নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিবু\'দার ভাতের হোটেল-৪!

০২ রা জুন, ২০১৯ রাত ২:২৮

শিবু'দার হোটেলে আমি যে টেবিলে বসেছি, সেখানে আরো তিন ছোকরা বসেছে। টিনেজ তিন বন্ধু তর্ক করছে ক্রিকেট খেলা নিয়ে। সবচেয়ে স্মার্ট ভাবসাব যার, সে দাবি করলো- ইন্ডিয়া তো গত ম্যাচে হেরেছে। অন্য একজন বললো, বিশ্বকাপে এখনো ইন্ডিয়ার কোনো ম্যাচ হয়নি। স্মার্টবয় বললো, বাজি লাগবি? ব্ল্যাকবয় বললো, লাগা বাজি! তৃতীয় যে বালক এতক্ষণ চুপচাপ বসেছিল, সে বললো, দো-ডিম+দো-রুটি'র রোল। কী বাজি পাক্কা তো? স্মার্টবয় ও ব্ল্যাকবয় মাথা নাড়িয়ে সায় দিল। পাক্কা। লম্ফুবয় বললো- শিবু'দা, ডাবল রুটি ডাবল ডিমের তিন রোল দাও!

এবার নেট ঘেটে খেলার বিবরণ দেখার পালা। স্মার্টবয় নিজের মোবাইল থেকে আইসিসি ওয়ার্ল্ডকাপ পেজ বের করে খেলার বিবরণ পড়া শুরু করলো! প্রথম ম্যাচ: ইংল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা। দক্ষিণ আফ্রিকা টস জিতে ফিল্ডিং নিল। প্রথমে ব্যাট করে ইংল্যান্ড করেছে ৫০ ওভারে ৮ ইউকেট হারিয়ে ৩১১ রান। বেন স্টোকস ৭৯ বলে ৮৯ রান। লু্ঙ্গি ৬৬ রানে ৩ উইকেট। জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাট করতে নেমে ৩৯.৫ ওভারে সবগুলো উইকেট হারিয়ে করেছে ২০৭ রান। ডি-কক ৭৪ বলে ৬৮ রান এবং আর্চার ২৭ রানে ৩ ও বেন স্টোকস ১২ রানে ২ উইকেট। ইংল্যান্ড ১০৪ রানে বিজয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ বেন স্টোকস (ইংল্যান্ড)।

ব্ল্যাকবয় ফোড়ন কাটল- কীরে তোর কী এখনো মনে হয় ইন্ডিয়া হেরেছে? ধুর শালা খাঁড়া। আগে সব পড়েনি। স্মার্টবয় আবার পড়া শুরু করলো। দ্বিতীয় ম্যাচ: ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম পাকিস্তান। টস জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। পাকিস্তান ২১.৪ ওভারে ১০৫ রানে অলআউট। ফকার জামান ও বাবর আজম দুজনে সর্বোচ্চ ২২ রান করে করেন। ওসানে থমাস ২৭ রানে ৪ উইকেট। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৩.৪ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে করে ১০৮ রান। ক্রিস গেইল ৩৪ বলে ৫০ রান। মোহাম্মদ আমির ২৬ রানে ৩ উইকেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭ উইকেটে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ ওসানে থমাস (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)।

ব্ল্যাকবয় আবারো কনফিডেন্টলি ফোড়ন কাটলো- শালা আর কত পড়বি? স্মার্টবয় অবিচল থেকে আবারো পড়া শুরু করলো। তৃতীয় ম্যাচ: নিউজিল্যান্ড বনাম শ্রীলংকা। নিউজিল্যান্ড টস জিতে ফিল্ডিং নেয়। শ্রীলংকা ২৯.২ ওভারে ১৩৬ রানে অলআউট। করুণারত্নে ৫২ রান। ফার্গুসন ২২ রানে ৩ ও হেনরি ২৯ রানে ৩ উইকেট। জবাবে নিউজিল্যান্ড ১৬.১ ওভারে বিনা উইকেটে ১৩৭ রান। গুপতিল ৫১ বলে ৭৩ রান ও মুনরো ৪৭ বলে ৫৮ রান। নিউজিল্যান্ড ১০ উইকেটে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ ম্যাথিউ জেমস হেনরি (নিউজিল্যান্ড)।

ব্ল্যাকবয় আবারো ফোড়ন কাটলো- শালা আরো পড়বি? খাঁড়া, আগে পড়া শেষ করি। চতুর্থ ম্যাচ: অস্ট্রেলিয়া বনাম আফগানিস্তান। আফগানিস্তান টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। আফগানিস্তান ৩৮.২ ওভারে ২০৭ রানে অলআউট। নাজিবুল্লাহ ৫১ রান। কামিন্স ৪০ রানে ৩ ও জাম্পা ৬০ রানে ৩ উইকেট। জবাবে অস্ট্রেলিয়া ৩৪.৫ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ২০৯ রান। ডেভিড ওয়ার্নার ৮৯ ও ফিঞ্চ ৬৬ রান। অস্ট্রেলিয়া ৭ উইকেটে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ ডেভিড ওয়ার্নার (অস্ট্রেলিয়া)।

