নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

লোকমান, ভোলা এবং চৌধুরী বাড়ির- ঝি কমলা\'র গল্প

০৮ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ২:৩৮


ছবিঃ আমার তোলা।

পৃথিবীটা কেন এত খারাপ?
কেন এত নিষ্ঠুর? কেন চারদিকে সবসময়েই এত বিপদ আপদ? এত সব ঝামেলা আর গন্ডগোলের মধ্যে কী করে বেঁচে থাকবে ভবিষ্যত প্রজন্ম? সকালে ঘুম থেকে উঠে একথাটাই মনে হলো। অথচ রবীন্দ্রনাথ তাঁর সমস্ত শিল্পকর্ম দিয়ে একটি কথাই যেন বলতে চেয়েছেন- জীবন সুন্দর। বিশ্বের সব শ্রেষ্ঠ কবিই মূলত মানব জাতির গৌরব। সাহিত্যের প্রধান উদ্দেশ্য পাঠককে আনন্দ দান করা। তাই যে সাহিত্য পড়ে পাঠক আনন্দ লাভ করে, সেটাই প্রকৃত সাহিত্য। এখন আমি যে পোষ্ট লিখতে শুরু করেছি, সেটা নিয়ে কিছুটা বেকায়দায় আছি। কারন, আগে থেকে ঠিক করিনি আজ কি লিখব। কি নিয়ে লিখব। অবশ্য সুবিধা হলো- লিখতে শুরু করলে লেখা কোথাও না কোথাও গিয়ে পৌঁছাবে। সাথেই থাকুন।

এটা আমাদের গ্রামের গল্প।
আমাদের গ্রামে দুই নির্বোধ ছিলো। চরম বোকা। তাদের বাপ- মা নেই। এদের একজনের নাম লোকমান, আরেক জনের নাম ভোলা। স্বাধীনতা যুদ্ধের ৫ বছর আগে কোথা থেকে জানি আমাদের গ্রামে এসে হাজির হয়। তখন তাদের বয়স অল্প ছিলো। গ্রামের লোকজন তাদের সহজ ভাবেই গ্রহন করে। গ্রামের মানুষ ভাবলো- দুই একটা ছন্নছাড়া গ্রামে থাকা ভালো। এদের একপেট ভাত খাইয়ে অনেক কাজ করানো যায়। যেদিন যে বাড়ির কাজ করবে সেদিন সে বাড়িতে ভাত খাবে। দেখা গেলো- তাঁরা অনেক পরিশ্রমী। কাজে ফাঁকি দেয় না। তাদের যে কাজ'ই দেওয়া হোক তাঁরা আপ্রান চেষ্টা করে কাজটা সুন্দর ভাবে শেষ করতে। টাকা পয়সা চায় না। এক থালা ভাত পেলেই খুশি। ভাতের সাথে বাসী তরকারী পেলেও মহা খুশি হয়।

একসময় দেখা গেলো- লোকমান আর ভোলা আমাদের বাড়িতে থাকে।
দাদা কলকাতা থেকে আশার সময় একবার লোকমান আর ভোলার জন্য দুটা লুঙ্গি আর পাঞ্জাবী নিয়ে আসে। লুঙ্গি আর পাঞ্জাবি পেয়ে তাঁরা অনেক খুশি। খুশিতে অনেকক্ষন কান্না করলো। আমার দাদা বিকেলে প্রতিদিন পদ্মার পারে হাঁটতে যান। তাঁরা দুইজনই দাদার সাথে থাকে সারাক্ষণ। দাদা প্রতিমাসে একবার নৌকায় করে পদ্মানদীতে ঘুরে বেড়ান। জমিজমার খোঁজ খবর করেন। সেই নৌকা চালায় লোকমান আর ভোলা। এমন কি লোকমান আমার দাদার পা টিপে দেয়। আর ভোলা দাদার তামুক এগিয়ে দেয়। দাদা ওদের পারফরমেন্সে খুব খুশি। একদিন লোকমান আর ভোলা সাহস করে দাদাকে বললেন, আমাদের টাকা দেন। আমরা ব্যবসা করবো। কামলা খাটতে মন চায় না। দাদা বললেন, ব্যবসা তোমরা পারবে না। তোমরা বোকা। ব্যবসা করতে হয় চালাক চতুর মানুষদের। লোকমান বলল, কি করলে চালাক চতুর হবো?

