নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সাধারন মানুষ হবার জন্য অবিরাম চেষ্টা করেই যাচ্ছি।

রাকিব সামছ

আমি হাসতে পছন্দ করি হাসাতে পছন্দ করি। খুব সাধারন একজন মানুষ কোন বিশেষত্ব নেই এটাই আমার পরিচয়।

রাকিব সামছ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গরু নিয়ে গুরুর গদ্য

০৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৯:১৯

সম্প্রতি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর গরু বিষয়ক বক্তব্যের পর থেকেই চলছে তা নিয়ে নানান বিশ্লেষণ। বিভিন্ন ধরনের গবেষণা আর ধ্যান ধারনা।

অসমর্থিত সংবাদের তথ্য অনুযায়ী প্রতি বছর প্রায় পঁচিশ লক্ষ গরু চোরাই পথে বাংলাদেশে আসে। মন্ত্রী সাহেবের কথার পর যদি এসব গরু আসা বন্ধ হয়ে যায় তবে কি প্রভাব পরবে আমাদের দেশের মানুষের উপর?

১. যদি গরু না আসে তবে নিশ্চিত করেই বলা যায় বাজারে আগুনের ছোয়া লাগবে সবার আগে গরুর গোস্তে। প্রতি কেজি নিম্নে ৬০০ টাকা থেকে আরো বেশি হবে।
২। আমাদের দেশের চামড়া শিল্প্রের কাঁচামাল এর প্রচুর সংকট দেখা দিবে। চামড়ার উপর নির্ভরশীল বহু কারখানা ধ্বংসের মুখোমুখি হবে। দেশে জুতোর দাম বেড়ে যাবে।
৩। দেশের মানুষের খাদ্যাভ্যাসে বিশেষ পরিবর্তন আনতেই হবে। বিয়ে থেকে শুরু করে মেহমান আপ্যায়নে আমরা গরুর গোস্তের উপরে ভরসা রাখি। আমাদের এই ভরসার জায়গাটা ভিষন ভাবে নাড়া খাবে।
আরো অনেক সমস্যার সম্মুখীন হবো আমরা বাংলাদেশীরা। তবে এর বিপরীতে বিশেষ সম্ভাবনা উকি দিচ্ছে আমাদের জন্য। যেমন,
১। ২৫ লক্ষ গরু অবৈধ পথে আসছে। তারমানে এসব গরুর দাম যদি ধরা হয় ২০,০০০ টাকা প্রতিটি, তাহলে বছরে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা অবৈধ ভাবে বিদেশে যাওয়া থেকে আমাদের অর্থনীতি বেচে যাবে। এই টাকা দিয়ে চার পাচ বছরে একটা পদ্মা সেতু নিজেদের টাকায় করা যাবে!!
২। দেশে গরুর চাহিদা আছে কিন্তু সহজ যোগান দাতা ভারত থাকায় এদেশের কৃষকরা গরু পালনে লাভবান হতে পারে নাই এতদিন। এখন তারা গরু পালনে আগ্রহী হবেন। এতে করে আমাদের দেশে মাংস এবং দুধের উৎপাদন বাড়বে দেশের পুষ্টিতে যা দারুন ভূমিকা রাখবে। দুধের উৎপাদন বেড়ে গেলে দুগ্ধযাত পণ্যের বাজারের সম্ভাবনা বারবে।
৩। আরেকটা বড় বিষয় না বললেই নয়, আমাদের দেশের কৃষকেরা যদি গরু পালন বাড়িয়ে দেয় তবে জৈব সার উৎপাদনও বেড়ে যাবে উল্লেখযোগ্য ভাবে। এতে করে আমাদের দেশের কৃষি ব্যবস্থাপনায় নতুন দিনের সূচনা হবে। রাসায়নিক সারের উপর নির্ভরশীলতা অনেকাংশে কমে যাবে। একদিকে যেমন আর্থিক সাশ্রয় হবে অন্যদিকে আমাদের খাদ্যে বিষের পরিমান কমে যাবে।
৪। গরু পালনের জন্য আমাদের দেশের অনেকের কর্মসংস্থান হবে। আবার আমরা যদি গোবরের যথাযথ ব্যবাহার নিশ্চিত করতে পারি তবে বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপনের মাধ্যমে গ্রামের অনেকের ঘরে আলো জ্বেলে দেয়া সম্ভব। এটা বাস্তবায়নের জন্য আমরা সমবায় সমিতিকে কাজে লাগাতে পারি।

এতো গেলো আমাদের দেশের কথা, অন্যদিকে যদি আমরা আরেকটু বেশী ভাবতে চাই তাহলে দেখবো¬—

১। ভারত যদি পচিশ লক্ষ গরু পাঠানো বন্ধ করে দেয়, তবে প্রথমেই যা হবে এই পচিশ লক্ষ গরুকে তাদের আরো চার পাঁচ বছর লালন পালন করতে হবে। ধরি একেকটা গরুর পেছনে মাসে এক হাজার রুপি খরচ হয়, তবে মাসে ২৫০ কোটি হিসেবে বছরে প্রায় তিন হাজার কোটি রুপি খরচ হবে এসব গরুকে লালন পালনে।
২। এসব গরুকে লালন পালনে লোক নিয়োজিত রাখতে হবে দুই থেকে পাঁচ লক্ষ। যার শ্রম সময়ের আর্থিক মূল্য হবে মাসে পাঁচশত কোটিরও বেশী। এই বিশাল ব্যয়ভার বহন করতে হবে ভারতের অর্থনীতিকেই।
৩। ভারতের চামড়া শিল্পের কাঁচামালের বড় অংশই আসে বাংলাদেশ থেকে তাও আবার অবৈধ ভাবে। বাংলাদেশে গরু না এলে বাংলাদেশ থেকে গরুর চামড়াও যাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। এরফলে ভারতের চামড়া শিল্প হুমকির মুখে পরে যাবে।
সবদিক থেকে বিবেচনা করলে খুব সহজেই বোঝা যায়, ভারতের এই সিদ্ধান্তে যতটা উপকার ভারতের হবে তার চেয়ে অনেক বেশী উপকার হবে আমাদের। দীর্ঘ মেয়াদে আমদের গো শিল্প স্বয়ংসম্পূর্ন হবে এর মাধ্যমেই। জ্বলজ্যান্ত প্রমান, ভারতের বাংলাদেশে চাল রপ্তানী বন্ধ করার পরেই আমরা চাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্নতা অর্জন করেছি। আমরা তাই এই সংকট মুহূর্তটাকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের সম্ভাবনা এবং সামর্থ্য আবারো প্রমান দেবো।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.