নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকেই প্রথম করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে। কীভাবে ছড়ালো? ধারণা করা হচ্ছে, উহানের হুয়ানান সিফুড হোলসেল মার্কেট থেকেই প্রথম করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে। এই মার্কেটে সিফুডের পাশাপাশি খাদ্য হিসেবে বিভিন্ন ধরনের ওয়াইল্ড অ্যানিমেল বিক্রি হয়। অন্তত ৭৫ প্রজাতির ১২০ ধরনের ওয়াইল্ড অ্যানিমেল এই বাজারে বিক্রি হতো। যে কারণে এই বাজারটি বুশমিটের জন্য খুবই পরিচিত। সাধারণ চীনের গরীব মানুষেরা এই বুশমিটের প্রধান গ্রাহক।
প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল করোনা ভাইরাসের উৎস সাপ কিংবা বাদুর। কিন্তু পরে নানান বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে ঘোড়া বাদুরের লালা থেকে এই করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি। আর এটির মধ্যবর্তী হোস্ট হিসেবে পাওয়া গেছে পঙ্গোলিনের শরীরে। আর এখান থেকেই এটি মানুষের শরীরে ছড়িয়েছে।
শুরুটা কীভাবে হয়েছিল? ২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর প্রথমে একজন রোগী নিউমোনিয়া নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। এরপর একই দিনে আরো ৪০ জন একই ধরনের সিনড্রোম নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। এই প্রথম ৪১ জনের মধ্যে ১৩ জনের সাথে ওই সিফুড মার্কেটের কোনো সম্পর্ক নাই। আমেরিকার জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির ইনফেক্টাস ডিজিজ গবেষক ও স্কলার ডক্টর ডানিয়েল আর লুসি প্রথম দাবি করেন এটা সার্স-কোভ-২ ধরনের ভাইরাস।
উল্লেখ্য ডক্টর লুসি এর আগে সার্স, বার্ড ফ্লু, মার্স, ইবোলা, জাইকা, নিপা ও ইয়োলো ভাইরাস নিয়ে সফলভাবে গবেষণা করেছেন। তিনি ইনফেকটাস ডিজিজ নিয়ে ডাক্তারি পাশ করার পর ১৯৮৮ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর ডাক্তার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ডক্টর লুসি'র বাবা-মা ও মার্কিন মিলিটারি পরিবারের সদস্য। আর তার জন্ম ক্যাসেল এয়ার ফোর্স বেস-এ।
চীন কী করলো? চীনের গবেষকরা ওই মার্কেট ও পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে ৫৮৫ ধরনের স্যাম্পল সংগ্রহ করে সেখানে অন্তত ৩৩টি আইটেমে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের লক্ষণ আবিস্কার করেন। যার মধ্যে ৩১টি আইটেম ওই মার্কেট থেকে পাওয়া। তারপর চীন এবছরের ১ জানুয়ারি ওই বাজারটি বন্ধ করে দেয়। আর ২২ জানুয়ারি চীন ওয়াইল্ড অ্যানিমল প্রোডাক্ট বিক্রি করা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। আর ২৪ ফেব্রুয়ারি গোটা চীনে ওয়াইল্ড অ্যানিমেলের প্রোডাক্ট বিক্রি ও সবধরনের ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
যদিও এই তথ্যগুলো ইতোমধ্যে আপনাদের মুখস্থ হয়ে যাবার কথা। এবার একটু অন্যদিকে চোখ ফেরাই। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে- গতবছর সপ্তম মিলিটারি ওয়ার্ল্ড গেমস অনুষ্ঠিত হয়েছিল চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে। ২০১৯ সালের ১৮ থেকে ২৭ অক্টোবর চীনের উহানে ১১০টি দেশের মোট ৯ হাজার ৩০৮ জন মিলিটারি অ্যাথলেট ওই গেমসে অংশগ্রহণ করেন।
অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে চীনের সর্বোচ্চ ৫৫৩ জন, ব্রাজিলের ৩২৯ জন, ফ্রান্সের ২৭৩ জন, রাশিয়ার ২৪৩ জন, জার্মানির ২৪৩ জন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৭২ জন, দক্ষিণ কোরিয়ার ১৭২ জন, উত্তর কোরিয়ার ১৫৬ জন, ইতালির ১৩৯ জন, ইরানের ৯০ জন, ভারতের ৫৪ জনসহ মোট ৯ হাজার ৩০৪ জন মিলিটারি অ্যাথলেট ওই টুর্নামেন্টে অংশ নেয়। আপনারা ভাবছেন এসব তথ্য জেনে এটা দিয়ে কী হবে?
