নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার দুনিয়ায় আপনি আমন্ত্রিত

রাজন আল মাসুদ

খুঁজে ফিরি স্বপ্নগুলো............

রাজন আল মাসুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ১২)

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৪

মন্টানায় আমাদের বেশিরভাগ সময় কাটত ঘরে বসে আড্ডা দিয়ে, ক্যাম্পাসে ঘুরে আর রান্না করে। শীতের প্রকোপ একটু কমলে হাটতে বের হতাম সবাই মিলে, খেয়ে আসতাম বাইরে থেকে। হেটে যাওয়ার মত আশেপাশে জায়গা একটাই ছিল "গ্যালাটিন ভ্যালী মল"। তবে মাঝে মধ্যে আহসান আন্কেল, রুমা আন্টি, তুর্য, দীপ্র আর আমরা সবাই মিলে সিনেমা দেখতে যেতাম আমাদের বাংলাদেশ স্টুডেন্ট এসোসিয়েশনের খরচে। আমাদের স্টুডেন্ট এসোসিয়েশনের একটা ফান্ড আছে, যার মূল ইনকাম হলো এম.এস.ইউ তে হওয়া "ইন্টারন্যাশনাল ফুড বাজার" এ পার্টিসিপেট করে যে লাভ হয় তা। ফুড বাজারের বিষয়ে অন্য একটা পর্বে বলব। ঐটা নিয়ে আরেকটা ছবি ব্লগ করার ইচ্ছা আছে। ছবি ছাড়া ঐটা বলে বুঝানো সম্ভব না। ফুড বাজারের লাভের একটা বড় অংশ বাংলাদেশে পাঠানো হয়, কোনো একজন গরিব মানুষকে রিকশা, ভ্যান বা অন্য কিছু কিনে দিয়ে সাবলম্বী করার জন্য। এই আইডিয়াটা সম্ভবত আহসান আঙ্কেলের। বাকি টাকা দিয়ে সারা বছর সিনেমা দেখা, কোথাও সবাই মিলে খেতে গেলে খরচ করা হয়। এম.আই-৪ আর দ্যা এভেন্জার্স বোজম্যানে দেখা। দ্যা এভেন্জার্স থ্রি-ডি তে দেখেছিলাম, রিলিজ পাওয়ার সাথে সাথেই :D। এছাড়া নর্থ হেজেসের পিছনের বার্নে প্রতি উইকেন্ডে কোনো না কোনো পার্টি থাকতই। মাঝে মধ্যে ওখানেও যাওয়া হত। তবে একটা লাইফ লং এক্সপেরিয়েন্স বোজম্যানে হয়েছিল। সেটা হলো "মিউজিয়াম অফ দ্যা রকিস" দেখতে যাওয়া। এম.এস.ইউ এর থেকে মিনিট পাচেক এর রাস্তা। স্প্রিং এর ছুটিতে ঘরে বসে মাছি মারতে মারতে আমরা যখন পুরোপরি বিরক্ত, তখনই খিচরে যাওয়া মেজাজ নিয়ে আমি আর রাশেদ ভাই প্ল্যান করলাম যে দুরে যাওয়া যখন সম্ভব না তখন হাত-পা এর খিল ছাড়ানোর জন্য কাছাকাছি যে মিউজিয়ামটা আছে ঐটাই দেখে আসি। এইটা যে অন্যরকম একটা অভিজ্ঞতা হতে যাচ্ছে তখন পর্যন্ত এই ব্যাপারে বিন্দুমাত্র ধারণা ছিলনা। তখন একদম বেসিক একটা মোবাইল ইউজ করি। আমাদের কারোরই ভালো ক্যামেরা ছিলনা। যার আফসোস এখন পর্যন্ত আছে। মিউজিয়ামের তিনটা ভাগ। বড় অংশটা ডাইনোসরদের ফসিল !!!!! একটা আর্ট গ্যালারী, আরেকটা মন্টানার ঐতিয্যবাহী সব জিনিস নিয়ে। ডাইনোসরদের ফসিল দেখার মত জিনিস। কি বিশাল.....স্রষ্টার কতই না অপূর্ব আর বিচিত্র সৃষ্টি। দেখলেই মনে হয় স্রষ্টা বলছেন "দেখো হে মানব সম্প্রদায়, আমার তুলনায় তোমরা কতই না ক্ষুদ্র"। জুরাসিক পার্ক দেখার পর থেকেই ডাইনোসরদের উপর যে কল্পনা মিশ্রিত কৌতুহল ছিল, রকি মিউজিয়ামে যেয়ে কিছুটা হলেও তা মিটেছে। ডাইনোসরের ডিম থেকে শুরু করে পাথরের মধ্যের ফসিল, বাবু ডাইনোসর, ডাইনোসরদের অনেক রকম প্রজাতির ফসিল ছিল। একদমই অল্প রেজুলুশনের মোবাইল ক্যামেরায় যে কয়টা ছবি তুলেছিলাম তা আগামী পর্বে শেয়ার করব।

