নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

অমর একুশে বইমেলার ডায়েরি-৬

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ২:৩১

ফেব্রুয়ারি'র প্রথম শুক্রবার অমর একুশে গ্রন্থমেলায় সকাল থেকেই ছিল প্রচণ্ড ভীড়। সকালে ছিল ছোট্ট সোনামণিদের জন্য শিশুপ্রহর। সকালটা ছোটদের থাকলেও বিকালটা ছিল বড়দের। বইমেলায় যতোটা ভীড় ছিল, সে তুলনায় বই বিক্রি খুব একটা হয়নি। বেশিরভাগ মানুষ বইমেলায় যাচ্ছে ঘুরতে! বই কেনার চেয়ে এরা ভীড় করতে আর ছবি তুলতেই বেশি উৎসাহী। এই জেনারেশন বই পড়ার চেয়ে স্যোশাল মিডিয়ায় বেশি সময় কাটায়। তাই স্যোশাল মিডিয়ার কনটেন্টের জন্য এরা ভীড় জমায় বইমেলায়। এ বড় আজব এক জেনারেশন!

তবুও আশার কথা এই আজব কিসিমের জেনারেশন থেকেও অনেকে লেখালেখি করছে। অনেকে পড়াশোনাকে চর্চা হিসেবে নিয়েছে। লেখালেখি যে মোটেও সৌখিন কোনো বিষয় নয়, এটা যে পরম সাধনার একটি বিষয়, এটা এই জেনারেশ যতক্ষণ বুঝতে না পারবে, ততদিন এদেরকে নিয়ে হতাশার ব্যাপার তো রয়েছেই!

এবারের অমর একুশে বইমেলার সর্বকনিষ্ঠ প্রকাশক রুম্মান তার্শফিক। রুম্মান ডাক্তারি পড়লেও প্রকাশক হবার স্বপ্ন ওর ছোটবেলা থেকেই। ওর পেন্ডুলাম প্রকাশনীটা ও সাজিয়েছে সম্পূর্ণ নিজের নতুন নতুন আইডিয়া দিয়ে। রুম্মান একদিন পেঙ্গুইনের মত বড় প্রকাশনা দেবার স্বপ্ন লালন করে হৃদয়ে। আর এজন্য ও দুনিয়ার সকল বড় বড় প্রকাশনার খবরাখবর এখনই রাখতে শুরু করেছে। চীনে কীভাবে বাংলা ভাষার বই নানান উদ্যোগে পাঠানো যায়, তাই নিয়ে ও এখনই ভাবছে। রুম্মানের জন্য শুভ কামনা।

রুম্মানের মত নতুন প্রজন্মের যারা লেখালেখিতে খুব সিরিয়াস, তাদের একজন ঔপন্যাসিক আহমেদ ইশতিয়াক। ইশতিয়াকের উপন্যাস তরুণদের খুব প্রিয়। এবছর এক রঙা এক ঘুড়ি থেকে এসেছে ইশতিয়াকের নতুন উপন্যাস 'রাত বলেছে যাই'। গতবছর ওর জনপ্রিয় উপন্যাস ছিল 'মরিবার হলো তার সাধ'। এছাড়া এখনও ভালোই বিক্রি হচ্ছে 'কোনোদিন জাগিবে না আর' এবং 'খণ্ড খণ্ড ৎ' উপন্যাস দুটো।

কয়েকদিন আগে অ্যাকসিডেন্ট করে পা ভেঙেছে ইশতিয়াক। প্লাস্টার খোলার পর ব্যান্ডেজ নিয়েই ক্রাচে ভরদিয়ে রোজ বইমেলায় আসছে ইশতিয়াক। বইয়ের প্রতি এই যে প্রেম, এটাই ওর সাধনা। বইমেলায় এখন একজন 'ক্রাচের লেখক' হিসেবে দেখা মিলছে রোজ আহমেদ ইশতিয়াকের। ইশতিয়াকের জন্যও শুভ কামনা।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বইমেলায় প্রবেশের মুখে সবাইকে খুব চেক করেন। সিগারেট-লাইটার পেলে রেখে দেন। কিন্তু বইমেলায় একটি অসাধু চক্র পাঁচশো ও এক হাজার টাকার জাল নোট নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের এই অসাধু উপায়ের বিড়ম্বনায় পড়ছেন প্রকাশকরা। বিশেষ করে রুম্মানের মত ছোট প্রকাশকরা যখন একই দিনে দুইটা জাল এক হাজার টাকার নোট এবং দুইটা জাল পাঁচশো টাকার নোটের শিকার হয়, তখন এটা ছোট প্রকাশক হিসেবে রুম্মানের জন্য অনেক কষ্টের একটা বড় ক্ষতির কারণ!

