নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

করোনা_করো_তুমি_করুণা!

১৬ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ৭:৫৯

বাস্তবতা হলো- বাংলাদেশে হোম কোয়ারেন্টাইন কোথাও কেউ সঠিকভাবে পালন করছে না। কারণ বাঙালিদের মধ্যে 'কী আর হবে' বলে একটা ধারণা যেমন প্রচলিত, তেমনি আইন না মানারও একটা রীতি আছে। বিদ্যমান কর্তৃপক্ষ যেগুলো আছে তারাও সব অদূরদর্শী এবং অপরিপক্ক। সরকারিভাবে যা দাবি করা হচ্ছে তা আসলে ডাহা মিথ্যা কথা।

এমন কী গত দুইদিনে ইতালি থেকে যে প্রায় চারশো প্রবাসী দেশে এসেছেন, তাদেরকেও কিছু গড়পরতা নির্দেশনা দিয়ে নিজেদের বাড়িতে যাবার জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তারা কেউ হোম কোরেন্টাইন করছেন বা করবেন এটা এদেশে প্রায় অসম্ভব একটা ব্যাপার। এদেশের মানুষের সাধারণ আচরণ-ব্যবহার এবং প্রাকটিসের মধ্যে সেটা একদম নাই।

বিদেশ থেকে আসা যে কারোর মাধ্যমেই এদেশে করোনা ভাইরাস ভয়াবহ রকমভাবে ছড়িয়ে পরার আশংকা রয়েছে। কারণ আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এতই নাজুক যে ঢাল নাই তলোয়াড় নাই দশা। ফলে একবার শুরু হয়ে গেলে আর ঠেকাতে পারাটা খুব কঠিন হবে। তাছাড়া সরকারিভাবে সবসময় এখানে মিথ্যা তথ্য প্রচার করার একটা রেওয়াজ প্রচলিত। সাধারণ একটি সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ জন মারা গেলে সরকারিভাবে ২/৩ জনের বেশি স্বীকার করা হয় না। সেখানে করোনা একবার ছড়িয়ে গেলে সেটা মিথ্যা তথ্য দিয়ে ঢেকে রাখার কৌশল নেওয়া হবে। সেটাই একেবারে স্বাভাবিক।

মুজিব বর্ষের অনুষ্ঠান সারা বছর জুড়েই হবে। এজন্য স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের বলির পাঁঠা বানাতে হবে??? কেবলমাত্র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতার জন্য যদি স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করাটা কৌশলে পিছিয়ে রাখা হয়, আর এটা যদি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি ধূর্ত কৌশল হয়, তাহলে খুব বড় ধরনের ভুল করছে সরকার বাহাদুর।

গোটা বিশ্বে করোনা ভাইরাস নিয়ে রেড এলার্ট চলছে। আর শিক্ষামন্ত্রী গাল ফুলিয়ে বলছেন পরিস্থিতি এখনো ছুটি ঘোষণার পর্যায়ে যায়নি! কতবড় বেহায়া একটা জাতি আমরা! বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রেড এলার্টকে পর্যন্ত পাত্তা দেওয়া হচ্ছে না!

সরকারিভাবে এখনো স্কুল কলেজ জনসমাবেশ কিছুই বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি। ভাবটা এমন যেন পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা এদেশে আছে। পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি জনসচেতনত এদেশের মানুষ এবং স্বাস্থ্য বিধি একদম হারে হারে মেনে চলে বাংলাদেশের সকল জনগণ। অর্থ্যাৎ সরকারিভাবেই এখানে করোনা খুব একটা পাত্তা পাচ্ছে না। গোটা পৃথিবী জুড়ে যেখানে করোনা নিয়ে রেড এলার্ট, সেখানে এই গোয়ার গোবিন্দ দেশটি চূড়ান্ত অদূরদর্শীতার পরিচয় দিচ্ছে।

এদেশের মন্ত্রীদের কথা শুনলে মনে হয় তারা পৃথিবীর সেরা পণ্ডিৎ। করোনা ভাইরাসের টিকা এরাই প্রথম আবিস্কার করে ছাড়বেন। ডোন্ট ও্যরি! আমরা পরিস্থিতির দিকে সর্বদা নজরদারি করছি। কিন্তু একবার শুরু হয়ে গেলে এরা সবাই বিদেশে চিকিৎসা নিতে চলে যাবে। এদেশের জনগণের দিকে এরা ফিরেও তাকাবে না।

