নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
বইনিউজ২৪ ডট কম-এর উদ্যোগে আজ ঢাকার পরিবাগের সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে পালিত হলো আবুল হাসান-এর ৭০তম জন্মোৎসব। উৎসবে কবি আবুল হাসান-এর কবিতা আবৃত্তিসহ কবিকে নিবেদিত কবিতা পাঠ ও স্মৃতিচারণ করেছেন কবি আবুল হাসানের ভক্তকুল। কবি আবুল হাসানের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বন্ধু কবি মুহাম্মদ নুরুল হুদা ষাট ও সত্তর দশকের সেই সব তারুণ্যময় সময়ের স্মৃতিচারণ করেন। কবি'র জন্মদিন উপলক্ষ্যে বইনিউজ কবি আবুল হাসানের বই নিয়ে সংক্ষিপ্ত পরিসরে করেছিল বইমেলা।
বাংলা সাহিত্যে জীবনানন্দ দাশ পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে আলোচিত ও তারুণ্যের কবি বলা হয় আবুল হাসানকে। মাত্র আঠাশ বছরের জীবনে তিনটি কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে কবি'র জীবদ্দশায়। 'রাজা যায় রাজা আসে' (১৯৭২), 'যে তুমি হরণ করো' (১৯৭৪) ও 'পৃথক পালঙ্ক' (১৯৭৫)। কবি'র মৃত্যুর পর ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত হয়েছে কাব্যনাটক 'ওরা কয়েকজন' ও ১৯৯০ সালে প্রকাশিত হয়েছে গল্পসমগ্র 'আবুল হাসান গল্প- সংগ্রহ'। এরপর প্রকাশিত হয়েছে আবুল হাসান রচনা সমগ্র।
এত অল্প লিখেও বাংলা সাহিত্যে কবি আবুল হাসান এক বিশাল জায়গা দখল করেছেন। কবি আবুল হাসানকে বলা হয় বাংলা সাহিত্যের ক্ষুধার্ত সিংহ। যে কোনো তরুণ কবিকে আবুল হাসানের সেই তারুণ্যের উচ্ছ্বলতা, দাহ ও মাদকতা, দুঃখ ও রহস্যময়তাকে পাড়ি দিয়ে আসতে হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র ছিলেন আবুল হাসান। অনার্স শেষ না করেই সাংবাদিকতায় যোগদান করেন। কবি ছাত্রাবস্থায় প্রমে পড়েছিলেন ইংরেজি বিভাগের সুন্দরী প্রভাষিকা সুরাইয়া খানমের। এই নিয়ে কবি'র বন্ধুদের অনেক গল্প মিথ-এর পর্যায়ে পৌঁছেছে। ষাটের দশকের শেষের দিকে ও সত্তরের দশকের শুরুতে 'কবি আবুল হাসান ও কবি নির্মলেন্দু গুণ' এই বন্ধু জুটিকে বলা হতো সেরা বহেমিয়ান।
আজকে কবি আবুল হাসানের জন্মোৎসবে কবি'র কবিতা আবৃত্তি করেন রূপা চক্রবর্তী, নাজমুল আহসান, মাসুম আজিজুল বাসার, তামান্না সারোয়ার নিপা, ইকবাল আহমেদ, লুলুয়া ইসহাক মুন্নি, মিসবাহিল মোকার রাবিন ও পলি পারভীন। কবি আবুল হাসানকে নিবেদিত স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন ডা. ফায়জুল হাকিম, মুজতবা আহমেদ মুরশেদ, মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক, নীল সাধু, মাহবুব আলম প্রমুখ।
কবিকে নিয়ে দীর্ঘ স্মৃতিচারণ করেন কবি'র বন্ধু কবি মুহাম্মদ নুরুল হুদা, কবি ফরিদা মজিদ। এছাড়া বইনিউজ সম্পাদক রবীন আহসান ও রেজা ঘটক কবিকে নিয়ে মজার ঘটনা শেয়ার করেন। কবি মুহাম্মদ নুরুল হুদা'র বাছাই করা আবুল হাসানের কয়েকটি কবিতা আবৃত্তি করেন ফরিদা মজিদ। এছাড়া কবি আবুল হাসানের যেসব কবিতা কবি মুহাম্মদ নুরুল হুদা পছন্দ করেন, তিনি সেগুলো আবৃত্তি করেন।
শ্রাবণ সন্ধ্যায় আজ হয়তো কবি আবুল হাসানের জন্মদিনের কারণেই ঢাকায় বৃষ্টি ছিল না। তাই সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রের ছাদে কবি আবুল হাসানকে নিয়ে আমরা মেতে উঠেছিলাম অন্যরকম এক আড্ডায়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গেই বলতে হয়, বাংলা সাহিত্যে কবি আবুল হাসানের জন্ম বা মৃত্যু দিবস যেখানে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা উচিত, সেখানে আমাদের বাংলা একাডেমি আজ ঘুমিয়ে ছিলেন। অথচ কোনো বাইবেলে লেখা নাই যে কেবল রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের জন্ম-মৃত্যু দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করতে হবে। আমাদের বাংলা একাডেমি কেবল রবীন্দ্র নজরুলের বাইরে আর কোনো কবি-সাহিত্যিকের জন্য কোনো উৎসব করতে পছন্দ করে না। এখানেই এই রাষ্ট্রের সাংস্কৃতিক সংকট।
অথচ রবীন্দ্র নজরুলের পাশাপাশি জীবনানন্দ দাশ, সুকান্ত ভট্টাচার্য, আবুল হাসান, রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ'র মত কবিদের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে অনুষ্ঠান পালন করা উচিত। নইলে নতুন প্রজন্ম সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চা থেকে কী শিখবে? এ কারণেই হয়তো কবি আবুল হাসান লিখে গেছেন- ঝিনুক নীরবে সহো, ঝিনুক নীরবে সহো, ঝিনুক নীরবে সহে যাও, ভিতরে বিষের বালি, মুখ বুঁজে মুক্তা ফলাও! জয়তু আবুল হাসান। জয়তু বাংলা সাহিত্য।
-----------------------------
ঢাকা
৪ আগস্ট ২০১৭
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:৫২
চাঁদগাজী বলেছেন:
উনি সামুতে লিখলে ভালো হতো; নতুন কবিরা উৎসাহিত হবেন