নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পাঠকের মুগ্ধতাই আমার লেখার প্রেরণা, সত্য প্রচার আমার লেখার উদ্দেশ্য আর মিথ্যাকে বিনাশ করে দিকেদিগন্তে সত্যের আলোকচ্ছটার বিচ্ছুরণই আমার লেখার চূড়ান্ত লক্ষ্য।

বিদ্রহীসূত

রাকীব আল হাসান, সহকারী সাহিত্য সম্পাদক, দৈনিক বজ্রশক্তি।

বিদ্রহীসূত › বিস্তারিত পোস্টঃ

পঞ্চবর্ষের চক্রপাক

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:২৫

সমস্ত পৃথিবী জুড়িয়া বর্তমান কালে জনারণ্যে সবচাইতে প্রভাব বিস্তারকারী বিষয় হইল রাজনীতি। রাজনীতি এখন আর রাজ রাজড়াদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নাই, প্রজারাও ইহার মাঝে আপাদমস্তক বিজড়িত হইয়া গিয়াছে। বাংলাদেশেও ইহার ব্যত্যয় ঘটে নাই। পূর্বকালে রাজায় রাজায় যুদ্ধ হইত, কেহ মারা পড়িত আর কেহ সিংহাসন দখল করিয়া বসিত। প্রজারা কেবলই দর্শক সাজিয়া তাহা উপভোগ করিত। আমাদিগের মত তখন তাহারা বাপের খাইয়া পরের কাজে নাক খোয়াইত না। কিন্তু এখনকার রাজনীতি ভিন্নরূপ। এখন কিন্তু আমরা আর দর্শকের ভূমিকায় নাই, সরাসরি ক্রীড়াঙ্গণে অবতীর্ণ হইয়াছি। না, খেলোয়াড় হিসাবে নয়, ক্রীড়ণক হিসাবে। ফুটবল মাঠে ফুটবল যে ভূমিকা পালন করিয়া থাকে অদ্য আমাদের সেই ভূমিকা। রাজ রাজড়ারা সব দুই দলে ভাগ হইয়া আমাদিগকে লইয়া রাজনৈতিক ফুটবল খেলিতেছে। যে রাজাই জয়লাভ করুক না কেন আমাদিগের জন্য বরাদ্দ বুটের লাথি। লাথি খাইতে খাইতে এখন সহ্য হইয়া গিয়াছে। পয়তাল্লিশ মিনিট অতিক্রান্ত হইবার পর খেলোয়াড়রা যেমন কিছু সময় বিশ্রাম লইয়া দিকপরিবর্তন করে তেমনি রাজারাও পাঁচ বছর অন্তর দিক পরিবর্তন করেন। উপর্যুপরি লাথি খাইয়া যখন বলের প্রাণবায়ু বাহির হইয়া যায়, তখন মধ্যবিরতিতে পুনরায় চাপিয়া চাপিয়া বাতাস প্রবেশ করানো হয়। একইভাবে দিক পরিবর্তনের পূর্বক্ষণে আমাদের রাজারা সাধু মানুষের রূপ ধারণ করিয়া থাকেন, আমাদিগকে আশার আলো দেখান। জনগণের দুর্গন্ধমদিত বক্ষে তাহাদের সুবাসিত বক্ষদেশ ঠেকাইতেও কসুর করেন না। আমরা হাসি মুখে তাহাদের অতীত মস্তিষ্ক হইতে ডিলিট করিয়া চাকবদ্ধ হইয়া, মিছিল করিয়া, নাচিয়া নাচিয়া তাহাদের ভোট দিই। কিন্তু ভোটপর্ব ফুরাইতে না ফুরাইতে তাহারা নাক চাপিয়া ধরিয়া আমাদিগকে ত্যাগ করিয়া চলিয়া যান। আবার আমাদিগকে মাঠে নামাইয়া লাথিপর্ব আরম্ভ হয়। আমাদের কোন পক্ষ নাই, তাই পক্ষাঘাতগ্রস্তের ন্যায় বসিয়া থাকি। পঞ্চবর্ষ অন্তে আবার ভাগ্যে জোটে রাজদর্শন।

এই পঞ্চবর্ষীয় পাকচক্রে কি কেবল প্রজাগণই ঘুরপাক খাইতেছে? মোটেও নয়, প্রকৃতপ্রস্তাবে আমাদের রাজারাও এই চক্রে ভালভাবেই আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা পড়িয়াছেন। তাহারাও এই খেলার খেলোয়াড় মাত্র, পরিচালক নহেন। এই পাক হইতে মুক্তিলাভের ইচ্ছা থাকিলেও উপায় জানা নাই। যে রাজপথ ধরিয়া তাহারা চলিতেছেন তাহা অতিশয় বক্র। বক্রপথে যেমন বক্র হইয়াই চলিতে হয়, তেমনি রাজারা যে রাষ্ট্রনীতির কাঁধে আরোহন করিয়াছেন তাহাই রাজা-প্রজা সকলকে ঘোলাপানি খাওয়াইয়া ছাড়িতেছে। মাকাল বৃক্ষের কাছে কি সুমিষ্ট আম কামনা করা যায়? তেমনি প্রচলিত রাষ্ট্রনীতি দিয়া কেবল ফুটবল রঙ্গই চলিবে, শান্তির মহড়াই চলিবে, প্রকৃত শান্তি আসিবে না।

পরিতাপের বিষয় হইতেছে, রাজা মহারাজাদের পদাঘাতই যেন আজ প্রজাদের কাছে উপাদেয় বোধ হইতেছে। দাসত্বশৃঙ্খলকেই তাহারা পুষ্পমাল্য জ্ঞান করিতেছে। আমরা পিঠে বাঁধিয়াছি কুলা, কানে দিয়াছি তুলা। কবে আমাদের চেতনা ফিরিবে? কবে আমরা সিস্টেমের বিষবৃক্ষকে উপড়াইয়া ফেলিতে একতাবদ্ধ হইব? মানবজীবনে বপন করিব এমন একটি স্বর্গীয় বৃক্ষের বীজ যাহার ফল আহার করিয়া রাজারাও বাঁচিবে, প্রজারাও বাঁচিব।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:০৩

উড়োজাহাজ বলেছেন: মাকাল বৃক্ষের কাছে কি সুমিষ্ট আম কামনা করা যায়? তেমনি প্রচলিত রাষ্ট্রনীতি দিয়া কেবল ফুটবল রঙ্গই চলিবে, শান্তির মহড়াই চলিবে, প্রকৃত শান্তি আসিবে না।

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৫:২৬

বিদ্রহীসূত বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.