এমন যখন পরিস্থিতি, তখন আপনি নিজেই জন সংযোগ এড়িয়ে চলা শুরু করুন। কারণ আপনার করনো সংক্রমণ হলে এরা কেউ এগিয়ে আসবে না। আপনি কোনো হাসপাতালে এর চিকিৎসা পাবেন না। আপনার পরিবার এগিয়ে আসলে তাদের মধ্যেও এটা ছড়াবে। কেউ অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে দেখতে যাবার দলে কেউ নাই। সুতরাং আপনি নিজেই শুরু করুন। কারো উপর ভরসা না করে।

এ অঞ্চলের বর্তমান আবহাওয়ার কারণে আমরা একটা বড় সুযোগ পাবো। এখন তাপমাত্রা প্রায় ৩০/৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর করোনা ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে সক্রিয় থাকে। ফলে একটা ন্যাচারাল সুযোগ আমাদের আছে। অথচ করোনাভাইরাস মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে গত ২৭ জানুয়ারি দেশের সব সরকারি হাসপাতালে অনতিবিলম্বে ‘আইসোলেশন ইউনিট’ (সংক্রামক রোগীদের জন্য পৃথক ব্যবস্থা) খোলার নির্দেশনা দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। দেশের আটটি বিভাগের সব জেলা সদর এবং মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই ইউনিট খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়।

কিন্তু দেড় মাস আগে এই নির্দেশনা দেওয়া হলেও খোদ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে এখনো আইসোলেশন ইউনিট চালু হয়নি। এমনকি জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত শুক্রবার রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন বাহরাইনফেরত এক প্রবাসী। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাঁর শরীরে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার প্রায় সব লক্ষণ দেখতে পান চিকিৎসকেরা। অথচ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চোখ ফাঁকি দিয়ে ওই রোগী পালিয়ে গেছে। [সূত্র দৈনিক প্রথম আলো]

খোদ রাজধানীর একটি প্রধান হাসপাতালের চিত্র যদি এই হয়, তাহলে সারা দেশের অবস্থা এমনিতেই অনুমান করা যায়। অর্থ্যাৎ আমাদের স্বাস্থ্যবিভাগ মুখে এবং মিডিয়ার সামনে কেবল বুলি আওড়াতে ব্যস্ত। বাস্তবে কোনো প্রস্তুতি একদম নাই। তাদের ভাবটা এমন খোদার মাল খোদায় রক্ষা করবে।

আরেকটা গুঞ্জন রয়েছে, করোনা আক্রান্ত দেশগুলো আমেরিকাসহ উন্নত দেশ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ নানান সংস্থা থেকে বড় ধরনের অর্থ সাহায্য পাবে। সেই অর্থের দিকেই আমাদের কর্তৃপক্ষের এখন বেশি নজর। নিজেদের প্রটেকশনের জন্য কোনো কাজ না করে এরা নাকে শর্সের তেল দিয়ে ঘুমোচ্ছেন।

বাস্তবে করোনা নিয়ে আতংকিত হবার কিছু নাই। আপনি সচেতন থাকলে আপনি নিজেই নিজের সেফগার্ড তৈরি করতে পারবেন। জন সংযোগ এড়িয়ে চলুন। একান্ত প্রয়োজন না হলে বাইরে যাওয়া বন্ধ রাখুন। অন্য কারোর হাঁচি কাঁশি থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখুন। বেশি বেশি পানি খান। কুসুম গরম পানির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে শরীরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাবেন। যাদের হাই প্রেসার আছে তারা এটা অতিরিক্ত খেয়ে আবার প্রেসার বাড়িয়ে ফেলবেন না।

যাদের বয়স ৬০ বা তার বেশি, তারা একটু নিজেরাই নিজেদের অন্তত দুই সপ্তাহ ঘরে থাকার অভ্যাস করুন। কারণ করোনা আক্রান্তদের মধ্যে বয়সীদের মৃত্যু ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। সরকারের উপর ভরসা করলে কেউ বাঁচতে পারবেন না। নিজেদের মধ্যে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

আপনার মধ্যে যদি করোনা রোগের লক্ষণ ধরা পরে আপনি নিজেই আইসোলেশনে থাকুন। অন্যদের মধ্যে এটা ছড়ানো থেকে বিরত থাকুন। মনে রাখবেন এটা ছোঁয়াছে রোগ। করোনা আক্রান্ত কোনো রোগীকে কেউ দেখতে যাবার সুযোগ নাই। সরকারি ভরসার জন্য অপেক্ষা করলে আপনিই হতে পারেন বড় ভিকটিম। অতএব সাধু সাবধান।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ৮:০৩

নেওয়াজ আলি বলেছেন: এই মুহূর্তে প্রবাসীরা অত্যন্ত জরুরী ছাড়া দেশে না যাওয়াই উত্তম। প্রবাসীরা নবাবজাদা কারণ তারা বিদেশ হতে দেশে টাকা পাঠায়। মন্ত্রীর মত লোকেরা দেশ হতে বিদেশে টাকা পাচার করে। জনগণের সম্পদ ও ভোট ....

