নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:০১



এখন পর্যন্ত আমার সাথে ১৯ টা ভৌতিক ঘটনা ঘটেছে।
অথচ আমি একজন মুক্তমনা। লজিকের বাইরে কিছুই বিশ্বাস করি না। আমার মধ্যে কোনো প্রকার কুসংস্কার নেই। যে সব ঘটনা আমার সাথে ঘটেছে তার ব্যাখ্যা আমি খুজে পাইনি। ব্যখ্যা পাইনি বলে, ঘটনা গুলো আমি বিশ্বাস করি নাই। আমি অপেক্ষায় আছি, কোনো একদিন ঘটে যাওয়া ঘটনার ব্যাখ্যা গুলো পাবো। সবার জীবনেই কম বেশি ভৌতিক ঘটনা ঘটে। আজ আপনাদের একটা ঘটনা বলব। এই ঘটনা আমি আমার স্ত্রীকে বলেছি, সে বিশ্বাস করেনি। সে বলেছে, আমি বানিয়ে বানিয়ে গল্প বলেছি। মীরা ম্যাডামের কাছে ইংরেজি পড়তে যেতাম, মীরা ম্যাডামও আমার ঘটনা বিশ্বাস করেন নাই। তার ধারণা কোনো সিনেমার কাহিনী তাকে বলেছি। যাইহোক, ঘটনাটা আপনারা শুনুন।

রাত ৮ টায় আমি বাসা থেকে বের হলাম।
কমলাপুর রেলস্টেশনে যাচ্ছি। সিলেট যাবো অফিসের কাজে। সাড়ে নয়টায় ট্রেন ছাড়ার কথা। আমার বাসা থেকে কমলাপুর রেলস্টেশন খুব দূরে নয়। হেটে গেলে পঁচিশ মিনিট লাগবে, কিন্তু আমি রিকশা নিয়ে নিলাম। স্টেশনে গিয়ে দেখি জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস দাড়িয়ে আছে। বাট আমার পোড়া কপাল বাংলাদেশের ট্রেন গুলো কখনই সময় মতো ছাড়ে না। জয়ন্তিকা ছাড়লো রাত ১১ টায়। যাইহোক, আমি আরাম প্রিয় মানুষ। তাই চেয়ার কোচ না নিয়ে স্লিপিং বার্থ নিয়েছি। সারারাত শুয়ে বসে আরাম করে যাবো। একগাদা যাত্রী থাকলে আমাকে বারবার বিরক্ত হতে হবে। চায়ের জন্যও আমাকে বাইরে যেতে হবে না। ট্রেনের লোক চা দিয়ে যাবে।

স্লিপিং বার্থে একটা মেয়ে বসে আছে। সুন্দর মেয়ে।
মেয়েটা আমাকে দেখে অবাক হলো না। যেনো জানতো আমি আসবো। এই কামরায় মোট চারজন থাকতে পারবে অর্থাৎ চারটা স্লিপ বার্থ। মেয়েটা ডান পাশে, আমি বাম পাশে। আমাদের মাথার উপরে বার্থ গুলো খালি। মেয়েটার সাথে কি আমি কথা বলব? বলা যায়? আমি শুয়ে পড়লাম। আমার হাতে বই। বইয়ের নাম: মাই ব্রিফ হিস্ট্রি। স্টিফেন হকিংয়ের লেখা। আত্মজীবনী মূলক বই। মেয়েটাও বই পড়ছে। বইয়ের নাম: বনলতা সেন। জীবনানন্দের কবিতার বই। মেয়েটা যা খুশি করুক। তাতে আমার কি? সমস্যা হলো মেয়েটা চা খাচ্ছে। ঘরে বানানো চা। মনে মনে ভাবছি, মেয়েটা আমাকে জিজ্ঞেস করবে, চা খাবেন? বাস্তব জীবনে এরকম হয় না, নাটক সিনেমাতে হয়।

মেয়েটা বলল, চা খাবেন? আমি মাথা নাড়লাম।
মেয়েটা চা দিলো। মিথ্যা বলব না, এত সুন্দর করে এর আগে কেউ আমাকে চা দেয়নি। আমার ইচ্ছে হলো মেয়েটা যদি আমাকে সারারাত চা দেয়, তাহলে এই রাতটা চা খেয়ে খেয়ে পার করে দিতে পারবো। ট্রেন হুহু করে চলছে। বাইরে নিশ্চয়ই ঠান্ডা বাতাস বইছে। জানালা লাগানো বলে বুঝতে পারছি না। ট্রেন থেকে কম্বল দিয়েছে। চা খেতে খেতে মেয়েটার সাথে আমার ভাব হয়ে গেলো। বেশ ভাব। আসলে আমি মানুষকে খুব দ্রুত আপন করে নিতে পারি। মেয়েটার রুপের বর্ননা না দিলে অন্যায় হবে। অবশ্য আমি কবি সাহিত্যিক নই। মেয়েটা দেখিতে একদম দেবী স্বরসতীর মতোন। স্বরসতী হয়তো সাজগোছ করে। কিন্তু মেয়েটা কিচ্ছু করেনি। সাজ বলতে শুধু চোখে মোটা করে কাজল দিয়েছে। আর কপালে একটা টিপ। তাতেই একদম মায়াবতী লাগছে।

