| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আওরঙ্গজেব চৌধুরী রিফাত
If u want to know anything about me, just ask।
রাসুল (সা) একবার নামাজের ইমামতি করছিলেন। এক যুবক মসজিদে ঢুকল। ঢুকে দেখল, তিনি রুকুতে চলে গেছেন।
যুবক তখন একটা অদ্ভুত কাজ করল। সে দরজার সামনেই আল্লাহু আকবার বলে রুকু সেরে নিল। এরপর রুকু অবস্থায় গুটিগুটি পায়ে জামাতে ঢুকে পড়ল।
যুবকের যুক্তি ছিল যদি রাসুল (সা) রুকু থেকে উঠে যান তাহলে তো আর রুকুটা পাওয়া যাবে না। তাই সময় থাকতেই রুকু সেরে নেওয়া।
এই ধরনের ঘটনা যদি আমাদের কোন মসজিদে ঘটত, তাহলে কি হতে পারে একটু কল্পনা করে দেখা যাক।
ধরা যাক, থ্রী কোয়ার্টার প্যান্ট পড়ে স্টাইলিশ হেয়ার কাটিং দেওয়া কোন যুবক মসজিদে ঢুকল। এরপর নামাজের মধ্যেই তার পকেট থেকে ইয়ো ইয়ো হানি সিং টাইপের কোন মিউজিক বেজে উঠল। নামাজের পরে সেই ছেলের অবস্থা আর দেখতে হবে না। খোদ ইমাম সাহেবই ধমক দিয়ে ছেলেটাকে দমিয়ে দেবেন।
অথবা ধরা যাক, মসজিদে নামাজ চলছ্র। প্রত্যেক সেজদার সময়ই কয়েকটা বাচ্চা কাতার থেকে বেড়িয়ে দৌড়াদৌড়ি করছে। এরপর সেজদা শেষ হবার আগেই আবার কাতারে ঢুকে নামাজ পড়ছে।
নামাজের পর কোন মুরুব্বি যদি কোন বাচ্চাকে পান তাহলে নিশ্চিত এক ধমকে তাকে মসজিদ থেকে বের করে দেবেন। এমন কি ইমাম সাহেব পর্যন্ত বাচ্চার বাবাকে অভিযোগ করবেন।
রাসুল (সা) এর মসজিদেও এরকম ঘটত। মসজিদে নববীর শেষ কাতারে মহিলারা দাড়াতেন। কারো কারো সাথে বাচ্চা থাকত।
রাসুল (সা) বলেন, " আমি প্রতি নামাজেই ভাবি আজ লম্বা ক্কিরাত করব। কিন্ত যখনই পেছন থেকে কোন বাচ্চার কান্নার আওয়াজ শুনি তখন আমার মন অস্থির হয়ে যায়। আমার মনে হয় বাচ্চার মা নিশ্চয়ই অস্থির হয়ে আছে। সে তো বাচ্চাকে কোলে নিতে পারছে না। আমি তখন দ্রুত সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করে দেই।"
সুবহানআল্লাহ! এই ছিল রাসুলের সুন্নত। তার প্রকৃত আদর্শ। এই যুগে মহিলাদের মসজিদেই ঢোকাই নিষিদ্ধ। আর কোন মহিলার বাচ্চার কান্নার আওয়াজ মসজিদে পাওয়া যাবে এতো ভাবাই যায় না। আমাদের ঈমানের প্যারামিটার এতই অদ্ভুত যে নির্দ্বিধায় সুদ খেতে আমাদের কষ্ট হয় না, অথচ "ফিতনার ভয়ে" আমরা মা বোনদের জুমার খুতবা শুনতে দিতেও রাজি না।
আমরা প্রথম ঘটনায় ফিরে যাই। নামাজ শেষে সেই যুবকের মনে খচখচানি রয়ে গেল। যদিও রাসুল (সা) শিখিয়েছেন নামাজ অতি সহজ, তবু তার মনে হচ্ছিল কাজটা ঠিক হয়নি। নামাজ কি আবার পড়তে হবে?
সে নিজে থেকেই রাসুল (সা) কে সবকিছু জানাল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি তো এই কাজ করেছি। আমার নামাজ কি হবে?
রাসুল (সা) কি করলেন? প্রথমেই তার জন্য দোয়া করে বললেন,
"তোমার মধ্যে জামাত ধরবার এই যে আগ্রহ, আল্লাহ তোমাকে উত্তম প্রতিদান দিন।"
আল্লাহর রাসুল নিজ থেকে তার জন্য দোয়া করেছেন, যুবক রোমাঞ্চিত। তার মনটা ভরে গেছে।
এরপর রাসুল কি বললেন?
তাকে রাগ করেন নি, অসন্তুষ্ট হন নি, এমন কি পুনরায় নামাজ পড়তেও বলেন নি।
শুধু বললেন, "বাবা, এরকম কিন্ত আর করো না।"
রাসুলুল্লাহ (সা) ছিলেন শ্রেষ্ঠ শিক্ষক। কিভাবে মানুষকে শিক্ষা দিতে হয়, মানুষকে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করতে হয়, কিভাবে তার ইসলামের প্রতি বিমুখতা কমানো করা সম্ভব তা একমাত্র রাসুলের সুন্নাহের অনুসরণ করেই শেখা সম্ভব।
অথচ আমরা এমন আচরণ করি যে মানুষ উলটো ইসলাম থেকে দূরে সরে যায়। কোরআন হাদিসের দুইএকটা লাইন পড়েই এমন অহংকারী হয়ে যাই যে কাউকে শেখাতে গেলে আগে আচার আচরণে তাকে ছোট করি, এরপর জ্ঞান ফলাই।
এমব মুর্খতা থেকে আমাদের সরে আসতে হবে। বেশি বেশি রাসুলের জীবনী পড়তে হবে। তার সুন্নাহ জানতে হবে। আমাদের জীবন যেমন সুন্দর হবে, আখিরাতও সুন্দর হবে।
©somewhere in net ltd.