নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঘুম এবং সুরভি !

০৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:৪২



রাত ১০ টার মধ্যে ঘুমিয়ে যাওয়া খুব ভালো অভ্যাস।
মানুষ ঘুমের জন্য ছটফট করে। ডাক্তার দেখায়, ঘুমের ওষুধ খায়। তবুও ঘুম আসে না। আমার নিজেরই একসময় ঘুমের সমস্যা ছিলো। ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ঘুমের প্রয়োজন আছে। যার সুন্দর ঘুম হয় না, সে বুঝে ঘুমের গুরুত্ব। যাদের ঘুমের নেই, তারা সুখী মানুষ। তবে কথা সত্য জ্ঞানীগুনী মানুষের ঘুম কম হয়। বলতে গেলে তারা সারারাত জেগেই থাকে। এই দুনিয়াতে মহৎ কাজ ও মন্দ কাজ রাতে বেশি হয়। আমার ঘুম পেলেই আমি ঘুমিয়ে পড়ি। যদি আমি বাসে থাকি, ঘুম পেলে ঘুমিয়ে যাই। আমার নামার কথা থাকে মিরপুর। কিন্তু বাস চলে যায় গাজীপুর। ঘুম থেকে উঠে দেখি, গাজীপুর এসে গেছি। একটুও রাগ হয় না। বরং মনে মনে খুশি হই। যাক, একটা ঘুম তো দিলাম! কিন্তু বাসের কন্টাকটরের সাথে মেজাজ দেখাই। অই মিয়া আমাকে ডাক দিবা না? মিরপুর নামবো। তুমি গাজীপুর চলে আসছো! আজিব! কন্টাকটর বলে, আমারে মেজাজ দেখাইয়া লাভ নাই। ভাড়া দেন।

গ্রামের মানুষেরা তাড়াতাড়ি ঘুমায়।
শহরের লোকজন অনেক দেরীতে ঘুমায়। আমার কন্যা ফারাজা রাত একটার আগে বিছানায় যায় না। দুটার আগে ঘুমায় না। তার জন্য আমাকেও জেগে থাকতে হয়। আমার চার বছরের কন্যা বলে- বাবা, পা টিপে দাও। তার আগে হাতের আঙ্গুল ফুটিয়ে দাও। আমি হাতের আঙ্গুল ফুটিয়ে দেই। পা টিপে দেই। কন্যা ঘুমায় না। বলে, বাবা এবার মাথা টিপে দাও। চুল টেনে দাও। আমি তাই করি। কন্যা বলে বাবা আরাম লাগে। আবার বলে, বাবা নাকটা একটু টেনে দিও তো। কন্যা কিছুতেই ঘুমায় না। এদিকে কন্যার মা ঘুমে। গভীর ঘুমে। কন্যা ঘুমায় না। বলে, বাবা একটা গল্প বলো। গল্প শুনতে শুনতে ঘুমাই। আমি বললাম, কি গল্প শুনবে? কন্যা বলে- বাবা তোমার ছোটবেলার গল্প। আমি গল্প শুরু করি। একদিন সকালে স্কুলে যাচ্ছিলাম। হাতে ছিলো একটা বিস্কুটের প্যাকেট। কন্যা বলে, বাবা তুমি একা স্কুলে যেতে? আমি তো একা যাই না। মা আমাকে নিয়ে যায়।

আমার নিজের কথা একটু বলি। অনেক বছর আগের কথা।
আমি রাত জাগি। রাত তিনটা চারটার আগে বিছানায় যাই না। আমার ঘুম খুব পাতলা। রাতে কি করি? বই পড়ি, লিখি, গান শুনি, মুভি দেখি, ব্যালকনিতে একা চুপচাপ বসে থাকি। নানান বিষয় নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা চিন্তা ভাবনা করি। বছরের পর বছর এভাবেই কাটিয়েছি। রাত জাগার কিছু ভালো দিকও আছে। পৃথিবীর সেরা মুভি গুলি দেখে ফেলেছি এবং সেরা বই গুলো পড়ে ফেলেছি। হ্যা আমি জানি রাত জাগা ঠিক না। কিন্তু রাত বড় রহস্যময়। কেউ ইচ্ছে করে রাত জেগে থাকে না। ঘুম আসে না বলেই তো রাত জাগে। ঘুম এমনই জিনিস, ঘুম পেলে কেউ জেগে থাকতে পারে না। একবার আমি চিটাগাং যাচ্ছিলাম। সিট পাইনি। টেনের ইঞ্জিনের রুমে ছিলাম। সেখানে ইঞ্জিনের বিকট শব্দ এবং গরম। সেই শব্দে এবং গরমে ঘুম দিলাম। ঘুম থেকে উঠে দেখি ট্রেন চিটাগাং চলে আসছে।

