নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
তখন আমি কলেজে পড়ি।
সামনে ফাইনালপ পরীক্ষা। তাই অনেক রাত পর্যন্ত লেখাপড়া করি। ঘটনা চক্রে সেদিন আমি বাসায় একা ছিলাম। রাত দেড়টার মতো বাজে। ঘুম পাচ্ছিলো। ঘুম তাড়াতে ফ্রিজ থেকে কোক বের করলাম। তখন কলিংবেল বাজলো। আমি অবাক এত রাতে কে এলো? পিনহোল দিয়ে তাকিয়ে দেখি কেউ নেই। আজিব! এরপর রান্নাঘরে খুটখাট শব্দ। আমি রান্না ঘরে গেলাম, লাইট জ্বালিয়ে দেখি কেউ নেই। এমন সময় ব্যলকনির দরজা খুলে গেলো করকর শব্দে। অথচ ব্যলকনির দরজা আমি নিজের হাতে লাগিয়েছিলাম। ঘরে যেন মশা না আসে এজন্য সন্ধ্যার আগেই দরজা লাগিয়ে দেই। মনে মনে ভাবছি কি হচ্ছে এসব! ঠিক এমন সময় সুন্দর একটা গন্ধ পেলাম। হ্যা বেলীফুলের গন্ধ। আমার প্রিয় ফুল।
পরপর যে ঘটনা গুলো ঘটলো আমার ভয় পাওয়া উচিৎ।
কিন্তু আমি ভয় পাইনি। আমি ভীতু মানুষ নই। আমি বিশ্বাস করি কারণ ছাড়া কিচ্ছু ঘটে না। লজিক দিয়ে আমি সমস্যার সমাধান করি। ধার্মিকদের মতো আমি অন্ধবিশ্বাসী নই। যাইহোক, বুঝলাম আজ আর পড়া হবে না। আমি বাতি নিবিয়ে বিছানায় গেলাম। বেলীফুলের ঘ্রাণ এখনো পাচ্ছি। চোখে ঘুম নেই। গলা শুকিয়ে গেছে। বিছানা থেকে নামলাম। ফ্রিজের কাছে যাচ্ছি। ঠান্ডা পানি খাওয়া আমার দীর্ঘ দিনের অভ্যাস। হঠাৎ মনে হলো ফ্রিজ খুললেই দেখব, আমার প্রিয় মানুষের গলা কাটা মাথা। কি আজগুবি ভাবনা। ছি:। নিজের উপর নিজের খুব রাগ লাগলো। ফ্রিজ খুলে ঢক ঢক করে ঠান্ডা পানি খেলাম। ঠিক এমন সময় কাচের চুড়ির শব্দ পেলাম। মনে হলো একটা মেয়ে এই ঘর থেকে অই ঘরে গেলো। আজিব!
রাত দুইটা। এই ঘটনা গুলোর সমাধান না করে ঘুমাতে পারবো না।
বিছানায় আরাম করে শুয়ে পড়লাম। কলিংবেল বাজলো। অর্থাৎ অন্য কোনো ফ্লাটের কলিংবেল বেজেছে। নিশুতি রাত বলে কলিংবেলের শব্দ শুনেছি। রাতে সামান্য শব্দও অনেক জোরে শোনায়। রান্নাঘরে খুটখাট শব্দ হয়েছে এটা সহজ হিসাব। হয়তো ইদুর শব্দ করেছে। রাত হলেই রান্না ঘরের জানালা দিয়ে ইদুর টা আসে। ব্যলকনির দরজা কিভাবে খুলল? সম্ভবত আমিই মনের ভুলে দরজা লাগাতে ভুলে গেছি। হয়তো সিগারেট খেতে ব্যলকনিতে গিয়েছি, ভুলে দরজা লাগাইনি। বেলীফুলের গন্ধ পেয়েছি, এখনো পাচ্ছি হয়তো আসেপাশে বেলীফুলের গাছ আছে। অথবা কেউ পারফিউম লাগিয়েছে। যার গন্ধ বেলীফুলের মতো। আমি যা ধারণা করেছি৷ সেটাই নিশ্চয় সঠিক। এর বাইরে তো কিছু হতে পারে না। অলৌকিকতা বলে কিছু নেই।
কেন মনে হলো ফ্রিজ খুললেই দেখব প্রিয় মানুষের গলা কাটা মাথা।
কারণ বিকেলে আমি একটা ভূতের গল্প লিখেছিলাম। সেখানে একজন তার প্রিয় মানুষের গলা কাটা মাথা ফ্রিজে রেখেছে। কাচের চুড়ির শব্দ কেন পেলাম? হয়তো আশেপাশে কোনো মেয়ে কাচের চুড়ি পরেছে। সেই শব্দ পেয়েছি। অথবা অন্য কোনো শব্দ হয়েছে, কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে কাচের চুড়ির শব্দ। এই তো ব্যখ্যা। নিজের ব্যাখ্যাতে আমি নিজেই খুশি। এর চেয়ে সহজ ও সুন্দর ব্যখ্যা আর হতে পারে না। এখন আমি নিশ্চিন্ত। বেশ হালকা লাগছে। ইচ্ছে করছে কারো সাথে কথা বলি। মুনাকে কি একটা ফোন দিবো? অনেকদিন তার সাথে কথা হয় না। না থাক অনেক রাত হয়ে গেছে। অবশ্য আমি নিশ্চিত মুনা এখনো ঘুমায়নি। মুনা সারারাত জেগে থাকে। তার কাছে রাত মানে রহস্যময়। আনন্দময়। তারমতে সারারাত ঘুমিয়ে পার করে দেয় বোকারা।
