নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
সেমি-ফাইনালে কিউইদের কাছে ভারতের হারের কারণগুলো আমার মতে এরকম-
১. ৪৬.১ এভারে নিউজিল্যান্ড আগেরদিন করেছিল ২১১/৫। অবশিষ্ট ২৩ বলে কিউইরা ৩ উইকেট হারিয়ে ২৮ রান নিয়েছে। এখানে ভারতীয় বোলাররা অন্তত ১০/১২ রান বেশি দিয়েছে।
২. দ্বিতীয় ওভারে (১.৩) রোহিত শর্মা আউট হবার পর বিরাট কোহলি'র আরো সতর্ক ব্যাটিং করা উচিত ছিল। সেখানে কিউইদের পাতানো ফাঁদে বিরাট এলবিডব্লিউ (২.৪ ওভারে)।
৩. তৃতীয় ওভারে বিরাটের আউটের পর চতুর্থ ওভারে রাহুল হেনরি'র বলে যেভাবে শিক্ষানবিশের মত ক্যাচ দিয়েছে, এটা একদম মানা যায় না। কারণ রাহুলের এই সময় দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করার কথা! সেখানে ভারতের স্কোর ৫/২ থেকে মুহূর্তে ৫/৩ হয়ে গেল!
৪. গোটা টুর্নামেন্টে ভারত ৪ নাম্বার ব্যাটসম্যান নিয়ে নানান কিসিমের পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছে। ভারতের মত একটি শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের এটা কোনো দরকার ছিল না। দলের ৫ রানে প্রধান তিন ব্যাটসম্যান আউট। এরকম সময় ভারতের হিসাবে একটু ভুল ছিল। অভিজ্ঞ কাউকে ৫ নাম্বারে পাঠানো উচিত ছিল। ঋষব এবং দীনেশকে ৪ ও ৫ নাম্বারে ব্যাট করানোর কারণে ভারত সেই ঝুঁকিতেই ছিল।
৫. কারণ ৫ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর ভারতের পাল্টা আক্রমণের পরিবর্তে তারা ব্যাকপুটে চলে যায়। কিউই বোলাররা তখন আরো বাড়তি চাপ তৈরি করার সুযোগ পেয়েছে। ৫ নাম্বারে এমএসকে পাঠালে ভারতের ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন হতো। পাশাপাশি ক্রিজে একজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় থাকতো। যিনি সামনে থেকে ভারতের তরুণ ব্যাটসম্যানকে বুদ্ধি দিয়ে, সাহস দিয়ে ম্যাচে টিকে থাকার মন্ত্র দিতে পারতো। সেখানে দীনেশকে পাঠিয়ে চরম ভুল করেছে।
৬. দশম ওভারের শেষ বলে দীনেশ কার্তিক যখন আউট হলো, তখন মূলত ভারতের বিশ্বকাপ মিশন মোটামুটি শেষ! তারপর পঞ্চম উইকেট জুটিতে ঋষব আর হার্দিক যখন একটু ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলো, তখন কিন্তু ভারত আবার রান পেতে শুরু করলো। কিন্তু এই দুই ব্যাটসম্যানের এত বড় ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা নাই। ফলে ১২ ওভারের বেশি তারা স্থায়ী হলো না। ২৩তম ওভারের ৫ম বলে ঋষব যেভাবে ক্যাচ দিয়ে আউট হলো, তা আসলে ভারতকে আরো ব্যাকপুটে ঠেলে দিল। ৭১ রানে ৫ উইকেট!
৭. এরপর এমএস ক্রিজে এসে যা করতে শুরু করলেন, এটা উচিত ছিল ৫ নাম্বারে এসে। হার্দিক আর এমএস মিলে একটা পার্টনারশিপ গড়ার মুহূর্তে আবারো বিপর্যয়। এবার ৩১তম ওভারের তৃতীয় বলে হার্দিক আউট! ৯২ রানে ৬ উইকেট!
