নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি নাকি এক ভাঙ্গা বাড়ির ভাঙ্গা বারান্দা

আমি নাকি এক ভাঙ্গা বাড়ির ভাঙ্গা বারান্দা

শাহ্‌রিয়ার প্রান্ত

আমি নাকি আমার ভাঙ্গা ঘরের ভাঙ্গা বারান্দা

শাহ্‌রিয়ার প্রান্ত › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনার্স শেষ করলেই আর সহজে মাস্টার্স এ ভর্তি হওয়া যাবে না .।.।

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:২৫

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সর্বোচ্চ ধাপ মাস্টার্স প্রোগ্রাম সীমিত করার প্রস্তাব করেছে উচ্চশিক্ষার অ্যাপেক্সবডিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এই প্রোগ্রামটিতে কেবল বাছাইকৃত শিক্ষার্থীদেরই অধ্যয়নের সুযোগ দিতে আগ্রহী তারা। কয়েক বছর ধরে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীদের মানের ওপর অব্যাহত পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে তারা এমন সুপারিশ করেছে রাষ্ট্রপতিকে।

প্রস্তাব অনুযায়ী, বর্তমানে চলমান চার বছরের স্নাতক ডিগ্রি প্রান্তিক ডিগ্রি হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। এরই ভিত্তিতে প্রথম শ্রেণীর সব ধরনের চাকরি লাভ করা যায়। বিপরীত দিকে অধিকসংখ্যক শিক্ষার্থীকে মাস্টার্স পর্যায়ে ভর্তি করানোর ফলে একদিকে প্রকৃত মেধাবীরা যথার্থ ও উচ্চমানের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, অন্যদিকে এ পর্যায়ের শিক্ষার গুণগত মানও নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রম কেবল বাছাইকৃত ও মেধাবী স্নাতকদের জন্য উন্মুক্ত রাখা কাম্য।

ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. একে আজাদ চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, প্রকৃত অর্থে তারা মাস্টার্স প্রোগ্রাম সংকুচিত নয়, যারা শিক্ষকতা এবং গবেষণা করবে, তাদের জন্য এই প্রোগ্রামটি উন্মুক্ত রাখার পক্ষপাতী। অন্যরা এই ডিগ্রি না নিলে ক্ষতি নেই। তবে কেউ যদি প্রোগ্রামটি করতে চায় করবে। তিনি বলেন, এটা হচ্ছে অগ্রাধিকারের প্রশ্ন। যারা কেবল শিক্ষক এবং গবেষকদের তাদের জন্য এই প্রোগ্রামটি অগ্রাধিকারে রাখা হলে সার্বিকভাবে তা উপকারী হয়।

এ বিষয়ে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, সত্যিকার অর্থে সবার এই ডিগ্রি করার প্রয়োজন নেই সত্য, কিন্তু চাকরির বাজারে অনেকেই মাস্টার্স প্রোগ্রামকে অগ্রাধিকার দেন। এমনকি অনেককে মাস্টার্সের বাধ্যবাধকতাও আরোপ করতে দেখা যায়। এমনকি এসিআরে (বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন) এটি ইতিবাচক প্রভাব রাখে। তাই হঠাৎ করে এটা সীমিত না করে বরং যারা মানসম্মত প্রোগ্রাম করছে না তাদের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া যায়। এ ক্ষেত্রে ওই সব প্রতিষ্ঠানের মানোন্নয়নে মনোযোগী হতে পারে সরকার। তিনি আরও বলেন, বিদেশে গ্রাজুয়েশনই প্রান্তিক ডিগ্রি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সেখানে শিক্ষক আর গবেষক ভিন্ন অন্যের এই ডিগ্রি করার প্রয়োজন পড়ে না। তবে সেখানে স্নাতক ডিগ্রিটার মান এমনই যে, অন্যদের আর মাস্টার্স করার প্রয়োজনও পড়ে না। কিন্তু আমি আমার বিভাগে দেখেছি, মাস্টার্স পর্যায়ে এসে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত পরিপূর্ণতা ও বিকাশটা ঘটে, যা তাদের অনার্স পর্যায়েই হওয়ার কথা ছিল। তিনি একই সঙ্গে সব ধরনের বিভাগে মাস্টার্স প্রোগ্রাম অবারিত না রেখে দক্ষ জনসম্পদ তৈরিতে ভূমিকা রাখে এমন সব বিষয়ে (ইংরেজির মতো ভাষা শেখার) মাস্টার্স স্বাভাবিক রাখার প্রস্তাবও করেন।