চলুন এবার পদক বিজয়ীর তালিকার দিকে একটু নজর দেই। প্রতিযোগিতায় চীন ১৩৩টি সোনা, ৬৪টি রূপা ও ৪২টি ব্রোঞ্জ পদকসহ মোট ২৩৯টি পদক জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়। রাশিয়া ৫১টি সোনা, ৫৩টি রূপা ও ৫৭টি ব্রোঞ্জসহ মোট ১৬১টি পদক জিতে রানার্সআপ হয়। ব্রাজিল ২১টি সোনা, ৩১টি রূপা ও ৩৬টি ব্রোঞ্জসহ মোট ৮৮টি পদক জিতে তৃতীয় স্থান দখল করে। আর ফ্রান্স ১৩টি সোনা, ২০টি রূপা ও ২৪টি ব্রোঞ্জসহ মোট ৫৭টি পদক জিতে চতুর্থ স্থান দখল করে।
এবার আসুন ওই টুর্নামেন্টে একটু মার্কিন মিলিটারি অ্যাথলেটদের যোগ্যতা পর্যবেক্ষণ করি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মিলিটারি ওয়ার্ল্ড গেমস থেকে কী কী পদক জিতেছে? যুক্তরাষ্ট্র ৩টি রূপা ও ৫টি ব্রোঞ্জসহ মোট ৮টি পদক জিতে প্রতিযোগিতায় ৩৫তম স্থান দখল করেছে। আমেরিকার ১৭২ জন সেনা অ্যাথলেট মাত্র ৮টি পদক জিতেছে! কোনো স্বর্ণপদক নাই! কী আপনার কী একটু অবিশ্বাস লাগছে এবার?
যেখানে পোল্যান্ড ১১টি সোনা জিতেছে, জার্মানি ১০টি সোনা জিতেছে, উত্তর কোরিয়া ৯টি সোনা জিতেছে, বাহরাইন ৯টি সোনা জিতেছে, উজবেকিস্তান ৮টি সোনা জিতেছে, ইউক্রেন ৫টি সোনা জিতেছে, ইতালি, কাজাকস্তান, বেলারুস, ইরান ও সুইজারল্যান্ড ৪টি করে সোনা জিতেছে। দক্ষিণ কোরিয়া ৩টি সোনা জিতেছে। নরওয়ে, স্লোভেনিয়া, মিশর, কেনিয়া, মরক্কো ও তুরস্ক ২টি করে সোনা জিতেছে।
যেখানে রুমানিয়া, মঙ্গোলিয়া, হাঙ্গেরী, চেক রিপাবলিক, ভারত, বেলজিয়াম, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, বুলগেরিয়া, নামিবিয়া ও তিউনিশিয়া পর্যন্ত ১টি করে সোনা জিতেছে। সেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি সোনা জিততে পারলো না কেন? নাকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিলিটারি অ্যাথলেটরা পৃথিবীর দুর্বল মিলিটারি দেশগুলোর মত অথর্ব? আপনার কী মনে হয় সত্যি সত্যি কী মার্কিন সেনারা অ্যাথলেট হিসেবে অথর্ব? উহান থেকে তারা একটা সোনা না জিতে দেশে ফিরলে কী তাদের ইজ্জত বাঁচে?
