশ্রেষ্ঠ বই হিসেবে 'দৃষ্টিপাত' নরসিংহ দাস পুরস্কারে সন্মানিত হয়। ১৯৬০ সালে এর হিন্দী অনুবাদ প্রকাশিত হয়। লেখক সাহিত্যকীর্তির জন্য পশ্চিম বঙ্গ সরকারের কাছ থেকে বিদ্যাসাগর পুরস্কার পান।


৩। তেইশ নম্বর তৈলচিত্র
ঔপন্যাসিক আলাউদ্দিন আল আজাদের প্রথম উপন্যাস। ১৯৬০ সালে পদক্ষেপ নামক এক পত্রিকার ঈদ সংখ্যায় উপন্যাসটি প্রথম ছাপা হয়। ১৯৭৭ সালে বইটি চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয়। সুভাষ দত্ত পরিচালিত এই ছায়াছবিটির শিরোনাম ছিল বসুন্ধরা। সাতটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয়লাভ করে। লেখকের প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা ১২০। ছাত্রাবস্থায় প্রকাশিত হয় তার প্রথম গল্পের বই 'জেগে আছি'। বইটি সে সময় যথার্থ প্রতিশ্রুতিবান তরুণ লেখকের সম্মান কুড়াতে সক্ষম হয়েছিল। এ

ত্রিশটি উপন্যাস লিখেছেন আজাদ।
তার মধ্যে আছে দৈনিক পত্রিকার ঈদ ম্যাগাজিনের জন্য লিখিত বেশ কয়েকটি উপন্যাস; যেগুলোকে উপন্যাস নয়, দীর্ঘ গল্প বললে সঠিক বলা হয়। ‘তেইশ নম্বর তৈলচিত্র’ তার জনপ্রিয় উপন্যাস। শিল্পীর অপূর্ণতাবোধ, বেদনা এবং অশেষ সৌন্দর্যতৃষ্ণা এ উপন্যাসের প্রধানতম থিম। শিল্পীর মনের টানাপড়েন এবং নতুন ধরনের মূল্যবোধের কারণে ‘তেইশ নম্বর তৈলচিত্র’ প্রসিদ্ধ হলেও এ উপন্যাসের অন্য উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে এর নায়ক পরিকল্পনা। নায়কের পালাবদল ঘটেছিল সেই চল্লিশের দশকে, সমরেশ বসুর ‘বিবর’ উপন্যাসের মধ্য দিয়ে। তার আগে নায়ক বলতে আমরা বুঝতাম আদর্শবাদী চরিত্র। সমরেশ বসুই প্রথম একটি লম্পট ও প্রতারক চরিত্রকে নায়কের মর্যাদা দেন।


৪। 'মাদার' (মা)
ম্যাক্সিম গোর্কির এই উপন্যাসটি সারা বিশ্বেই অত্যধিক জনপ্রিয় একটি সাহিত্য। গোর্কির লেখনীতে সর্বদাই শ্রমজীবি মানুষের কথা উঠে এসেছে অত্যন্ত সাবলীলভাবে। তার মা চরিত্রটিতে দেখা গেছে শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার এক মানবীকে। যিনি কল্যাণকামী এবং ধৈর্যশীলা। এই উপন্যাসের মা সর্বদাই শ্রমিকদের লাঞ্ছণা-গঞ্জণা এবং পরাজয়ের দগদগে ঘা গুলো দেখিয়েছেন এবং শুশ্রুষা করেছেন। ইনি শ্রমিক শ্রেণীর মানুষগুলোর জন্য ছিলেন প্রেরণাদাত্রী।

গোর্কি তার 'মা' উপন্যাসে এমনই এক মা-কে অসাধারণ সাহিত্যিক মহিমায় ফুটিয়ে তুলেছেন। একটি উপন্যাস একটি জাতির বিবেককে ব্যাপকভাবে বদলে দিয়েছে, তুমুলভাবে আলোড়িত আলোকিত করেছে, এমন এক্সাম্পল বিশ্বসাহিত্যে আর বিশেষ আছে বলে মনে হয় না। ১৯০৬ সালে প্রকাশিত ম্যাক্সিম গোর্কির ‘মা’ হয়ে উঠল বিপ্লবীদের অবশ্য পাঠ্য গ্রন্থ। ধ্রুপদ মর্যাদার এই উপন্যাস রুশ সীমান্ত ডিঙিয়ে শ্রমজীবী মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছল।

