![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এবার অভিমানটা একটু বেশীই দীর্ঘস্থায়ী হয়ে গিয়েছে। প্রতিবারই দুজনের মাঝে ভূল বুঝাবুঝি হলে রনো-ই বারবার এটাসেটা বলে অভিমান ভাঙায়, কিন্তু এবার রনোর রাগটা একটু বেশীই পড়ে গিয়েছিল, তাই গত সাড়ে চারমাস রাইসার সাথে টোটালি যোগাযোগ করেনি ও। রাইসা অবশ্য রাগারাগির পনের দিনের মাথা থেকেই ফোনের পর ফোন আর, মেসেজ দিয়ে যাচ্ছে রনোকে। কিন্তু রনো নির্বিকার, ও কোনো মেসেজের রিপ্লাই ও দেয়না, কথাও বলেনা। রাইসা প্রতিদিন অন্তত শ-দুয়েক কল আর ডজনখানেক করে মেসেজ পাঠায় তবু রনোর কোন পাত্তা নাই। দুজন দুজন থেকে অনেক দূরে থাকে তাই ফোন আর মেসেজ ছাড়া কোন উপায়ও নেই রাইসার।
অবশেষে রনো ভার্সিটির সামার ভ্যাকেশনে বাড়ী এলো। এই সুযোগটার অপেক্ষাতেই ছিল রাইসা, এবার ওকে দেখে নিবে। বাসায় পৌছানোর পর রনো রাইসার একটা মেসেজ পেল। মেসেজটা এমন ছিল যে, রনো ওকে দেখা করার ব্যাপারে না বলতে পারলো না।
রাইসা আগে থেকেই গিয়ে ছিল ওর সাইমা আপুর বাসায়। রনোকে ওখানেই আসতে বলেছে। সাইমা ওদের রিলেশনের ব্যাপারটা জানে। এর আগে রনো কখনো এমনভাবে রাইসার সাথে দেখা করেনি। রনো কিছুটা দ্বিধাবোধ করছে ঐ বাসায়। সাইমা ওদের সুযোগ দিয়ে চলে গেল। সাইমা যাওয়ার সাথে সাথে রনো উঠে পড়ল আর বলল:
+ আমি যাই...
- মানে কি, যাই মানে!!! চুপ করে বসো এখানে।
+ উনি চলে গেলেন কেন? বাসায় তো কেউ থাকলো না, শুধু তুমি আর.....
- তো কী হয়ছে, তুমি কী ভয় পাচ্ছ? আমি কি তোমাকে রেপ করবো!!! ভয় পেলে তো আমার পাওয়ার কথা, তুমি কেন পাচ্ছ? আর তাছাড়া শুভ (সাইমার তিন বছরের ছেলে) তো আছে।
+ দেখো ফালতু কথা বলনা। তুমি আমাকে যে জন্য ডাকছো, সেটা বলো।
- আচ্ছা....তোমার মা কি জন্মের পরে মুখে মধু দেয় নাই, কথায় একটু রসকস রাখা যায় না?
+ আরে ধ্যাত--- আমি চলে গেলাম। (উঠে পড়ে রনো)
পেছন থেকে হাত ধরে ফেলে রাইসা, রনোকে সামনে এনে বলে- আমার চোখের দিকে তাকাও।
+ পারবো না।
- কেন পারবা না। ভালবাসো না আমায়?
+ না-
- কী বললি ভালোবাসিস না আমাকে?
+ বললাম তো না-
- কেন বাসিস না কুত্তা? বল তুই আমাকে ভালবাসিস।
+ না না না।
ধাক্কা দিয়ে রনোকে বিছানায় ফেলে দেয় রাইসা। তারপর রনোর পায়ের উপর মাথা গুজে দিয়ে কান্না করতে করতে বলতে থাকে। রনো, সোনা আমাকে আর কষ্ট দিয়োনা, অনেক হয়ছে, আমি আর পারছিনা। বলো আমাকে ভালবাসো। রনো উঠে দাড়ায়।
+ দেখ, পাগলামী করোনা, তোমার কি প্রবলেম বলার জন্য ডাকছো সেটা বলো, আমি পারলে সলভ্ করে চলে যাব।
- বাবু দেখতো আম্মু কোথায় গেল? (শুভকে রুম থেকে সরিয়ে দিল)
এবার রাইসা রনোর বুকে মাথা রেখে ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। রনো ওকে হাত দিয়ে সরিয়ে দিল। রাইসা আবার ওকে জড়িয়ে ধরল, ওর শার্টের উপরের বোতামটা খুলে, বুকে ও ঠোঁটের চিহ্ন এঁকে দিল। পাগলীর মত প্রলাপ করতে থাকলো, সোনা আমাকে ভালবাসনা?? আমি জানি তুমি আমাকে অনেক ভালবাস। বলনা, আমায় তুমি ভালবাসনা???
এমন নয়, এই কথাটি রাইসা আগে কখনো রনোর মুখে শোনেনি, অনেক শুনেছে, কিন্তু আজকের চাওয়াটা অন্যরকম। সাড়ে চারমাস রনো রাইসাকে “আই লাভ ইউ” বলেনি, যেটা কোন একসময় দিনে হাজার বার শোনাতো রনো।
রনো আর বাঁধা দিচ্ছেনা ওকে। সমস্ত পাগলামী মেনে নিচ্ছে নিরবে। রাইসা মাথা তুললো রনোর বুক থেকে, তাকালো রনোর দিকে। রনো কিছু বুঝার আগেই, রাইসা ওর ঠোঁটে ছুঁইয়ে দিল ঠোঁট, লজ্জামাখা চোখে রনোর চোখের দিকে তাকিয়ে বললো, আই লাভ ইউ........
এতক্ষণে রনোর হাতদুটি পাশ থেকে রাইসার পিঠে গেল। নাহ... রনো কে আর মুখে বলতে হয়নি, “আই লাভ ইউ ঠু”, কিন্তু রাইসার কান্নার গতি যেন সহসাই তিনগুন হয়ে গেল। এই আবেগের লজ্জামাখা অশ্রুময় চোখ রাইসা কোথায় লুকোবে??? তাই খুলে গেল রনোর শার্টের আরো একটি বোতাম, আর সেখানে কম্পনের সাথে গড়িয়ে পড়তে থাকলো ভালবাসার সিক্ত অশ্রু।
©somewhere in net ltd.