নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
এবারের অমর একুশে বইমেলায় বাংলা একাডেমি'র একটি নান্দনিক আয়োজন 'লেখক বলছি' মঞ্চ। প্রতিদিন এখানে পাঁচ জন লেখককে একজন সঞ্চালক উপস্থাপন করেন পাঠকদের সামনে। সঞ্চালক ও পাঠক উভয়ই উপস্থিত লেখককে তার লেখালেখি নিয়ে প্রশ্ন করতে পারেন।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উত্তর-পূর্ব কর্নারে খোলা আকাশের নিচে একটি সুন্দর সাজানো মুক্তমঞ্চ। প্রতিদিন বিকাল ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত 'লেখক বলছি' মঞ্চে পাঁচ জন লেখকের সাথে পরিচিত হবার সুযোগ পাচ্ছেন দর্শকরা। এবারের বইমেলায় উদ্যানের স্টল নকশার পাশাপাশি এই 'লেখক বলছি' মঞ্চের জন্য বাংলা একাডেমি ধন্যবাদ পাবার যোগ্য।
তবে আমি মনে করি, মঞ্চের নামকরণ 'কাঠগড়ায় লেখক' হলে আরো ভালো হতো। কারণ লেখককে আসলে পাঠকের কাঠগড়ায় মুখোমুখি করানো হচ্ছে একজন সঞ্চালকের মাধ্যমে। লেখক এখানে জবাবদিহি করতে মঞ্চে উঠছেন। পাশাপাশি এই অনুষ্ঠানটি একটি এফএম রেডিও-তে লাইভ প্রচারের ব্যবস্থা করলে, এটি আরো আকর্ষণীয় হতো। টেলিভিশনে লাইভের চেয়ে রেডিওতে লাইভ হলে বাসার বাইরে দূরে বসেও রেডিও'র শ্রোতারা এই অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারতেন।
রাস্তাঘাটে বসে যেহেতু টেলিভিশন দেখার সুযোগ নাই, কিন্তু অনেক মানুষের সাথে লেখককে পরিচিত করানোর একটা সুযোগ হতে পারে, যদি এই অনুষ্ঠানকে একটি এফএম রেডিও-তে সরাসরি প্রচার করানোর ব্যবস্থা করা যায়। টেলিভিশনে লাইভ করাও যেতে পারে, তবে সেটা গতানুগতিক হয়ে যায়। বরং রেডিও-তে প্রচারের ব্যবস্থাটি আরো বেশি শ্রোতা টানতে পারতো।
দ্বিতীয় আরেকটি ব্যাপার করা যেতো- একজন নির্ধারিত সঞ্চালকের পরিবর্তে ওই নির্দিষ্ট লেখকের লেখালেখি'র সাথে পরিচিত এমন কাউকে দিয়ে সঞ্চালনার কাজটি করাতে পারলে। তখন দর্শক-শ্রোতা সেই লেখক সম্পর্কে আরো সুস্পষ্ট ধারণা পেত। নতুবা সবার জন্য গতানুগতিক প্রশ্ন হয়ে যাচ্ছে। মঞ্চে আগত লেখকের ভেতরটা চেনানোর জন্য অবশ্যই তার লেখা পড়া আছে এমন কাউকে দিয়েই সূক্ষাতিসূক্ষ প্রশ্ন ছুড়ে আলোচনা আরো জমানোর সুযোগ হতো।
তৃতীয় আরেকটি বিষয় করা যেত- যখন যে লেখক কাঠগড়ায় তখন উপস্থিত দর্শকদের মধ্যে সেই লেখকের একটি সংক্ষিপ্ত জীবনবৃত্তান্ত বিলি করা। এতে দর্শকরা লেখকের কোনো বই সম্পর্কে জানার জন্য তাৎক্ষণিক প্রশ্ন করার সুযোগ পেত। এজন্য অবশ্য লেখক তালিকাটি বইমেলা শুরু হবার আগেই ঠিক করতে হবে। সাথে লেখকের সেই সংক্ষিপ্ত পরিচিতি (বই বিষয়ক) লেখক থেকে সংগ্রহ করে সেটি অন্তত ১০০টি ফটোকপি করা, যাতে দর্শকদের মধ্যে বিলি করা যায়।
বাংলা একাডেমি'ন মূল মঞ্চে একজন কবি একটি কবিতা পড়ে দুই হাজার টাকা পাচ্ছেন। ভবিষ্যতে 'লেখক বলছি' মঞ্চে একজন লেখকের জন্যও অনুরূপ সম্মানির ব্যবস্থা করা উচিত। কারণ একজন লেখক বাংলা একাডেমি'র আমন্ত্রণে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ২০/৩০ মিনিট দর্শকদের মুখোমুখি কথা বলছেন। তার একটা সম্মানি থাকা উচিত। যিনি সঞ্চালনা করবেন, তারও একটি সম্মানি থাকা উচিত। ৫ মিনিটে একটি কবিতা পড়ে যদি দুই হাজার টাকা পায়, তাহলে ২০/৩০ মিনিট বকবক করে অন্তত পাঁচ হাজার টাকা পাওয়া উচিত।
'লেখক বলছি' মঞ্চে কোনদিন কোন লেখক কথা বলবেন, তাদের নাম বাংলা একাডেমি'র প্রচার কেন্দ্র থেকে অনুষ্ঠান শুরু হবার আগে কয়েকবার প্রচার করা উচিত। নইলে কখন কে আলোচনা করছেন, বইমেলার মাঠের দর্শক-শ্রোতারাই টের পান না। মুখে মুখে জানানোর চেয়ে প্রচার কেন্দ্র থেকে এই ঘোষণাটি প্রচার করলে অনুষ্ঠান আরো জমজমাট হতে পারে।
বইমেলা শুরুর আগেই অন্তত ২৫ জানুয়ারির মধ্যে এই মঞ্চের জন্য লেখকদের তালিকা তৈরি করতে হবে। কে কার অনুষ্ঠানে সঞ্চালক, সেই তথ্যটিও আগে জানিয়ে দিলে দু'জনে আগেই অনুষ্ঠানের আলোচনার বিষয় নিয়ে পূর্ব প্রস্তুতির সুযোগ পেতে পারেন। এভাবে নানান কায়দায় 'লেখক বলছি' মঞ্চকে সাজানো সম্ভব। বাংলা একাডেমি এবছর শুরু করেছে সেজন্য ধন্যবাদ। আগামীতে আরো গুছিয়ে একে একটা ছকে ফেলতে পারলে এই অনুষ্ঠানটি আরো জনপ্রিয় ও কার্যকর হবে বলে আমি মনে করি।
----------------------
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
রেজা ঘটক
কথাসাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা
২| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:৫৯
সুমন কর বলেছেন: সুন্দর এবং গ্রহণযোগ্য বলেছেন। বাকিটা কর্তৃপক্ষের ভেবে দেখা দরকার।
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: ১০০% সহমত।