গোর্কির মা, শৈশব এবং গল্পগুলো বহু বছর আগেই বাংলায় অনূদিত হয়েছে।
গোর্কির বই পছন্দ করা কমিউনিজম সমর্থন করার সমর্থক হয়ে যায়। ফলে গোর্কি নিজ দেশে এবং সমাজতন্ত্রী ও সাম্যবাদী দেশে, শ্রমিক শ্রেণীর মধ্যে অসাধারণ জনপ্রিয়তা উপভোগ করলেও পশ্চিমের শীতলতা জীবদ্দশাতেই অনুভব করে গেছেন। মস্কোর সবচেয়ে আকর্ষণীয় জায়গাটির নাম গোর্কি সেন্ট্রাল পার্ক অব কালচার এ্যান্ড লেইজার । গোর্কির নামে বার্লিনে প্রতিষ্ঠিত হয় ম্যাক্সিম গোর্কি থিয়েটার ।


৫। কাবিলের বোন: আল মাহমুদ, নওরোজ সাহিত্য সম্ভার।
আল মাহমুদ জন্মেছিলেন ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই এক বর্ষণমুখর রাতে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মৌড়াইল গ্রামের/ মাতুলালয় মোল্লা বাড়িতে। ১৯৭১ সালের ৯ মাসের যুদ্ধ এবং এ যুদ্ধের পূর্বাপর প্রেক্ষাপট নিয়ে এদেশের সাহিত্য-শিল্পের জগতে প্রচুর কাজ হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ সংশ্লিষ্ট সাহিত্য-শিল্পের এখন তো ছড়াছড়ি। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বর্তমানে ভূরি ভূরি বই প্রকাশিত হতে দেখছি আমরা। বাজার থেকে এরকম দশটি বই তুলে নিয়ে পাঠ করলে দেখা যাবে, ইতিহাস ও বাস্তবতাকে পাশ কাটিয়ে একরৈখিকভাবে আরোপ করা হচ্ছে লেখকের অন্তরে প্রতিষ্ঠিত কোনো ধারণা। এসব বইতে অধিকাংশ সময়ই থাকছে না গবেষণার তাগিদ, বাস্তব পরিস্থিতি অনুধাবনের প্রচেষ্টা।

প্রত্যক্ষ মুক্তিযোদ্ধা কবি ও কথাশিল্পী আল মাহমুদ তার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতায় জারিত হয়ে লিখেছেন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস- ‘কাবিলের বোন’ ও ‘উপমহাদেশ। কিন্তু প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা জারিত এসব উপন্যাস নিয়ে নাটক-সিনেমা তৈরির জন্য কোনো সরকারই অনুদান দেয়নি। মুক্তিযুদ্ধের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে উত্সারিত আল মাহমুদের এ দু’টি উপন্যাস বহুল আলোচিত, পঠিত ও নন্দিত হওয়ার পরও এগুলোর মর্যাদা এখনও চিহ্নিত হয়নি।

১৯৯৪ সালে আল মাহমুদের ‘কাবিলের বোন’ উপন্যাস প্রকাশ করার কারণে বাংলা একাডেমীর একুশে বইমেলায় বাংলা সাহিত্য পরিষদের স্টলে ভাংচুর করা হয় এবং বইতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। মূলত মুক্তিযুদ্ধের ‘ইজারাদার’ গোষ্ঠী এ ঘটনা ঘটিয়েছে। মানসিক তারুণ্য ও দৃঢ়তার কাঁধে ভর করে শ্রুতিলেখক দিয়ে এখনও লিখছেন সব রকমের লেখা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আল মাহমুদ কে ডেকে শিল্পকলা একাডেমীর প্রকাশনা বিভাগের সহ-পরিচালক পদে নিয়োগ দেন। ব্যক্তি আল মাহমুদ কেমন তা নিয়ে আমার খুব বেশী মাথাব্যাথা নেই। মাথাব্যাথা নেই শামসুর রাহমান, শক্তি চট্টোপাধ্যায় আর তাঁর মাঝে কে বড় কবি তা নিয়ে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জুন, ২০২১ রাত ১১:১৫

তাজেরুল ইসলাম স্বাধীন বলেছেন: শেষের দুইটি বই কমন পরছে। B-)

০৬ ই জুন, ২০২১ রাত ১:২৮

রাজীব নুর বলেছেন: বাকি তিনটা বই পড়ে ফেলবেন। ভাল লাগবে।

২| ০৬ ই জুন, ২০২১ রাত ১২:০৬

কামাল১৮ বলেছেন: ২,৩ ,আর ৪ পড়েছি অনেক আগে।

০৬ ই জুন, ২০২১ রাত ১:২৯

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি অনেক পড়ুয়া মানুষ। অভিজ্ঞ মানুষ।

৩| ০৬ ই জুন, ২০২১ সকাল ৭:৩৬

সোহানী বলেছেন: সবগুলোই পড়া। অল কোয়ায়েট এর ২য় পর্ব পড়েছেন, দি রোড ব্যাক?

০৬ ই জুন, ২০২১ দুপুর ১:৩২

রাজীব নুর বলেছেন: না পড়িনি।
তবে অবশ্যই পড়ব।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.