আপনাদের কী ২০১৬ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিও'র গ্রিস্মকালীন অলিম্পিকের কথা মনে আছে? যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৪৬টি সোনা, ৩৭টি রূপা ও ৩৮টি ব্রোঞ্জসহ মোট ১২১টি পদক জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। বৃটেন ২৭টি সোনা, ২৩টি রূপা ও ১৭টি ব্রোঞ্জসহ মোট ৬৭টি পদক জিতে হয়েছিল রানার্সআপ। চীন ২৬টি সোনা, ১৮টি রূপা ও ২৬টি ব্রোঞ্জসহ মোট ৭০টি পদক জিতে হয়েছিল তৃতীয়। আর রাশিয়া ১৯টি সোনা, ১৭টি রূপা ও ২০টি ব্রোঞ্জসহ মোট ৫৬টি পদক জিতে চতুর্থ স্থান অধিকার করেছিল।
এবার আপনি নিশ্চিত একটা কুতর্ক জুড়ে দেবেন। আপনি বলবেন যে, অলিম্পিকে তো সবধরনের অ্যাথলেট অংশ নেয়। আর মিলিটারি ওয়ার্ল্ড গেমসে কেবল মিলীটারি অ্যাথলেট অংশ নেয়। তাই বলে আমেরিকার মিলিটারি অ্যাথলেট গোটা বিশ্বের মিলিটারি অ্যাথলেটদের চেয়ে এত দুর্বল? আর এসব দুর্বল মিলিটারি নিয়ে বলতে গেলে আমেরিকা গোটা বিশ্ব শাসন করছে? এটা কী মোটেও বিশ্বাসযোগ্য? আপনাদের কথায় এর বাইরে যুক্তি কী??
আসলে চীনের উহানে আমেরিকার যেসব মিলিটারি অ্যাথলেট গিয়েছিল তারা একটি সুনির্দিষ্ট মিশন নিয়ে গিয়েছিল। সেই মিশনটি ছিল সেখানে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে দিয়ে আসা। আর সেই কাজটি তারা খুব সফলভাবে করতে পেরেছিল। নাকি পারে নাই? তাহলে মার্কিন সেনাদের একটি অংশ চীন থেকে ফেরার পর অসুস্থ হয়েছিল কেন? কিছু মার্কিন সেনা তখন মারা গেছে, যা বিশ্ব মিডিয়ায় খুব একটা নিউজ আকারে আসেনি। কিন্তু সেসব মার্কিন সেনাদের পরিবারের সদস্যদের স্যোশাল মিডিয়ায় ছড়ানো টুইট, ইনস্টগ্রাম থেকে অনেক তথ্য-প্রমাণ রয়েছে।
আরেকটি জিনিস খুব খেয়াল করুন- মার্কিন মিলিটারি অ্যাথলেট দলটি উহানে অবস্থান নিয়েছিল ওই আলোচিত সিফুড মার্কেটের খুব কাছেই। এবার আপনি তর্কের খাতিরে বলবেন, ওরা ওই মার্কেটে ঘুরতে গিয়ে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল। তাই দেশে গিয়ে অসুস্থ হয়েছিল। যদি তাই হয়, তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এটা নিয়ে তখন তদন্ত করেনি কেন? পৃথিবীর কোথাও একজন মার্কিন সেনা মারা গেলে তারা কী করে, সেটা তো আমাদের জানা আছে। আর চীন থেকে ফিরে তাদের সেনা মারা গেল আর তারা একদম চুপ মেরে থাকলো! এটা আমাদের বিশ্বাস করতে হবে? কী একটু অবাক লাগছে না আপনার?
