নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাবাস টাইগার্স!! সাবাস বাংলাদেশ ক্রিকেট!!!

০১ লা মে, ২০১৫ রাত ১১:৪১

আজ বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের জন্য একটি স্মরণীয় দিন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খুলনায় অনুষ্ঠিত চলতি দুই টেস্টের সিরিজের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ পাকিস্তানের প্রথম ইনিংসে ৬২৮ রানের বিশাল স্কোরের নিচে চাপা পড়া থেকে যুদ্ধ করেই দ্বিতীয় ইনিংসে দুই ওপেনার তামিল ইকবাল ও ইমরুল কায়েসের দু'জনের সেঞ্চুরিতে এখন ফুরফুরে অবস্থানে। দুই ওপেনার ২৭৩ রানে এখনো অবিচ্ছি্ন্ন। তামিম ১৩৮ রানে আর ইমরুল ১৩২ রানে অপরাজিত। যদিও বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের ৩৩২ রান আর দ্বিতীয় ইনিংসের ২৭৩ যোগ করেও এখনো পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ ২৩ রানে পিছিয়ে রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের হাতে এখনো রয়েছে ১০ উইকেট।

আগামীকাল পঞ্চম দিন প্রথম টেস্টের শেষ দিন। খেলার বাকি ৯০ ওভার। এই ৯০ ওভার বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আগামীকাল সকালের প্রথম সেশন। পাকিস্তান চেষ্টা করবে আগামীকাল প্রথম সেশনে বাংলাদেশ ইনিংসকে ছোট করে দিতে। আর বাংলাদেশের চেষ্টা হবে ইনিংসকে আরো লম্বা করা। যদিও এখনো ম্যাচের শতকরা ৮৫ ভাগ ড্র হবার সম্ভাবনা। তবুও বাংলাদেশের জন্য আগামীকাল প্রথম সেশনটা খুবই ক্রুশিয়াল। মধ্যাহ্ণভোজের আগে বাংলাদেশ যতক্ষণ মাটি কামড়ে উইকেটে পড়ে থাকতে পারবে, তার উপরই ম্যাচ ড্র হবার সম্ভাবনা থাকবে। যদি বাংলাদেশ আগামীকাল সকালের প্রথম সেশন ভালোমত সামাল দিতে পারে তাহলে এই টেস্ট নিশ্চিত ড্র'র দিকেই যাচ্ছে।

আজ বাংলাদেশ পাকিস্তানের ৫ উইকেটে ৫৩৭ রানকে আর ৯১ রানের মধ্যেই গুটিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। বাজে ফরমে থাকা শাকিব আল হাসান পাকিস্তানের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যানদের জুটি ভাঙেন। তারপর তাইজুল শহিদ মিলে পাকিস্তানের লেজ ছেটে দিয়েছেন ৬২৮ রানে অলআউট করে। পাকিস্তান প্রথম ইনিংসে ২৯৬ রানের বিশাল লিড নিয়েছিল। বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম আর ইমরুল দু'জনেই সেঞ্চুরি করে সেই চাপ প্রাথমিকভাবে সামাল দিয়েছেন। এখন বাংলাদেশের সামনে ড্র করার হাতছানি। অন্তত বাজে না খেলে যদি বাংলাদেশ অলআউট না হয় তাহলে এই টেস্ট ড্র-ই হচ্ছে।

বাংলাদেশের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম আজও উইকেট কিপিং করতে পারেননি। তার আঙুলের চোট এখন কমেনি। তবে আশা করা যায় ব্যথানাশক ইনজেকসেন নিয়ে হলেও মুশফিক আগামীকাল ব্যাট করার জন্য তৈরি হবেন। অন্তত পাকিস্তান যেভাবে বাংলাদেশকে একচেটিয়াভাবে টেস্টে চেপে ধরেছিল, বাংলাদেশ এখন সেই অবস্থায় নাই। বাংলাদেশ মোটামুটি এখন চাপমুক্ত। আগামীকাল আরো ২৩ রান করে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে টপকে না যাওয়া পর্যন্ত কোনোভাবেই উইকেট হারানো চলবে না। যদি বাংলাদেশ আরো ২৩ রান না করার আগে উইকেট হারায়, তাহলে আবার ম্যাচ পাকিস্তানের দিকে ঝুঁকে যাবে। আশা করি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা সেই জিনিসটা খুব সচেতনভাবেই মাথায় রাখবেন।