৮. এবার এমএসের সাথে যোগ দিলেন রবীন্দ্র জাদেজা। এই জুটির অনেক ক্রাইসিস মোমেন্ট সামাল দেবার অভিজ্ঞতা আছে। কালও তারা সেই চেষ্টা করলেন। জাদেজার ৫৯ বলে ৭৭ রানের ইনিংসটি হতে পারতো ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম একটি সেরা ইনিংস। এই জুটি ১০৬ বলে ১১৬ রান করেছে। ৭ম উইকেট জুটিতে এভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর রেকর্ড ক্রিকেট ইতিহাসে খুব কম। কিন্তু দুর্ভাগ্য যেদিন পিছু নেয় সেদিন আর কিছুই করার থাকে না। ৪৮তম ওভারে জাদেজা বোল্টের বলে যেভাবে কিউই ক্যাপ্তেন উইলিয়ামসনের হাতে ধরা পড়লেন, ওখানেই আসলে ভারতের ম্যাচ শেষ।
৯. এখানে আরেকটিড বিষয় একটু লক্ষণীয় যে জাদেজা যেভাবে খেলেছে, এমএস আরেকটু কম বল নষ্ট করে রানের চাকা গতিতে রাখলে দূরত্ব কমে আসতো। কিন্তু একটা জিনিস স্বীকার করতে হবে এমএস ধনির এখন বয়স হয়েছে। এখন আর সেই হেলিকপ্টার শটে দর্শকদের যখন তখন খুশি করার মত শক্তি তার ঝুলিতে তেমন নাই। নতুবা জাদেজার মত এমএস যদি মাঝে মাঝে দু'একটা বাউন্ডারি ওভার বাউন্ডারি মারতে পারতেন, তাহলে ম্যাচ ভারতের অনুকুলে চলে আসতো।
১০. ৪৯তম ওভারের তৃতীয় বলে এমএস যখন রান আউট হলেন, কার্যত তখনই ভারতের শেষ পেরেকটি নিভে গেল। ১০ বলে তখন প্রয়োজন ২৫ রান। এমএস ক্রিজে থাকলে ভারতের আশা তখনো ছিল। কিন্তু এমএস যে ৫ সেমি দূরত্বে আটকে গেল সেটা একটা দুর্ভাগ্য! গোটা টুর্নামেন্টে খারাপ খেলা মার্টিন গাপ্টিল যে ডিরেক্ট থ্রোটা করলেন, এটা এবারের বিশ্বকাপে সেরা অঘটন!
১১. ভুবনেশ্বর কুমার, চাহাল আর বুমরার পক্ষে অবশিষ্ট ৯ বলে ২৪ রান নেবার মত কোনো সামর্থ্য ছিল না। বরং চাহালের জায়গায় সামি একাদশে থাকলে একটা সুযোগ হয়তো থাকতে পারতো। কিন্তু ৪৯তম ওভারের শেষ বলে কুমার আউট হবার পর শুধু আনুষ্ঠানিকতা বাকি ছিল। যা ৫০তম ওভারের তৃতীয় বলে নিশাম চাহালকে আউট করে অলআউট করে দিল ভারতকে।
১২. ২০১৫ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার কাছে সেমি-ফাইনালে হারের পর এবারো সেমিতে কিউইদের কাছে হার ভারতের জন্য নতুন সমীকরণ হয়ে যাচ্ছে কী? দক্ষিণ আফ্রিকার মত ভারত কী বিগ ম্যাচে গুটিয়ে যাবার জায়গায় চলে যাচ্ছে! নতুবা রোহিত-বিরাটরা বড় ম্যাচে এভাবে দলকে ডোবাবেন কেন?
১৩. আগামী ২০২৩ বিশ্বকাপ ভারত খেলবে নিজেদের ঘরের মাঠে। এখনই যদি ভারত সেই লক্ষ্যে নিজেদের প্রস্তুত না করে, তাহলে ঘরের মাঠেও বিরাটদের স্বপ্নভঙ্গ হবে কিনা্ কে বলতে পারে।
২| ১১ ই জুলাই, ২০১৯ দুপুর ১:০৬
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ভাল বিশ্লেষণ,কালকের দিনটা ভারতের ছিল না।
৩| ১১ ই জুলাই, ২০১৯ দুপুর ২:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: চমৎকার বিশ্লেষন করেছেন।
৪| ১১ ই জুলাই, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩০
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: সুন্দর।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ১১:৩৫
অগ্নিবেশ বলেছেন: এই পোষ্টে মারাইলামু কাট্টাইলামু মওকা টওকা বিদ্বেষ বিষ নাই, তাই কেউ কমেন্ট পাইবেন না।