নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
আজ ১৮ রমজান। সবাই ব্যস্ত কেনাকাটা নিয়ে।
মার্কেট গুলোতে গজব ভীড়। আমার কোনো ব্যস্ততা নেই। মানুষের ব্যস্ততা দেখতে ভালো লাগে। একজন ভিক্ষুক পর্যন্ত ব্যস্ত। যাইহোক, আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ইফতার পার্টি না করতে। কিন্তু কেউ প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনে নাই। আমি নিজেই ৯ টা ইফতার পার্টির দাওয়াত পেয়েছি। একটা দেশের জনগণ কেন দেশের প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনবে না? উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম হলে, পিটিয়ে পিঠের চামড়া তুলে ফেলতো। এই যে কত লোক পরিবারের সাথে ইদ করতে গ্রামে যাবে। বাসে, ট্রেনে আর লঞ্চে করে। উপচে পড়া ভীড় হবে। যদি কোনো দূর্ঘটনা হয়? প্রতি বছরই তো দূর্ঘটনা হচ্ছে। নিরাপত্তার ব্যবস্থা কতটুকু আছে? দূর্ঘটনা ঘটার পর হায় হায় করলে হবে?
আজ একটা তরমুজ কিনেছি।
আমি কখনো তরমুজ কেটে আনি না। ভালো হলে হবে, না হলে নাই। তরমুজ লাল না হলে বিক্রেতার দোষ নাই। সে তো আর তরমুজের চাষ করে নাই। সামান্য একটা ফল। লাল না হলে হইচই করার কি আছে? একলোককে দেখলাম, তরমুজ বিক্রেতার সাথে মারামারি করছে। বিক্রেতা তিনটি তরমুজ কেটেছে, একটাও লাল হয় নাই। বিক্রেতার দোষ নেই। সে তরমুজ চাষী নয়। সে বিক্রেতা মাত্র। মারতে হলে তরমুজ চাষীকে মারা দরকার। বিক্রেতার দোষ কি? আমি বিশ্বাস করি, নিজে ঠকা ভালো। কাউকে ঠকানো ভালো নয়। গতকাল একজন বললেন, আমি মানুষকে বিশ্বাস করি। জানি মানুষ ঠক, প্রতারক এবং মিথ্যাবাদী। তারপরও আমি মানুষকে বিশ্বাস করি। কারন মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। আল্লাহ বলেছেন, মানুষকে বিশ্বাস করো, ভালোবাসো। আমার সৃষ্টিকে কেন অবিশ্বাস করবে?
একবার কক্সবাজার যাচ্ছিলাম।
আমি হানিফ বাসের যাত্রী। আমাদের বাস শ্যামলী বাসের সাথে পাল্লা দিতে শুরু করলো। আমাদের বাসের যাত্রীরা ড্রাইভার কে বলল, মামা শ্যামলীকে পেছনে ফেলে আগে যেতেই হবে। এদিকে শ্যামলী বাস কিছুতেই সাইড দিবে না। আমাদের তুমুল অবস্থা। রাত তখন দুইটা। আমাদের বাসের বাসের ড্রাইভারও শ্যামলীকে চাপ দিয়ে আগে যাবেই। যাত্রীরা সমানে চিল্লাচ্ছে আগে যাও, আগে যাও। শ্যামলীর আগে যেতেই হবে। সবার মধ্যে উত্তেজনা। আমি বারবার বলছি, থামো থামো থামো। আগে যাওয়ার দরকার নাই। আস্তে ধীরেই যাও। তোমাগো আল্লাহর দোহাই লাগে। একসিডেন্ট হয়ে যাবে। কেউ আমার কথা শুনছে না। একজন যাত্রী আমাকে ধমক দিয়ে বলল, চুপ থাকেন। নইলে বাস থেকে নামিয়ে দিব।
একবার নদীপথে দূর্ঘটনায় পড়লাম।
আমি যাচ্ছিলাম কার্তিকপুর ঘাট। সাথে আমার বন্ধু জাহাঙ্গীর। জাহাঙ্গীর এখন বেচে নেই। সৌদিতে স্ট্রোক করে মারা যায়। যাইহোক, ইঞ্জিনওলা নৌকা। বেশ বড় নৌকা। কার্তিকপুর যেতে সময় লাগবে। এক ঘন্টা। ইঞ্জিনওলা নৌকা যাচ্ছে ফরফর করে। চারিদিকে কড়া রোদ। কিন্তু প্রচুর বাতাস। তাই গরম লাগছে না। হঠাৎ রোদ চল গেলো। আকাশে মেঘ জমতে শুরু করলো। প্রচুর বাতাস বইতে শুরু করলো। এমন বাতাস যে কোনো সময় আমাদের নৌকা উলটে যাবে। নৌকায় থাকা লোকজন কেমন দিশেহারা হয়ে গেলো। আমার বন্ধু জাহাঙ্গীর প্রচন্ড ভয় পেলো। তার চোখে মুখে আতংক। সে পাগলের মতো আচরণ করছিলো। আমি বললাম, বন্ধু মৃতুকে ভয় পেও না। মরতে তো হবেই। বন্ধু রেগে গিয়ে বলল, চুপ থাক শালা।
আমি সাতার জানি না।
যদি সত্যি সত্যি নৌকা ডুবে যায়, তাহলে মৃত্যু নিশ্চিত। আমি অস্থির হলাম না। শান্ত থাকলাম। নৌকায় থাকা লোকজনদের হাস্যকর কর্মকাণ্ড দেখছি। একজনকে দেখলাম, আযান দিচ্ছে। একজন সূরা লাহাব পড়ছেন। একজন দুই হাত তুলে প্রার্থনা করছেন। আল্লাহ, আল্লাহ গো বাচিয়ে দাও। এবারের মতো বাচিয়ে দাও।একজন কাউকে ফোন দিয়ে খুব কান্না করছেন। কয়েকজন দূরে থাকা লঞ্চের দিকে হাত ইশারা করে আকুলভাবে বলছে, বাচান। আমাদের বাচান। আমার বন্ধ পাগলের মতো এদিক ওদিক ছোটাছুটি করছে। সে দুবার বমি করেছে। আমাদের নৌকার মাঝি নদীতে লাফ দিলো। তার দেখাদেখি আরো কয়েকজন লাফ দিলো। তারা সাতার জানেন। হয়তো বেচে যাবেন। যাইহোক, সেই যাত্রায় কোনো যাত্রীর মৃত্যু হয়নি।
©somewhere in net ltd.