![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
প্রিয় কন্যা আমার-
এই মুহুর্তে আমি আয়াত বাসে। বাস থামবে একদম বাসার কাছে। বাসায় গিয়ে দেখিব তুমি নেই। তোমার মা নেই। তোমার স্কুল বন্ধ। তাই তোমার মা তোমাকে নিয়ে গেছে তোমার নানা বাড়ি। তোমার নানা বাড়ি কাছেই। দূরত্ব খুব বেশি নয়। তোমার নানা বাড়ি যেতে আমার লজ্জা করে। অথচ দেখো তোমার মায়ের সাথে আমার বিয়ে হয়েছে অনেক বছর হয়ে গেছে। তোমার নানা বাড়িতে মানুষ মাত্র দুইজন। তোমার নানা আর ছোট মামা। বাকি সবাই বিদেশ। হয়তো একদিন তোমার ছোট মামাও বিদেশ চলে যাবে। ফাজ্জা, তুমি তোমার ছোট মামাকে মামু বলে ডাকো। কিন্তু বড় মামাকে মামু ডাকো না। মামা ডাকো।
ফারাজা তাবাসসুম খান-
আমি দুই একদিনের মধ্যে তোমার নানা বাড়ি যাবো। তোমাকে নিয়ে বাইরে কোথাও বেড়াতে যাবো। চিড়িয়াখানা যেতে পারি, তূরাগ নদীতে নৌকায় উঠতে পারি। অথবা যেতে পারি আহসান মঞ্জিল। সারাদিন তুমি আমি খুব ঘুরে বেড়াবো। ক্ষুধা পেলে রেস্টুরেন্ট থেকে কিছু খেয়ে নিবো। রেস্টুরেন্টে খেতে তুমি পছন্দ করো। তোমার মা-ও রেস্টুরেন্টে খেতে পছন্দ করে। একসময় তোমার মা আর আমি প্রতি সপ্তাহে একদিন বড় রেস্টুরেন্টে ডিনার করতাম। কারন ছাড়াই রিকশা করে ঘুরে বেড়াতাম। তখন অবশ্য তুমি ছিলে না। তোমার জন্মের পর আমাদের জীবন যাপন অনেকখানি বদলে গেছে।
প্রিয় কন্যা আমার-
আজ মহরম। মহরম কি জানো? বুঝো? সব কিছু জানার জন্য, বুঝার জন্য তোমাকে পড়তে হবে। পড়লেই সব জানতে পারবে, বুঝতে পারিবে। পড়া এবং জানা, সুন্দর ভাবে জীবনযাপনে জন্য খুব দরকার। মানুষ যখন কথা বলে, কিছু বাড়িয়ে বলে, কিছু কমিয়ে বলে। কারণ মানুষ নিরপেক্ষ নয়। এজন্য মহান সত্য জানতে ও বুঝতে পড়তে হয়। তুমি পড়বে, প্রচুর পড়বে। পড়ার চেয়ে, জানার চেয়ে সুন্দর আর কি আছে! এই যে আমি সময় সুযোগ হলেই পড়ি। তুমিও পড়ো। পড়াশোনা করেই তোমাকে জীবনে দক্ষ ও যোগ্য হতে হবে। এছাড়া অন্য কোনো অপশন নেই। সফলতা আপনাআপনি আসে না। অর্জন করে নিতে হয়। কর্মে, কথায় এবং জীবন যাপনে সৎ থাকাটা ভীষণ জরুরী। সৎ মানুষের সাহস এবং আত্মবিশ্বাস বেশি থাকে।
ফারাজা, প্রিয় কন্যা আমার-
আমি মাঝে মাঝে ভাবি তুমি বড় হয়ে কি হবে? ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার? চাকরিজীবি? নাকি বিয়ে করে শুধু ঘরসংসার করবে? তোমার মা অনেক লেখাপড়া করেছে। কিন্তু তার লেখাপড়া দেশ বা সমাজের কোনো কাজে এলো না। সে চাকরি করলো না, বিজনেসও করলো না। ঘরসংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। ফাজ্জা, তুমি তোমার মায়ের মতো করো না। অবশ্যই তোমাকে চাকরি বা বিজনেস করতে হবে। টাকা ইনকাম করতে হবে। প্রচুর টাকা ইনকাম করবে, দুই হাতে খরচ করবে। কখনো কৃপনতা করবে না। নো নেভার।
ফারাজা কন্যা আমার-
ফারাজা তুমি বড় হয়ে যা হবার হও। আমি জোর করে আমার ইচ্ছা তোমার উপর চাপিয়ে দিবো না। তোমার ব্যাপক স্বাধীনতা আছে। তুমি যত বড় হবে, তত উপলব্ধি করবে, তোমার বাবা অন্যসব বাবার মতো নয়। সেদিন বড় অদ্ভুত একটা স্বপ্ন দেখেছি, তুমি বড় হয়ে গেছো। আমি বুড়ো হয়ে গেছি। আমার শরীর খারাপ করেছে। তুমি আমার প্রেসার মেপে দিলে, ডায়বেটিস পরীক্ষা করলে। এবং আমাকে ওষুধ দিলে। স্বপ্নে তুমি ডাক্তার! স্বপ্নটা দেখে বড় ভালো লেগেছে। আজ লেখা এখানেই শেষ করছি।
প্রিয় কন্যা আমার-
ছুটির দিন বলে আজ রাস্তায় যানজট নেই। বাস অলরেডি ফার্মগেট চলে এসেছে। আমি জানালার পাশে বসেছি। জানালা খোলা। হুহু করে বাতাস আসছে। আর আমি তোমাকে নিয়ে লিখছি। তোমার জন্য লিখছি। বড় ভালো লাগে। পড়তে এবং লিখতে আমি কখনো ক্লান্তি বোধ করি না। Piku নামের একটা ইন্ডিয়ান মুভি আছে। মুভিটা আমি প্রায়ই দেখি। সুন্দর মুভি। কাহিনি সহজ সরল। জটিলতা কুটিলতা মুক্ত। বাবা এবং মেয়ের গল্প। সেদিন এই মুভিটা দেখছিলাম, তুমি এসে বললে, বাবা এই মুভিটা তো তুমি আগে দেখেছো!
২| ০৬ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ১১:১১
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনার পরিবার সুখে থাকুক ।
৩| ০৭ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ১২:৫৮
কামাল১৮ বলেছেন: ফারাজার মায়ের লেখাপড়া তার নিজের কাজেও লাগে না।সাবলম্বী হলে তার জীবন অন্য রকম হতো।তখন সে জীবনের মানে বুঝতো।দেশ সমাজ নিয়ে ভাবতে শিখতো।এখন শুধু সংসার নিয়েই ভাবে।
মেয়েদের সাবলম্বী হতে সাহায্য করবেন।
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ১০:১৩
কলাবাগান১ বলেছেন: ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরে আপত্তি কেন???