নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি জাহিদ রাজ রনি। অঘ্রান অভ্রু নামটা বোকামি করে দেয়া এবং পরে আর নাম পাল্টানোর অপশন খুঁজে পাইনি। পত্রিকায় লিখি \'জাহিদ রাজ\' নামে। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে আমি: jahidrajrony

অঘ্রান অভ্রু

একদিন কাক হয়ে উড়াল দিবো

অঘ্রান অভ্রু › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প- "সম্পর্কের গল্প"

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:২৩

সম্পর্কের গল্প
লেখক : জাহিদ রাজ রনি

ওদের নীলরঙা স্বপ্নের গল্প শুরু হয়েছিল এক পাবলিক বাসে পাশাপাশি সিট থেকে। তারপর ওরা এ শহর চষে বেড়িয়েছে। বসুন্দরার কাঁশবনে একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরার অপরাধে আন-রোমান্টিক পুলিশ ওদের বাসায় নালিশ করেছে। নীলরঙা স্বপ্নের গল্পে তখন মরিচা পড়তে শুরু করেছিল। ছেলেটা রোজ এসে আমাকে প্রেম-ভালোবাসা সম্পর্কে অধ্যাতিক সব বাণী শুনাতো। ওর কথা শুনে মনে হতো এই বুঝি ও মোটা কম্বল নিয়ে লুম্বীনি পর্বতের দ্বারে যাত্রা করবে সণ্যাসী হওয়ার লক্ষে। আমি গভীর আগ্রহে মবিনের দোকানের লেবু চা খেতে খেতে সেসব মহান বানী শুনতাম। ওকে সান্তনা দেওয়ার মতো কিছু ছিলো না। দুই দেহ, এক প্রাণ; অথচ আলাদা আলাদা। সেই আন-রোমান্টিক পুলিশকে গালাগালী করতাম ওর সাথে কন্ঠ মিলিয়ে।

তারপর টার্নিং পয়েন্ট। ওর প্রেমিকাটি মুক্তি পায়। আবার ওদের রোজ দেখা হতে থাকে। পাবলিক বাসে কাঁদে মাথা রেখে হেডফোনে বৃষ্টির গান শুনা, মবিনের দোকানের রং চায়ের এককাপে দুজোড়া ঠোট! তখনও ছেলেটি আমাকে অধ্যাতিক বাণী শুনাতো। "বুঝলেন ভাই, প্রেম ভালোবাসার মতো পৃথিবীতে কিছু নেই!"
আমি হা করে সেসব বাণী শুনতাম। মুখের "হা" করা ভাবটা কমানোর জন্য মবিনের দোকান থেকে চুইংগাম কিনে চুষতাম। ওদের প্রেমটা একদম প্রথম থেকে দেখেছি। ওদের দেখে আমার মনে হতো পৃথিবীর সবছাইতে সুখি দম্পতী ওরাই! আমি ওদের মতো একটা জীবন কামনা করতাম।

তারপর এক সময় ওর প্রেমিকাটির মাঝে কি যেনো হয়। সে নাকি ওকে অবহেলা করতে শুরু করে। মাঝরাতে নাকি তার ফোন ওয়েটিং পাওয়া যায়। ও রোজ আবার আমাকে অধ্যাতিক বাণী শুনাতে শুরু করে। আমি শুনতাম। চা বানানোর ফাকে মবিনও সেসব গল্প শুনতো। গল্প শুনার সময় মবিনের মুখটা অতিরিক্ত পরিমান হা হয়ে থাকতো। ওকে অদ্ভুত দেখাতো।

তারপর একদিন ছেলেটি আর মবিনের দোকানে আসেনা। উড়া উড়া শুনতে পাই ওর প্রেমিকাটি নাকি অন্য এক হোমড়া-চোমড়া টাইপ ভদ্রলোককে বিয়ে করেছে। আমি আর মবিন পরষ্পরের দিকে হা করে তাকিয়ে থাকি। সেদিন মবিনের মুখটা অদ্ভুত লাগেনা।

তারপর অনেকদিন কেটেছে। ছেলেটি আর আসেনি। আমি আর মবিন বেশ কয়েকদিন ওদের গল্প করেছি। একসময় ট্রাফিত পুলিশ ফুটপাত থেকে মবিনের দোকান তুলে দেয়। আমি অবাক হয়ে ওদের শূন্যতাটা অনুভব করি। শহরের নোংরা ফুটপাতটা হা-হা করে। এ শহরে সবকিছুই আছে, শুধু গল্প বলা সেই ছেলেটি আর আড্ডার সেই স্থানটি নেই। ওখানে টুং টাং শব্দে কেউ চা বানায় না। কেউ এসে তাচ্ছিল্যের ভঙ্গিতে বলে না "বুঝলেন ভাই, প্রেম ভালোবাসার উপরে পৃথিবীতে কিছু নাই"

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:২০

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: বেশ লাগল ছোট্ট লেখাটা

০১ লা মে, ২০১৫ রাত ১১:৫৪

অঘ্রান অভ্রু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ

২| ৩১ শে মে, ২০১৭ দুপুর ২:১৩

তাছনীম বিন আহসান বলেছেন: অসাধারণ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.