কমলা নামের এক মেয়ের প্রেমে পড়লো তাঁরা দুজনেই।
কমলা চৌধুরীদের বাড়িতে কাজ করে। দেখতে আহামরি কিছু না। গালের হনু বের গেছে। কথা বললে মাড়ি বের হয়ে যায়। হাত পা গুলো দেখতে ব্যাটাছেলেদের মতোন। কমলা কাকে পছন্দ করে সেটা স্পষ্ট না। একদিন কমলাকে পুকুর পাড়ে লোকমান আর ভোলা ধরলো। বলল, আমরা দুজনই তোমাকে ভালোবাসি। কিন্তু তুমি তো দুজনকে বিয়ে করতে পারবে না। এখন তুমি বলো- আমাদের দুজনের মধ্যে তুমি কাকে বিয়ে করতে রাজী আছো? কমলা বলল, তোমাদের কাউকেই বিয়ে করবো না। কারন তোমরা কামলা। তোমাদের বাড়ি নেই। টাকা নেই। আচ্ছা, ঠিক আছে- তোমাদের দুজনকেই এক বছর সময় দিলাম। বাড়ি করো, টাকা করো। লোকমান আর ভোলা টাকা কামানোর উদ্দ্যেশে কাউকে কিচ্ছু না জানিয়ে ঢাকা গেলো।

শহরে এসেছে লোকমান আর ভোলা।
তাদের ভালো কাজ দরকার। তাঁরা অনেক টাকার মালিক হতে চায়। গাড়ি, বাড়ি করতে চায়। সুন্দরী মেয়ে কমলাকে বিয়ে করতে চায়। তার জন্য দরকার টাকা। সারা শহর ঘুরেও তাঁরা কাজ পায়নি। অচেনা অজানা লোককে কে কাজ দিবে এই শহরে? লোকমান শহরে এসে কিভাবে যেন গাড়ি চালানোটা শিখে ফেলে। আর ভোলা কি করবে ভেবে পায় না। একদিন তাঁরা ঠিক করলো এই শহর ভালো মানুষদের জন্য না। কত মানুষের হাতে পায়ে ধরলো কাজের জন্য কিন্তু কেউ এগিয়ে এলো না। তাঁরা ঠিক করলো তাঁরা অপহরন করবে। যেই ভাবা সেই কাজ। রাস্তায় এক মেয়েকে অপহরন করলো। মেয়েকে মুহুর্তের মধ্যে গাড়িতে ঢুকিয়ে ফেলল। কিন্তু কপাল খারাপ। গাড়ি স্টার্ট নিলো না। মেয়েটার চিৎকার চেচামেচিতে পুলিশ এসে পড়লো। ভোলা বলল, বিরাট মিসটেক হয়েছে। সিনেমা দেখে অপরহন করতে গিয়ে পুলিশের কাছে ধরা পড়লাম।

আমার দাদা থানা থেকে তাদের ছাড়িয়ে আনলেন।
লোকমান আর ভোলা দাদার পা ধরে কান্না করলো খুব। তাঁরা ভুল করেছে। জীবনে আর এরকম করবে না। এরপরে তিন বছর পার হয়ে গেলো। লোকমান আর ভোলার খুব শখ তাঁরা কলকাতা যাবে। এই শখ দাদাকে মিটাতেই হবে। একদিন দাদা তাদের কলকাতা নিয়ে গেলেন। দাদার বাড়ি কলকাতা বৈঠকখানা রোডে। কলকাতা শহর দেখে লোকমান আর ভোলা একদম মুগ্ধ। দাদাকে তাঁরা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে- এই শহর ছেড়ে তাঁরা আর কোথাও যাবে না। নো নেভার। কলকাতা হলো যাদুর শহর। তখন দাদা তার নিউজ প্রিন্ট কাগজের কারখানায় কাজে লাগিয়ে দিলেন। বললেন, এই শহর যাদুর শহর নয়। এটা ভয়াবহ দুষ্টলোকদের শহর। এই শহরে তোমরা টিকে থাকতে পারবে না। কিন্তু লোকমান আর ভোলা এই শহরে টিকে গেলো। এবং বিক্রমপুরের ঝি কমলাকে একদম ভুলে গেলো।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ২:৫০

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: কেমন যেনো ছাড়াছাড়া মনে হলো।

০৯ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১২:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: সহমত।

২| ০৮ ই আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৪:৫০

হাবিব বলেছেন: এই গল্প থেকে আমরা কি শিখলাম?

০৯ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১২:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: শিখলাম হল ভাগ্য। ভাগ্য মানুষকে নিয়ে কোথা থেকে কোথায় নিয়ে যায়।

৩| ০৮ ই আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৪:৫৫

কুশন বলেছেন: আজকাল লেখালেখিতে আপনার মন নেই। কেন জোর করে, ইচ্ছার বিরুদ্ধে লিখতে যান?

০৯ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১২:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: পণ্ডিত আইছে।

৪| ০৮ ই আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৮

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:


সাধু সাধু সাধু!

অসাধারণ লিখেছেন।

০৯ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১২:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: হুম।

৫| ০৮ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ১১:৫৯

কামাল১৮ বলেছেন: পৃথীবিটা খারাপ না,কিছু লোক খারাপ।

০৯ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১২:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: হ্যাঁ আমিও তাই মনে করি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.