![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সমসাময়িক লেখকদের ছায়া এড়িয়ে একেবারে নতুন কিছু লেখার প্রত্যয়ে সাহিত্যাঙ্গনে আমার পদার্পন।
আমরা মানুষেরা নিজেদের মধ্যে ব্যাতিক্রম হবার লালসা লালন করি। প্রতিদিন হাজারো চিন্তা, হাজারো ভাবনা মনের ভেতর উঁকি দেয়, যেগুলো মুহুর্তেই উধাও হয়ে যায়। কিছু কিছু ভাবনা নিজেকে মহাপুরুষদের কাতারেও দাঁড় করিয়ে দেয়। প্রতিনিয়ত অবাক হওয়ার মত ঘটনা মনের মাঝে খেলা করে। মহাকালের বিভিন্ন রহস্যের জট আমরা অবচেতন মনেই খুলে চলেছি।
কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে এই ভাবনাগুলোর এক শতাংশও আমরা কারো কাছে প্রকাশ করতে পারিনা। ভাবনা গুলো অপ্রকাশিত থাকার পেছনের কারনগুলো বিশ্লেষণ নিম্নরুপঃ
(১) ভাষাগতঃ মনের সকল রং প্রকাশ করার মত সমৃদ্ধ শব্দ-ভান্ডার পৃথিবীর কোন ভাষাতেই নেই। প্রতিদিনই নতুন-নতুন শব্দ তৈরি হচ্ছে। এরপরও যা আছে- তা আমাদের চর্চা না থাকায় ভাবপ্রকাশে ব্যবহার করতে পারি না।
(২) স্রোতার অভাবঃ আমাদের প্রত্যেকের ভেতরেই নিজ নিজ চিন্তাভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। সুযোগ পেলেই সেগুলো অন্যকে জানাতে বিলম্ব হয়না। কিন্তু অন্যের কথা বা ভাবনাগুলো শোনার মত ধৈর্য্য খুব কম লোকেরই থাকে। একান্ত প্রয়োজন না হলে আমরা কারো কথা শুনতে নারাজ।
(৩) সমালোচনার ভয়ঃ আমাদের কিছু কিছু চিন্তা স্থান-কাল-পাত্রকেও ছাড়িয়ে যায়। বর্তমান সমাজব্যবস্থায় এই ধরনের চিন্তা স্রোতের বিপরীত হওয়ায় সারাজীবন অপ্রকাশিতই থেকে যায়। সমালোচনার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে টিকে থাকার ঝুঁকি খুব কম মানুষই নিতে পারে।
(৪) ভাবনার ক্ষণস্থায়িত্বঃ একের পর এক যুক্তি সাঁজিয়ে তৈরি করা চিন্তা এবং আবিষ্কৃত ভাবনার সময়কাল খুবই ছোট। পরমুহুর্তেই নতুন চিন্তা এসে ভর করে। হারিয়ে যায় সদ্য-পাওয়া ধারনাটি।
(৫) জাগতিক ও অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতাঃ পৃথিবীর নিরব আর্থিক প্রতিযোগিতা আমাদের দর্শনকে ছোট করে ফেলছে। যে ভাবনায় আর্থিক কিংবা জাগতিক লাভ নেই- সেগুলো এখন অযথা কর্ম বলে বিবেচিত, তা যত মানবিকই হোক।
এভাবেই আমরা হারিয়ে ফেলি আপন ব্যক্তিত্ব ও স্বত্তাকে। কিন্তু তেমন কাউকে পেলেই এসকল ভাবনা বাধভাঙা পানির মত বের হয়ে যায়। মানুষ অবসর পেলেই এধরনের কাউকে খুঁজে ফেরে- যার কাছে নির্দিধায় সব বলা যায়। অধিকাংশ মানুষই সর্বপ্রথম নিজের প্রেমিক/প্রেমিকাকে স্রোতা হিসেবে গ্রহন করে। অনেক অব্যক্ত কথাই তার সামনে প্রকাশ করতে পেরে পুলকিত হয়, এক অজানা ভালোলাগায় আবিষ্ট হয়। ভালোবাসার হাত ধরে একে অপরের চিন্তাগুলোকে তারা ধৈর্য্য ধরে গ্রহন করতে থাকে। একারনেই প্রেমের প্রথম সময়গুলো খুবই আনন্দ দেয়। ধীরে ধীরে দুজনেরই ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটে। একসময় কেউ আর স্রোতা হয়ে থাকতে চায়না- দুজনেই বলতে চায়। এখানেই বিচ্ছেদের শুরু। আবার অন্য কাউকে খোঁজার পালা।
©somewhere in net ltd.