বাংলাদেশে বর্তমানে স্নাতক ডিগ্রি দক্ষ সম্পদ সৃষ্টির প্রান্তিক ডিগ্রি হিসেবে রয়েছে। এগুলোর মধ্যে প্রধানতম হচ্ছে ডাক্তার এবং প্রকৌশলী। মেডিকেল কলেজগুলো যে গ্রাজুয়েট তৈরি করে তারাই সেই ডিগ্রি দিয়ে কর্মজীবনে প্রবেশ করে। একই অবস্থা প্রকৌশল শিক্ষায়ও। দেখা গেছে, বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বিশেষ করে চিকিৎসা-শিক্ষকতা আর প্রকৌশল শিক্ষকতায় যোগদানকারীরা এই স্নাতকোত্তর পর্যায়ে লেখাপড়ায় প্রবেশ করে। কিন্তু এই দুটির বাইরে বিশেষ করে সাধারণ আর মাদ্রাসা শিক্ষায় গড়ে সব শিক্ষার্থীই মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তি হয়।

ইউজিসির তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে প্রায় ৩ লাখ শিক্ষার্থী মাস্টার্স পর্যায়ে লেখাপড়া করছে। এর মধ্যে ৩২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন বিভিন্ন কলেজ ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে আড়াই লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এই শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় ৩০ হাজার।

ইউজিসির পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ স্নাতক পর্যায়ে শিক্ষা-কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা এবং যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক না থাকা সত্ত্বেও তারা স্নাতকোত্তর বা মাস্টার্স পর্যায়ে পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করে। ফলে ওই সব প্রতিষ্ঠানে মানসম্মত শিক্ষাদান সম্ভব হচ্ছে না। মাস্টার্স পর্যায়ে ডিগ্রি প্রোগ্রাম কেবল উপযুক্ত সুযোগ-সুবিধা সংবলিত প্রতিষ্ঠানে মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য সীমিত রাখা প্রয়োজন বলে মনে করে ইউজিসি।

মাস্টার্স-দুর্নীতি : এদিকে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাইরে অন্য সব প্রতিষ্ঠানে স্নাতক ডিগ্রিই চলছে খুঁড়িয়ে। শিক্ষা বিস্তারের নামে বিভিন্ন সরকার সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি কলেজে মাস্টার্স প্রোগ্রাম চালু করার অনুমতি দেয়। এর বাইরে একের পর এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের অনুমতি দেয়া হচ্ছে। ওই সব কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমেই মাস্টার্স পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করে ডিগ্রি বিলি-বিতরণ করতে দেখা যায়।

এক্ষেত্রে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানে টিউটোরিয়াল, ইনকোর্স, অ্যাসাইনমেন্ট লেখা, থিসিস লেখানো এমনকি মৌখিক পরীক্ষার পর্যন্ত ব্যবস্থা নেই। ইউজিসি থেকে যেসব টপিক নিয়ে কারিকুলাম অনুমোদন করানো হয়, বাস্তবে অনেকেই তা পড়ায় না। আবার অনেকেই ইভিনিং মাস্টার্স প্রোগ্রামের নামে রমরমা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। এসব অনেকটাই লাগামহীনভাবে চলছে। এসব প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী শিক্ষকদের ৯০ ভাগই প্রশিক্ষণহীন ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নয়া পাস করা অদক্ষ। যে ৯০ ভাগ আছেন তাদের বেশির ভাগেরই শিক্ষকতার ইতিহাস নেই। আবার কিছু ব্যক্তিকে স্থায়ী শিক্ষক হিসেবে দেখানো হলেও তাদের বেশির ভাগ কোনো না কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিভিন্ন মেয়াদে ছুটি নেয়া। এসব বিশ্ববিদ্যালয় মূলত ভাড়া করা শিক্ষক দিয়ে চলছে, যাদের বেশির ভাগই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণকালীন শিক্ষক। বিপরীত দিকে যারা এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স ডিগ্রির জন্য ভিড় করছে, তাদের বেশির ভাগই পেশাজীবী অথবা অবসরপ্রাপ্ত। কেউ শখের বশে আবার কেউ প্রমোশন বাগিয়ে নিতে যেনতেনভাবে মাস্টার্স ডিগ্রি করছে। এই সুযোগে রাশি রাশি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সংশ্লিষ্টরা।

মাস্টার্স ডিগ্রি প্রদান করে এমন আরেক ধরনের প্রতিষ্ঠান হচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন বিভিন্ন কলেজ। ওই সব প্রতিষ্ঠানে বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ করা হলেও এদের পেশাগত প্রশিক্ষণ, উচ্চতর ডিগ্রি ইত্যাদি নানা কিছু নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। অনেকে সিনিয়র স্কেল পরীক্ষা না দিয়ে বয়সের ফেরে প্রমোশন বাগিয়ে নেয়ার ঘটনা পর্যন্ত রয়েছে। ফলে মানসম্মত ডিগ্রি আর মিলছে না। - See more at: Click This Link

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.