ইতোমধ্যে বাংলাদেশ একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাকিস্তানকে ৩-০ তে হোয়াইট ওয়াশ করে ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে পাকিস্তানকে টপকে ৮ নাম্বার অবস্থানে উঠে এসেছে। যদি বাংলাদেশ ওয়ানডে তে এই ৮ নাম্বার আগামী ২০১৭ সাল পর্যন্ত ধরে রাখতে পারে তাহলে আগামী ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশকে আর বাছাইপর্ব খেলার ঝুঁকি নিতে হবে না। সেক্ষেত্রে বর্তমানে ওয়ানডে তে ৯ নাম্বারে থাকা পাকিস্তানকেই বাছাইপর্ব খেলতে হবে।

বাংলাদেশের বোলারদের এই টেস্টে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। রুবেল আর শাকিব পুরোপুরি ব্যর্থ। নবাগত মোহাম্মদ শহীদ একটি উইকেট পেলেও ডেব্যু টেস্ট এখন পর্যন্ত স্মরণীয় করতে পারলেন না। বাংলাদেশের বোলিং সাইডে এখনো দুর্বলতা রয়েছে। টেস্টের জন্য পাঁচজন স্বীকৃত বোলার বাংলাদেশ এখনো বাছাই করতে পারেনি। এই জায়গায় বাংলাদেশকে আরো উন্নতি করতে হবে।

আজ বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে যেভাবে গুরে দাঁড়িয়েছে তাতে বাংলাদেশ যে টেস্ট ক্রিকেটে ঘুরে দাঁড়াতে জানে সেই বিষয়টি বিশ্ব ক্রিকেটে সবার নজরে আসল। এই ঘুরে দাঁড়ানোটাই টেস্ট ক্রিকেটের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেই কাজটি করে দেখিয়েছে। সেজন্য বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস ধন্যবাদ পেতেই পারে। বলতে গেলে নিশ্চিত হারা ম্যাচকে এই দুই ওপেনার বের করে এনেছেন।

তামিম ইকবাল টেস্টে টানা তিন সেঞ্চুরি করে এখন সুনিল গাভাস্কার ও গ্যারি সোবার্সের পাশে নাম লিখিয়েছেন। সাতটি সেঞ্চুরি নিয়ে তিনিই এখন বাংলাদেশিদের মধ্যে টেস্টে সবচেয়ে বেশি শতকের মালিক। ৬টি টেস্ট সেঞ্চুরি রয়েছে মোহাম্মদ আশরাফুলের। আর ইমরুল কায়েসেরও এটা টানা দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি। এর আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে গত নভেম্বরের চট্টগ্রাম টেস্টে সেঞ্চুরি করেছিলেন ইমরুল।

বাংলাদেশের পক্ষে এর আগে তামিমই প্রথম টানা দুই টেস্টে সেঞ্চুরি করেন। বাংলাদেশের পক্ষে ২০১০ সালে ইংল্যান্ড সফরে লর্ডস আর ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টে তামিম ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি করেছিলেন। তামিম ছাড়া টানা দুই টেস্টে বাংলাদেশের পক্ষে সেঞ্চুরি আছে আর মাত্র দুজনের। ২০১৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চট্টগ্রাম ও ঢাকা টেস্টে টানা সেঞ্চুরি করেন মুমিনুল হক। আর আজকে সেঞ্চুরি করা অপর ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েসের।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওই সিরিজে প্রথমে খুলনায়, এর পর চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি করেছিলেন তামিম। নিজের টানা দুই টেস্টের সেঞ্চুরির কীর্তি নিজেই ছুঁলেন আবার। কিন্তু সেখানেই আটকে না থেকে আজ আবার সেই খুলনাতেই সেঞ্চুরি। এটা নিয়ে তামিমের তিন ম্যাচে তিন সেঞ্চুরি!

