![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
জন্মের পর প্রথম ‘মা’ বলতে শিখেছি আমি। জীবনে আমার সবচেয়ে বেশিবার উচ্চারিত শব্দটিও ‘মা’। জীবনে আমি সবচেয়ে বেশি ভালোবেসেছিও মাকে। আবার জীবনে সবচেয়ে বেশি কষ্টও দিয়েছি আমার মাকে। পারিবারিক কারণে হোক, শিার অযুহাতে হোক, রাষ্ট্রের দুঃশাসনের নিপাতনে পিষ্ট হয়ে হোক আর নিজের ইচ্ছে বা অনিচ্ছায় হোক না কেন জীবনে মাকে আমি খুব একটা শান্তি দিতে পারিনি। আমার মা ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি আমাদের অভাগা করে মহাশূন্যে বিলিন হয়েছেন। মাকে নিয়ে আমার অনেক কথা বলার আছে। কিন্তু সব কথা আমি রাষ্ট্র করতে অনিচ্ছুক। মায়ের কাছে গল্প শুনতে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগতো। মা যেভাবে গল্প শুনাতো সেই ঢঙ্গ আমি আর কোথাও পাইনি। মা খুব সহজ সরল করে গল্প শোনাতো। সেই গল্প বুঝতে কাউকে বিদ্বান হবার প্রয়োজন নেই। মায়ের কাছে শোনা সেই সব গল্পকে সবচেয়ে বেশি জীবনঘনিষ্ঠ গল্প বলেই মনে হয়েছে আমার। সেই সব গল্পে কোনো বাতুলতা ছিল না। ঘটনা যেভাবে ঘটেছে তার সত্যানুসন্ধান উপস্থিতি থাকতো মায়ের বলা সেই সব গল্পে। মায়ের কাছে গল্প শুনতে শুনতেই একদিন আমি গল্প লেখায় আগ্রহী হয়ে উঠি।
কখনো একই গল্প মায়ের কাছে আমি বারবার শুনতে চাইতাম। দেখতাম, মা ঠিক আগের বারের মতো করেই বলার চেষ্টা করছে। একই গল্পে কোনো নতুনত্ব থাকবে কিনা এটা জানার জন্যেই আমি পুনরায় ওই গল্প শুনতে চাইতাম। আমার অনুসন্ধানী প্রশ্নের জবাবে কখনো কখনো নতুন বিষয় বেড়িয়ে আসতো। আর গল্পের এই নতুন বিষয় নিয়ে অনুসন্ধান করাটাই আমার এক সময় নেশা হয়ে গিয়েছিল। কখনো আমি অন্য গল্পের বিষয় ইচ্ছে করেই মায়ের বলা গল্পে ঢুকিয়ে দিয়ে প্যাচ লাগিয়ে দিতাম। দেখতাম, মা ঠিকই তা ধরে ফেলতো আর তখন সেই গল্পটাও বলা শুরু করতো। এতে আমার সুবিধা হতো যে মাকে আরো কিছুটা সময় আমার সঙ্গে আড্ডায় আটকে রাখতে পারতাম। মা কখনো কাজের ফাঁকে ফাঁকে গল্প শোনাতো। কাজ চলছে, গল্প বলাও চলছে। আমার নিজের কোনো বিষয় হলে সেই গল্প বলার সময় অন্য কাউকে আমি এলাউ করতাম না। কিন্তু মা সবাইকে এলাউ করতো। মায়ের এই সহজ সরল দিকটা আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগতো।
পরিবারে মা ছিল আমার প্রধান গোয়েন্দা কর্মকর্তা। আমার বিরুদ্ধে কেউ কিছু রটালে মায়ের মাধ্যমে আমি ঠিকই তা জানতে পারতাম। এক কথায় মা ছিল আমার একটা আপন ভূবন। আসলে এসএসসি পরীার পর থেকেই পড়াশুনার অযুহাতে মায়ের কাছ থেকে আমার দূরে বসবাস শুরু। অনার্স-মাস্টার্সে পড়ার সময় সেই দূরত্ব আরো বাড়লো। তারপর নানা ঘটনা অঘটনার আড়ালে বাড়িতে যাওয়া কিংম্বা মায়ের কাছে থাকার সুযোগ রইলো না। তবু মাকে আমি সব সময় ভালোবাসি। সেই ভালোবাসার খবর সবচেয়ে মা-ই বেশি জানতো। এক কথায় বাংলাদেশের একজন গ্রামীণ সহজ সরল মা বলতে আমরা যা বুঝি আমার মাও একেবারে তাই। সবাইকে মা যেমন বিশ্বাস করতো তেমনি ভালোও বাসতো। বিনিময়ে মাকেও সবাই ভালোবাসতো। আমার মায়ের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিা ছিল না। গ্রামের পাঠশালা বা মক্তব বা প্রাইমারি পর্যন্ত যাবার সুযোগ তাঁর হয়েছিল। বাংলা ও আরবি পড়তে পারতো। ইংরেজি বর্ণমালা চিনতো। দুই একটা শব্দ বা সরল বাক্য পড়তেও পারতো।
মাকে নিয়ে একটা উপন্যাস লেখার ইচ্ছে আমার ছোটবেলা থেকেই। কিন্তু আমার মায়ের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো কি উপন্যাসের বিষয়-আশয় হতে পারে কিনা এই নিয়ে সংশয় ছিল। এখনো পরিচিত অপরিচিত উপন্যাসের বিষয়-আশয়ের সঙ্গে আমার লেখা উপন্যাসের সত্যিকারের কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমি সেই চেষ্টাও করিনি। উপন্যাসের সীমাবদ্ধ গণ্ডির বাইরে গিয়ে আমি একটা কিছু লিখতে চেয়েছি। তাই সাহিত্যের বাঘা বাঘা সমালোচক বা পাঠক হয়তো এটাকে ঠিক উপন্যাস বলতে রাজী হবেন না। কিন্তু উপন্যাস নিশ্চয়ই কোনো বাইবেল না। যে সেই নিয়ম হুবহু অনুসরণ করতে হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে সেই নিয়ম অনুসরণ করার পপাতীও নই। তাই আমার উপন্যাসে কিছুটা ঔদ্বত্ত্ব যেমন আছে তেমনি কিছু সঙ্গতি অসঙ্গতির মিশ্রণও আছে। আমি এভাবেই লিখতে চেয়েছি।