আশা করব, বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ এই জাল নোটের ব্যাপারে প্রকাশকদের জন্য একটা উপায় ভেবে বের করবে। বইমেলায় প্রবেশের জন্য সোহরাওয়াদী উদ্যান থেকে আরেকটা গেট থাকা খুব জরুরি। অনেককেই ভুল করে ছবিরহাট বা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট থেকে উদ্যানে ঢুকে আবার ঘুরে টিএসসি থেকে বইমেলায় ঢুকতে হচ্ছে। বাংলা একাডেমি'র উচিত খুব শিঘ্রই উদ্যানের পাশ থেকে একটি প্রবেশ পথ চালু করা। পুলিশ নিজেদের সুবিধার জন্য উদ্যানের প্রবেশ পথটি দ্বিতীয় দিনেই বন্ধ করে দিয়েছে। এটা আবার চালু করা হোক।

এবারের বইমেলা যিনি ডিজাইন করেছেন কবি-গীতিকার-আর্কিটেক্ট ও নির্মাতা এনামুল করিম নির্ঝর ভাই, স্বয়ং তিনিও আজ আমাদের সাথে আড্ডার সময় এটা নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করলেন। বইমেলার যেভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, প্রতিটি সারির শুরু ও শেষ মাথায় স্টল নাম্বারের সিরিয়াল সম্বলিত মানচিত্র থাকাটা খুব জরুরি। অনেকের ভীড়ের মধ্যে সুনির্দিষ্ট স্টল খুঁজতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। কারণ এবার বইমেলা গ্লাস টাওয়ারকে ঘিরে পুরো লেকপার জুড়ে। ফলে এত বিশাল জায়গা জুড়ে প্রতি সারি স্টল ও প‌্যাভেলিয়নের সুনির্দিষ্ট মানচিত্র থাকা দরকার। নতুবা এটা বইপ্রেমীদের জন্য স্টল খোঁজায় বিড়ম্বনা দিচ্ছে।

আজকে লিটলম্যাগ কর্নারে নির্ঝর ভাই ও অপি করিম যুগলের সাথে আমাদের দীর্ঘ আড্ডা হলো। চিরতরুণ এই ফড়িং যুগল আজ আড্ডায় ছিলেন খুব প্রাণবন্ত! আড্ডায় অন্য যেসব কমরেড আজ উপস্থিত ছিলেন তারা হলেন আহমাদ মাযহার, টোকন ঠাকুর, রেজা ঘটক, খন্দকার সুমন, মিছিল খন্দকার, সাহাদাত পারভেজ অঞ্চল, চারু পিন্টু, নীল সাধু, শিমুল, মেঘ, সুমন, শাফি সমুদ্র, মিঠা মামুন, মারিয়া, শ্যামসুন্দর দা, অন্ত আজাদ, সন্দীপ বিশ্বাস, লক্ষী, মাসুম ভাই, গীতা বৌদি, মেহেদী হাসান, দিলদার হোসেন, ইসমত শিল্পী, শাহাবুল আলম তপু, আলতাফ শাহনেওয়াজ, ফাতেমা আবেদীন নাজলা, সানজানা, সোনিয়া, রিপন মিনহাজ, যায়েদসহ অনেকেই।

আগামীকাল শনিবারও বইমেলা শুরু হবে সকাল ১১টায়। চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বইমেলায় রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত প্রবেশ করার সুযোগ রয়েছে। এরপর আসলে কেউ বইমেলায় ঢুকতে পারবেন না। বইমেলায় আসুন। বই বাছাই করে ভালো বইটি কিনুন। প্রিয়জনকে বই উপহার দিন। সবাইকে একুশের শুভেচ্ছা।

----------------------
বইমেলা থেকে ফিরে
রেজা ঘটক
কথাসাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ভোর ৪:১২

রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: রেজা ঘটক ভাই, সালাম নেবেন। ভালো লাগলো রিভিউ। বিদেশে বসে দেশি টঙ্গের চায়ের স্বাদ পেলাম যেন।

২| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ভোর ৪:১৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


এবার আপনার কোন বই বেরিয়েছে?

৩| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৮:৫৮

রাজীব নুর বলেছেন: বইমেলায় জালনট। !!!!!!!!!!!

অত্যন্ত দুঃখজনক।

৪| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৫৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: ভালোই লাগে সব মিলিয়ে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.