টানা তিন টেস্টে সেঞ্চুরির কীর্তি অনেকেরই আছে। এই ম্যাচেই যেমন এই কীর্তি গড়েছেন পাকিস্তানের মোহাম্মদ হাফিজও। তবে জ্যাক হবস, ওয়ালি হ্যামন্ড, হার্বাট সাটক্লিফ, ডেনিস কম্পটন, এভারটন উইকস, গ্যারি সোবার্স, সুনীল গাভাস্কার, ভিভ রিচার্ডস, জহির আব্বাস, মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন, মার্ক টেলর, গ্রাহাম গুচ, ডেভিড বুন, ব্রায়ান লারা, অরবিন্দ ডি সিলভা, মাহেলা জয়াবর্ধনে, মারভান আতাপাত্তু, গ্রায়েম স্মিথ, কুমার সাঙ্গাকারা, ক্রিকেট ইতিহাসে জ্বলজ্বলে এই নামগুলোর পাশে এখন আরো একটা রেকর্ডে থাকবে তামিমেরও নাম।

তবে তামিমের সামনে সুযোগ থাকছে কীর্তিটা আরও বড় করার। টানা চার টেস্টে সেঞ্চুরি আছে মাত্র ১৩ জনের। এঁদের মধ্যে আছেন ডন ব্র্যাডম্যান, উইকস, গাভাস্কারদের মতো সে কালের কিংবদন্তিরা। আছেন টেন্ডুলকার, দ্রাবিড়, ক্যালিস, সাঙ্গাকারা, গ্রায়েম স্মিথদের মতো একালের মহানায়করা। এঁদের মধ্যে ব্র্যাডম্যান, বেরিংটন ও হেইডেন দুবার করে এই কীর্তি গড়েছিলেন।

টানা পাঁচ টেস্টে সেঞ্চুরি আছে মাত্র তিনজনের। জ্যাক ক্যালিস, মোহাম্মদ ইউসুফ ও গৌতম গাম্ভীরের। আর টানা ছয় টেস্টে করা ব্র্যাডম্যানের সেঞ্চুরির কীর্তিটা টিকে আছে ক্রিকেটের ইতিহাসে ৭৭ বছর ধরে!
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা এখন শুধু ভালো খেলে লড়াই করছে না, ধীরে ধীরে নিজেদের রেকর্ডবুকেও স্থান করে নিচ্ছে। কংগ্রাচুলেশন তামিম ইকবাল খান। কংগ্রাচুলেশন ইমরুল কায়েস। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে তোমাদেরই দেওয়ার আছে অনেক কিছু।

চতুর্থ দিন শেষে প্রথম টেস্টের সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৩৩২ ও ২৭৩/০ (তামিম ১৩৮* ও ইমরুল ১৩২*)
পাকিস্তান: ৬২৮ (হাফিজ ২২৪, তাইজুল ৬/১৬৩)
বাংলাদেশ এখনো পাকিস্তানের চেয়ে ২৩ রানে পিছিয়ে হাতে রয়েছে ১০ উইকেট।

জয়তু টাইগার্স। জয়তু বাংলাদেশ ক্রিকেট।
..................................
১লা মে ২০১৫
ঢাকা

Source: TV and Newspapers

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৪

সুফিয়া বলেছেন: টেষ্ট ড্র করায় বাংলাদেশ দলকে বিশেষ করে তামিমকে অভিনন্দন।

আর সফলতা কামনা করি বাংলাদেশ দলের।

২| ০৩ রা মে, ২০১৫ রাত ১২:৪৮

সুমন কর বলেছেন: জয়তু টাইগার্স। জয়তু বাংলাদেশ ক্রিকেট।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.