স্কিইং এর জন্য মন্টানা বিখ্যাত। প্রচুর তুষারপাত হয় এখানে। এখানকার মানুষজনও তুষারপাত খুব পছন্দ করে। তুষারপাত হয়নি দেখে মন খারাপ ক্লাসের কয়েকজনের, এমন দৃশ্য বহুবার দেখেছি। এমন এলাকার মানুষ স্কি করতে পছন্দ করবে এ আর আশ্চর্যের কি.....আমেরিকান বন্ধুরা তুষারপাত হলে একটু সুযোগ পেলেই স্কিইং এ চলে যেত। অস্ট্রেলিয়ানরা দেখতাম সবাই দল বেধে যেত। আমার খুব ইচ্ছা ছিল স্কি করা শিখব। বরফের স্তুপের উপর ছুটব তীরবেগে, যেমনটা পড়ি মাসুদ রানার বইতে। আমি ভুলে গিয়েছিলাম অভাগা যেইদিকে যায়, সাগর ঐদিকেই শুকিয়ে যায়। স্কি করতে যেয়ে ব্যাথা পাওয়া, হাত-পা ভাঙ্গা নতুন কিছু না। নতুনদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা আরো বেশি হয় বলে শুনলাম। দুইটা সমস্যা সামনে আসলো তখন। আমার হেলথ ইন্সুরেন্স ছিল না, বাই চান্স কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে বিরাট অংকের টাকা গচ্চা যাবে। এছাড়া আমার বাংলাদেশের ইন্সুরেন্স এখানেও কাভার করবে বলে যে ভুজুং ভাজুং ভার্সিটিকে দিয়েছিলাম তাতে ধরা খাওয়ার ও একটা সম্ভবনা থাকে। নানান চিন্তা করে চার মাস মন্টানায় থাকা সত্তেও একবার স্কিইং এ যাইনি, যেখানে অন্যান্য স্টেট থেকে এখানে মানুষ স্কি করতে আসে। এই আফসোস কিভাবে দূর করি? আমার মাঝে মধ্যে খুব জানতে ইচ্ছা করে "দারিদ্র্য তুমি মোরে করেছ মহান, তুমি মোরে দানিয়াছ খ্রীষ্টের সম্মান" এই কথাগুলো নজরুল কি দেখে, কি ভেবে লিখেছিলেন............

(চলবে)

অন্যান্য পর্ব:
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ১)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ২)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ৩)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ৪)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ৫)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ৬)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ৭)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ৮)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ৯)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ১০)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ১১)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ১৩)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ১৪)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ১৫)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ১৬)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ১৭)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ১৮)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ১৯)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ২০)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ২১)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ২২)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ২৩)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ২৪)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ২৫)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ২৬)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ২৭)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ২৮)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (পর্ব ২৯)
আমেরিকায় এক বছর এবং মধ্যবিত্ত ছাত্রদের বাস্তবতা (শেষ পর্ব)

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৩

একাকী বালক বলেছেন: আমার মাঝে মধ্যে খুব জানতে ইচ্ছা করে "দারিদ্র্য তুমি মোরে করেছ মহান, তুমি মোরে দানিয়াছ খ্রীষ্টের সম্মান" এই কথাগুলো নজরুল কি দেখে, কি ভেবে লিখেছিলেন............

>>> হা হা হা।

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৫:৩০

রাজন আল মাসুদ বলেছেন: হাসেন কেন ভাই? আপনার কি অনেক টাকা? তাইলে কিছু চালান করেন আমারে ;)

২| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:০০

ঝটিকা বলেছেন: আপনার প্রতিটা পর্বই ভিন্ন স্বাদের। বেশ মজা পাচ্ছি। চালিয়ে যান...

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৫:৩০

রাজন আল মাসুদ বলেছেন: :) :) :) :) :)

৩| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৫১

কালোপরী বলেছেন: +++++++++++

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৫:৩২

রাজন আল মাসুদ বলেছেন: ধইন্যা :) B-) :#) 8-| :D

৪| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৫৪

বইয়ের পোকা বলেছেন: আমারও স্কিয়িং করার বড়ই শখ। কিন্তু আমাদের দেশে বরফইতো নাই, আবার স্কিয়িং । বাইরে গেলে শিখবো আশা করি।

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৫:৩২

রাজন আল মাসুদ বলেছেন: অবশ্যই............

৫| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:১০

শীলা শিপা বলেছেন: শেষটা মজার :D :D :D

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৩

রাজন আল মাসুদ বলেছেন: এরেই কয় কারো পৌষমাস, কারো সর্বনাশ :(

৬| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:১৫

অর্ক হাসনাত কুয়েটিয়ান বলেছেন: ফহফগড

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৩

রাজন আল মাসুদ বলেছেন: ?????

৭| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৪৫

গ্রাম্য২০১৭ বলেছেন: sobgulo lekha akshate porlam.
kosto to kortei hobe, subo kamono roilo bhi.

Dua korben amio jeno USA jeti pari.

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:২৩

রাজন আল মাসুদ বলেছেন: ইনশাল্লাহ।

৮| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৪৫

মাহবু১৫৪ বলেছেন: ++++

এত ভয় পেলে চলবে না। ইন্সুরেন্স ছাড়া স্কিং করতে গেলে এমন ক্ষতি হত না। প্রথমেই আপনার হাত পা ভাঙ্গার সম্ভাবনা কম। যখন অভিজ্ঞ হয়ে যাবেন তখন ভাঙ্গার সম্ভাবনা আছে।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:২৩

রাজন আল মাসুদ বলেছেন: ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলেই ভয় পায় :( :( :(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.