ব্ল্যাকবয় আবারো ফোড়ন কাটলো- আরো পড়বি? আরেকটু খাঁড়া। স্মার্টবয় পড়া শুরু করলো- পঞ্চম ম্যাচ বাংলাদেশ বনাম দক্ষিণ অফ্রিকা আগামীকাল বেলা ৩টায়। ষষ্ঠ ম্যাচ ইংল্যান্ড বনাম পাকিস্তান ৩ জুন বেলা ৩ টায়। ধুস শালা। হেরে গেলাম। তাইলে ওইটা কোন ম্যাচ ছিলরে? ইন্ডিয়া যে হারলো? জবাবে ব্ল্যাকবয় বললো, ওইটা প্রাকটিস ম্যাচ। শালা ক্রিকেট নিয়ে আমার সাথে আর কখনো বাজি ধরবি?

স্মার্টবয় হেসে দিয়ে বললো, শোন সেদিন রাতে এক লোক ফোন করেছে। জিজ্ঞেস করলো, কে জিতেছে? বললাম পাকিস্তান। ওই ব্যাটা আমারে কয়- মাদারচোদ, তোরে ঠ্যাঙ্গিয়ে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেব শালা শুয়োরের বাচ্চা। কে জিতেছে আবার বল? বললাম- পাকিস্তান। ওই শালা কিসব গালাগালি যে দিল। কয় তোরে খুঁজে বের করে ঠ্যাঙ্গাবো। দাঁড়া তোদের একটা ভিডিও দেখাই। স্মার্টবয় একটা ভিডিও বের করে তিন বন্ধু ঝুকে দেখতে লাগলো। এই সময় শিবু'দা ওদের তিনজনকে তিন রোল দিয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করলো, দাদা কী খাবা?

জবাবে আমি বললাম, তুমি বলো, ভাত না রুটি? কোনটা ভালো হবে? শিবু'দা বললো, রুটি খাও। শিবু'দা রুটি বানাতে চলে গেল। পাশের টেবিলে এসে বসেছে একজোড়া ইয়ং কাপল। মেয়েটি নাকে কান্না করে বলছে, আমার খুব খিদা পাইছে। কিছু খাওয়া নাহ? দেখিস, আর এক বছরেও তোর সাথে দেখা করব না। তুই আমাকে কিচ্ছু খাওয়াতে চাস না। আর যদি তোর সাথে বের হই, আমার নামে কুত্তা পালিস। শালা কিপটে!

মেয়েটি ঘুরে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া আরেকটি মেয়েকে ডাক দিল। এরে কই যাচ্ছিস? তুই একা? আয় না? দ্যাখ না, ওকে বললাম কিছু খাওয়া। শালা একটা কিপটে। আমাকে কিচ্ছু খাওয়ায় না। আমার খুব খিদে লাগছে। মেয়েটি কাছে এসে জানতে চায়- তোরা কখন এলি? কী খাবি বল? নাকিকণ্ঠের মেয়েটি বললো, তেঁতুল খাবো! তোর হাতে ওটা কীরে?

মেয়েটির হাত থেকে কাগজ নিয়ে নাকিকণ্ঠী তার বয়ফ্রেন্ডকে বললো, পড় তো কি লিখছে? ছেলেটি কাগজ হাতে নিয়ে বানান করে পড়ার চেষ্টা করলো। ধুস শালা হিন্দি ইংলিশ বাংলা! এত কিচ্ছু একসাথে পড়া যায়? নে তুই পড়! আমি পারব না! জবাবে নাকিকণ্ঠী বললো, এই জন্য তোরে বিয়ে করলে আমার কপাল পুড়বে। শালা কিচ্ছু পড়তেও পারিস না। শিবু'দাকে বল না। আমার খুব খিদে পেয়েছে।

এবার মেয়েটির বান্ধবী বললো, ছেলেকে পড়াতে নিয়ে গেছিলুম। ততক্ষণে ছেলে আর ছেলের বাবা মটর সাইকেলে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলো। ছেলের মা পেছনে থেকে ডাক দিল- বাবু এদিকে আয়। আমি এখানে। মটর সাইকেল থামতেই ছেলেটি দৌড়ে ভিতরে ঢুকলো। ছেলের বাবাকেও ওরা ডেকে ভিতরে বসালো। ততক্ষণে শিবু'দা আমার খাবার প‌্যাকেট করে দিয়ে গেল। এখন আর খামাখা বসে থাকার সুযোগ নাই। আমি শিবু'দাকে খাবারের দাম দিয়ে হাঁটা ধরলাম।

-------------------- চলবে-----------------------

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জুন, ২০১৯ সকাল ৯:৫৫

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: সুন্দর লাগছে পড়তে :)

চলুক.....

২| ০২ রা জুন, ২০১৯ দুপুর ২:৪৮

রাজীব নুর বলেছেন: মনে হলো যেন কোলকাতার কোনো লেখকের লেখা পড়লাম।

৩| ০২ রা জুন, ২০১৯ বিকাল ৪:৪১

চাঁদগাজী বলেছেন:


লেখা খেই হারাচ্ছে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.