নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
প্রতিবছর ২৬ মার্চ ভোরবেলায় ঢাকায় ঘুম ভাঙতো কামানের গোলার শব্দে। স্বাধীনতা দিবসের নানা আয়োজন ঘরে বসে দেখে। ভীড় একদম পছন্দ করি না বলেই এসব আয়োজনে কোথাও যাই না। শুধু একুশের বইমেলায় ভিড় হলেও না গিয়ে পারি না। কারণ আমি পেশায় একজন লেখক। আর বইমেলায় না গিয়ে কী আর থাকা যায়!
কিন্তু করোনা দুর্যোগের কারণে এবছর কয়েকদিন আগে আমি নিজেই এক লেখায় সরকার বাহাদুরকে স্বাধীনতা দিবসের সকল অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার অনুরোধ করেছিলাম। 'বঙ্গবন্ধু'র জন্মশত বর্ষে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা দিবস পালন করবে না' এটা হয় নাকি? এমন একটি কঠিন সিদ্ধান্ত শেষপর্যন্ত সরকার নিতে বাধ্য হয়েছিল। সকল কুচকাওয়াচ তাই আজ বন্ধ।
এমনকি ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু'র শততম জন্মদিনে আতশ বাজি পোড়ানোটা আমার ভালো লাগেনি। কারণ মানিক মিঞা এভিনিউতে সেদিন লক্ষ লক্ষ মানুষের যে ঢল নেমেছিল, তা করোনা ছড়ানোর জন্য যথেষ্ট। সরকার সবকিছু একটু দেরিতে দেরিতে বুঝলো। ফলটা আমরা হয়তো আরো দুই সপ্তাহ পরে টের পাবো।
আমি এখনো একটা সমীকরণে আস্থা রাখতে চাই। ঘূর্ণিঝড়ের বৈশিষ্ট্যের মধ্যে যেটা আছে। সাগরে এটি কয়েকদিন ধরে ঘোট পাকায়। ধীরে ধীরে এটি লঘু ঘূর্ণিচাপে রূপ নেয়। তারপর এটি তীরের দিকে এগোতে থাকে। স্থলভাগে ওঠার পর ঘূর্ণিঝড় তীব্র আঘাত হানে। তারপর একটা গতিপথ ধরে কোথাও গিয়ে এটি ধীরে ধীরে শেষ হয়। ঘূর্ণিঝড়ও করোনা ভাইরাসের মত সময় নেয় দুই সপ্তাহ। দুইটা জিনিসের মিলটা এখানেই। আর এটাকেই আমি মিরাকল বলতে চাইছি।
করোনা ভাইরাসকে আমি ঘূর্ণিঝড়ের মত ভাবছি। এটা চীনে শুরু হয়েছিল। চীনকে যদি সেই সাগরের সাথে তুলনা করি, তাহলে প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতি তাদের কিছু হয়েছি। তারপর এটি ইরান ও ইতালিতে আঘাত করলো। ইরান ধীরে ধীরে সামলে নিচ্ছে। ইতালিতে এটা চূড়ান্ত আঘাত হানলো। এখন সবচেয়ে বড় ঘূর্ণিটা যাচ্ছে ইতালি ও স্পেনের উপর দিয়ে।
আমার ধারণা ইতালিতে দশ হাজার ক্রোস করে এটা স্তিমিত হয়ে যাবে। স্পেনেও কাছাকাছি যাবে। যদিও বাংলাদেশে এটা প্রথম আঘাত হানে ৮ মার্চ। কিন্তু সামাজিকভাবে স্প্রেড হচ্ছে মার্চের ১৭ তারিখের পর থেকে। সেই হিসেবে এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত আমরা বড় ধরনের স্প্রেড পিরিয়ড পাড়ি দেবো। সামাজিক সংক্রমণ হলেই এটা দ্রুত ছড়িয়ে যাচ্ছে। আমরা সরকারিভাবে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে সেসব অনুসূচক পরিপূর্ণভাবে পূরণ করেছি। এখন জাস্ট ওয়েটিং ফর গডো।
একটা জিনিস খেয়াল করুন করোনা ভাইরাস আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে খোদ আমেরিকা ও কানাডায় আঘাত হেনেছে। অথচ চীনের পার্শ্ববর্তী দেশ ভিয়েতনাম, মিয়ানমার, রাশিয়া, ভারত। এরা কিন্তু সেই অর্থে তেমন এফেক্টেড না। কারণ করোনা ঝড়টা ঠিক মানুষ বাহিত। মানুষ এটাকে বহন করে আপনার দেশে নিয়ে গেছে। মানুষের এই চলাচল যারা বন্ধ রাখতে পেরেছে, তারা বেশি সফল।
আমরা শুরু থেকেই মানুষ আটকানোর সূত্রে ফেল করেছি। তাই আমাদেরও একটা চরম মূল্য দিতে হতে পারে। আর যদি করোনা ভাইরাস ঘূর্ণিঝড়ের মত সত্যি সত্যি নিজের থেকেই একসময় থেমে যায়, তাহলে বুঝতে হবে ঘূর্ণিঝড়ের মত এটা ধীরে ধীরে নিস্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে। ভারতের একজন ডাক্তার বলেছেন, সেপ্টেস্বর মাস নাগাদ সারাবিশ্ব থেকেই করোনা ঝড় থেমে যাবে।
আমরাও মন থেকে চাই, করোনা ঝড় থামুক। কিন্তু আমাদের যা যা করণীয় ছিল, তা থেকে আমরা এখনো কিছু শিখতে পেরেছি বলে মনে হয় না। সরকারি সংস্থাগুলো ফেল করেছে। জনগণ ফেল করলেই কেল্লা ফতে! করোনা ভাইরাসে হয়তো কিছু লোক মারবে কিন্তু করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক কৌশল কী হবে, তা নিয়ে সরকারি কোনো পরিকল্পনা দেখি না। দেশে একটা সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ মোকাবেলা করার জন্য সরকার বাহাদুর কী কী কৌশল নিচ্ছে, এটা এখনো জনগণের কাছে পরিস্কার করেনি।
মনে রাখবেন, বাংলাদেশে করোনার চেয়ে সেই অনাগত দুর্ভিক্ষে বেশি মানুষ না খেয়ে মারা যাবে। চিকিৎসা পাচ্ছে না, এটা আগেও পেত না। কিন্তু মানুষ খাবার না পেয়ে মারা যাবে, এটা প্রায় দিব্যচোখে দেখতে পাচ্ছি। সবাই এ বিষয়ে এখনই সচেতন না হলে এটা আর কন্ট্রোল করা যাবে না।
মহান স্বাধীনতা দিবসের সকালে সবাইকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা। সবাই ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন। নিরাপদে থাকুন। ঘরে বসে শতভাগ কোয়ারেন্টাইন করুন। করোনা আপনাদের কিচ্ছু করতে পারবে না।
----------------
২৬ মার্চ ২০২০
ঢাকা
২| ২৬ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:০২
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা।
৩| ২৬ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ১২:৫৭
রাজীব নুর বলেছেন: আপনাকেও শুভেচ্ছা জানাই।
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:৫২
চাঁদগাজী বলেছেন:
শুভেচ্ছা