তখন রাত আনুমানিক দুইটা হবে। বাইরে তুমুল ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে।
আমরা গল্প করতে করতে ঘুমিয়ে গেলাম। আমার ভানুগাছ স্টেশনে নেমে যাবার কথা ছিলো। জয়িতাকে একা রেখে কি করে নেমে যাই! মেয়েটা আমার পাশে আমাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে। জয়িতার শরীর থেকে সুন্দর ঘ্রাণ আসছে। মেয়েটা দারুণ ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়েছে। আমিও ক্লান্ত। গত আড়াই ঘন্টায় যা যা ঘটে গেলো, অবিশ্বাস্য। এরকম মানব জীবনে হয় না। নাটক সিনেমায় হয়। অবশ্য মাঝে মাঝে নাটক সিনেমা বাস্তবকে হার মানায়। আমি জানি না ট্রেন এখন কোন স্টেশন পার করলো। এই মুহুর্তে আমার কাছে শুধু জয়িতা সত্য। যে অপ্রত্যাশিত আনন্দ আমাকে দিলো জয়িতা, তার তুলনা হয় না। আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি, জয়িতাকে হাত ছাড়া করবো না। আমি জয়িতাকে বিয়ে করবো। মেয়েটা আমাকে বিশ্বাস করেছে। নিজেকে উজার করে দিয়েছে।

জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস তার গন্তব্যে পৌছে গেছে।
ঘুম থেকে উঠে দেখি জয়িতা নেই। না ওয়াশ রুমেও যায়নি। শুধু পড়ে আছে জীবনানন্দ দাসের কবিতার বইখানা। আমি স্টেশনে নেমে জয়িতাকে খুজলাম। না তাকে পাওয়া গেলো না। গতকাল রাতে যা হয়েছে তা কি ভুল? আমার মনের ভুল? তাহলে জীবনানন্দের কবিতার বই কোথা থেকে এলো? সবচেয়ে বড় কথা আমার গলায় চুমুর দাগ রয়ে গেছে। জয়িতা আমাকে চুমু দিয়েছে। আমি ধরেই নিলাম, ট্রেনের কামড়ায় জয়িতা নামে কেউ ছিলো না। কবিতার বই আর গলার দাগের রহস্য আমি আজও বের করতে পারিনি। হয়তো কোনো একদিন পারবো। যাইহোক, এই ঘটনার চার বছর পার হয়ে গেছে। জয়িতার সৃতি ঝাপসা হয়ে এসেছে। হঠাৎ একদিন লাল মাটিয়া কলেজের সামনে জয়িতাকে দেখতে পাই। হ্যা জয়িতা। দৌড়ে গেলাম। জয়িতা আমাকে চিনতে পারলো না। সব ট্রেনের ঘটনা বললাম, মেয়েটা বলল আমি একা একা কেন যাবো ট্রেনে করে? আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:০৬

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:




ভানুগাছ ডেঞ্জারাস স্টেশন।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:১৬

রাজীব নুর বলেছেন: কেন? ভূত প্রেত আছে নাকি?

২| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:১২

জিনাত নাজিয়া বলেছেন: Keep writing bro,thanks.

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:১৬

রাজীব নুর বলেছেন: শুকরিয়া।

৩| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:১৪

কিরকুট বলেছেন: এই রকম ঘটনা আমার সাথেও ঘটেছে । আমি লঞ্চে করে যাচ্ছিলাম এক লোক আমার সাথে পরিচয় হলো সারা রাত গল্প করলাম উনি আমাকে খাওয়ালেন একি স্টেশানে নামলান । সকালে যখন ওনার খোঁজ নিলাম শুনলাম যে উনি নাকি অনেক আগেই ফাঁসির আসামী হয়ে ফাঁসিতে ঝুলে মারা গেছেন । চেহারার বিবরন দিলা মিলে গেছে ।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: হায় কপাল!!

আসলে মাঝে মাঝে এরকম ঘটনা ঘটে বলেই জীবন এত সুন্দর। এত রহস্যময়।

৪| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:২২

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: সব ভৌতিক ঘটনা আপনার সাথে ঘটে কেন? ফেলুদা কে খবর দিতে হবে।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: ফেলুদাকে দিয়ে হবে না। মিসির আলিকে লাগবে।

৫| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ২:৩০

অনন্য দায়িত্বশীল আমি বলেছেন: আপনি বরবরই ফকা গল্পে এক্সপার্ট; চাপা একটু কম মারুন।

৬| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ২:৩১

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: এ ঘটনাটা যখন ঘটেছে সে রাতে একটু বেশি হয়ে গিয়েছিল হয়তো...

৭| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ২:৪৩

রানার ব্লগ বলেছেন: ভুত জাতীয় ঘটনা আমার বেশ লাগে । আমি নিজেও চাই এই রকম ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত থাকতে ।

৮| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৪:১৬

নজসু বলেছেন:



প্রিয় ভ্রাতা, আপনি ফেরেশতা বিশ্বাস করেন না,
কিন্তু ভূত প্রেত ঠিকই বিশ্বাস করেন।
আশ্চর্য!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.