আমার এই উপন্যাসে ভূগোল আছে। ইতিহাস আছে। অর্থনীতি আছে। বিজ্ঞান আছে। ধর্ম আছে। রাজনীতি আছে। পরিবেশ আছে। ন্যাচারাল ডিজেস্টার আছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আছে। দুর্ভি আছে। ষড়ঋতু আছে। দেশ বিভাগ আছে। হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা আছে। ভাষা আন্দোলন আছে। সামরিক শাসন আছে। জাতীয় নির্বাচন আছে। মুক্তিযুদ্ধ আছে। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আছে। জাতীয় ও পারিবারিক শোক আছে। আর আছে কিছু নির্মোহ সত্যের অনুসন্ধান। নিয়মিত উপন্যাসের সঙ্গে এখানে যার কোনোই মিল খুঁজে পাওয়া যাবে না।
এই উপন্যাস লিখতে গিয়ে অনেক ঘটনা আমাকে নিজ বুদ্ধিতে বিচার বিশ্লেষণ করতে হয়েছে। সঠিক ইতিহাসের সন্ধানে অনেক ব্যক্তির সঙ্গে ইমেইলে বা সরাসরি যোগাযোগ করতে হয়েছে। অন-লাইন, উইকিপিডিয়া, বাংলাপিডিয়া, ইতিহাসের অনেক বই, মুক্তিযুদ্ধের দলিল, দৈনিক পত্রিকা, সাপ্তাহিক পত্রিকা, সাময়িকী, ম্যাগাজিন ইত্যাদি তাবৎ বিষয়ের সাহায্য গ্রহন করেছি। এই যাবতীয় বিষয় ও ব্যক্তির প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমার সহধর্মিণী মায়া লোহানী এই উপন্যাসের প্রথম সমালোচক। প্রতিটা অধ্যায় লেখার পর মায়া গভীর আগ্রহ নিয়ে শুনেছে, মতামত দিয়েছে এবং পাঠকের যাতে ভালো লাগে সে বিষয়ে মূল্যবান পরামর্শ দিয়েছে। সেজন্য আমি মায়া’র প্রতিও গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।
এই উপন্যাস পাঠকের হাতে তুলে দেবার জন্যে শ্রদ্ধেয় আল আামিন ভাই বিশেষভাবে উৎসাহ প্রদান ও সারাণ তাগাদা দিয়ে যেভাবে সব সময় সহযোগিতা করেছেন সেজন্য তাঁর প্রতিও আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানাই। বইটির প্রচ্ছদ আমি নিজেই করেছি। বইটির প্রথম প্রকাশে কিছু বানান বিভ্রম থাকাটা বিচিত্র নহে। যা হয়তো পরবর্তী সংস্করণে সংশোধন করা সম্ভব হবে। এছাড়া বইটির সর্বপ্রকার গঠনমূলক সমালোচনা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে প্রহন করার ইচ্ছে রইলো। বইটির পাণ্ডুলিপি প্রণয়ন ও প্রকাশের সঙ্গে যুক্ত বিশেষ করে আল আমি ভাই, এম. জি. হাফিজ ও আবদুল্লাহ সহ সবাইকে আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই।
২| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:১০
রেজা ঘটক বলেছেন: ধন্যবাদ ফয়সাল
৩| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:১২
রেজা ঘটক বলেছেন: অমর একুশে বইমেলায় পাওয়া যাবে। প্রকাশক ও স্টল নং শিঘ্রই জানাবো।
৪| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:১৪
রাশেদ হাসান নোবেল বলেছেন: প্রথম উপন্যাসের জন্য শুভকামনা ।
সব কপি বিক্রি হয়ে যাক । পুনঃ মুদ্রণ হোক বার বার ।
৫| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:১৬
রেজা ঘটক বলেছেন: ধন্যবাদ রাশেদ
৬| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:২৩
পিদিম বলেছেন: প্রথম উপন্যাসের জন্য শুভকামনা ।
৭| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:৩৮
মীর্জা প্রীয়ম বলেছেন: চমৎকার, বইটা কোথায় পাওয়া যাবে...?
৮| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:৪০
অনুভুিতহীন বলেছেন: আপনার জন্য শুভকামনা...
৯| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:৫৫
সোহেল শান্ত বলেছেন: প্রথম উপন্যাসের জন্য শুভকামনা ।
১০| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৮:৫১
ডলুপূত্র বলেছেন: ম্যাক্সিম গোর্কীর মা পড়ার পর আনিসুল হকের মা পড়ে ভাল লাগেনি। এখন আপনারটা পড়ার অপেক্ষায়...
Click This Link
১১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ৮:২৪
রেজা ঘটক বলেছেন: আল আমিন প্রকাশন, স্টল নং- ৪৪, অমর একুশে বইমেলায় পাওয়া যাচ্ছে আমার উপন্যাস- মা।
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:১০
এস.কে.ফয়সাল আলম বলেছেন: আপনার উপন্যাস এর জন্য শুভকামনা রইল।
প্রচ্ছদটা চমৎকার হয়েছে।
এটা কোথায় পাওয়া যাচ্ছে বা যাবে ?