এবার আরেকটি তথ্য একটু মন দিয়ে পর্যালোচনা করবেন। ২০১৯ সালে বিশ্ব বাস্কেটবল ওয়ার্ল্ড কাপ অনুষ্ঠিত হয় চীনে। ৩১ আগস্ট থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ওই টুর্নামেন্টে মোট ৩২টি দেশ অংশ নেয়। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে হেরে বিদায় নেয়। টুর্নামেন্টে স্পেন ৯৫-৭৫ পয়েন্টে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। আর ফ্রান্স ৬৭-৫৯ পয়েন্টে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে তৃতীয় স্থান অধিকার করে।
এবার বলবেন এ আর নতুন কী? এটা তো হতেই পারে। চীনের মোট ৮টি ভেন্যুতে ১৬দিন ব্যাপী ওই টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। যার মধ্যে চীনের উহানে একটি ভেন্যু ছিল। মার্কিন বাস্কেটবল দলের হয়ে যদি তখন সিআইএ-র কোনো এজেন্ট ওই সময় উহানে সম্ভাব্য ভাইরাস ছড়ানোর পয়েন্ট গুলো বিবেচনায় নিয়ে স্পট ভিজিট করে থাকে, তা কী আপনি বুঝতে পারবেন? সাধারণত কোনো অপকর্ম করার আগে স্পট সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা না নিয়ে কেউ সেখানে আন্দাজে কোনো ধরনের হামলা পর্যন্ত করতে যাওয়ার কথা নয়। এটা একেবারে সাধারণ বিবেচনা।
তারমানে বিশ্ব বাস্কেটবল টুর্নামেন্টের সময় সিআইএ উহান সম্পর্কে সকল তথ্য-উপাত্ত যাচাই বাছাই করেছে। আর মিলিটারি ওয়ার্ল্ড গেমসের সময় তারা করোনা ভাইরাসটি উহানে ছড়িয়েছে। আর গোটা নভেম্বর মাস জুড়ে করোনা ভাইরাসটি ধীরে ধীরে স্প্রেডআউট হয়েছে। ডিসেম্বরে সেটি ধরা পরেছে। কী এসব বিশ্লেষণ আপনার কাছে কনস্পাইরেসি থিউরি মনে হচ্ছে তাই না?
আচ্ছা একটা প্রশ্নের জবাব দিন তো- ডক্টর লুসি আমেরিকায় বসে এত নিখুদভাবে কীভাবে বলতে পারলেন ওটা সার্স-কোভ-২ ভাইরাস বা একই গোত্রের ভাইরাস? সিআইএ তাঁকে তথ্য-উপাত্ত না দিলে তিনি কোথায় এসব নিশ্চিত তথ্য পেলেন? মাথা ঠাণ্ডা করে এবার একটু ভাবুন। আমেরিকা কোনো একটি স্পোর্টে অংশ নেবে আর স্বর্ণপদক না জিতে দেশে ফিরে যাবে, এটা ওদের আভিজাত্যে ঘা লাগবে না? আর সেটি যদি হয় খোদ মিলিটারিদের প্রতিযোগিতা? এটা আপনি বিশ্বাস করতে চান? এটা নিয়ে আরো ভাবুন, ভাবা প্রাকটিস করুন।
-------------------------চলবে-----------------------
২| ২৫ শে মার্চ, ২০২০ রাত ৩:৪৮
সুপারডুপার বলেছেন: যদি তাই হয়, আমেরিকা করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে দিয়ে আসার আগেই নিজেদের জন্য এই ভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরী করে রেখেছে। এটা প্রমান হলে এই ইনভেস্টিগেশনকে সত্য বলা যাবে ।
৩| ২৫ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:৩০
রাজীব নুর বলেছেন: পাকিস্তানে আক্রান্ত ৯৯০ এবং মৃত্যু কেবল ৭। দেশটিতে মৃত্যুর হার ন্যূনতম পূর্ণ অঙ্ক তথা ১-এর নিচে। পাকিস্তানের ডন পত্রিকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারির চিত্র তুলে ধরেছে। যিনি ঘর থেকে বের হচ্ছেন তাঁকে পেটানো হচ্ছে।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে মার্চ, ২০২০ রাত ৩:৪৮
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
এত দুর্বল অস্ত্র বায়োলজিকাল অস্ত্র হতেই পারে না।
যে অস্ত্রে তরুন যুবক রা কেউ অসুস্থ হয় না মরে না, অর্থাৎ সেনা দলের কিছুই হবে না।
মাত্র ১০% বুইড়া হাপানি রোগি অসুস্থ হয়ে মরনাপন্ন হয়ে ২% মরবে।
ইহা মিলিটারি ওয়েপন হয় কেমনে?