আমি বিয়ে করার আগে ভেবে রেখেছিলাম-
বিয়ে করলে আর একা একা রাত জেগে থাকতে হবে না। মধ্যে রাতে চা খেতে ইচ্ছা করলে, চা বানিয়ে দিবে। একা একা মুভি দেখতে হবে না। একা একা চুপচাপ ব্যলকনিতে বসে থাকতে হবে না। স্বামী স্ত্রী দুজন মিলে গল্প করবো। খুব গল্প করবো। গল্পে গল্পে রাত পার হয়ে যাবে। বিয়ে অনেক সমস্যার সমাধান করে দেয়। বউ থাকলে রাত জাগা সহজ হয়ে যায়। রাতে ক্ষুধা পেলে বউ ঝটপট নুডলস রান্না করে দিবে। হাত পা টিপে দিবে। চুল টেনে দিবে। আরামে ঘুম এসে যাবে। এজন্যই নবীজি বলেছেন, আয় উন্নতি থাক বা না থাক বিয়ে করে ফেলো। বিয়ের পর আল্লাহ তোমার আয় ইনকাম বাড়িয়ে দেবেন। এই চিন্তা থেকে বিয়ে করে লাখ লাখ ছেলের গর্তে তলিয়ে যায়। বিয়ের পর হিমিশিম খায়। নাকানি-চুবানি খায়। ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয় না। কোটি মুসলিমের প্রিয় আয়াত হলো- কোরআনে বলা হয়েছে, খুব শ্রীঘই তোমাকে এত বেশি দেওয়া হবে যে, তুমি খুশি হয়ে যাবে। ধার্মিকেরা বিভোর হয়ে যায়। ফলাফল শূন্য।

যাইহোক, আমি বিয়ে করলাম। আমার ভাগ্য খারাপ।
আমার বউ মারাত্মক ঘুমের পাগল। বালিশে মাথা রাখা মাত্র সে ঘুমিয়ে পড়ে। গভীর ঘুম। যা যা ভেবে রেখেছিলাম তা হয়নি। আজও আমাকে একা একা মুভি দেখতে হয়। একা একা রাত জাগতে হয়। একা চা বানিয়ে খেতে হয়। সুরভিকে আমি বলেছি, তুমি দুপুরে খেয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘুমাও। তাহলে রাত জাগতে পারবে। রাতে দুজন মিলে সুন্দর একটা মুভি দেখব। মুভির নাম- ফরেস্ট গাম্প। কিন্তু মুভি দেখতে হয় আমার একা। মুভির দশ মিনিট চলতেই সুরভি গভীর ঘুমে তলিয়ে যায়। কত মানুষের ঘুমের সমস্যা হয়, সুরভির আজ পর্যন্ত ঘুমের সমস্যা হলো না। একবার সুরভি আর আমি বান্দরবান গিয়েছিলাম। রাত ১১ টায় বাস ছেড়েছে। ঢাকা পার হওয়ার আগেই সুরভি গভীর ঘুমে। আরেকবার কক্সবাজার গেলাম। বিকেলে ইনানী যাবো। সুরভি দুপুরে ভাত খেয়ে ঘুম দিলো। ঘুম থেকে উঠলো সন্ধ্যায়। আমাদের আর ইনানী যাওয়া হলো না। সুরভির ঘুমের জন্য বেশির ভাগ রাতেই আমার ডিনার করা হয় না। সুরভি ঘুমিয়ে যায়। আমি অপেক্ষায় থেকে থেকে ঘুমিয়ে পড়ি। সুরভির হয়তো রাত তিনটায় ঘুম ভেঙ্গেছে। তখন আমাকে ডাক দিবে। উঠো। উঠো। রাতে খাবে না? না খেয়ে ঘুমাবে? তাহলে আমি রান্না করছি কেন?

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ২:২৭

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: আপনার ধৈর্য আছে।

০৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ২:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: তা আছে।
ভালোবাসা আছে বলেই, ধৈর্য আছে।

২| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ২:৪৮

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:

সুরভী নিশ্চই আপনার পোস্ট পড়ে?

০৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ২:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: না। গত কয়েক বছর ধরে পড়ে না।
এজন্য আমি নিশ্চিন্ত।

৩| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৪:৫০

শায়মা বলেছেন: ভাবিজী ঘুমিয়ে গেলে তুমি নিজে গরম করে খেয়ে ফেলবা। এত কষ্ট করে রাঁধে না খেয়ে ঘুমানো যাবে না ....

০৮ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১০:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: ওভেনের গরম আমার ভালো লাগে না। মনে হয়- নকল গরম।

৪| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:১১

কামাল১৮ বলেছেন: আমার ঘড়ি বলে দেয় আমি কতক্ষন ঘুমাই।ছয় ঘন্টা হাঁটি ৩/৪ কিলোমিটার।
বিয়ে করা মানে নিজের স্বাধীনতা হারানো।বিয়ের আগে সারা বাংলাদেশ ঘুরে ঘুরে পার্টির কাজে ঘুরে বেরিয়েছি।আমি একটু বেশি বয়সে বিয়ে করেছি।তার পর থেকে ঘরে বন্দী।তার পর কোবিরে ছিলাম দুই আড়াই বছর বন্ধী।চৌকাঠ মাড়াই নি।
বাচ্চাদেরতো এতো রাত জেগে থাকার কথা না।
বই পড়া কি বাদ দিয়েছেন।

০৮ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১০:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: বই পড়ার সময় কই?
বই হাতে নিলেই মেয়ে এসে বলবে, বাবা গল্প বলো। সুরভি বলবে, বাজারে যাও। ফ্যান মুছে দাও।

৫| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:১৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: আঙুল ফোটানোটা কিন্তু ভালো অভ্যাস নয়।
ঘুম পাবার সাথে সাথেই সম্ভব হলে কিছুটা ঘুমিয়ে নেয়া ভালো। কেননা 'ঘুম পাওয়া' টা মস্তিষ্কের একটি সিগন্যাল। এ সতর্কবার্তাটি এক নাগাড়ে বেশিদিন উপেক্ষা করলে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।

৬| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১০:১৮

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:


কিন্তু শব্দটার সঠিক ব্যবহার বাংলাদেশের বেশীর ভাগ মানুষই করেন না।
উপরের মন্তব্যে জনাব খায়রুল আহসানও করছেন না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.