২| ১৬ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ৮:০৯

কূকরা বলেছেন: :(

৩| ১৬ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ৮:৪০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আল্লাহর উপর ভরসা, সেল্ফ গার্ড আর করোনার কাছে করুনা ভিক্ষা ছাড়া আর কিই বা করার আছে অভাগা আমজনতার!!!

মাত্রই খবরটা পড়ে তব্দা হয়ে বসে আছি।
গাজীপুরে প্রবাসীদের সাধারন মেসের মতো এক রুমে রেখৈ নাম দিচ্ছে কোয়ারেন্টাইন???
খোদ হাসপাতালের ডাক্তার নার্সদের নিরাপত্তা পোষাক নেই!
হোম কোয়ারেন্টাইনের গাল ভরা নামে দায় এড়ানো যাবে কি?

খোদ আমেরিকা, ইংর্যান্ডের মতো দেশ হিমশিম খাচ্ছে, তারা নিজেদের চেষ্টার সাতৈ সত্য বলে সকলের সহযোগীতা চাইছে
আর আমাদের মহোদয়গণ - যেন ইশ্বরের অবতার!!
কিছূই হয়নি? কিছূই হবেনা হামবড়া ভাবে নিজেরা ডুবে জাতিকে ডুবানোর অপেক্ষায় আছেন !

আবার রোগের অজুহাতে রোগীর সাথে আসামীর মতো ব্যবহার কেন? তাদের চাই সেবা। পরিচর্যা। আত্মবিশ্বাস। উইশেল ওভার কাম মানসিকতা। আর বিদেশ ফেরত মানুষ স্বভাবতই উন্নত জীভনে অভ্যস্ত। তাদের পূরোটা দিতে নাপারি মিনিমামটুকু দিতে হবে। আর দিতে না পারলে তা ব্যার্থতা। সেই ব্যার্থতা তাদের সেবা দিয়ে ভরসা দিয়ে মন জয় করতে হবে।
যাদের রেমিটেন্সের দোহাই দিয়ে দেশ, দেশের অর্থনীতির গর্ব, তারা কি নূন্যতম এইটুকু ভব্যতাবোধ আশা করতে পারে না?

নিজেদের ব্যার্থতা ঢাকতে সবদোষ নন্দঘোষ টাইপের মানসিকতা পরিহার করতে হবে।
এখানে ইগোর চেয়ে জনগনের জীবনের মূল্য বেশী -অনুভব করতে হবে।
ব্যার্থতায় সকলের সম্মিলিত সাহায্য নিতে হবে। তাতে কোন লজ্বা নেই।
দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ- চেতনা জাগ্রত হোক!




৪| ১৬ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ৮:৪৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


সঠিক ভাবনা।

করোনা ২৩/২৪ ডিগ্রি সে: এ বাঁচে না?

৫| ১৬ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: বাংলাদেশের গা ছাড়া সরকার আর নাগরিক মিলে একটা ভাইরাসকে হালকা জ্বর কাশির তকমা দিয়ে ছেড়ে দেবে মনে হয়।

৬| ১৬ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:৩২

ইসিয়াক বলেছেন: স্কুল কলেজগুলো এখনো খুলে রাখার কোন যুক্তি দেখি না। কি একটা অবস্থা।
এই সরকার আসলে কি চায় তা তারা নিজেরাই জানে না। মন্ত্রীগুলো তো এক একটা গাধা,মাথায় কিছু আছে বলে মনে হয় না।

৭| ১৬ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:৫৯

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
যথার্থ বলেছেন।
কোরোনা ভাইরাসের তাপমাত্রা বিষয়ক তথ্যটা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান। কোথায় কোন সঠিক তথ্য পাচ্ছি না।
ইন্দোনেশিয়ায় তাপমাত্রা ৩১ ডিগ্রী সে. ওখানেও কোরোনা হামলা করেছে। সিঙ্গাপুর ৩২ ডিগ্রী সে. নতুন করে আরও ১৪ জন আক্রান্ত।



খুব খারাপ কিছুর জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।

৮| ১৬ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:১৯

রাশিয়া বলেছেন: সরকারের সীমাবদ্ধতা আছে। আছে দুর্বল বিরোধী দলের উপর সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার এবং শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সামনে নতজানু মণোভাব প্রদর্শনের ইতিহাস। করোনা মোকাবিলা করতে গিয়ে ইতালী জার্মানী স্পেনের মত দেশ হিমশিম খাচ্ছে - সেখানে বাংলাদেশের অথর্ব সরকার আর কিইবা করতে পারে? তাই কিছু না করে সব ছেড়ে দেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে করেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.