আমি মুনার কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়লাম।
গভীর ঘুম। ঘুমের মধ্যে মুনাকে স্বপ্ন দেখলাম। সুন্দর স্বপ্ন। সারারাত জার্নি করে আমি আর মুনা বাস থেকে নামলাম। তখনও আকাশ ফরসা হয়নি। সম্পূর্ণ অচেনা অজানা জায়গা। আমরা কোথায় যাবো কিচ্ছু ঠিক নেই। প্রচন্ড ঠান্ডা। একটা চায়ের দোকান চোখে পড়লো। আমি বললাম, মুনা চলো চা খেয়ে নিই। চা শেষ হতেই আকাশ ফরসা হতে শুরু করলো। আমরা একটা রিকশায় উঠে পড়লাম। চারিদিকে গাঢ় কুয়াশা। কিচ্ছু দেখা যাচ্ছে না। কুয়াশা ভেদ করে রিকশা এগিয়ে যাচ্ছে। মুনা দুই হাত দিয়ে আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে। স্বপ্ন এইটুকুই। সকাল নয়টা। বিছানা থেকে নামার আগে ভয়াবহ একটা দৃশ্য দেখলাম। যে দৃশ্য দেখার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। যদিও ভয়াবহ কোনো দৃশ্য নয়। অতি সাধারণ একটা দৃশ্য। আমার বিছানায় বেলীফুল। বেলীফুল! বেলীফুল কোথা থেকে এলো?
বেলীফুল কি করে এলো, এই ব্যাখ্যা আমি খুঁজে বের করতে পারলাম না।
প্রথমত বাসায় চারদিন ধরে কেউ নেই। আমি ফুল কিনিনি। তাহলে ফুলটা বিছানার উপর এলো কি করে? এটা কি করে সম্ভব? তাহলে কি সত্যিই গতকাল রাতে কেউ এসেছিলো! দরজা বন্ধ। কেউ একজন আসবে কি করে? এই ফুল কোথা থেকে এলো, সেই ব্যাখ্যা আমি আজও আবিষ্কার করতে পারিনি। বেশ কয়েকজনের সাথে আলাপ করেছি, তারা কেউ যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। দুনিয়াতে কারণ ছাড়া কিচ্ছু ঘটে না। লজিকের বাইরে কিছু নাই। আমি কুসংস্কার বিশ্বাসী মানুষ নই। রসিকে আমি সাপ ভাবা মানুষ নই। আমার বিছানায় কি করে বেলীফুল এলো, সেটা নিশ্চয়ই কোনো একদিন আমি নিজেই বের করতে পারবো। আমি ধার্মিক হলে ভাবতাম কোনো জ্বীন এসেছিলো। সে ফুল রেখে গেছে।
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৯:৪৫
রাজীব নুর বলেছেন: হা হা হা---
শুভ সকাল।
ঘ্রান কি লজিক শক্তি বাড়িয়ে দেয়?
২| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:০৮
মাহদী হাসান শিহাব বলেছেন: আগের দিন বিকালে আপনার পকেটে কেউ বেলীফুল ঢুকায় দিছিলো কিনা সেটাও চিন্তা করে দেখেন। কাজটা মুনাও করতে পারে।
মুনার পছন্দের ফুল কী?
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:১৮
রাজীব নুর বলেছেন: আগের দিন কোঠাও যাইনি। বললাম না পরীক্ষা।
মুনা ঢাকায় থাকে না।
মুনার সাথে দেখা হয় নাই অনেকদিন। তাছাড়া বেলী ফুল পকেটে নিয়ে কেন ঘুরবো?
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৯:৪১
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
বেলীফুল লজিক নিয়ে এসেছিলো।